সিঁড়ি

।। সিঁড়ি।।
দেবপ্রসাদ জানা
২৩,৪,২০২০

নিজের লেখা গুলো নিয়ে
একটু একটু করে উপরে উঠতে চাই বুঝলেন।
কিন্তু কি করি? সেই  সিঁড়িটাই নেই কাছে।
মানে আমার ওঠার সিঁড়িটাই নেই।
কিছুদিন আগে একটা বাঁশের তৈরী সিঁড়ি পেয়েছিলাম।
সেটা এনেও ছিলাম।
একটু পুরানো, ভারি লোক উঠলে ভেঙ্গে যাবে হয়তো।
কিন্তু আমি ! না না আমি একদম রোগা পাতলা।
অনায়াসে উঠতে পারব ওপরে।
আস্তে আস্তে ধরে ধরে উপরে।
তো ঘরের বাইরে সেটা রেখে ভাবলাম কাল থেকে শুরু করব।
ওপরে ওঠার রাস্তা ধরবো।
হাতে অনেক লেখা।
কবিতা গল্প উপন্যাস প্রবন্ধ যা ছিল রাখা।
কিন্তু হায়।
সকালে উঠে দেখি বউ ওটাকে ভেঙ্গে
কেমন একটা আদুরে ঢঙে
"বাবা সংসারের জন্য এত ভাবো জানতাম নাতো"
আমার ওপরে ওঠার সিঁড়ি
হাঁড়ির নিচে জ্বলে।
আর একদিন  ইলেকট্রিক সাপ্লাই এর বহুদিনের
জং ধরা লোহার সিঁড়ি
আনলাম আমি তড়িঘড়ি
ভাবলাম এবার হবে না জ্বালানি।
কাল সকালে ঘষেমেজে
উঠব আমি সেজেগুজে
কিন্তু তাও পারি নি।
সকাল বেলা বাবার হাতে
ভেঙেচুরে করাঘাতে
বিক্রি হয়ে গেল।
বাজার শাক সবজি চাল ডাল
আমার তখন কি যে হাল
বলব কেমনে?
বহুদিন কেটে গেল বাড়ল যন্ত্রনা।
চেষ্টা করেও তেমন সিঁড়ি আরতো পেলাম না।
একদিন এক মন্দিরের সামনে
অনেক সিঁড়ির ধাপ।
ওঠতে শুরু করে দিলাম
শেষকালে এক পান্ডা পেলাম
বলল টাকা চাই।
টাকা ছাড়া এ মন্দিরে কোন প্রবেশ নাই।
ফিরে এলাম প্রনাম দিয়ে
মনের ব্যথা মনে নিয়ে
আর কেমনে যাই।
শুন্য পকেট অভাব ভীষন
নুন আনতে পান্থা ফুরোয় আর লেখা ছাপবে না।
বড় হওয়ার সিঁড়িটা বোধ হয়
আমার জন্য রাখা নয়।
হাল ছেড়ে মাথা নেড়ে, আর উঠব না।
লোভ কি আর যায়রে লোভার
ওপরে ওঠার সখ যে আমার।
কিছুতেই গেল না।
একদিন গেল দুদিন গেল।
মন ওঠার দুয়ার পেল।
রাইটার্সে সামনে।
উঠতে লাগলাম মনের সুখে
অর্ধেক পথে দেবে না রুখে।
পেলাম এমন সিঁড়ি।
হঠাৎ এক সাদা জামায়
মাঝপথে ধরল আমায়
কোথায় যাবেন দাদা?
রঙের নাম বলে ফেলুন।
নইলে উঠতে দেবো না।
বললাম দাদা, রঙ আনিনি সঙ্গে করে।
হাতে আমার,নিজের লেখা গল্প পদ্য
লিখে এনেছি সদ্য সদ্য
উঠতে দাও না ভাই।
এখানে চাই রঙের লোক
রঙ ছাড়া প্রবেশ নেই।
হতাশ হলাম। ফিরে এলাম
বৃথাই প্রয়াস।
লেখাকে নিয়ে ওপরে ওঠা এ জীবনে আর হলো না।





Comments

Popular posts from this blog

দুঃখটাকে এবার

মহাঋষি শুক্রাচার্য্য

গিরিশ চন্দ্র ঘোষ