ওভারব্রীজে
ওভারব্রীজে
দেবপ্রসাদ জানা
২০.১০.২০২৩
সন্ধার সূর্যটা বহু আগেই বাড়ি ফিরে গেছে,
রাস্তার সোডিয়াম হলুদ বাতিগুলোও জ্বলে উঠেছে আলোকময় নগরীকে আরেকটু আলোকিত।
এই সময় বাড়ি ফেরার তাড়া থাকে মানুষের,
ফিরে যাওয়ার নীরব প্রতিযোগিতা।
ভীড় বাড়ে বাসে ঠেলাঠেলি।
হাঁ যাত্রীদের ফিরে যাবার,
আকুলতা দেখতে থাকি আমি।
মানুষের জীবনটা বড় বিচিত্র, পাখির মতো।
দিন শেষে রাতে পরিবারের পিছুটান,
অবাক লাগে মাঝে মাঝে এরকম পিছুটান।
ভীড় বাড়ে ওভারব্রীজে,
একটা মেয়ে না বউ দেখিনি
অনেকক্ষণ কার জন্য যেন অপেক্ষা করছে।
অস্থায়ী বাসিন্দারা ফিরতে শুরু করেছে,
আমি ব্যস্ততার পাশ কাটিয়ে দাঁড়িয়ে আছি।
হাতের জ্বলন্ত সিগারেট,
টান দিতে ভুলে গেছি, হাতে ছেঁকা লাগল।
ব্রীজের আলো গুলো মহিমায় উজ্বল হয়ে উঠছে। আমাদের পৃথিবীটা হয়ত কোন জ্বলন্ত সিগারেট,
প্রতি মুহুর্তেই ছোট হয়ে আসছে।
প্রতিদিন ছেঁকা দিয়ে যাচ্ছে,
মধ্যবিত্ত বেকারের হাতে।
আজকের দিনে একটু বিলাসিতা হতেই পারে। বেতনটা এ মাসে দুদিন আগেই পেলাম।
মন বাসা পরিবর্তন করেছে।
সত্যিকার অর্থে আমার জন্যেই।
সুখটাই বড় সুখ।
একটা ভীড় ক্রমশ বেড়ে চলেছে ব্রীজে।
আজকে কিছুটা চিন্তামুক্ত।
তন্ময় হয়ে চেয়ে থাকি রাস্তার ব্যস্ততার দিকে। ফুটপাতের দোকান গুলোতেও ভীড় বাড়ে।
লাল নীল চুড়ি,ফিতা,শখের আংটি।
কত কিছুতে ছেয়ে আছে দোকান ।
আপনমনেই হেসে উঠি আমি।
সুখ বুঝি খুব একটা দামী না।
কত কম দামেই না সুখ পাওয়া যায় দোকানে।
সুখের সাথে মেশানো দুফোঁটা ভালবাসা।
সামনে জগতের অপ্রাপ্তি বড় মেকী লাগে।
ভীড় বাড়ছে ক্রমাগত।
গাড়ি গুলো দাঁড়িয়ে পড়েছে।
আজ একটু ঝগড়া হয়ে গেল ঘরে।
বেতন নিয়ে, বোয়ের সঙ্গে।
মানুষের ভীড় বাড়ছে।
পুলিশ কেন? কি হলো এখানে?
ভাবলাম দেখি একবার কি হলো?
ভীড় ঠেলে এগোলাম একটু একটু করে।
একটা ঝাঁকড়া চুল ওলা লোক,
আমার দিকে তাকিয়ে হাসলো।
কি ব্যপার? একটা লোক যেন,
দুমড়ে মুচড়ে পড়ে আছে ব্রীজে।
আমারই মতো একটা জামা পরা, রক্তারক্তি।
আমার নিদ্রার প্রস্তুতি চলছে।
তাই এতো সুখ।
পুরোদমে, ওভারব্রীজে।
Comments
Post a Comment