Posts

Showing posts from July, 2022

মহাভারতম্ সভাপর্ব-৮

 সভাপর্ব-৮ ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয় বৈশ্য সকল স্মরণে। মিত্র নও তুমি,শত্রু ভেবেই এসেছি। কৃষ্ণ আমি পাণ্ডুপুত্র এই দুইজনে। ছদ্মবেশ ধরে মালা চন্দন পরেছি। পাঠাইব মৃত্যু লোকে শপথ নিয়েছি। ক্ষত্রিয় রাজারে বন্দী করে আহাম্মক - বলি দিবি অর্বাচীন, বুঝতে পারছি। ছেড়ে দে ওদের ওরে রক্ষ ভয়ানক। মূর্খ বাসুদেব শিশু এরা পাণ্ডু পুত্র জরাসন্ধ ভীত নয় ওরে প্রতারক। ছদ্মবেশ ছলনায়,তোরা শিশু মাত্র। যুদ্ধ করে জয়ী হয়ে, হয়েছি ধারক। আয় ভীমার্জুন,দেখি বাহুবল তোর। প্রচণ্ড লড়াই চলে চৌদ্দ দিন ভর।

মহাভারতম্ সভাপর্ব-৭

  সভাপর্ব-৭ রাজধানী গিরিব্রজ বেষ্টিত পর্বতে। দূর্গম দূর্ভেদ্য তার প্রবেশের পথ। সৈন্যের পাহারা ঘেরা,পাঁচটি পর্বতে। সম্মুখ যুদ্ধের হেথা, নাই কোনো পথ। সন্তর্পণে ছদ্মবেশে,মোরা তিনজন। উঠিল ত্রিমূর্তি সেই চৈত্যক পর্বতে। শৃঙ্গ তার ধ্বংস করে,করিলেন পণ। রাজধানী গিরিব্রজ,নিতে হবে হাতে। স্নাতক ব্রাহ্মণ বেশ, শরীরে চন্দন। যাজ্ঞিক যাজক ঋষি জরাসন্ধ দেখে। অগুরুর গন্ধমাখা, শাস্ত্রজ্ঞ ব্রাহ্মণ। বিশ্রাম করতে দেয় যজ্ঞালয়ে রেখে। পর্বতের শৃঙ্গ ভেঙ্গে কেন আগমণ। স্নাতক ব্রাহ্মণ তবু এই আচরণ।

মহাভারতম্ সভাপর্ব-৬

 সভাপর্ব-৬ মনকষ্টে মহারাজ ফেলেন জঙ্গলে। জরা নামক রাক্ষসী দিয়েছেন জুড়ে। আকাশ ফাটানো শব্দে শিশুটি কাঁদিলে দিয়ে গেল সেই শিশু,রানীদের ক্রোড়ে। জরাসন্ধ নাম তার,জরা দিলো তারে। জরাসন্ধে রাজ্য দিয়ে,বনে গেল রাজা। জরাসন্ধ অচিরেই ,রাজ্য জয় করে। মামা কংস বধ করে,দেশ পেল সাজা। হংস ডিম্বকের মৃত্যু,কংসের মরণ। সঙ্গহীন জরাসন্ধ হ্রিংস হলো তাই। সঠিক সময় এলো,করি আবেদন। জরাসন্ধের নিধনে,মোটে কষ্ট নাই। শ্রীকৃষ্ণের আবেদনে,অতি কৌতূহলী। যুদ্ধের উল্লাসে মেতে,পঞ্চত্বে কৌশলী।

মহাভারতম্ সভাপর্ব-৫

 সভাপর্ব-৫ হে কৃষ্ণ বাসুদেব,কে এই জরাসন্ধ? এত প্রতিপত্তি কেন? প্রথিত  সর্বত্র, হে ধর্মরাজ,মগধ দেশের  অলিন্দ। বৃহদ্রথ রাজার সে একমাত্র পুত্র। পুত্রহীন বৃহদ্রথ, তার দুই  রানী। মনকষ্টে দিন যায় মগধ রাজের। চণ্ডকৌশিক এলেন,প্রচারিতে বানী। নৃপতি কহিল তার,জীবন কষ্টের। আম্রবৃক্ষের তলায় বসিয়া কৌশিক। ধ্যানমগ্ন হলো সবে,কোলে পড়ে ফল। সেই আম খেতে দিবে কহে ঐকান্তিক। আবেগে উচ্ছাসে রাজা,হইল চঞ্চল। দুইরানী ভাগকরে সেই আম খান। দুজনের আধা আধা হইল সন্তান।

মহাভারতম্ সভাপর্ব-৪

 সভাপর্ব-৪ পুণ্ড্রুক ভীষ্মক পুণ্ড্রু কিরাত করভ। বড় বড় রাজা সব তারই অধীনে। কিছু রাজা পালিয়েছে দেবতা গন্ধর্ভ। হংস,ডিম্বক,দুজন বিশ্ব দেবে এনে। বাসুদেব কহে সব পূর্ব ইতিহাস। মথুরা হতে পালাই,দুজনেই কবে। যুদ্ধে মৃত একজন, সেইজন হ্রাস। একজন আত্মহত্যা,যমুনায় ডুবে। হে মাধব বলে দাও কেমনে মারিব? ছিয়াশী জন রাজাকে বন্দীও করেছে, জরাসন্ধের মরণ কেমনে দেখিব। আরো চোদ্দজন পেলে,বলি দেয় পাছে। ছিয়াশী বন্দীকে যিনি করিবে উদ্ধার। সম্রাট হবেন তিনি,মিত্র হবে তার।

মহাভারতম্ সভাপর্ব -৩

 সভাপর্ব-৩ সভাঘরে নারদের  হলো আগমন। রাজসূয় যজ্ঞ করে,স্বর্গে পাবে স্থান । কহিল নারদ এসে, কহে বিবরণ। সেইমতো যুধিষ্ঠির, শ্রীকৃষ্ণে জানান। রাজসূয় যজ্ঞ করা, না সহজ নয়। পরামর্শ নিতে হবে শ্রীকৃষ্ণের থেকে। তিনি ছাড়া এই কাজে,লাগে বড় ভয়। রাজসূয় যজ্ঞ করে,যাবো স্বর্গলোকে। কৃষ্ণের সম্মতি পেয়ে,যজ্ঞ হলো শুরু। মগধরাজের বাধা, প্রস্তর প্রাকার। জরাসন্ধ পৃথিবীর, শ্রেষ্ঠ  মহাগুরু। দন্তবক্র ভগদত্ত ,মেনে গেছে হার। শিশুপাল সেনাপতি বীর বহ্নিশিখা। বশীভুত সব রাজা, পাষাণ পরিখা।

মহাভারতম্ সভাপর্ব-২

 সভাপর্ব-২ মহারাজ যুধিষ্ঠির অতি আনন্দিত। এমন একটা করো নাম চারিদিকে। অলৌকিক সভাঘর সুবর্ণ মণ্ডিত। দাও দেখি করে এই,অচিন মুল্লুকে। হাসিয়া কহে দানব,এই মাত্র কাজ। দেবস্বর্গ ইন্দ্রপুরী লজ্জা পাবে দেখে। এমনই সভাঘরে করে দেবো কাজ। রত্নখচিত সুচারু,সম দেবলোকে। অম্বুনিধি রত্নযোগে বিরাজে সভায়। ভ্রম হয় তা দর্শনে সম্মুখে পাথার। কোথাও অমৃতকুম্ভ দেবদেবী খায়। মৃগরাজ সভামাঝে সিন্ধু করে পার। স্বর্গ হতে দেবদেবী সকলে আসিল। সবে মিলে কিছুদিন আনন্দে কাটিল।

মহাভারতম্ সভাপর্ব-১

 সভাপর্ব-১ খাণ্ডব দাহের পরে,যারা বাঁচিলেন। নমুচির ছোট ভাই সে ময়দানব। তক্ষক নাগের পুত্র,নাম অশ্বসেন। চারটি পক্ষী শাবক, বড়ই আজব। অগ্নিদেব বলিলেন,বেঁচে আছো যারা। যাও যাও যেথা খুশি,আপন আনন্দে। যমুনার তীরে এসে,বসিলেন তারা। ময়দানবের যেন, হয় নাগো নিন্দে।   হে অর্জুন কথা দাও,দাও প্রতিশ্রুতি। মরণের হাত হতে, রক্ষা পাই আমি, আদেশ করুন মোরে,করি রাতারাতি। কহে কৃষ্ণ উপকার,প্রতিদানে নমি। বলি দানব কুলের, বিশ্বকর্মা আমি। আমি কি করতে পারি,জানে অন্তর্যামী।

মহাভারতম্ আদিপর্ব-৬০

 আদিপর্ব-৬০ পার্থের গাণ্ডীব এলো,কপিধ্বজ রথ। অক্ষয়তৃণ অস্ত্রের সাথে তৈরী তারা। শ্রীকৃষ্ণের সুদর্শণে পুরে মনোরথ। কৌমুদকী গদা নিয়ে ইন্দ্রে দেবে তাড়া। জ্বলিছে খাণ্ডববন লেলিহান শিখা। দেবদেবী ইন্দ্রসহ প্রতিরোধ করে। কৃষ্ণার্জুনের বীরত্বে,কিছু আছে শেখা। তাদের সাহায্যে অগ্নি ভষ্মীভূত করে। যত পশুপাখি আর জলাশয়ে মৎস্য। এগুলি ভক্ষণে অগ্নি তষ্ট করে মন। সব ক্লেশ দূরে গেল, বলে গেল বৎস্য। বড় খুশি আমি আজ,রব আমরণ। ইন্দ্র অগ্নি খুশি হয়ে দৈব্য অস্ত্র দেবে। চিরস্থায়ী বন্ধু রবে, নামেনাম কবে।

মহাভারতম্ আদিপর্ব-৫৯

 আদিপর্ব-৫৯ শ্বেতকি নামক রাজা যজ্ঞ করে সদা ব্যাবাক বছর ধরে, অগ্নি ঘৃত খায়। খেতে খেতে পেটে তার,সমস্যা সর্বদা। যজ্ঞের ব্রাহ্মণেরাই ছাড়িয়া পালায়। অসমাপ্ত যজ্ঞ দেখে,কষ্ট মনে ভরে। তপস্যায় বসে গেল, নিজেই নৃপতি। আরাধ্য দেবতাশিব তারে তুষ্ট করে। দূর্বাসার আগমনে যজ্ঞের সমাপ্তি। বার বছরের যজ্ঞে, ঘিয়ের আহুতি  অগ্নির উদরে চলে ভীষণ উৎপাত। খাণ্ডব বনের দাহে প্রাণীমাংসে তৃপ্তি। সাত সাতবার ইন্দ্র দিয়েছে আঘাত। দুইজনেই নিরস্ত,অস্ত্র কিছু নাই। সাহায্য করিতে পারি যদি অস্ত্র পাই।

মহাভারতম্ আদিপর্ব-৫৮

 আদিপর্ব-৫৮ অর্জুনের অভিমন্যু সুভদ্রার প্রাণ। পাণ্ডবের পাঁচ পুত্র, দ্রৌপদী দিলেন। প্রতিবিন্ধ্য, সুতসোম,ক্রমে বিদ্যমান। শ্রুতকম্মা শতানীক আর শ্রুতসেন। হাসি খুশি চলিয়াছে,জীবন প্রবাহে। যমুনায় জলকেলি করিছে মেয়েরা, খাণ্ডববনের মধ্যে, কৃষ্ণার্জুন দোহে গাছের তলায় বসে,গল্পে আত্মঠহারা। অতিকায় দীর্ঘদেহী ব্রাহ্মণের বেশে। কহিল ক্ষুধার্ত নয়, ক্ষুধা মন্দা মোর। এই বন খেতে চেয়ে,ঘুরে গেছি শেষে। তক্ষক নাগের বাস,ইন্দ্র বন্ধু ওর। জল ঢেলে মাটি করে,প্রয়াস সদাই। তৃপ্তিটা পেতাম যদি,পোড়া মাংস পাই।

মহাভারতম্ আদিপর্ব-৫৭

 আদিপর্ব-৫৭ সুভদ্রাকে চুরি করে পালাল অর্জুন  দ্বারকায় কলরব করে মহারথী। ঘৃণিত কর্ম করিলি,কেন রে অর্জুন? আদর যত্নের মূল্য দিলে এই ভাতি। সেজে গেল অস্ত্রসস্ত্র,সেজে গেল সেনা। অর্জুনের সব দম্ভ চর্ণ হবে আজ। দ্বারকার মান কেন সে রাখবে না? মূল্য তারে দিতে হবে,দ্বারকার লাজ। অর্জুনের অন্যায়টা দেখিলে কোথায়? জোর করে তুলে নিয়ে বিয়েটা করেছে। ক্ষত্রিয়ের ধর্ম তাও,ভূলে গেলে হায়। গুণবান মহাবীর সুভদ্রা পেয়েছে। যাও যাও নিমন্ত্রণ করো এইবার। ইন্দ্রপ্রস্তে দিয়ে এসো নানা উপহার।

মহাভারতম্ আদিপর্ব-৫৬

 আদিপর্ব-৫৬ চিত্রবাহনের কন্যা  নাম চিত্রাঙ্গদা বিবাহ বন্ধনে বেঁধে,প্রেমের অঙ্কেতে। বভ্রুবাহনের জন্ম দিলো চিত্রাঙ্গদা। খবর পেয়ে শ্রীকৃষ্ণ,নিয়ে গেল সাথে। প্রভাসতীর্থ হইতে রৈবভক শৃঙ্গে দুজনে উৎসবে মাতে আরো কিছু দিন। কৃষ্ণের বোন সুভদ্রা রূপে গুণে রঙে পাগল করিল তারে প্রেম অন্তহীন। কৃষ্ণ কহে ওহে পার্থ কিযে এত দেখো তুমি যা ভাবছ মনে, সেটিতো হবে না। আদরের বোন মোর,লজ্জাটজ্জা রাখো। পছন্দ হয়েছে তারে,মন মানবে না। হে মহাবীর ক্ষত্রিয়, তুলে নিয়ে যাও। বিবাহ করিও তারে, সুখ শান্তি পাও।

মহাভারতম্ আদিপর্ব-৫৫

 আদিপর্ব-৫৫ অর্জুনের বনবাস হইল নিশ্চিত। অসহায় ব্রাহ্মণের করে উপকার, কেমনে পাপের ভাগে,হইল পতিত। শর্ত ভঙ্গ হয় কিসে কহ একবার। যুধিষ্ঠির কহে ভাই, অর্জুন আমার। বনবাসে নাই গেলে,ক্ষতি কিছু নাই। একা তুমি বনবাসে,বারো বর্ষ পার। ভীত তুমি নও জানি,তবু ভয় পাই। বিদায় নিয়ে অর্জুন,গেল দেশ ছাড়ি। ঘুরেফিরে হরিদ্বারে পৌছিল আসিয়া। কৌরব্য নাগের কন্যা, অতীব সুন্দরী। বিবাহ করিল তারে, পরিচয় দিয়া। প্রথম সন্তান তার নাম ইরাবান। উলূপীর প্রিয়পুত্র অর্জুন সমান।

মহাভারতম্ আদিপর্ব-৫৪

 আদিপর্ব-৫৪ পঞ্চপাণ্ডবেরা আর পাঞ্চালী দ্রৌপদী। সুখে তারা বাস করে আপন আনন্দে। একটি বছর করে,পাইবে দ্রৌপদী। পাঁচ ভাই শলা করি থাকে মহানন্দে। অস্ত্রাগারে যুধিষ্ঠির মিলনের কালে। প্রয়োজনে অর্জুনের শর্ত ভঙ্গ হলো। নিরালায় তাহাদের,প্রেমালাপ চলে। অকস্মাৎ ই অর্জুন,সেখানে আসিল। অসহায় ব্রাহ্মণের, বড় অভিযোগ। অর্জুন থাকিতে হেথা,গরু চুরি হলো? অস্ত্রাগারে অস্ত্র নিতে আসিতে দুর্ভোগ। একবর্ষ বনবাস তারে যেতে হলো। যুধিষ্ঠির কহিলেন বৃথা চিন্তা করো। অকারণে আসো নাই তবু জেদ করো।

মহাভারতম্ আদিপর্ব-৫৩

 আদিপর্ব-৫৩ শ্রীকৃষ্ণ বিদুর সহ গেল বলরাম। তাহাদের দেখে তারা আনন্দে আকুল। পঞ্চপাণ্ডবেরে দেখে করিল সুনাম। কাকা বিদুরের মন, বড়ই ব্যকুল। কিছুদিন মহানন্দে কাটিল সেথায়। সকলেরে রথে করে, স্বযত্নে আনিল। অর্ধেক রাজ্যের ভার পাণ্ডবেরা পায়। খাণ্ডবপ্রস্থের বনে, পুরী বানাইল। ইন্দ্রপ্রস্থ নাম তার হলো রাজধানী। দুই রাজ্য দুই জনে হলো ভাগাভাগি। কৃষ্ণ বলরাম মিলে কাটিল বনানী। বাস যোগ্য রাজপাট,হলো তার লাগি। সব কাজ সমাপণ করি ঘনশ্যাম। দ্বারকায় ফিরে যান হলধর রাম।

মহাভারতম্ আদিপর্ব-৫২

 আদিপর্ব-৫২ সভা ডেকে ধৃতরাষ্ট্র কহিলেন তিনি কহ ভীষ্ম পাণ্ডবদের করিব কি আমি? জীবিত তাদের জেনে ধরে যদি আনি রাজ্য দিয়ে ভাগ করি মন্দ কবে তুমি? অমতের কিছু নাই,কৌরব পাণ্ডব। মোর কাছে দুইজনে,সমান সমান। তাদের ও অধিকার করি অনুভব। নিমন্ত্রণ করে তার,করি সমাধান। পুত্র আর পুত্রবধু কষ্ট পায় ঢের। এইক্ষণে আপনার অনুমতি নিয়ে। পাঞ্চাল নগরে যাব,আনিব তাদের। প্রিয় পুত্র দুর্যোধন, কেন আছ চেয়ে। গৃহহারা রাজ্যহারা স্থান পেয়ে যাবে। সাঙ্গ হবে গৃহযুদ্ধ, লোকে ধন্য কবে।

মহাভারতম্ আদিপর্ব-৫১

 আদিপর্ব-৫১ এদিকে খবর গেছে হস্তিনানগরে। পাঁচভাই কুন্তী সব জীবিত এখনো। দুর্যোধন ক্রুদ্ধ হলো, এমন খবরে। হস্তিনাপুরের দুর্ভোগ,কাটেনি এখনো। ধৃতরাষ্ট্র শুনে কহে, আনন্দের কথা। যাও বিদুর তাদের ডেকে আনো ঘরে। বড় স্নেহ করি আমি, দুর্যোধন যথা। এমন সুবুদ্ধি যেন, মনে থাকে ভরে। বিদুরের কথা শুনে কহে দুর্যোধন, শত্রুর উন্নতি বুঝি বড় মোহময়। বিপদ আসিবে ঘরে,পাবে সিংহাসন। ভাতুস্পুত্রের প্রতি কি এতই সদয়? ওরে পুত্র সুযোধন, বুদ্ধিমান তুমি আদরের নামে তোরে,বৃথা ডাকি আমি?

মহাভারতম্ আদিপর্ব-৫০

 আদিপর্ব-৫০ দ্রুপদ রাজার মনে চিন্তা ছিল সাথি। কন্যা বুঝি অপাত্রেই হয়ে গেল দান। কারা ওরা স্বয়ম্বরে, ক্ষত্রিয়ের ভাতি। লক্ষ্যভেদে অনায়াসে,যোদ্ধার সমান। তবুও বিবাহ হবে, নিয়ম মাফিক। বরপক্ষে নিমন্ত্রণ দাও ত্বরা করি। নিজেই সহসা বলে, মোরে শতধিক। নিমন্ত্রণ পত্র যাবে মোর হাতে করি। পাঁচভাই একবধু ,দ্রুপদ অবাক। ব্যাসদেব মধ্যেমনি বোঝালেন তাকে। অমতের কিছু নাই,কেটেছে বিপাক। ধুমধামে বিবাহের, দিন রাখো দেখে। দ্রুপদকে বোঝালেন,কৃষ্ণ বলরাম। এ বিবাহে কারো আর নাই বদনাম।

মহাভারতম্ আদিপর্ব-৪৯

 আদিপর্ব-৪৯ পাপের ভাগি হইবে,মিথ্যা হয় যদি। সত্য করি মাতৃ বাক্য,মোরা পাঁচজন। সকলের বধু হতে, হবে যে দ্রৌপদী। কেমনে সম্ভব জ্যেষ্ঠ, কেমন বচন? সেইক্ষণে কৃষ্ণ সহ বলরাম আসে পরিচয় দিয়ে কৃষ্ণ প্রণাম করিল। পিসি কুন্তী হতবাক, এই সর্বনাশে। আমাদের কথা কারা,প্রকাশ করিল। স্বয়ম্বর সভা জুড়ে যা হইল সেথা। বুঝতে কি বাকি আছে হে পঞ্চপাণ্ডব। আগুন কি চাপা থাকে, নদীস্রোত যথা- বহিবে আপন বেগে, করে কলরব। জতুগৃহ দাহ করে, হে পঞ্চপাণ্ডব। বনেবনে ঘুরে ফিরে,হারিয়েছ সব।

মহাভারতম্ আদিপর্ব-৪৮

 আদিপর্ব - ৪৮ একা কুন্তী অপেক্ষায়, পাঁচপুত্র তরে। ভিক্ষার বিশুদ্ধ  অন্ন এখনো আসেনি  কোথা গেল পাঁচভাই,বেরিয়েছে ভোরে। রাক্ষস দানব ঘোরে নেবে প্রাণ খানি। তার ওপর বাদলে ছেয়েছে আকাশ। ঘণকালো মেঘ জমে,কালো ছায়ালোক। বিদ্যুতের ঝলকানি প্রলয় বাতাস। চিন্তায় প্রাণের পাখি, করিছে হুতাশ। সহসা দেখিল কুন্তী ভীমার্জুন আসে। কহিল অর্জুন মাকে, নতুন জিনিস - এনেছি ভিক্ষার ঝুলি,তোমার সকাশে। আমি নেবো না তা,তোরা সবে মিলে নিস। হায় হায় একি হলো,দেখিয়া দ্রৌপদী। পাঁচভায়ে ভাগাভাগি সাধের দ্রৌপদী।

মহাভারতম্ আদিপর্ব-৪৭

 আদিপর্ব-৪৭ অর্জুনেরে মালা দিয়ে চলিল দ্রৌপদী। পিছেপিছে তারসাথে বাকি পাণ্ডবেরা। বিক্ষুদ্ধ ক্ষত্রিয় রাজা হলো প্রতিবাদী। নিমন্ত্রণ করে এনে,অপমান করা। আক্রমণ করে তারা দ্রুপদের বাটি। পাণ্ডবেরা প্রতিরোধ করে অনায়াসে। ভয় পেয়ে ক্ষত্রিয়রা, গেল গুটি গুটি। ব্রাহ্মণের কাণ্ড দেখে, কৃষ্ণ তাই হাসে। বলরাম কহে কৃষ্ণ, বলো এরা কারা? বীর বিক্রমে লড়াই করিল কেমনে? ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে, ক্ষত্রিয় কি এরা? হেসে হেসে কৃষ্ণ কহে, বিধাতাই জানে। ভীম অর্জুন নকুল সহদেব সাথে। যুধিষ্ঠির এসেছেন দ্রৌপদীরে পেতে।

মহাভারতম্ আদিপর্ব-৪৬

 আদিপর্ব-৪৬ অর্জুনের সাথে তার,বিয়ে দেবে বলে, অদ্ভুত ধনুক এক,তোলাই দুঃসাধ্য। ঘুর্ণমান যন্ত্রটার,মধ্যে দিয়ে গেলে, বীরবাহু,লক্ষ্যভেদ করাই অসাধ্য। স্বয়ম্বরে কতরাজা কত পারিষদ। একযোগে চেষ্টা করে দ্রৌপদী পাবার। কৃষ্ণ বলরাম কহে হাতে কোকনদ, ব্রাহ্মণের বেশে বসে,অর্জুন আমার। একে একে সব গেল গুণ পরাতেই। মাথা নিচু করে সব করিল প্রস্থান। কর্ণ ধরিলেন ধনু অতি সহজেই। পাঁচশর উর্ধপানে করিলেন তান। দ্রৌপদী কহিল এসে,করে অভিমান। সুতপুত্রে বরমাল্য করিব না দান।

মহাভারতম্ আদিপর্ব-৪৫

 আদিপর্ব-৪৫ রাজা দ্রুপদের কথা শুনিয়েছি আগে, দ্রোণের প্রতি রাগের কারণে দ্রুপদ- মহাযজ্ঞ করেছিল,অসন্তোষে রাগে। যজ্ঞ হতে জন্ম নিল, জানাই বিশদ। মন্ত্রপুত দৃষ্টদ্যুম্ন, দুহিতা দ্রৌপদী। পাঞ্চাল রাজকন্যার, স্বয়ম্বর হবে। বহুরাজা এসেছেন,তারে পায় যদি। পাণ্ডবরা অবিলম্বে সেইখানে যাবে। রাজ্য নাই,রাজা নয়,ভিখারির বেশে। স্বয়ম্বরে যোগদান করিল পাণ্ডব। পথে তারা যুদ্ধ করে,জয়ী অনায়াসে। গন্ধর্বরাজের সাথে,পাতালো বান্ধব। পাঞ্চালনগরে তারা ভার্গবের ঘরে। ভিক্ষাবৃত্তি করে সেথা, কিছুদিন ধরে।

মহাভারতম্ আদিপর্ব-৪৪

 আদিপর্ব-৪৪ সেইদিনের দায়িত্ব ভীম পেয়ে ছিল। সাথে করে নিয়ে গেল বিশ হাঁড়ি ভাত। বকরাক্ষসের দ্বারে,খেতে বসে গেল। এই কাণ্ড দেখে বক হলো কুপোকাত। কে এই বিশাল দেহি, বকের খাবার। নিশ্চিন্তে নির্ভয়ে গেলে,এ মহা অন্যায়। দুমদাম কিল ঘুষি, মারে বারবার। ভীম তবু নড়ে নারে, মহানন্দে খায়। যুদ্ধ বাঁধে মহাযুদ্ধ বিজয় ভীমের। তচনচ হয়ে গেল, বনের সবুজ। মেরুদণ্ড ভেঙ্গে গেল,বকরাক্ষসের। জানিল না রাজ্যবাসি,এতই অবুজ। পাঁচভাই  করে কাজ সকল প্রকার। অন্যদিকে স্বয়ম্বর পাঞ্চাল কন্যার।

মহাভারতম্ আদিপর্ব-৪৩

 আদিপর্ব-৪৩ অন্দরে খবর নিতে কুন্তী গেল ধীরে কান্নায় কাতর হয়ে কহিল দম্পতি। বিপদের সীমা নেই আমাদের নীড়ে। বকরাক্ষস হেথায় সকলের পতি। নগর পালক যিনি কাপুরুষ এক। খোঁজ কিছু রাখেনি সে নিজ প্রজাদের। রাক্ষসের খাদ্য দিতে মরেছে অনেক। আজ সেই পালা পড়ে,পাঠাব কাদের? বিষ হাঁড়ি ভাত আর একটা মানুষ। দুটি মোষ দিতে হবে, সঙ্গে প্রতিদিন। কেমনে পাঠাব আমি হইলে প্রত্যুষ। চলে যাবো সব মিলে, ফুরিয়েছে দিন। শুনি কুন্তুী কহে তারে চুপ করো ওরে। ভীম তারে পাঠাইবে, যমের দুয়ারে।

মহাভারতম্ আদিপর্ব-৪২

 আদিপর্ব-৪২ ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে ঘুরে দেশে দেশে শিকার ও ভিক্ষা করে জীবন ধারন। একদিন ব্যাসদেব পিতামহ এসে - কহিলেন সব জানি এহেন কারণ। মঙ্গলার্থে এসেছিনু এই উপবনে। একচক্রানগর এ যাও ত্বরা করি। বসবাস করো সেথা আনন্দ মগনে। নিশ্চিত নীরবে রবে সুখ পরিহরি। পাঁচজনা ভিক্ষা করে,করে যা সংগ্রহ। অর্ধেক পাঁচজনের,ভীমের অর্ধেক। এইরূপে বহুদিন , চলেছে প্রত্যহ। আশ্রয়দাতা ব্রাহ্মণ,দিয়েছে অনেক। একদিন ক্রন্দনের শব্দ শুনে ভীম। বিপদে পড়েছে ওরা রক্ষা করো ভীম।

মহাভারতম্ আদিপর্ব-৪১

আদিপর্ব-৪১ নারী হত্যা মহাপাপ কহে জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা। ভালোবাসা পাপ নয়,তারে করো বিয়ে। মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হোক, ওগো মোর মাতা। ধুমধামে বিয়ে হবে, মালা গলে দিয়ে। বিয়ে হলো কেটে গেলো বছর কয়েক। ঘটোৎকচ জন্ম নিল, বিশাল শরীর। মানুষে রাক্ষসে মিলে, নতুন বিবেক। নয়া শক্তি নয়া রূপে,কল্পনা বিধির। ঘটোৎকচের বীরত্ব আজও অম্লান। সেই কথা পরে হবে, সঠিক সময়ে। চলে গেল বন ছেড়ে দিয়ে গেল মান। প্রয়োজনে ডাকিবেন কহিল বিদায়ে। হিড়িম্বা রাক্ষসী আর পাণ্ডুপুত্র ভীম। মহাভারতে তাদের,গুরুত্ব অসীম।

মহাভারতম্ আদিপর্ব-৪০

 আদিপর্ব-৪০ সুন্দরী রূপসী কন্যা, দেখিয়া জননী- কহিল কুন্তী তাহারে কেগো তুমি মেয়ে? কোথা হতে আসিয়াছ? নির্জন বনানী। দেবকন্যা বনদেবী, এলে কোন দায়ে? দেবকন্যা নয় আমি রাক্ষসের মেয়ে। হিড়িম্ব রাক্ষস মোর, মাতৃগর্ভ ভ্রাতা। মানুষের গন্ধ পেয়ে,দিলেন পাঠিয়ে। ভক্ষণ করিতে হবে, এই ছিল কথা। মরেছে প্রাণের ভাই,আমি যাবো কোথা? দয়া করো প্রাণনাথ, ভালোবাসি আমি তব পায়ে স্থান দাও, ভেঙে সব প্রথা। ওরে ও দাসী রাক্ষসী, আমি হব স্বামী? মেরেছি হিড়িম্ব এবে,যাবি যমপুরী। উন্মুক্ত স্বাধীন আমি,পায়ে দিস বেড়ি।

মহাভারতম্ আদিপর্ব-৩৯

 আদিপর্ব-৩৯ ভীমেরে দেখি হিড়িম্বা,প্রেমে গেল পড়ে। সুন্দরী কন্যার রূপে, তার কাছে এলো। দুষ্টু রাক্ষসেরা হেথা, ঘোরাফেরা করে। ওহে বীর মহাবাহু,  অন্ধকারে আলো। কে আপনি কোথা হতে এলে বনাঞ্চলে। নিরাপদ নয় হেথা চলো ত্বরা করি। হিড়িম্ব রাক্ষস ভাই, এই খানে এলে- সব যাবে শেষ হয়ে, প্রাণ যাবে ছাড়ি। হিড়িম্বার কথা শুনে হেসে মরে ভীম ভয় নাহি লাগে মোর, কহিলাম আমি। রাক্ষস খোক্ষস হও, কিংবা অশ্বডিম। সহস্র হস্তীশক্তির অধিকারী আমি। বৃথা চেষ্টা হিড়িম্বর  ভীমেরে ভক্ষণ। হিড়িম্বর শক্তি নেই, করিরে দমন।

মহাভারতম্ আদিপর্ব-৩৮

 আদিপর্ব-৩৮ জাহ্নবী জননী দেবী,কহিলেন কুন্তী বহুদূর আসিয়াছ, বহু কষ্ট হেরি। ধন্য আমি ধন্য মোর সন্তান সন্ততি। শতেক যোজন এলে,একা কাঁধে করি। এই দেখো বটবৃক্ষ ছায়া করে দান। এখানে বিশ্রাম করি, এনো ফলাহার। পিপাসার জল এনো,তবে বাঁচে প্রাণ। দিন গিয়ে রাত এলো,হলো অন্ধকার। হিড়িম্ব হিড়িম্বা নামে রাক্ষস রাক্ষসী। বাস করে এই বনে, বহুদিন ধরে। মানুষের গন্ধ পেয়ে,তারা ওঠে হাসি। বিশাল চেহারা নিয়ে হাঁউমাউ করে। জিভে জল এসেগেল তাহাদের দেখে। মজা করে মাংস খাবে,নুন লেবু মেখে।

মহাভারতম্ আদিপর্ব-৩৭

 আদিপর্ব-৩৭ সুড়ঙ্গের পথে চলে,পঞ্চ পাণ্ডবেরা। মাতা কুন্তী সাথে চলে,ধীর পায়ে পায়ে। চারভ্রাতা কুন্তীরেও,কাঁধে রেখে ঘোরা। খালবিল নদীনালা, চলে পার হয়ে । অনাহারে অনিদ্রায়, সকলেই ক্লান্ত। হিংস্র জন্তু জানোয়ার সব আছে বনে। নাই জল ফলমূল, আঁধার দিগন্ত। পিঠে কাঁধে দুইহাতে, কি হবে কে জানে? অসীম সাহসে ভীম,চলে পথ খুঁজে। পিপাসায় বুক ফাটে, খিদেয় অস্থির। বড় কষ্ট হাঁটে ভীম, সব লয়ে নিজে। ভীম তবু হেঁটে চলে, কহে যুধিষ্ঠির। ভীম,এক্ষণে বিশ্রাম দাও একবার। জল আনো পিপাসায়,আর চলা ভার।

মহাভারতম্ আদিপর্ব-৩৬

 আদিপর্ব-৩৬ নীষাদীর পাঁচ ছেলে আর পুরোচণ। সন্দেহ করেনি মোটে চক্রান্তের কথা। জেনেছিল পাণ্ডবেরা,সব বিবরণ। কেটেছিল পুরোবর্ষ, মনে ছিল ব্যথা। সুড়ঙ্গের ভীত কাটে একটি বছর। তার ভেতর আশ্রয় করে পাঁচজন। একদিন নিষাদীনী পেলে অবসর। ছয়জন খেতে আসে পেয়ে নিমন্ত্রণ। পেটপুর্তি খেয়ে তারা,নিদ্রা গেল সুখে। এমনি সুযোগ পেয়ে,পঞ্চ পাণ্ডবেরা- জতুগৃহে অগ্নি দেয়,পুরোচণে রেখে। দাউদাউ করে জ্বলে, নীষাদ পুত্রেরা। পুড়ে মরেছে পাণ্ডব বার্তা গেল দেশে। কুম্ভীরাশ্রু ফেলে সবে,সেই পরিবেশে।

মহাভারতম্ আদিপর্ব-৩৫

 আদিপর্ব-৩৫ বারণাবতের গৃহে, প্রলয়ের ঝড়ে। যাবে প্রাণ জেনে তবু,চলে যুধিষ্ঠির। পাঁচভাই মাতা সহ,অম্বেষণ করে। কোথা পাবে সুখশান্তি,হইল অস্থির। হৃদয়ের সব ক্ষোভ,ছেড়ে দিলো মন। অগণিত বাজী ফাটে,সেই সন্ধ্যা কালে। আলোয় আলোয় রাঙ্গা,মেলার প্রাঙ্গণ। আনন্দ তরঙ্গ ডঙ্কা বাজে মেলাস্থলে। আনন্দের জতুগৃহে,ভীম মহারোষে। বৃথা কেন প্রাণ দেবো,একি আচরণ। চলো যাই ফিরে সব,আপনার দেশে। সম্মুখ যুদ্ধের আজ,আশু প্রয়োজন। যুধিষ্ঠির বলে ভাই,শান্থ হও প্রিয়। গৃহমধ্যে আছে দেখো,খাদ্য উপাদেয়।

মহাভারতম্ আদিপর্ব-৩৪

আদিপর্ব-৩৪ আনন্দেই আত্মহারা পুত্র দুর্যোধন। গোপনে বিশ্বাসী মন্ত্রী,ডাকি পুরোচনে। বারণাবতের পথে,করহ গমন। কাঠগালাচর্বি দিয়ে,গৃহ গড়ো বনে। আরাম দায়ক হবে,সুন্দর আবাস। লোকে দেখে বলে যেন মহামুল্যবান। আদর যত্নের জন্য,রেখো ভালো দাস। পঞ্চপাণ্ডবেরা সব, জেনো মেহমান । কিছুদিন সুখে হোক,জীবন যাপন। কুন্তীর মনে ধরুক,পাড়ার আসর। শহর নগর হোক,তাদের আপন। অনলে পুড়িয়ে মারো,ঘরের ভিতর। বারণাবতের কথা,বলিল বিদুর। সব শুনে যুধিষ্ঠির,হাসে ভরপুর।

মহাভারতম্ আদিপর্ব-৩৩

 আদিপর্ব-৩৩ ধৃতরাষ্ট্রের বাসনা প্রলুব্ধ প্রলাপ। সব পাবে দুর্যোধন,উত্তর পুরুষ। ভয় তার পিতামহ ভীষ্মের প্রতাপ। মনোরথ মনোবাঞ্ছা,দেখিবে প্রত্যুষ। বারণাবত সুন্দর,করিল প্রচার। উৎসবে মুখর সেথা,মধুর আবেশ। শিবের পুজায় সদা রাত্র করে পার। ফলেফুলে ভরা রাজ্য,পূজিত দুর্গেশ। পঞ্চপাণ্ডবের মনে কৌতূহল জাগে নতুন দেশের কথা, জানিবার তরে। ধৃতরাষ্ট্র কহে শোনো যাও আগেভাগে। শিবরাত্রির মেলায় যদি মন ভরে। অভিসন্ধি বুঝে কহে,জ্যেষ্ঠ যুধিষ্ঠির। পাঁচভাই মিলে যাবো,হওনা অস্থির।

মহাভারতম্ আদিপর্ব-৩২

 আদিপর্ব-৩২ একটি বছর গেল, গুরুদক্ষিনায়- যুবরাজ যুধিষ্ঠির ভীমার্জুন সহ। রাজ্যজয় করে তারা,সীমানা বাড়ায়। পাণ্ডবের পরাক্রম ক্রমশ প্রবাহ। তাহা দেখে ধৃতরাষ্ট্র,বোঝে পরিনাম। মন্ত্রী কণিককে ডেকে,কহিলেন তিনি। দিনেদিনে পাণ্ডবের প্রচুর সুনাম- আর যে সহে না মন,বলিতে পারিনি। মহারাজ ধৃতরাষ্ট্র,এখন কি করা? ঘোষণা হয়েছে দেশে,যুধিষ্ঠির রাজা। প্রজারাই সর্বশ্রেষ্ঠ,ভবিষ্যত তারা। যুধিষ্ঠির রাজা হলে,খুশি হবে প্রজা। বৃহৎ চক্রান্ত এক  সংগঠিত হলো। মূর্তিমান দুর্যোধন কেবল প্রফুল্ল।

মহাভারতম আদিপর্ব-৩১

 আদিপর্ব-৩১ নতজানু দ্রুপদের,দর্প করে চূর্ণ। কহে দ্রোণ বাল্যবন্ধু,তুমি দোষী বটে। ক্ষমা দিয়ে পূনরায়, বন্ধুত্ব সম্পূর্ণ। রাজা তুমি রাজা আমি,ভাগ নদীতটে। দক্ষিনে তোমার রাজ্য,আমার উত্তরে। মূক ও বধির যেন, দ্রুপদ সম্রাট। মনে মনে ফন্দি কষে, বধিবে সত্বরে। হাতি ঘোড়া ধনরত্ন,ভাগে আঁটসাঁট। ধৃতরাষ্ট্র যুধিষ্ঠিরে,করে যুবরাজ। দুর্যোধন ক্রুদ্ধ হয়ে,করে আন্দোলন। জ্যেষ্ঠ ভ্রাতার পুত্ররা,হবে মহারাজ। কনিষ্ঠ ভ্রাতার পুত্র,রাজা কেন হন? শকুনির ফাঁদে পড়ে দুর্যোধন বক্র। মায়ার পাশায় খেলে,শকুনির চক্র।

মহাভারতম আদিপর্ব-৩০

 আদিপর্ব-৩০ অঙ্গরাজ্য করে দান,মিত্র দুর্যোধন। অধিরথ আনন্দেতে আলিঙ্গন করে। চিরস্থায়ী বন্ধু হলো কর্ণ দুর্যোধন। আনন্দ মুহূর্তে তার অশ্রু ঝরে পড়ে। ভীম কহে কর্ণ তুমি,ঘরে যাও ফিরে। পিতার আদর খাও,নাও রাজ্য ভার। বৃথা কেন প্রাণ দেবে,অর্জুনের তীরে। বীরত্বে অর্জুন শ্রেষ্ঠ, হয়েছে বিচার। রঙ্গভূমি ভঙ্গ দিয়ে দ্রোণাচার্য দেখে। যুদ্ধবিদ্যা শেষ তবে,দক্ষিণা যে বাকি। দ্রুপদ রাজাকে আনো আমার সম্মুখে। সেটাই দক্ষিণা হবে, কে পারবে দেখি? কৌরব পাণ্ডব দুয়ে যুদ্ধ করে শেষে। দ্রুপদ রাজারে আনে ভিখারির বেশে।

মহাভারতম আদিপর্ব-২৯

 আদিপর্ব-২৯ হুঙ্কারে ডঙ্কারে কাঁপে,রঙ্গভূমি সব। কোন বীর আছে হেথা রাজপরিবারে? যুদ্ধে কি পরাস্ত মোরে করিবে পাণ্ডব? নাকি কৌরব পাণ্ডব,মেনে নেবে হারে। দ্রোণাচার্য কৃপাচার্য বুঝেছিল ঠিক। কৌশলে কাটাতে হবে সময় এখন। যুদ্ধ করিতে যে চাও বুঝিলাম ঠিক কৌরব পাণ্ডব হেথা,করিবে না রণ। কহ তব বংশকুল বলো পরিচয়। কোন রাজবংশে তব জন্ম প্রিয়বর। রাজায় রাজায় যুদ্ধ হইবে নিশ্চয়। মাথানত করে কর্ণ,কাঁপিছে অধর। মহাবীর কর্ণ সেযে,সুতপুত্র জাত। লজ্জায় মস্তক তার হয় অবনত।

মহাভারতম আদিপর্ব-২৮

 আদিপর্ব-২৮ ভীষণ গর্জনে আসে মহাবীর কর্ণ। পরশুরামের শিষ্য,অধিরথ পুত্র। কবজকুণ্ডল বুকে দানবীর কর্ণ। সারথির পুত্র তবু তার অন্য গোত্র। কুন্তীভোজ কন্যা সতী,কুন্তী তার নাম। দুর্বাসার সেবা করে, মন্ত্র শক্তি পান। চপল বালিকা কুন্তী মন্ত্রে পরিনাম। কুমারীর পুত্র হলো, সূর্যের সমান। লোকলাজে সেই পুত্রে ভাসাইল নদে। ফুটফুটে শিশু পেল সারথি দম্পতি। ধৈর্য্যেবীর্যে শক্তিমান, অভাব সম্পদে। জানিল না বীরকর্ণ, তার মাতা কুন্তী। জ্যেষ্ঠ পাণ্ডব সে,তবু করেনি আপন। বীরত্বের উপহার দিলো দুর্যোধন।

মহাভারতম আদিপর্ব-২৭

 আদিপর্ব-২৭ গুরুশিষ্য নদীজলে স্নানে ছিল ব্যস্ত। স্নানের আমোদে তারা অতিশয় মগ্ন দ্রোণাচার্যের হাঁটুতে কুমির সে মস্ত- কামড় দিয়েছে কষে, সকলে উদ্বিগ্ন। বাঁচাও বাঁচাও বলে দ্রোণাচার্য ঋষি চোখের নিমেষে অস্ত্র তুলেছে অর্জুন। পঞ্চতীর দিয়ে তারে মুক্ত করে আসি টুকরো টুকরো করে, কুমিরে অর্জুন। ব্রহ্মশির নামে এক অস্ত্র করে দান। সার্থক সে অস্তগুরু মনের আনন্দে- নানাবিধ পরীক্ষায় পেয়েছিল মান। সর্বশ্রেষ্ঠ বীর তার আপন অলিন্দে। রঙ্গভূমির উল্লাসে কাঁপিছে হস্তিনা। কর্ণ নামে মহাবীর আরো একজনা।

মহাভারতম আদিপর্ব-২৬

 আদিপর্ব-২৬ অর্জুনই শ্রেষ্ঠবীর এই ধরাধামে। নানাবিধ অস্ত্রসস্ত্রে ভীষণ নিপুণ। দুর্যোধন গদাযুদ্ধে পরাজিত ভীমে। নকুল সহদেবের খড়্গ যুদ্ধে গূণ। রথ চালনায় দক্ষ জ্যেষ্ঠ যুধিষ্ঠির। নীতিধর্মে মহাজ্ঞান অতীব ধার্মিক। দ্রোণপুত্র অশ্বত্থামা গুপ্ত অস্ত্রে বীর। তীরন্দাজ অর্জুনের লক্ষ্য ছিল ঠিক। সকলের চোখে ছিল শুধু ভাসপক্ষী। অর্জুনের চোখে পড়ে,শুধু নীল চোখ। মনিবিদ্ধ করেছিল,সব ছিল শাক্ষি। হিংসায় জ্বলছে ভাই,শকুনির লোক। কুটিল শকুনি খেলে,কুচক্রীর পাশা। তার মনে এতবিষ করেনি প্রত্যাশা।

মহাভারতম আদিপর্ব-২৫

 আদিপর্ব-২৫ দ্রোণাচার্যের শিষ্যরা কহিল তাহারে সর্বশ্রেষ্ঠ যোদ্ধা যদি অর্জুনই হয়- এ তবে কোথা হইতে এসেছে নজরে? রক্তপাতহীন মুখে শব্দ নাহি কয়। একগোছা তীর মুখে কেমনে পশিল। যিনি এই একলব্য বীর শিরোমনি। দ্রোণাচার্য গুরু বলে, কেন সে বলিল? গুরুদেব এইশিক্ষা এখনো পাইনি। সব শুনে দ্রোণাচার্য আশ্চর্য বিস্মিত। তার শিষ্য সেই তারে দেখেনি এখনো। জিগ্যাসিল ত্বরা করি, কে হে অনুগত। দক্ষিণা না দিয়ে বৎস অস্ত্রশিক্ষা কেন? অভিমানে ভরা এই সাজানো সংসার। বৃদ্ধাঙুলি কেটে দিয়ে চুকিয়েছে ধার।

মহাভারতম আদিপর্ব-২৪

 আদিপর্ব-২৪ হিরন্যধনুর পুত্র জঙ্গলের  পার। একলব্য একমনে অস্ত্রশিক্ষা করে। অস্ত্র চালনায় তার জুড়ি মেলা ভার। একমনে একান্ত সে গুরু পুজা করে। মৃত্তিকার মূর্তি গড়ে,তীরধনু নিয়ে- দ্রোণাচার্যের নিকটে শিক্ষা নাই হলো। মূর্তিরে গুরুর পদে অধিষ্ঠান দিয়ে- সর্বদা অভ্যাসে তার, লক্ষ্য খুঁজে পেলো। একদিন কুকুরের ভীষন চিৎকার। একলব্য শব্দ শুনে তীর ছুঁড়ে মারে। বিন্দুমাত্র রক্তপাত হয়নি যে তার। কুকুরের ঘেউ ডাক শুধু বন্ধ করে। তাই দেখে পাণ্ডবেরা অবাক হইল। অর্জুনের থেকে বীর কেমনে আসিল।

হে মানব

 হে মানব দেবপ্রসাদ জানা ০২.৭.২০২২ হে মানব,রথের দড়ি টেনে দেখো একবার। সময়ের সোপানে পদপিষ্ট সত্যকে - মুষ্টিবদ্ধ করো হে মানব, সময়ের স্রোতের পাক খেতে খেতেই, ঈশ্বরের সারথি হতে হবে তোমাকে। পথের আবর্জনা গুলোকে  মনের বাতাসে -উড়িয়ে দাও। দেখবে সমাজের গম্ভীর কালো অন্ধকার, তোমার পাশে নেই আর। মাটির নিভৃতে ধূলো হয়ে জমে ছিলে, ঘুমিয়েছিলে যে অনন্ত বছর, প্রতীক্ষায় ছিলে যে সুন্দর পৃথিবীর - মহাপ্রলয়ের আগেই তাকে পেয়ে গেছো হাতে। মুষ্টিবদ্ধ দড়িটার গায়ে যদি রক্ত লেগে যায়। সেই রক্ত জেনো ঈশ্বরের। প্রজন্মের পর প্রজন্ম - যে কলেবরহীন রথ টেনে চলেছ  গন্তব্যে পৌঁছতে পারোনি সহজে- দেখবে সেই রথ ও তুমি অনায়াসে, পৌঁছে দিয়েছ গন্তব্যস্থলে। আজ ঈশ্বরের রথের দড়িটা, তোমার মুষ্টিবদ্ধ হোক একবার, তুমি অবয়বহীন মায়া - তোমার আত্মার হৃদয়ে নক্ষত্র হয়ে থাকবে।

মহাভারতম আদিপর্ব-২৩

 আদিপর্ব-২৩ ভীষ্মের সমীপে সব করিল বর্ণন। দ্রুপদের অপমান করেছি হজম। প্রতিশোধ নিতে ক্রোধ করেছি দমন। দারিদ্রের পরিহাসে রেগেছি বিষম। ওহে দ্রোণ প্রতিশোধ সব হবে পরে। অস্ত্রশিক্ষায় শিক্ষিত করিও ব্রাহ্মণ। কৌরব পাণ্ডব যেন, সব অস্ত্র ধরে। আজ হতে অস্ত্রগুরু, দাও হে বচন। অস্ত্রশিক্ষায় শিক্ষিত,কৃপাচার্য দ্রোণ। কৌরব পাণ্ডব তায়, পারদর্শী হলে- কৌরবের সঙ্গে হলো,শক্তি প্রদর্শন। দুর্যোধন শকুনির ছল তবু চলে। অর্জুনের কৃতিত্বের তুলনা হয় না। সর্বশ্রেষ্ঠ যোদ্ধা তিনি,বিশ্ব ভুলবে না।

মহাভারতম আদিপর্ব-২২

 আদিপর্ব-২২ অতিশয় অপমানে ভরদ্বাজ পুত্র রাগে ক্ষোভে চিত্ত তার হলো বৈশ্বানর। স্ত্রী পুত্রের হাত ধরে, ঘোরে যত্রতত্র। হস্তিনায় আসে তারা প্রতিজ্ঞা কঠোর।   কৌরব পাণ্ডব খেলে বীটা লয়ে ঘিরে। পড়ে যায় সেই বীটা কূয়ার ভিতর। কিছুতেই সেই বীটা তুলিতে না পারে। তাই দেখে দ্রোণ হাসে, পড়িলে নজর। ওহে,ক্ষত্রিয় হয়েও পারো না তুলিতে। ওটি আমি তুলে দেবো যদি খেতে দাও। প্রতিদিন খেতে পাবে,পারো যদি দিতে। যুধিষ্ঠির কহে তারে, যখন যা চাও। তীরধনু নিয়ে বীটা নিমিষে তুলিল। অবাক হইল তারা ভীষ্মকে বলিল।

মহাভারতম আদিপর্ব-২১

 আদিপর্ব-২১ ভরদ্বাজ মনিপুত্র আচার্য্য দ্রোনের- অস্ত্রশিক্ষা হলে পরে,খ্যাতি হলো তার। অত্যন্ত দরিদ্র তিনি, নিত্য অভাবের- মাঝে কাটে তার দিন, কে দেবে আহার? শিশুকালে অস্ত্রবিদ্যা করে এক সনে দ্রুপদ নামক বন্ধু, ছিল অন্তরালে। দ্রুপদ হয়েছে রাজা,শুনেছিল কানে। বলেছিল অর্ধরাজ্য,দেবে রাজা হলে, পাঞ্চালরাজের কাছে গেল সেই ক্ষণ। দারিদ্রতা দূরে যাবে, আশা মনে নিয়ে- পরিচয় দিল তারে, আমি বন্ধু দ্রোণ। আশায় এসেছি রাজা,পরিবার লয়ে। শুনে রাজা ক্রুদ্ধ হন কেহে তুমি দ্রোণ। আমি রাজা তব বন্ধু  হব কি কারণ?

মহাভারতম আদিপর্ব-২০

 আদিপর্ব-২০ পেটপুরে ভীমসেন মহাভোজ খায় আদরেআদরে তিনি হয় শক্তিশালী  দশ হাজার হাতির বল হাতপায়। আটদিন পরে ঘুম ভাঙ্গে মহাবলি। স্নান করে খেয়েদেয়ে ঘরে ফিরে চলে। আনন্দে কহিল ভীম, গল্প গৌরবের। শকুনিমামাই তারে জলে দেয় ফেলে। সাথে ছিল একশত ভাই,কৌরবের। সাবধানে থেকো সদা মনে রেখো সব। ষড়যন্ত্র আরো হবে, এই পরিবারে। সিংহাসন রাজপাট, পাইবে পাণ্ডব। হিংসা বিবাদ দহন, কে দমন করে? না জানার ভান করে থাকো সদা সনে। অস্ত্রশিক্ষা নাও সব, নিয়ন্ত্রিত মনে।

মহাভারতম আদিপর্ব-১৯

 আদিপর্ব-১৯ প্রমাণকোটি হইতে ফেরিল পাণ্ডব। ভীম নাই সাথে ওরে,কারো মনে নাই। কহে কুন্তী যুধিষ্ঠিরে তোরা এলি সব ভীমটারে ভুলে গেলি,কারো মনে নাই? বাছা মোর কোথা আছে,কেযে বলে দেবে? কোনখানে নিদ্রা গেছে, কি জানি কখন। কোন কীটের দংশনে,কি ক্ষতি না হবে। না জানি দুর্যোধনেরা, করে কি তখন। ঘরশত্রু মহাশত্রু বিজ্ঞ লোকে কয়। আত্মভোলা পুত্র মোর কোথা আছ তুমি? ফিরে এসো একবার মনে বড় ভয়। কি জানি কি বিপদের বার্তা পাই আমি। হে বিদুর খোঁজ করো একবার তারে। বাছা মোর প্রাণ বুঝি,দেয় অনাহারে।

মহাভারতম আদিপর্ব-১৮

 আদিপর্ব-১৮ হাতে পায়ে দড়ি বেঁধে,ফেলে নদী জলে। চলে গেল ভীমসেন,পাতালের দেশে। শক্তপোক্ত ভীমসেন সাপের জঙ্গলে। তার চাপে মরে সাপ,কেউ মরে পিসে। নাগকুল ক্রোধবশে আরো বিষ ঢালে। বিষে বিষে বিষক্ষয়, চেতনায় ভীম। ভয়ে সব নাগকুল, বাসুকিরে বলে। ত্বরা আইল বাসুকী,ক্রোধ পরিসীম। বাসুকি দেখিল চেয়ে, এযে তার নাতি। ওরে ওরে দেখো চেয়ে,নাতি যে আমার। শূরসেন নাতি তার,ভীম তার নাতি। এরে কে মারিতে পারে,সাধ্য আছে কার? আদর যতন হলো,ভীমের অশেষ। দশ ঘড়া অমৃতের,কুম্ভ হলো শেষ।

মহাভারতম আদিপর্ব-১৭

 আদিপর্ব-১৭ প্রমাণকোটি নামক খেলিবার স্থানে। কৌরব পাণ্ডব খেলে নানাবিধ খেলা। শৈশব চপল ভীম সকলে তা জানে। ভীমের স্বভাবে সবে কষ্ট হয় মেলা। যুধিষ্ঠির বড়ভাই, ছোটো দুর্যোধন। তাই নিয়ে নানা গোল,দুজনের সনে। যুধিষ্ঠির রাজা হবে, বলে জনগন। হিংসায় কৌরব মরে শুধু অকারণে। দুর্যোধন বিষ দিল ভীমের খাবারে। বোকাভীম মোটাভীম পেটুক অত্যন্ত। বিষপাত্রখানি খেয়ে দিল খালি করে। জলক্রীড়া শেষ করে হলো পরিশ্রান্ত। সুখনিদ্রা দিলো ভীম রইল না বোধ। সেই ফাঁকে দুর্যোধন নিল তার শোধ।