আমি ক্রীতদাস

আমি ক্রীতদাস 
দেবপ্রসাদ 

আমি ক্রীতদাস তোমার, 
আমি ক্রীতদাস তোমার ছেলে মেয়ের-
কখনো স্বামী, কখনো পিতা রূপী ক্রীতদাস আমি।
তোমার শাসন পৃথিবীর প্রতি অংশে,
এই আভিজাত্য শাসন-শৃঙ্খল,
গলায় বাঁধা লৌহশিকল, মস্তকে কাঁটার তাজ-
মনে হয় রাজা আমি, পায়ের শিকল বড় ভারি।
তোমার অন্যায়, তোমার অত্যাচার, 
তোমার চোখের অতুলনীয় শাসন-
ক্ষণিকের মৃত্যুদণ্ড প্রতিদিন - 
তোমার কারাগারে লৌহসম বাহু কপাট,
অতিরিক্ত শ্রমেও আমি ক্লান্ত নই।
আমার ক্রীতদাসই দেহটা যখন পরিশ্রান্ত অসুস্থ,
তোমার কঠোর পরিচর্চায়-
দেহটা আবার যান্ত্রিক হয়ে ওঠে,
হয়ে ওঠে রোবটের মত বাধ্য পরিচারক।
যখন আমি পিতা রূপী ক্রীতদাস,
তোমার সন্তানের কখনো আগে, কখনো পেছনে
বাধ্য বেতন ভোগী অনুচর।
শ্রমে জীবন যায়, বিনিদ্র রজনী যায়, 
তবু বেঁচে থাকতে হয়। 
নিয়ত সংগ্রাম, তোমার নীতি নিয়ম গুলো-
ভাঙতে গেলেই, বাধা আসে ভেতরে।
এই শৃঙ্খলিত ক্রীতদাসই মহাযজ্ঞে আমিই
অগ্নি আমি ঘৃত, আমিই শুষ্ক কাষ্ঠ।
আমি আমাকে পোড়াই আমার আগুনে।
তোমার চোখের শাসনে।
দূর্বল পেশী সবল হলে শুরু হয়-
থেমে থাকা পাঞ্জার লড়াই।
রশ্মি নয় অস্থি দিয়ে জ্বালাতে হয়-
সংসারের আলো।
তবু আমি ক্রীতদাস,
পঁচিশ হাজারি ক্রীতদাস।

Comments

Popular posts from this blog

দুঃখটাকে এবার

মহাঋষি শুক্রাচার্য্য

গিরিশ চন্দ্র ঘোষ