Posts

Showing posts from October, 2020

সনেট।। ততক্ষনে।।-১০২

 ।।ততক্ষণে।। দেবপ্রসাদ জানা ১৩.১০.২০২০ চাকার নিচে একটা মানুষ রক্তাক্ত, চলার পথে চলতে গিয়ে, মানুষটা- পথ হারিয়ে ফেলেছে, বিচ্ছিন্ন বিভক্ত ছিন্নভিন্ন শরীরের,বিকৃত মুখটা। ও ভাই আজ রাস্তাটা,জ্যাম কেন ভাই? স্কুলে যেতে হবে ঠিক সময়ে, নইলে- শাস্তি পাবে মেয়ে দুটো,কি করে যে যাই? যাক গে লোকটা বাচ্ছা দুটোকে বাঁচালে। দেখেছ কাকের কাণ্ড,নাড়িভুঁড়ি গুলো- ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাচ্ছে সব,কি মহাআনন্দে, রাস্তার দিকে তাকিয়ে দেখুন ওগুলো- ছড়িয়ে ছিটিয়ে খাচ্ছে,যে যার পছন্দে। বাচ্ছা গুলোকে বাড়িতে,পৌঁছে দিন ভাই। বড় নিষ্ঠুর বিধাতা,আমি চলে যাই।

সনেট।। ছায়া।।-১০১

    ।।ছায়া।। দেবপ্রসাদ জানা   ১১.১০.২০২০ ছায়া,তুমিতো জানোই,আমি বিবাহিত  তবে কেন শুধু শুধু,পাশে পাশে ঘোরো? যেখানে যাচ্ছি সেখানে,করছো বিব্রত। বৃথা তুমি পথেঘাটে, মোর হাত ধরো। বোধের অজস্র ঢেউ, তুমি ভেঙ্গে দিচ্ছো ভয়ে আমি আলোটাকে এড়িয়ে চলেছি আলোর ছটা পড়লে হাত ধরে নিচ্ছো। আমি যে সদাই  ভীত হয়েই রয়েছি- বাঁচার প্রত্যয়ে তার কাছেই থাকতে চাই।শীতল জোছনা স্পর্শ করে ধীরে। গুপ্তপ্রেম,পরকীয়া,পারি না করতে- যতই তোমার শরীর ছোঁয়াও শরীরে। ছায়া তুমি মায়া হয়ে করো না বিনাশ। এমনিতে মরে আছি,কেড়ো না প্রশ্বাস।।

সনেট।। অবরোধ।।-১০০

 ।। অবরোধ।। দেবপ্রসাদ জানা ১২.১০.২০২০ আজ গোধুলির মেঘ,দেখি অন্য মনে!  উদাসী বাতাস বয়, মনের অলিন্দে,  তার কথা মনে পড়ে,আজ সঙ্গোপনে!!  স্মৃতিপটে বোধহয় ফুল ফোটে ছন্দে! খোলা ওই বারান্দাতে দাঁড়িয়েছ তুমি,  আপন মনে বলছো,তুমি কত কথা মৃদুমন্দ বাতাসের,অঙ্গ ছুঁয়ে ভূমি- কালের রুদ্ধতা ভেঙ্গে,গড়ে নব প্রথা । হৃদয়ের সব প্রেম,দিয়েছি তোমায়। সব রূপ রস গন্ধ,দিয়েছিল রাধা- তবে কেন অবহেলে,রাখো অপেক্ষায়। খোলো মনের দরজা,কেন দাও বাধা? সন্ধ্যা ঘনিয়ে দিগন্তে,কনে দেখা রোদে- স্বরচিত উপন্যাস,পোড়ে অবরোধে।

সনেট।। মহামায়া।।-৯৯

 ।।মহামায়া।। দেবপ্রসাদ জানা   ৯.১০.২০২০ ওরে তোরা দূর্গা কালি,লক্ষ্মী সরস্বতী  বীরাঙ্গনা লক্ষ্মীবাঈ,তোদের কিসের - এতো ভয়? জেগে ওঠ,ওরে অরুন্ধুতী। হাতের সামনে মাথা, নর পিশাচের। ওরা দূর্গা কালি লক্ষ্মী,সব করে পূজো  নারীশক্তি মহাশক্তি, সব জানে ওরা- দেবীবরণ করছে, অত্যাচারে আজো। জাগো নারী এইবার,মুক্ত করো ধরা। যারা বে-আব্রু করছে,অ্যাসিড ঢেলেছে, ক্ষমা করো না ওদের,যারা জিভ কেটে - বোবা করে দিতে পারে,তারা কি ভাবছে পার পেয়ে যাবে তারা?বিধাতার কোর্টে। ফুটন্ত তেলের মধ্যে,ফেলে ভাজা হবে। সেইদিন বিধাতার ঘরে,তুমি রবে।

সনেট।। ফাঁসি।।-৯৮

   ।। ফাঁসি।। দেবপ্রসাদ জানা     ৯.১০.২০২০ মোরা সব ক্ষুদিরাম,খুদ দিয়ে কেনা ফাঁসির দড়ি পরেছি,হয়েছি শহীদ। মাতৃঋণ রক্তঋণ ভুলে গেছি কিনা? ফাঁসি কাঠে ঝুলে মোরা,প্রথম শহীদ। কতদিন কেটে গেল,ভ্যাকসিন কই মানুষ মারার কল,করেছো তাহলে? কাটাকুটি খেলা খেলো,ফল বেরবেই। ছয়মাস ধরে শুধু,বোকাই বানালে? হায়রে কপাল মোরা সবাই হয়েছি- ক্ষুদিরাম। ভ্যাকসিন ঘুমোচ্ছে এখনো, ঠান্ডা ঘরে। বোতলের লেবেল খুঁজছি- সোকেশের তাকে,কোন বোতলে লাগানো। বুঝে গেছি ফাঁসি হবে,কাল সকালেই লেবেল চুরির দায়ে, ধরা পড়লেই।  

সনেট।। অঙ্ক শেখা।।-৯৭

 ।।অঙ্ক শেখা।। দেবপ্রসাদ জানা  ০৮.১০.২০২০ সিঁড়ি ভাঙ্গা অঙ্ক গুলো,কেন মিলছে না? ঝরা ফুল শব্দ তুলে প্রতিবাদ করে। বুকের ভেতরে কাঁদে,প্রেমের যন্ত্রনা। শিশিরের ফোঁটা পড়ে,গায়ে টপ করে। আসলে চোখের জল,কাজলে কাজলে কলঙ্ক ধুয়ে ফেলতে চায় প্রতিদিন। গোপনে করা পাপের,কালির বদলে অশ্রু ঝরে প্রতিক্ষনে, প্রত্যাশা মলিন। চোখের কোনে অশ্রুতে মেশা বেদনার শিশির বিন্দু জমেছে,আকাশের চোখে। শূন্যতার নীলাকাশে কলঙ্কের ভার - নেবে ভালোবেসে আজ,শরতের থেকে। আকাশ বাতাস রোদ,ঐ মেঘ বলাকা। জীবনের সিঁড়ি বেয়ে,শুধু অঙ্ক শেখা।

সনেট।। ডাক আসেনি।।-৯৬

 ।।ডাক আসেনি।।  দেবপ্রসাদ জানা      ৭.১০.২০২০ ডাক আসেনি এখনো,তবে ডাক পাবো। বিনা আমন্ত্রনে আমি,কোথাও যাই না। হয়তো কয়েকবার,ভেবেছিনু যাবো। সাজগোজ করে ভোরে। অবাস্তব ভাবনা। একটা বিষের শিশি,সেই চিলেকোঠা তিন দিক খোলা ছাদ,বুকের যন্ত্রনা। ডাক পেড়েছিল রাতে,মুক্ত চিলেকোঠা। হ্যাঁ দুপুরে,একা ঘরে,সে ডাক মন্দ না। যন্ত্রনাটা যত বাড়ে, তার ডাক আসে কড়িকাঠ বা ঝুলন্ত পাখাটার শব্দে। বিষের শিশিটা ঘোরে,শুধু আশেপাশে। লিখে যাব রক্ত দিয়ে একবার, গদ্যে। তার ছলনায় আমি ভুলেছি আমায়। ভালোবাসা কেন এত,আমাকে কাঁদায়।

সনেট ।।একটা মিথ্যে।।-৯৫

 ।।একটা মিথ্যে।। দেবপ্রসাদ জানা     ৬.১০.২০২০ হ্যাঁ গুরুদেবের পায়ে,হাত দিয়ে মিথ্যে  বলেছিল বউ, তাই সেদিন মাথার পোকাগুলো প্রান পেয়ে,চাঁদের আবর্তে ঘুরেছিল চারমাস,নিশ্চিত ব্যথার। বিষন্নতায় লোকটা,পাগল হতেই বুঝেছিল তার বউ। কতখানি ব্যথা বুকে নিয়ে কেটেছিল। ভালোবাসাতেই লোকটা পাগল,তাও বুঝেছিল পৃথা। জীবনের সব রস,যখন শুকনো। বিয়ের পরেই সব,ছেড়ে চলে এলো- শুধু বউটার জন্য। তার আত্মমগ্ন কাজের ফাঁকেই বউ,প্রেমে পড়েছিলো। দিশাহারা লোকটার, জীবন মরণ। লেখা থাক কবিতায়,চোদ্দটা চরণ।

সনেট ।।গীতা।।-৯৪

     ।। গীতা।। দেবপ্রসাদ জানা   ০৪.১০.২০২০ গীতায় দিয়েছি মন,ভয় নেই তাই। মৃত্যু ভয়,করি জয়,গীতা অধ্যয়নে। বর্ণময় পৃথিবীতে,চলছে লড়াই। কুরুক্ষেত্র যত্রতত্র,সৈন্য জনগনে। জীবনের বহু বাঁক,ঘুরিলাম আমি এই যুদ্ধ দেখি নাই,গত জীবনেও- এ পোকা এমন পোকা,জানে অন্তর্যামী। ধর্মকর্ম অর্থবল,কিছু না রইলো। গীতা এখন বাসন,মাজে বাড়ি বাড়ি - পড়িব কেমনে তারে,ছিঁড়ে গেছে পাতা জীবনের সব মন্ত্র,নিয়ে গেছে কাড়ি। কহ কৃষ্ণ,কহ এসে,কুরুক্ষেত্রে গীতা। ধর্মরাজ্য স্থাপনের,কেমন লড়াই? অস্ত্র নাই রক্ত নাই, মরেছে সবাই।

স নেট - ৯৩ ।।তার রূপে মুগ্ধ আমি ।।

    ৯৩ ।। তার   রূপে   মুগ্ধ   আমি   ।। দেবপ্রসাদ   জানা   আনমনে   একা   একা   বহু   পথ   চলি । দেখিনু   তরুণী   কন্যা , ভিক্ষা   করে   সেথা হাসিমাখা   মুখখানি ,  মরাল   মরালী । ক্ষুদ্ধার   জ্বালায়   যেন , কহিছে   না   কথা ।   সর্পিনীর   মত   কেশ ,  দুলিতেছে   পিঠে । চঞ্চলা   উতলা   বায়ু , খেলে   তার   সাথে । খোলা   চুল   জট   লেগে , উড়িতেছে   বটে । ফুরফুরে   নীলশাড়ী , শত   ছিন্ন   তাতে ।   কৃষ্ণমৃগ   নীল   আঁখি ,  চাউনি   চপল , ইশারায়   তীর   ছোঁড়ে ,  হৃদয়   গহ্বরে । হায়   তার   কেশরাশি , করিল   চঞ্চল। মৃদু   মৃদু   হাসি   দিয়া , মন   যেন   কাড়ে ।   পথ   মাঝে   দাঁড়াইয়া , দেখি   কিছুক্ষন । রূপে   তার   মুগ্ধ   আমি , মনে   আলো...

স নেট - ৯২ ।।অর্থ অনর্থ।।

  ৯২   ।। অর্থ   অনর্থ। । দেবপ্রসাদ   জানা   অর্থই   অনর্থ   নয় , করিব   প্রমাণ সবছিল   লেনদেন , যুগ   যুগ   হতে অদল   বদল   ছিল , ডাল   দিয়ে   ধান । সোনা   দিয়ে   জমি   পেত , জমিদার   হতে ।   তা   হয়তো   মধ্যযুগে , টাকা   বর্তমান টাকা   যার   রাখা   আছে , সেই   বড়   নেতা । বড়   বাঘ   ছোট   বাঘ , দেহেতে   প্রমান বড়লোক   ছোটলোক ,  মহাজনী   খাতা ।   অর্থ   মানে   ব্যর্থ   সব   মানতে   পারি   না । হ্যাঁ   একটু   বেশি   অর্থ   যদি   থাকে   কারো ধরাটাকে   সরা   ভেবে , দিচ্ছে   ঘরে   হানা । অত্যাচারী   হয়ে   ওঠে , অর্থ   চাই   আরো ।   সমতায়   ফিরে   এসো , সঠিক   বণ্ঠন ছোট   থেকে   বড়   হোক ,  রুষ্ট   জনগণ ।