দশরাজ যুদ্ধ
দাসরাজন্য যুদ্ধ (দশরাজ যুদ্ধ)
দাসরাজন্য যুদ্ধ, যা দশরাজ যুদ্ধ নামে পরিচিত, ছিল ভারতের প্রাচীনতম যুদ্ধগুলোর একটি, যা ঋগ্বেদে বর্ণিত হয়েছে। এটি খ্রিস্টপূর্ব আনুমানিক ১৪০০-১৩০০ সালে সংঘটিত হয়েছিল।
যুদ্ধের কারণ:
• এটি ছিল আর্যদের বিভিন্ন গোত্রের মধ্যে ক্ষমতা ও আধিপত্য বিস্তারের জন্য লড়া একটি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ।
• রাজা সুদাস, যিনি ভরতা (ভারত) গোত্রের নেতা ছিলেন, তাঁর সঙ্গে দশটি অন্য আর্য ও অনার্য গোত্রের সংঘর্ষ হয়।
• যুদ্ধের মূল কারণ ছিল পাঞ্জাব ও সিন্ধুর উর্বর ভূমির দখল এবং নদী ও জলস্রোতের নিয়ন্ত্রণ।
যুদ্ধের প্রধান পক্ষ:
১. সুদাস (ভরতা গোত্রের নেতা) → বিজয়ী পক্ষ
২. দশটি বিরোধী গোত্র → পরাজিত পক্ষ
দশটি গোত্রের মধ্যে প্রধান ছিল:
• পুরু
• দ্রুহু
• আনু
• তুর্বসু
• আলিন
• শিবা
• পাক্থা
• ভলানস
• ভৃষা
• ভালোসা
যুদ্ধের স্থান ও কৌশল:
• যুদ্ধটি পরুষ্ণী নদীর তীরে (বর্তমানে রাভি নদী) সংঘটিত হয়েছিল।
• সুদাসের প্রধান পুরোহিত বিশ্বামিত্র ছিলেন, তবে পরে সুদাস বাসিষ্ঠ মুনিকে প্রধান পুরোহিত করেন, যা বিশ্বামিত্রের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্বের কারণ হয়।
• বিশ্বামিত্র সুদাসের বিরুদ্ধে দশটি গোত্রকে একত্রিত করেন এবং যুদ্ধ শুরু হয়।
• কিন্তু সুদাসের সেনারা নদী ও পরিবেশের সুবিধা নিয়ে শত্রুদের পরাজিত করে।
ফলাফল ও প্রভাব:
• সুদাস ও ভরতা গোত্র বিজয়ী হয়, ফলে তারা পাঞ্জাব ও আশপাশের অঞ্চলগুলোর উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে।
• বৈদিক যুগে ভরতা গোত্র শক্তিশালী হয়ে ওঠে, যা পরবর্তীতে "ভারত" নামে পরিচিত হয়।
• আর্যদের মধ্যে রাজনৈতিক শক্তির নতুন বিন্যাস তৈরি হয়।
দাসরাজন্য যুদ্ধ ছিল প্রাচীন ভারতের প্রথম রেকর্ডকৃত যুদ্ধ, যা আর্য জাতির অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার লড়াই এবং গোষ্ঠীগত সংঘর্ষের প্রতিফলন। যুদ্ধের পর ভরতা গোত্র ভারতের রাজনৈতিক দৃশ্যপটে প্রভাব বিস্তার করে, যা পরবর্তী সময়ে ভারতের নামকরণে ভূমিকা রাখে।
Comments
Post a Comment