কর্মমুখী শিক্ষা
কর্মমুখী শিক্ষা
দেবপ্রসাদ জানা
২১.১০.২০২১
নেপোলিয়ন বলেছিলেন, ‘Give me an educated mother; I will give you an educated nation.’ অর্থাৎ তোমরা আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদেরকে একটি শিক্ষিত জাতি উপহার দিব। যে জাতি যতো বেশি শিক্ষিত,সে জাতি ততো বেশি উন্নত। শিক্ষাই পারে কোনো দেশকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে। তাই সার্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থা বাস্তবায়নের জন্য সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিভিন্ন মানুষেরও এগিয়ে আসা উচিত। তাহলেই দেশ ও জাতি অন্ধকার থেকে মুক্তি পাবে এবং জাতীয় উন্নয়ন সম্ভব হবে। বিশেষ করে মায়েদের,
মানুষের মৌলিক চাহিদার মধ্যে শিক্ষা একটি। আর এই শিক্ষা মানুষের জীবন ও জীবিকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কেননা শিক্ষাই মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয়। বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিষ্কার এবং সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক উন্নতির ফলে কর্মসংস্থানের ধারণা ধীরে ধীরে পাল্টে যাচ্ছে। নতুন নতুন কাজের দ্বার উন্মোচিত হচ্ছে। অথচ আমরা সেই শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারছি না। ফলে বিশেষ শিক্ষা অপরিহার্য হয়ে পড়ছে। সাধারণ শিক্ষার চেয়ে কর্মমুখী শিক্ষাই এখন অধিক গুরুত্ব পাচ্ছে।
কর্মমুখী শিক্ষা এমন এক ধরণের শিক্ষাব্যবস্থা, যা গ্রহণ করলে শিক্ষার্থীরা ঘরে-বাইরে, ক্ষেতে-খামারে, কলে-কারখানায় যেকোনো কাজে বা পেশায় অতি দক্ষতার সঙ্গে কাজ করার যোগ্যতা লাভ করবে। কর্মমুখী শিক্ষার ধারণা মূলত পেশাগত কর্মের সাথে সম্পৃক্ত। এই শিক্ষা এক ধরণের বিশেষায়িত শিক্ষা, যা শিক্ষার্থীর কর্মদক্ষতা সৃষ্টি করে এবং শিক্ষার্থীকে সৃজনশীল ও উৎপাদনমুখী করে তোলে। তাবলে কর্মমুখী শিক্ষা, যান্ত্রিক শিক্ষা নয়। এর কাজ জনশক্তিকে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত করে সমাজের শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। কর্মমুখী শিক্ষা মূলত চতুর্মুখী নীতি নিয়ে আবির্ভূত। এগুলো হলো-
-জ্ঞান-বিজ্ঞানের সাথে শিক্ষার্থীকে পরিচয় করানো এবং তার সুপ্ত গুণাবলীকে জাগ্রত করা।
-শিক্ষার্থীকে নৈতিক, সামাজিক এবং মানবিক-সাংস্কৃতিক মূল্যবোধে উজ্জীবিত করা।
-গণতন্ত্রমনা, যুক্তিবাদী ও বিজ্ঞানমনস্ক নাগরিক হিসেবে তাকে গড়ে তোলা।
-কর্মক্ষমতা সৃষ্টি করে তাকে কর্মমুখী ও উপার্জনমূলক জনশক্তিতে রূপান্তর করা।
এ ক্ষেত্রে পারিবারিক সহযোগিতা আবশ্যক। প্রত্যক্ষ ভাবে মায়ের অবদান গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রয়োজন একজন শিক্ষিত মায়ের। যদিও বর্তমান সমাজে মায়েরা শিক্ষিত হলেও, টিভি সিরিয়াল, ফেসবুক ও ওয়াটস্ অ্যাপের যুগে,শিক্ষিত মায়ের অবদান তেমন ভাবে দেখা যাচ্ছে না। দেখা যায় শুধু প্রতিযোগিতা। ওর ছেলে বেশী নম্বর পেল,ওর মেয়ে এগিয়ে গেল। ছেলেমেয়েদের থেকে, তাদের মায়েদের বন্ধুত্ব অনেক গাঢ়, তাদের মধ্যেই শুরু হয়ে যায় প্রতিযোগিতার দৌড়, আসল শিক্ষা ছেড়ে নম্বর প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে প্রকৃত শিক্ষা থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। ছাত্র ছাত্রীর উদ্ভাবনী শিক্ষার সর্বনাশ ডেকে আনচ্ছে।
Comments
Post a Comment