হে অচিন্ত্য

হে অচিন্ত্য
দেবপ্রসাদ

হে অচিন্ত্য পূর্ণ রূপ-চরিত-মহিমা,
নবশোভা, নব ধ্যান, মৃন্ময়ী প্রতিমা,
হে মহালক্ষ্মী জননী, বোধন সাধনে।
বিকশিল জ্যোতি প্রীতি, মঙ্গল বরণে।

তুমি ব্রহ্ম মহামায়া, বিপদহারিনী।
তব প্রেমময় আঁখি, নিখিল তারণী।
কনককান্তি ঝরিছে, শ্রীকান্ত বদনে।
জয় সংগীত ধ্বনিছে, তোমার ভুবনে।

প্রাক্-প্রত্যুষে জাগো হে, জ্যোতির্ম্ময়ী মাতা।
জগন্মাতা মহাশক্তি, আগমনী বার্তা।
আকাশ-বাতাসে ঘোরে, বেদ মন্ত্রস্তব।
ভূলোকে গোলোকে জাগে, মহাকলরব।

ভূমানন্দে মহানন্দে, অপূর্ব্ব প্রেরণা। 
শারদ গগনে দেবী,করিছো ঘোষণা।
হে অহং রুদ্রেভি চণ্ডী মন্ত্রদ্রষ্টা ঋষি।
মহর্ষি অম্ভৃণের কন্যা; মহাপূণ্য শশী।

সূক্তের দেবতা দেবী, পরব্রহ্মময়ী।
আদ্যাশক্তি জগদম্বা, হে পরমাশ্রয়ী।


তুমি রুদ্রা ও (অষ্ট) বসুরূপে বিচরণ করি; আমি (দ্বাদশ) আদিত্য ও বিশ্বদেবগণের রূপে বিচরণ করি; আমি মিত্র ও বরুণকে ধারণ করছি; আমি ইন্দ্র ও অগ্নিকে ধারণ করছি; আমিই ধারণ করছি অশ্বিনীকুমারদ্বয়কে।।১।।

আমি দেবগণের শত্রুনাশকারী সোম, ত্বষ্টা, পূষা ও ভগকে ধারণ করছি; দেবতাদের উদ্দেশ্যে হবি-প্রদানকারী ও বিধি অনুযায়ী সোমরস প্রস্তুতকারী যজমানকে আমি ধন প্রদান করি।।২।।

আমি সকল লোকের ঈশ্বরী, ধনপ্রদানকারিণী; আমি পরব্রহ্মজ্ঞানী; যাঁদের যজ্ঞ করা হয়, তাঁদের মধ্যে আমি সর্বশ্রেষ্ঠা (অর্থাৎ, দেবশ্রেষ্ঠা); বহু দেশের অধিবাসীরা সর্বরূপে সর্বত্র বিরাজমানা আমাকে আরাধনা করে থাকেন।।৩।।

আমার শক্তিতেই লোকে ভোজন করে, আমার শক্তিতেই দর্শন, শ্রবণ ও জীবন ধারণ করে; আমাকে যথাযথরূপে না জানলে দুঃখভোগ করতে হয়; হে কীর্তিমান সখা, শোনো, যে কথা শ্রদ্ধার দ্বারা লাভ করা যায়, তাই তোমাকে বলছি।।৪।।

সকল দেবতা ও মানুষেরা যে পরম তত্ত্বকে সেবা করে, সেই তত্ত্ব আমি স্বয়ং বললাম। আমি যাকে রক্ষা করতে ইচ্ছা করি, তাকে সর্বশ্রেষ্ঠ করে থাকি এবং তাকে ব্রহ্মত্ব, ঋষিত্ব ও উত্তম জ্ঞান প্রদান করি।।৫।।

রুদ্র যখন ব্রহ্মদ্বেষী [ত্রিপুরাসুরকে] বধ করতে যান, তখন আমি নিজ শক্তি দ্বারা তাঁর ধনুকে জ্যা পরিয়ে দিই। সৎ ব্যক্তিদের রক্ষা করার জন্য আমি প্রতি মুহুর্তে সংগ্রাম করি। স্বর্গ ও মর্ত্যে আমিই অন্তর্যামিনী রূপে পরিচিতা।।৬।।

আমি এই পরমাত্মার উপরিভাগে পরিব্যাপ্ত আকাশকে প্রসব করেছি। আমি চৈতন্যরূপে ত্রিভুবন জুড়ে অবস্থান করছি। আমি সকল প্রাণীর দেহে প্রবেশ করে নানা রূপে আছি। আবার আমি স্বর্গকেও নিজের মায়াদেহ দ্বারা পরিব্যাপ্ত করে আছি।।৭।।

আমিই পঞ্চভূতকে সৃষ্টি করে বায়ুর ন্যায় স্বাধীনভাবে রয়েছি। আমি বিশ্বের যাবতীর বিকারের উর্ধ্ব অবস্থান করি। আমি স্বয়ং নির্লিপ্তা।।৮।।

Comments

Popular posts from this blog

দুঃখটাকে এবার

মহাঋষি শুক্রাচার্য্য

গিরিশ চন্দ্র ঘোষ