বঙ্কিমচন্দ্র
মেয়ে খুন, তবু পুলিশ ডাকেননি বঙ্কিমচন্দ্র
✍️ অর্ণব সাহা
নৈহাটির কাঁটালপাড়ার চাটুজ্জেবাড়ির জমিতে বঙ্কিম করলেন চার কামরার বৈঠকখানা। জমিটি বঙ্কিমের পরিবারের নিকটাত্মীয়া দিগম্বরী দেবীর। নিঃসন্তান দিগম্বরী অল্পবয়সে বিধবা হন। তাঁর দেবোত্তর, ব্রহ্মোত্তর সম্পত্তির ভাগ পান বঙ্কিমের পিতা যাদবচন্দ্র। দিগম্বরীর জমিতে তৈরি এই বৈঠকখানা ঘর হয়ে ওঠে বাংলা সাহিত্য ও নবজাগরণের এক পীঠস্থান। এই ঐতিহাসিক কক্ষে বসেই লেখা হয় ‘বন্দেমাতরম্’ সঙ্গীত। এখান থেকেই বেরিয়েছে ‘বঙ্গদর্শন’, ‘প্রচার’ ও ‘ভ্রমর’ পত্রিকা। বিখ্যাত ‘বঙ্গদর্শনের আড্ডা’-র অক্ষয়চন্দ্র সরকার, নবীনচন্দ্র সেন, দীনবন্ধু মিত্র, রাজকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়, হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, দামোদর মুখোপাধ্যায় নিয়মিত আসতেন এই ঘরে। এই ঘরের ইতিহাসের সঙ্গে বঙ্গীয় নবজাগরণ বা বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের এক শ্রেষ্ঠ পর্বের যোগ থাকলেও হারিয়ে গেছে সেই অসহায় বিধবা দিগম্বরী দেবীর নাম, যিনি গোটা চাটুজ্জে পরিবারে পরিচিত ছিলেন ‘ছোটো ঠাকুরাণী দিদি’ হিসেবে। পরিবারের জীর্ণ দলিল আর চিঠিপত্রে তাঁর নামটুকু কেবল মেলে।
বঙ্কিমের মা দুর্গাসুন্দরী দেবী, দিদি নন্দরাণী দেবী, বৌদি নবকুমারী দেবী— সকলের ভূমিকাই বঙ্কিমের জীবনে গভীর। বঙ্কিমের মা দুর্গাসুন্দরী শিক্ষিতা ছিলেন না, কিন্তু পাকা গৃহিণী ছিলেন। বঙ্কিম তাঁর ‘দেবী চৌধুরাণী’ উপন্যাসে ব্রজেশ্বরের মায়ের চরিত্রটি দুর্গাসুন্দরীর আদলে লিখেছিলেন। বঙ্কিম বলেছিলেন, ছেলেবেলায় মায়ের কাছ থেকে তিনি একটুও নীতিশিক্ষা পাননি— ‘কুসংসর্গটা ছেলেবেলায় বড় বেশি হইয়াছিল। বাপ থাকতেন বিদেশে, মা সেকেলের উপর আর একটু বেশি, কাজেই... নীতিশিক্ষা কখনো হয়নি। আমি যে লোকের ঘরে সিঁদ দিতে কেন শিখিনি বলা যায় না’।
বঙ্কিমের দিদি, অর্থাৎ যাদবচন্দ্র-দুর্গাসুন্দরীর একমাত্র কন্যাসন্তান নন্দরাণী দেবী। দুই ভাই সঞ্জীবচন্দ্র এবং বঙ্কিমচন্দ্রকে ইনি অত্যন্ত স্নেহ করতেন। বিশেষত সঞ্জীবচন্দ্রের প্রতি তাঁর ভালবাসা একটু বেশিই ছিল। বেহিসেবি ও বাউন্ডুলে সঞ্জীবচন্দ্র প্রায়ই অতিরিক্ত দেনার দায়ে পালিয়ে যেতেন কর্মস্থল বিহারের বাঁকিপুরে। সেখানেই তিনি সম্পূর্ণ করেন তাঁর ‘মাধবীলতা’ উপন্যাসটি। নন্দরাণীও মাঝে মাঝে বাঁকিপুরে গিয়ে থাকতেন। এক বার বৌমার সঙ্গে ঝগড়া করে সঞ্জীবচন্দ্রের স্ত্রী নবকুমারী দেবী রাগ করে কাশীধাম চলে যাওয়া মনস্থ করেন। সে যাত্রা নন্দরাণী সামলান। মৃত্যুর আগে কুলপ্রথা অনুযায়ী যাদবচন্দ্রকে অন্তর্জলি যাত্রা করানো হয়েছিল। তিন রাত তিনি নৈহাটির গঙ্গার ধারে একটি ঘরে ছিলেন। সেবার জন্য ছিলেন তাঁর আদরের মেয়ে নন্দরাণী, যাঁকে যাদবচন্দ্র উইল করে নিজের জমি ও বাড়ির একাংশ দিয়ে গিয়েছিলেন। সে দিনের গোঁড়া ব্রাহ্মণ পরিবারে যা এক ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত। বঙ্কিমের প্রিয়তম বৌদি, সঞ্জীবচন্দ্রের স্ত্রী নবকুমারী ছিলেন একান্ত দুঃখিনী। স্বামী তো বটেই, ছেলে জ্যোতিশ্চন্দ্রও তাঁকে আজীবন যন্ত্রণা দিয়েছেন। যথেষ্ট প্রতিভাবান হওয়া সত্ত্বেও সঞ্জীবচন্দ্র চাকরিজীবনে সফল হতে পারেননি। ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর হিসেবে যোগদান করলেও চাকরিক্ষেত্রে চূড়ান্ত অপমান ও অশান্তির জন্য সরকারি চাকরিতে ইস্তফা দেন সঞ্জীব। তাঁর সংসার চালানোর দায়িত্ব এসে পড়ে বঙ্কিমের উপর। খামখেয়ালি, শৌখিন, বেহিসেবি, ঋণগ্রস্ত সঞ্জীবকে নিয়ে স্ত্রী নবকুমারীর মানসিক যন্ত্রণা ছিল অপরিসীম। পুত্র জ্যোতিশ্চন্দ্রও মা নবকুমারীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতেন, কটু কথা শোনাতেন। বঙ্কিম এই দুঃখিনী বৌদিকে মায়ের মতো ভক্তি করতেন। ভাইপো জ্যোতিশ্চন্দ্রকে চিঠিতে লেখেন— ‘তুমি মাতার প্রতি যেরূপ দুর্ব্যবহার করো, তাহা কানে শুনা যায় না... এরূপ নরাধমের যে সাহায্য বা তাহাকে যে স্নেহ করে, সেও তাহার ন্যায় নরাধম... তোমার মাতা আমার পূজনীয়া। আমি তাঁহাকে খাইতে অবশ্য দিব। কিন্তু তোমাকে দিব না’। এমনকি পুত্রবধূ মোতিরাণীর সঙ্গেও বনিবনা হত না নবকুমারীর।
বঙ্কিমচন্দ্রের প্রথম স্ত্রী মোহিনী দেবী। বিয়ের সময় বঙ্কিমের বয়স ছিল দশ বছর আর মোহিনীর পাঁচ। মোহিনী ছিলেন গৌরবর্ণা ও তন্বী। ‘দুর্গেশনন্দিনী’ উপন্যাসের তিলোত্তমা চরিত্রে মোহিনীর ছায়া রয়েছে। মোহিনীর প্রতি বাল্যপ্রণয় বঙ্কিম আজীবন তাঁর জীবন থেকে মুছতে পারেননি। বালিকাবধূ বাপের বাড়ি গেলে বঙ্কিমকে আটকে রাখা অসম্ভব হত। বিরহযন্ত্রণা সহ্য করতে পারতেন না বঙ্কিম। প্রায় প্রত্যেক রাতেই সকলে ঘুমোলে শ্বশুরবাড়িতে এসে গোপনে স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতেন। আবার খুব ভোররাতে বাড়ি ফিরে পড়তে বসে যেতেন তিনি। দাদা সঞ্জীবচন্দ্র অবাক হয়ে ভাবতেন—‘বঙ্কিম কি সারারাত ধরেই পড়ছিল?’ মোহিনীকে বাপের বাড়ি থেকে প্রচুর গয়না দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বঙ্কিমের সাধ, নিজের টাকায় বৌকে গয়না গড়িয়ে দেবেন। স্কলারশিপের টাকায় মোহিনীর জন্য এক জোড়া সোনার কানের দুল ও চুলের কাঁটা গড়ে উপহার দিয়েছিলেন বঙ্কিম। ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের চাকরি পেয়ে বঙ্কিমের প্রথম পোস্টিং হয় যশোরে। সেখান থেকে কাঁটালপাড়ায় স্ত্রীকে চিঠিতে লিখলেন— ‘তোমাকে শীঘ্রই আনাইব।’ কিন্তু সেই সুযোগ আর আসেনি। মাত্র ষোলো বছর বয়সে অজানা জ্বরে মোহিনীর মৃত্যু হয়। বঙ্কিমের বয়স তখন একুশ। মোহিনীর মৃত্যুশোক বঙ্কিম আজীবন অন্তরে বয়েছেন। এর পর দ্বিতীয় বার বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের পর অনেক অলঙ্কার দিলেও মোহিনী দেবীর দুটি কানের দুল ও সোনার কাঁটাটি বঙ্কিম স্ত্রী রাজলক্ষ্মী দেবীকে তখনই দেননি। বলেছিলেন—“এ দুটি আমার কাছেই রইলো। যেদিন তোমায় ভালোবাসব সে দিন দিব।” মেয়ে শরৎকুমারীর জন্মের পর, ১৮৬৪ সালে এক দিন নৌকোয় যেতে যেতে রাজলক্ষ্মী দেবীকে সেই অলঙ্কার স্বহস্তে পরিয়ে দেন বঙ্কিম। রাজলক্ষ্মী ছিলেন বঙ্কিমের যথার্থ অর্ধাঙ্গিনী। স্বামীর সমস্ত কাজে তিনি ছিলেন অন্যতম সহায়। কাঁটালপাড়ার বাড়িতে বঙ্গদর্শন গোষ্ঠীর যে কোনও আড্ডায়, জমায়েতে সকলের জন্য নিজে হাতে রান্না করতেন তিনি। স্বামীর হয়ে আত্মীয়স্বজনকে চিঠি লিখে দিতেন রাজলক্ষ্মী, বঙ্কিম নীচে স্বাক্ষর করতেন। এতটাই রাশভারী ছিলেন যে, ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট স্বামী বঙ্কিমও তাঁকে সমীহ করতেন। তাঁর নির্দেশ মেনে রাত সাড়ে ন’টার মধ্যে ঘরে ঢুকতে হত বঙ্কিমকেও। অনেকেই বলেছেন, ‘বিষবৃক্ষ’ উপন্যাসের সূর্যমুখী যেন রাজলক্ষ্মীই। বঙ্কিম নিজের জীবনে তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীর অপরিসীম ভূমিকা স্বীকার করে বলেছিলেন— ‘...একজনের প্রভাব আমার জীবনে বড়ো বেশি রকমের—আমার পরিবারের।... চাকরি আমার জীবনের অভিশাপ, আর স্ত্রীই আমার জীবনের কল্যাণস্বরূপা’।
বঙ্কিম-রাজলক্ষ্মীর পুত্রসন্তান ছিল না। তাঁদের তিন মেয়ে। শরৎকুমারী, নীলাব্জকুমারী ও উৎপলকুমারী। বড় মেয়ে শরৎকুমারীকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন বঙ্কিম। জামাই রাখালচন্দ্রকে কাছছাড়া করতে চাইতেন না, তাই ‘প্রচার’ পত্রিকার সম্পাদনার ভার তাঁকে দিয়েছিলেন। জীবনের শেষ দিকে শরৎকুমারীর ছেলেদের নিয়ে গাড়ি চেপে গড়ের মাঠে হাওয়া খেতে যেতেন বঙ্কিম। অত্যন্ত রক্ষণশীল মানসিকতার শরৎকুমারীর ছেলে শুভেন্দুসুন্দরের সঙ্গে বিয়ে হয় স্যর আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের মেয়ে কমলা দেবীর। বিয়ের অল্প দিন পরে শুভেন্দুর মৃত্যু হলে স্যর আশুতোষ মেয়ে কমলার পুনর্বিবাহ দিতে চান। রাজলক্ষ্মী দেবী এবং শরৎকুমারী এতে প্রবল আপত্তি করেন এবং এই নিয়ে স্যর আশুতোষের সঙ্গে বঙ্কিম-পরিবারের তীব্র মতানৈক্য ঘটেছিল। মেজ মেয়ে নীলাব্জকুমারীর বিয়ে হয়েছিল উত্তরপাড়ার জমিদারবাড়ির ছেলে সুরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। বঙ্কিমের ছোট মেয়ে অত্যন্ত আদুরে উৎপলকুমারী। ডাকনাম পলা। তাঁর জীবনের পরিণতি মর্মান্তিক। বিয়ে হয়েছিল উত্তর কলকাতার এক ধনী পরিবারের ছেলে মতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। মতীন্দ্র ছিল মদ্যপ, উচ্ছৃঙ্খল ও দুশ্চরিত্র। এক দিন মতীন্দ্র স্ত্রী উৎপলকুমারীর কাছে গয়না চায়। স্ত্রী অসম্মত হওয়ায় সে ওষুধের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে স্ত্রীকে খাওয়ায়। তার পর উৎপলকুমারীর গলায় কাপড়ের ফাঁস লাগিয়ে ঘরের কড়িবরগায় স্ত্রীর দেহ ঝুলিয়ে দেয়। রটিয়ে দেয়, উৎপলকুমারী আত্মহত্যা করেছে। বঙ্কিম সবটা আঁচ করলেও, কেন যে অপরাধী জামাইয়ের কঠোর শাস্তি চেয়ে আইনের দ্বারস্থ হননি, তা এক রহস্য।
বঙ্কিম-বাড়ির মেয়েদের কথা অসম্পূর্ণ রয়ে যাবে মোতিরাণী দেবীর কথা না বললে। সঞ্জীবচন্দ্রের একমাত্র পুত্র জ্যোতিশ্চন্দ্রের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল মহারাজা নন্দকুমারের বংশের উত্তরাধিকারিণী এই মেয়েটির। মোতিদেবী ছিলেন ‘ডাকসাইটে সুন্দরী’। চমৎকার বাংলা লিখতেন। ইংরেজিও অল্পবিস্তর জানতেন। দীর্ঘ দিন বেকার থাকার পর জ্যোতিশ্চন্দ্র পুলিশ ইন্সপেক্টরের চাকরি পান। প্রথম পোস্টিং হয় নদিয়ার মেহেরগড়ে। স্ত্রী, ছেলেমেয়েকে কাঁটালপাড়ায় রেখে জ্যোতিশ্চন্দ্র চলে গেলেন নদীয়ায়। মোতিরাণীর স্বামীর প্রতি ভালবাসা ছিল আত্যন্তিক। সে যুগের এক বাঙালি নারীর পক্ষে যা প্রায় বৈপ্লবিক সে রকম কিছু কথা মোতিরাণী উল্লেখ করেছেন স্বামীকে লেখা তাঁর চিঠিগুলিতে। তিনি নিজের দাম্পত্যজীবনে স্বামীর সঙ্গে ভৌগোলিক দূরত্বের কারণে শরীরী প্রেমে অতৃপ্তির কথা লিখেছেন— ‘আমার অলঙ্কারে সুখ ছিল না, সর্ব্বদা তোমার কাছে থাকিয়া তোমায় দেখিয়া সুখ ভোগ করিতাম, তাহার অধিক কি সুখ অলঙ্কারে পাইব?’। কখনও লিখছেন স্বামীকে ছাড়া রাত্রে বিছানায়— ‘শয্যাকণ্টকির ন্যায় ছটফট করি’।
মোতিরাণীর চরিত্রের আর একটি দিক ছিল, যে কোনও অন্যায়ের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন স্পষ্টবক্তা, নির্ভীক। বাড়িতে দীর্ঘ দিন ধরে বসবাসরত এক দরিদ্র মহিলা মোহিনীকে যখন বাড়ির কর্তারা জোর করে উচ্ছেদ করতে চান, এই অন্তঃপুরিকা মহিলা সে দিন শ্বশুর-ভাশুরদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন। প্রতিষ্ঠিত ইতিহাসের বাইরে রয়ে যাওয়া বঙ্কিম-পরিবারের এই মেয়েদের কথা আজ হারিয়ে গেছে।
[ FROM AN ARTICLE PUBLISHED IN ANANDA BAZAR PATRIKA ]
বঙ্কিমচন্দ্রের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী ছিলেন অতি সুন্দরী। বঙ্কিমচন্দ্র একবার তাঁর স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ট্রেনে করে চলেছেন। স্ত্রীর মুখ ঘোমটায় ঢাকা।
খানিকক্ষণ পর বঙ্কিমচন্দ্র দেখলেন একটি যুবক বারবার আড়চোখে ঘোমটায় ঢাকা তাঁর স্ত্রীর মুখের দিকে তাকাচ্ছে।
বঙ্কিমচন্দ্র তো এই ঘটনায় বেশ মজা পেলেন। তিনি যুবকটিকে কাছে ডেকে জিজ্ঞাসা করলেন ‘কি কাজ করা হয়?'
যুবকটি এ প্রশ্নে ঘাবড়ে গিয়ে বলল ‘কেরানীর চাকরি করি।’
বঙ্কিম বললেন ‘কত মাইনে পাও?’
যুবকটি বলল ‘বত্রিশ টাকা।’
বঙ্কিমচন্দ্র তখন বললেন ‘তুমি যে এই মহিলার দিকে বার বার আড়চোখে তাকাচ্ছ, তা আমি এর ঘোমটা খুলে দিচ্ছি। ভালো করে দেখে নাও। আর এও শুনে রাখ। আমি একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। আমার মাইনে আটশো টাকা। এছাড়া বই পত্র লিখেও ভাল রোজগার হয়।
সব মিলিয়ে মাসিক আয় হাজার দেড়েক। এইসবই এই মহিলার পায়ে সমর্পণ করেছি। তবু তার মন পাইনি। আর তুমি সেখানে মাত্র বত্রিশ টাকার কেরানী হয়ে এর মন পেতে চাও?
যুবকটি খুব লজ্জা পেয়ে পরের স্টেশনেই অন্য কামরাতে চলে যায়।
বঙ্কিম ঘটনাবলী (১০ এপ্রিল, ২০১৮, বঙ্গদর্শন ইনফরমেশন ডেস্ক)
Bankimchandra's second wife was very beautiful. Bankimchandra was once traveling in a train with his wife. The wife's face was covered with a veil.
After a while, Bankimchandra saw a young man repeatedly squinting at the face of his wife covered with a veil.
Bankimchandra was quite amused by this incident. He called the young man to him and asked 'What work is done?'
The young man was nervous about this question and said 'I work as a clerk.'
Bankim said, 'How much do you get as salary?'
The young man said, "Thirty-two rupees."
Bankimchandra then said 'I am removing the veil of this woman whom you are looking at with narrow eyes again and again. Take a good look. And listen to m. I am a Deputy Magistrate. Eight hundred rupees is my salary. Apart from this, writing books also earns well.
Total monthly income is one and a half thousand. All these I have surrendered at the feet of this woman. But I didn't get his mind. And you want to be a clerk there for only thirty-two rupees?"
The young man got very shy and went to another room at the next station.
Bankim Facts (April 10, 2018, Bangdarshan Information Desk)
Comments
Post a Comment