কলকাতার নামকরণ
কলকাতার বিভিন্ন জায়গার নামকরণের ইতিহাস
আমি শুরু করছি , আপনারাও তথ্য সংযোজন করুন 🙏
⭕বাগবাজার :
〰️〰️〰️〰️
বাগবাজার নামটা সম্ভবত 'বাঁকবাজার' থেকে এসেছে। গঙ্গার ওই বাঁকের মুখে বহুদিন বাজার বসত।
তথ্যসূত্র সুকুমার সেন।
⭕শ্যামবাজারের নামকরণ :
~~~~~~~~~~~~~
বর্তমান শ্যামবাজার অঞ্চলে অতীতে একটি বিখ্যাত বাজার ছিল। জন জেফানিয়া হলওয়েল এই বাজারটিকে চার্লস বাজার নামে অভিহিত করেন।
শেঠ ও বসাক পরিবারগুলি ছিল সুতানুটির আদি বাসিন্দা এবং শোভারাম বসাক ছিলেন অষ্টাদশ শতাব্দীর কলকাতার এক বিশিষ্ট বাঙালি ধনী ব্যবসায়ী
শোভারাম বসাক তাঁর গৃহদেবতা শ্যামরায়ের (কৃষ্ণ) নামানুসারে এই অঞ্চলের বর্তমান নামকরণটি করেন।
⭕হাতিবাগান :
〰️〰️〰️〰️〰️
হাতিবাগান নাম হয় সিরাজের আক্রমণের সময় হাতির ছাউনি এখানে পড়েছিল বলে।
অন্য একটি মত ও প্রচলিত আছে।
রাজা নবকৃষ্ণ দেবের স্থাবর সম্পত্তি শুধুমাত্র শোভাবাজার অঞ্চলে সীমাবদ্ধ ছিলোনা।
শোভাবাজারের রাজসীমানার যেই দিকে হাতিশালা ছিল বর্তমানে তা হাতিবাগান অঞ্চল , এমন একটি জনশ্রুতিও প্রচলিত।
⭕চিৎপুর :
〰️〰️〰️〰️
এখনকার কাশীপুর এলাকার গঙ্গার তীরের চিৎপুর অঞ্চলে অবস্থিত ‘আদি চিত্তেশ্বরী’ দুর্গামন্দির। কলকাতার বহু প্রাচীন রাস্তা গুলির মধ্যে চিৎপুর রোড উল্লেখযোগ্য। তখনও শহর ঠিক মতো গড়ে ওঠেনি, এখন যেখানে স্ট্যান্ড রোড, সেখান দিয়েই বইত হুগলি নদী। জঙ্গলাকীর্ণ ওই অঞ্চলে ছিল চিতু ডাকাতের আধিপত্য। কথিত আছে , ভাগীরথী-হুগলী নদীতে ভেসে আসা এক প্রকান্ড নিম গাছের গুঁড়ি দিয়ে চিতে ডাকাত এই জয়চন্ডী চিত্তেশ্বরী দুর্গা মুর্তি তৈরী করেন।
পরবর্তীকালে মনোহর ঘোষ নামে এক ব্যক্তি চিত্তেশ্বরী দুর্গার মন্দির তৈরি করে দেন। এই চিত্তেশ্বরী দুর্গার নামানুসারেই এঅঞ্চলের নাম চিৎপুর।
⭕সোনাগাছি :
〰️〰️〰️〰️〰️
রাতের রজনীগন্ধা আর সদ্যভাজা চোপকাটলেটের সুবাসে ভরা রাতপরীদের এলাকা অর্থাৎ কলকাতার কুখ্যাত নিষিদ্ধপল্লী সোনাগাছির নাম হয় সোনাউল্লাহ গাজী নামক এক পীরবাবার নামানুসারে।
ওই অঞ্চলে তার মাজার ছিল বলে শোনা যায়।
এই সোনা গাজীর মাজার নামের ব্যপারেও মতভেদ আছে। ঐ জায়গা মূলতঃ রাত্রিগমনের জন্য বেশী প্রসিদ্ধ, এর কাছাকাছি সমব্যবসায়ী স্ত্রীলোকদের অপর একটি পাড়া ছিলো বিডন স্ট্রীটের কাছে, যেখানে তুলনায় কম আয়ের মানুষ ও নিম্নবর্গীয়রা গমণ করতেন। দুই জায়গার নাম ছিলো যথাক্রমে সোনাগাছি আর রূপোগাছি - গমনকারী খদ্দেরদের আর্থিক বৈষম্যের প্রতি নির্দেশ করে।
⭕গরানহাটা :
〰️〰️〰️〰️〰️
গরান কাঠ নৌকা বোঝাই হয়ে এসে যেখানে বিক্রী ও গুদামজাত করা হত ওই জায়গা বর্তমানে গরানহাটা।
⭕কুমোরটুলি :
〰️〰️〰️〰️〰️〰️
শোভাবাজার রাজবাড়িতে দূর্গাপূজার প্রচলন হলে একেবারে প্রথমদিকে একদল কুমোর কে কৃষ্ণনগর থেকে আনা হত মূর্তি গড়ার জন্য।
তাদের রাজবাড়ির সন্নিকটে যে জায়গায় থাকার বন্দোবস্ত করা হয় সেই জায়গা বর্তমানে কুমোরটুলি নামে পরিচিত।
⭕ঠনঠনিয়া -
〰️〰️〰️〰️〰️
কথিত আছে ,
সেই এলাকায় কয়েকটি বাড়িতে লোহার কাজ হত। দিন-রাত সেখান থেকে ‘ঠন-ঠন’ শব্দ আসত। সেই লোহা পেটানোর শব্দের থেকেই নাম ঠনঠনিয়া।
আবার অনেকে বলেন , বহু পূর্বে ওই এলাকায় ডাকাতের উৎপাত ছিলো। ডাকাত আক্রমণের সম্ভাবনা দেখাদিলে , পল্লীবাসীবৃন্দকে সজাগ করতে ঠন ঠন করে মন্দিরের ঘন্টা বাজানো হতো , সেই থেকেই নাম ঠনঠনিয়া ।
⭕বৈঠকখানা রোডের নামকরণ :
~~~~~~~~~~~~~~~~~
১৭৮৪ সালের লেফট্যানেন্ট কর্নেল মার্ক উডের মানচিত্রে লালবাজার থেকে পূর্বদিকে তৎকালীন মারাঠা খাত (পরে সার্কুলার রোড এবং বর্তমানে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোড) পর্যন্ত এলাকার নাম ছিল "বয়টাকোন্না স্ট্রিট" (Boytaconnah Street)। নামটির উৎপত্তি "বৈঠকখানা" নামটি থেকে। সেকালে এই অঞ্চলের একটি প্রাচীন বটগাছের নিচে ব্যবসায়ীরা তাদের মালপত্র নিয়ে বিশ্রাম করতে বসতেন। শোনা যায়, জব চার্নক যখন কলকাতাকে বাণিজ্যকেন্দ্র হিসেবে নির্বাচিত করেন, তখন তিনিও এখানে আসতেন। সেই থেকেই জায়গাটির নাম হয় বৈঠকখানা। উডের মানচিত্রে বৈঠকখানা বটগাছটির উল্লেখও আছে। এর পূর্বদিকের এলাকাটি ছিল জলাভূমি। ১৭৯৪ সালে অ্যারোন আপজনের মানচিত্রেও বৈঠকখানার উল্লেখ আছে। তবে উক্ত মানচিত্রে যে স্থানটি দেখানো হয়েছে সেটি বর্তমান শিয়ালদহ স্টেশনের জায়গাটি। উডের মানচিত্রে কোনো বৈঠকখানা গাছের উল্লেখ না থেকলেও আপজনের মানচিত্রে আছে।
বউবাজার বা অধুনা বিপিনবিহারী গাঙ্গুলি স্ট্রিট থেকে মহাত্মা গান্ধী রোড পর্যন্ত এলাকার নাম এখনও বৈঠকখানা রোড। এই রাস্তার দক্ষিণ প্রান্তের বাজারটির নামও বৈঠকখানা বাজার।
⭕বউবাজারের নামকরণ :
~~~~~~
পূর্বতন ডালহৌসী স্কোয়ার (অধুনা বিনয়-বাদল-দীনেশ বাগ) থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত এই রাস্তাটি প্রসারিত ছিল। পরে এই রাস্তার নাম হয় বউবাজার স্ট্রিট। 'বউবাজার' শব্দটির উৎপত্তি নিয়ে দুটি মত রয়েছে। একটি মত অনুসারে, মাড়োয়ারি ব্যবসায়ী বিশ্বনাথ মতিলাল তাঁর বাঙালি পুত্রবধূকে একটি বাজার লিখে দেন, সেই বাজারটিই 'বহুবাজার' (হিন্দিতে 'বহু' শব্দের অর্থ 'পুত্রবধূ') এবং পরে তা বিকৃত হয়ে 'বউবাজার' নাম নেয়।তবে ঐতিহাসিকেরা এই ব্যবসায়ীর পরিচয় নির্ধারণে অসমর্থ হয়েছেন। তাই দ্বিতীয় মতে, এই অঞ্চলে বহু বাজার ছিল এবং সেই সব বাজারে বহু জিনিসপত্র বিক্রি হত। সেই থেকেই এই বাজারটি প্রথমে 'বহুবাজার' ও পরে তা বিকৃত হয়ে 'বউবাজার' নাম নেয়। প্রথম মত অনুসারে, উক্ত বাজারটি ছিল ৮৪ এ এলাকায় অধুনা নির্মলচন্দ্র স্ট্রিটের মোড়ে। দ্বিতীয় মতে যে বাজারগুলির কথা বলা হয়েছে সেগুলির অবস্থান ছিল ১৫৫-৫৮ এলাকায়।
পরে বউবাজার স্ট্রিটের নামকরণ করা হয় বিপিনবিহারী গাঙ্গুলি স্ট্রিট (স্বাধীনতা সংগ্রামী বিপিনবিহারী গাঙ্গুলির (১৮৮৭-১৯৫৪) নামানুসারে। ইনি ২৪ বছর ব্রিটিশ জেলে অতিবাহিত করেন। পরে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দেন)। যদিও এলাকার নামটি বউবাজারই থেকে যায়। বিপিনবিহারী গাঙ্গুলি স্ট্রিট থেকে মহাত্মা গান্ধী রোড পর্যন্ত এলাকার নাম এখনও বৈঠকখানা রোড।
⭕উল্টোডাঙ্গা
〰️〰️〰️〰️
এখানে খালের পাশে নৌকা বা ডিঙি উল্টো করে আলকাতরা লাগানো হত। তার থেকে উল্টোডিঙি অপভ্রংশ উল্টোডাঙ্গা ।
ওই দিকটা কলকাতার পূর্ব দিক। খাল দিয়ে ভাগ হয়েছে। এই খাল খুব সম্ভব বিদ্যাধরী। এখন খাল মজে হেজে গেছে। ডিঙি উল্টে রাখা একটা রেওয়াজ ছিল যাতে এপার ওপার করতে পারে লোকজন। এখানে অনেকদিন পর্যন্ত বড়ো নৌকা চলাচল করতে দেখা যেত। তখন ওটা বালুমাঠ।
তবে বাঁশ বা কাঠের ব্যবসার অন্য এক ইতিহাস এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। কিন্তু তা ধরে নামের ইতিহাস জানা যায় না।
⭕লালদীঘি :
〰️〰️〰️〰️〰️
জব চার্নকের আগমনের পূর্বেই ডিহি কলিকাতা গ্রামে লালদিঘির অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়।
লালদিঘির নিকটেই সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারের একটি কাছারি ও গৃহদেবতা শ্যামরায়ের মন্দিরটি অবস্থিত ছিল। অনুমান করা হয়, দোলযাত্রা উপলক্ষে রং খেলার পর এই দিঘির জল লাল হয়ে উঠত বলে দিঘিটি লালদিঘি নামে পরিচিত হয়। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি উক্ত কাছারিবাড়িটি প্রথমে ভাড়া ও পরে ক্রয় করে নিয়েছিলেন।
অবশ্য লালদিঘির নামকরণ নিয়ে অন্য কাহিনিও প্রচলিত আছে।
কেউ কেউ বলেন, পার্শ্ববর্তী ওল্ড মিশন চার্চের লাল রংটি এই দিঘির জলে প্রতিবিম্বিত হত বলে দিঘিটি লালদিঘি নামে পরিচিত হয়।
অন্যমতে, জনৈক লালচাঁদ বসাক এই দিঘিটি খনন করিয়েছিলেন। তাঁর নামানুসারেই দিঘিটির নাম হয় লালদিঘি।
নব্যভারত-এ প্রাণকৃষ্ণ দত্ত এই দিঘির অন্য একটি ইতিহাসের বর্ণনা দিয়েছেন। তাঁর মতে, গোবিন্দপুরের মুকুন্দরাম শেঠ বা তাঁর পুত্রেরা এই দিঘি খনন করিয়ে থাকবেন। এই দিঘির ধারে তাঁর কাছারি অবস্থিত ছিল। দোলের দিন রংখেলার পর দিঘির জল লাল হয়ে যেত বলে দিঘির নামকরণ হয় লালদিঘি।
⭕মলঙ্গা লেন –
〰️〰️〰️〰️〰️〰️
এই অঞ্চলে নুন তৈরি হত অ নুনের গোলা ছিল। নুনের কারবারিদের “মালঙ্গী” বলা হত। সেই থেকে এই অঞ্চলের নাম মলঙ্গা।
⭕শাঁখারিটোলা –
,〰️〰️〰️〰️〰️〰️
শঙ্খ থেকে শাঁখা বানানর কারিগররা বাস্ করতেন বলে শাঁখারিটোলা ।
⭕পার্শীবাগান –
〰️〰️〰️〰️〰️〰️
রুস্তমজী কাওয়াসজীর বাগান বাড়ি ছিল বলে আজ ওই অঞ্চলের নাম পার্শীবাগান।
⭕সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার –
〰️〰️〰️〰️〰️〰️〰️〰️
আগে নাম ছিল “নেবুতলার মাঠ” ।
তারও আগে নামছিল “সেন্ট জেমস স্কোয়ার”।
একদম পূর্বে নাম ছিল হুজুরিমল ট্যাঙ্ক। পাঞ্জাবি ব্যবসায়ী ৫৫ বিঘার অপর পুকুর খনন করেন । লোকে বলতেন হুজুরিমল ট্যাঙ্ক বা পাদ্মপুকুর।
পরে পুকুর ভরাট করে হয় মুচিপাড়া থানা আর কেরানিবাগান।
পরে এই কেরানিবাগানের নামহয় নেবুতলা বা লেবুতলার মাঠ। আজ তা শহীদ সন্তোষ মিত্রর নামে সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার । হুজুরিমলের পুকুর বুজিয়ে তৈরী হয় বাগান। এই বাগানে কম্পানীর পর্তুগীজ কেরানিরা বাস করতেন। সেই থেকে এর নাম হয় কেরানিবাগান।
⭕ন্যাড়া গীর্জা :
〰️〰️〰️〰️〰️
সেন্ট জেমস স্কোয়ার বা ন্যাড়া গির্জার মাঠ – ১৮১৪ সালে কলকাতার প্রথম বিশপ টমাস ফ্যানশ মিডল্টন থিক আজ যেখানে রাজরাজেশ্বরী স্কুল অ শশিভূষণ দে স্কুল সেইখানে ছিল সেন্ট জেমস গির্জা। চুড়াটি নির্মাণ করা সম্ভব হয় নি (মতান্তরে বাজ পড়ে ভেঙ্গে জায়)তাই লকে এটিকে ন্যাড়া গির্জা অ পার্শ্ববর্তী মাঠকে ন্যাড়া গির্জার মাঠ বলতেন। পরে গির্জাটি লোয়ার সার্কুলার রোডে স্থানান্তরিত করা হয়।
সেন্ট জেমস গীর্জা ছিল পূর্বতন সেন্ট জেমস স্কোয়ার এ। গীর্জা টির চূড়া ভাঙা ছিল । তাই লোকমুখে ন্যাড়া গীর্জা । বয়স্ক মানুষের মুখে মুখে এই নামই চলত। এ পাড়ার বৃদ্ধ মানুষ জন আজও ন্যাড়া গির্জার বাজার ই বলেন লেবুতলার বাজার কে।
⭕লেবুতলা -
〰️〰️〰️〰️〰️
জনৈক্য ভুবন পাল ওখানে একটি বাজার বসান যা ভুবনপালের বাজার বা ন্যাড়া গির্জার বাজার বা নেবুতলার বাজার নামে পরিচিত।
অসংখ্য লেবুগাছ থাকায় এই কেরানিবাগানের নাম হয় লেবুতলা বা নেবুতলা।
⭕এন্টালি বা ইন্টালী –
〰️〰️〰️〰️〰️〰️〰️
পূর্ব নাম 'ডিহি ইটালি"।
হেঁতাল গাছের বন থাকায় হেন্তালি সেখান থেকে ইটালি,ইন্টালী ও এন্টালি।
মতান্তরে , ওই এলাকায় ইট ও টালির ব্যবসা থাকায় নাম হয় ইটালি।
⭕টালিগঞ্জ -
〰️〰️〰️〰️〰️
মেজর উইলিয়াম টলি নামে সাহেব ১৭৭৫-৭৬ সালে কলকাতার সঙ্গে অসম ও পূর্ববঙ্গের যোগসূত্র হিসাবে একটি নালা খনন ও ড্রেজ করার কাজ শুরু করেন। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি টলি সাহেবকে এই নালা দিয়ে যাতায়াতকারী নৌকাগুলি থেকে টোল আদায় ও নালার ধারে একটি গঞ্জ বা বাজার স্থাপনের অনুমতি দিয়েছিল। ১৭৭৬ সালে এই প্রকল্পটি সম্পন্ন হয় এবং পরের বছরেই এটি সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। এই টালির নালাটি টলি সাহেবের নামেই টালির নালা (ইংরেজিতে টলি’জ ক্যানেল) হিসেবে পরিচিতি পায়। সাহেবের প্রতিষ্ঠিত বাজারটি টালিগঞ্জ নামে পরিচিত হয়। নালার পূর্ব পাড়ে বর্তমান টালিগঞ্জ রোডের কাছেই কোথাও এই বাজারটি অবস্থিত ছিল। পরবর্তীকালে টালির নালার দুধারে একটি বিস্তীর্ণ অঞ্চল টালিগঞ্জ নামে অভিহিত হয়ে থাকে।
⭕পোস্তা :
〰️〰️〰️〰️
পোস্তা অঞ্চলের নামকরণ করা হয় হুগলি নদীর পোস্তা ঘাটের নামানুসারে। সেকালে এই অঞ্চলটি বাঙালি ব্যবসায়ী ও ব্যাংকারদের বসতি অঞ্চল ছিল। এঁদের ঐশ্বর্য ও সম্পদ ছিল বাংলার ইতিহাসে কিংবদন্তি। এঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন লক্ষ্মীকান্ত ধর ওরফে নুকু ধর। তিনি হুগলি জনপদের পতনের পর সেখান থেকে সুতানুটিতে এসে বসতি স্থাপন করেছিলেন। কথিত আছে, তিনি ইংরেজ শাসকদের মারাঠাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য নয় লক্ষ টাকা ধার দিয়েছিলেন। তিনি রবার্ট ক্লাইভকে নিয়মিত টাকা ধার দিতেন। জানা যায়, নবকৃষ্ণ দেব তাঁর কাছে চাকুরিপ্রার্থী হয়ে এলে, তিনিই নবকৃষ্ণ দেবের সঙ্গে ইংরেজদের পরিচয় করিয়ে দেন এবং তারা তাঁকে চাকুরি দেন।
নুকু ধরের দৌহিত্র সুখময় রায় তাঁর দাদামশায়ের সম্পত্তির অধিকারী হয়েছিলেন। কারণ, তাঁর মা ছিলেন নুকু ধরের একমাত্র সন্তান এবং তিনি ছিলেন তাঁর দাদামশায়ের একমাত্র দৌহিত্র। ইংরেজরা নুকু ধরকে ‘রাজা’ উপাধি দিতে গেলে, নুকু ধর তাঁর দৌহিত্রকে সেই উপাধি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। সেই অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সুখময় রায় রাজা উপাধি পান এবং পোস্তা রাজবাড়ি স্থাপন করেন। যদিও বর্তমানে শহরের উন্নয়ন ও রাস্তা নির্মাণের জন্য এই রাজবাড়ির কিয়দংশ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। তিনটি প্রাচীন বাড়ি এখনও এখানে রয়েছে। এগুলি হল: রাজবাড়ি, লালবাড়ি ও ঠাকুরবাড়ি।
#kolkatadiaries
Comments
Post a Comment