রবীন্দ্রনাথ
ন্যায়-অন্যায় প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিন্তাভাবনা তার সাহিত্য, প্রবন্ধ, নাটক এবং চিঠিপত্রে বারবার উঠে এসেছে। তিনি ছিলেন মানবতাবাদী, এবং তার দৃষ্টিতে ন্যায়-অন্যায় বিচার ছিল ব্যক্তিস্বাধীনতা, বিবেক ও মানবিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে। নিচে তার চিন্তার কিছু মূল দিক তুলে ধরা হলো:
১. নৈতিক বিবেক ও মানবতা
রবীন্দ্রনাথ মনে করতেন, ন্যায়-অন্যায়ের মাপকাঠি কোনো নির্দিষ্ট ধর্মীয় বা সামাজিক নিয়ম নয়, বরং মানুষের বিবেক। তার মতে, মানবতার বিরুদ্ধে কিছুই ন্যায় হতে পারে না। তিনি লিখেছেন —
"ধর্মের মূল বস্তু নৈতিকতা, এর মধ্যে না থাকিলে সে মেকি ধর্ম" (প্রবন্ধ: 'ধর্ম ও সমাজ')।
২. সমাজ ও ব্যক্তির দ্বন্দ্ব
রবীন্দ্রনাথ দেখেছেন যে সমাজ অনেক সময় ব্যক্তিকে অন্যায়ের মধ্যে ঠেলে দেয়, বিশেষ করে যখন সমাজ তার নিজের নিয়ম বা রীতির অন্ধ অনুসরণে চলতে চায়। নাটক 'রক্তকরবী'-তে তিনি দেখিয়েছেন কীভাবে ক্ষমতা ও লোভ অন্যায়ের জন্ম দেয়।
৩. নৈতিক সাহস ও প্রতিবাদ
রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস করতেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ন্যায়বোধেরই অংশ। উপন্যাস 'ঘরে বাইরে'-তে বিমলা ও নikhilesh-এর চরিত্রের মাধ্যমে তিনি দেখিয়েছেন সত্য ও মিথ্যার টানাপোড়েন, এবং কীভাবে ন্যায় অবস্থান দৃঢ় সাহস দাবি করে।
৪. আত্মবিকাশের মধ্যে ন্যায়
তিনি বিশ্বাস করতেন মানুষ যদি নিজের মধ্যে সত্যিকারের বিকাশ ঘটায়, তবে সে অন্যায় করতে পারে না। আত্মিক উন্নয়ন ও সৌন্দর্যবোধের মাধ্যমে ন্যায় প্রতিষ্ঠা সম্ভব — এ ভাবনা তার কাব্যে ও শিক্ষাদর্শে বারবার উঠে এসেছে।
৫. রাষ্ট্র ও ন্যায়বিচার
রাজনীতি ও উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে রবীন্দ্রনাথের অবস্থানও ন্যায়-অন্যায়ের এক বড় দৃষ্টান্ত। জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের পর তিনি নাইটহুড ফিরিয়ে দেন, যা ছিল এক শক্তিশালী ন্যায়সংগত প্রতিবাদ।
ন্যায়-অন্যায় প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিন্তাভাবনা তার সাহিত্য, প্রবন্ধ, নাটক এবং চিঠিপত্রে বারবার উঠে এসেছে। তিনি ছিলেন মানবতাবাদী, এবং তার দৃষ্টিতে ন্যায়-অন্যায় বিচার ছিল ব্যক্তিস্বাধীনতা, বিবেক ও মানবিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে। নিচে তার চিন্তার কিছু মূল দিক তুলে ধরা হলো:
১শাহজাদপুর সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাবনা ছিল গভীর ও সংবেদনশীল। তিনি এই স্থানটির সঙ্গে আবেগঘনভাবে জড়িত ছিলেন। জমিদারির কাজের সূত্রে তিনি শাহজাদপুরে দীর্ঘ সময় কাটিয়েছিলেন এবং এই জায়গা তাঁকে প্রকৃতি, মানুষ ও জীবনকে নতুন দৃষ্টিতে দেখার সুযোগ করে দিয়েছিল।
তাঁর ভাবনার কিছু দিক:
প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা:
শাহজাদপুরের প্রকৃতি—পুকুর, নদী, মাঠ—তাঁর মনে এক ধরনের প্রশান্তি ও কাব্যিক অনুভূতি জাগিয়েছে। তিনি তাঁর অনেক চিঠিতে এই প্রকৃতির বর্ণনা করেছেন, বিশেষ করে "চিঠিপত্র" গ্রন্থে তা স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে।
মানুষের জীবনযাপন:
গ্রামীণ জনজীবনের সরলতা, দুঃখ-কষ্ট, এবং সৌন্দর্য তিনি গভীরভাবে উপলব্ধি করেছিলেন। জমিদারি কাজ করতে গিয়ে তিনি সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশা বুঝতে শিখেছিলেন এবং সে সব তাঁর ভাবনা ও রচনায় প্রতিফলিত হয়েছে।
সাহিত্যিক অনুপ্রেরণা:
শাহজাদপুরে বসেই তিনি অনেক সাহিত্যকর্ম রচনা করেছেন। এখানে তিনি একাধারে কবিতা, গান এবং চিঠিপত্র লিখেছেন, যেগুলোর মধ্যে মানবতা, প্রকৃতি ও জীবনদর্শনের এক মিশ্র রূপ পাওয়া যায়।
Comments
Post a Comment