খুন

স্ত্রীকে খুন করে আত্মঘাতী স্বামী! গড়িয়ায় শোরগোল

নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: সম্প্রতি পারিবারিক অশান্তি কিংবা অন্যান্য কোনও কারণে পরিবারে খুন-আত্মহত্যার প্রবণতা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এবার সেই একই ঘটনার সাক্ষী রইল গড়িয়ার আদর্শ নগর। বুধবার রাতে নিজেদের ঘর থেকেই উদ্ধার হল এক দম্পতির মৃতদেহ। পুলিস জানিয়েছে, স্ত্রীকে গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুনের পর স্বামী আত্মহত্যা করেছেন। মৃতদের নাম তরুণ দাস (৪৫) এবং আশা দাস (৩৫)। দাম্পত্য কলহের কারণেই এই চরম পরিণতি বলে মনে করছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিস যখন ঘরে প্রবেশ করে, তখন আশাদেবীর দেহ বিছানায় পড়েছিল। তাঁর গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অপরদিকে, সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় তরুণবাবুকে। এই ঘটনার পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না, সে ব্যাপারে তদন্ত করছে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিস। তদন্তকারী অফিসাররা জানিয়েছেন, এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনও রকম ফাউল প্লে বা অস্বাভাবিকতা পাওয়া যায়নি। তবে সব রকম দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আত্মীয়স্বজন ও অন্যান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিগত ছয় মাস ধরে রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত আদর্শনগরের ওই ভাড়াবাড়িতে থাকতেন দাস দম্পতি। এর আগে তাঁরা বসিরহাটে থাকতেন। স্ত্রী বাড়ি বাড়ি রান্নার কাজ

করতেন এবং স্বামী ছিলেন রঙের মিস্ত্রি। আশপাশের ঘরের লোকজন জানিয়েছেন, ওই দম্পতির মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। প্রতিনিয়ত মদ্যপান করতেন তরুণবাবু। তা নিয়েই অশান্তি চরমে উঠত।

বুধবার বিকেলে আশাদেবী কাজ থেকে ফিরে খাটে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। সেসময় তাঁর স্বামীও ঘরে ছিলেন। তিনি মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হওয়ার পরও তাঁদের ঘর থেকে কোনও সাড়া শব্দ পাওয়া যায়নি। আশাদেবীর বোন তাঁদের দ্বারের উল্টো দিকে থাকেন। তার ছোট ছেলে ওই দম্পতির ঘরে উকি মারতে গেলে চমকে ওঠে। ছেলেটি চিৎকার শুরু করলে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসে এবং দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে মৃতদেহ দেখতে পান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিস মৃতদেহ উদ্ধার করে। ওই দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। উভয়েরই বিয়ে হয়ে গেছে। ঘটনার সময় কেউই ঘরে ছিলেন না। মৃতদের পরিচিত কেউ কল্পনাও করতে পারেননি যে, দুজনে এমন পদক্ষেপ নিতে পারেন। বাড়ির মালিক যমুনা মণ্ডল বলেন, বুধবারও ওই দম্পতির মধ্যে অস্বাভাবিকতা দেখা যায়নি। সন্ধ্যায় হঠাৎ এই খবর পেয়ে আমরা চমকে উঠেছি। কী এমন হল দুজনের মধ্যে সেটাই বোঝা যাচ্ছে না। রাগের মাথায় নাকি পরিকল্পিতভাবে স্ত্রীকে খুন করে আত্মঘাতী হলেন তরুণবাবু, এই রহস্যের কিনারা আদৌ সম্ভব কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।


Comments

Popular posts from this blog

দুঃখটাকে এবার

মহাঋষি শুক্রাচার্য্য

গিরিশ চন্দ্র ঘোষ