অবসাদ

অবসাদ 
দেবপ্রসাদ

সময়ের সিঁড়ি গুলি ভাঙতে ভাঙতে।
শরীরে ছুঁয়েছে আজ, মৃত্যুর নিঃশ্বাস।
করতলে চাঁদ রেখে, চলতে চলতে।
বুকের ভিতরে জন্মে, সেই ক্রীতদাস।

টাল মাটাল নৌকার, পাল ছিঁড়ে ছিঁড়ে।
যেখানে দুঃখের জন্ম, জনতার ভিড়ে।

বোধশূন্য সন্ধ্যা ঘিরে ধরেছে আমায়
প্রিয় এই শহরের, চেনা ঘর গুলো।
পথঘাট নরনারী, আছে বেদনায়।
পাথরের স্তূপে বড়, অবসাদ ছিল।

ধ্বংসস্তূপে আত্মমগ্ন ভগ্ন ইতিহাস।
খসেপড়া সময়ের নীরব উচ্ছাস।

আহত শরীর তুলে দেখি আশেপাশে, 
অগণিত লাশ সব, পড়ে নানা স্থানে।
স্বামীর আদরে ঘেরা, অচেনা প্রদেশে।
পুতুল-জড়ানো হাত, পুড়েছে আগুনে।

বাঁচার প্রত্যয়ে স্তব্ধ, পৃথিবীর প্রাণ।
অবয়বহীন মায়া, নিঃশব্দ প্রয়াণ।

ভেঙে পড়া ঘরবাড়ি, খুঁজে খুঁজে দেখি।
আখেরে অধিকতর, অক্লান্ত শরীরে-
অজানা অচেনা পথে, চলেছে বৈশাখী।
ভগ্নস্তূপ ধুলোমাখা, দেখিনু অদুরে।

একটি ধূসর খাতা, পড়েছিল পথে।  
তমসার অন্ধকার, লেখা ছিল তাতে।

ছেঁড়া খাতার প্রথম, পাতা দুটি পড়ে,
অবাক করেছে এই, ঘটনার দিনে।
আশ্চর্য কবিতা সব, পথে কেন ওড়ে।
শেষ হলো না যে তার, কবিতা সেদিনে।

স্মৃতিঘন চেতনায়, দেহজ সূষমা।
ধুসর মেঘের রূপে, নারীর উপমা।

নাম পরিচয় তার, লেখা নেই তাই।
অবশিষ্ট বেশ কটি ছেঁড়া পাতা জুড়ে।
রয়েছে কবিতা, নাম লেখা হয় নাই।
প্রকৃত কবিরা, আজ মনোশোকে পোড়ে। 

অবরুদ্ধ অহংকার, তৃষ্ণার শিকড়ে।
মৃত সেই দেহ বুঝি, দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে।


Comments

Popular posts from this blog

দুঃখটাকে এবার

মহাঋষি শুক্রাচার্য্য

গিরিশ চন্দ্র ঘোষ