Posts

Showing posts from June, 2022

মহাভারতম আদিপর্ব-১৬

 আদিপর্ব-১৬ অসংখ্য বীরের যিনি জন্মপ্রদায়িনী। মহারত্নরূপে খ্যাত দেশদেশান্তর। শতপুত্র যার সেই গান্ধার নন্দিনী। তরুণ অরুণ ভাতি, জ্বলে নিরন্তর। কৌরব পাণ্ডবে প্রীতি রসের সাগর। ভীষ্মের তত্ত্বাবধানে দিন কাটে বেশ। সরসী সরিৎ সিন্ধু শেখর সুন্দর। কন্দরে কন্দরে ফোটে কুসুম অশেষ। কৌরবে পাণ্ডবে মিলে,খেলা করে সদা। যুধিষ্ঠির জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা, সদা তৎপর। ধর্মকর্ম আভিজাত্য বংশের মর্যাদা। সব যেন তার মাথে, করছে নির্ভর। বড় দুষ্টু ভীমসেন  পেটুক ভীষণ। গুরুকুলে সকলেরে করেছে দমন।

মহাভারতম আদিপর্ব-১৫

 আদিপর্ব-১৫ দাসীপুত্র বিদুরের ধর্ম জ্ঞান ভালো। আকাশের মত তার মনোরম মন। মনে হয় দেহজুড়ে,মোহনীয় আলো। রূপে গুণে মনে হয়,শান্ত উপবন। গান্ধার রাজার কন্যা,যুবতী গান্ধারী। স্বয়ম্বরে পাণ্ডু পেল,কুন্তিভোজ কন্যা। দ্বিতীয় বিবাহে পেল, মদ্রকন্যা মাদ্রী  বিদুর বিবাহ  করে, দেবকের কন্যা, অন্ধের ঘরণী তাই, চোখ বেঁধে নেয়। এমনি সোনার মেয়ে,সুচারু গান্ধারী। সুরলোক দেবলোক ধন্যবাদ দেয়। শতপুত্রের জননী, হইল গান্ধারী। যুধিষ্ঠিরই বংশের প্রথম সন্তান। দেবতার বরে কুন্তী পাঁচপুত্র পান।

মহাভারতম আদিপর্ব-১৪

 আদিপর্ব-১৪ বিচিত্রবীর্য্যকে রাজা,করলেন ভীষ্ম। কাশীরাজের কন্যারা ছিল তিনজন। তিনজনকেই তুলে এনে ছিল ভীষ্ম। অম্বা,অম্বালিকা আর অম্বিকা কাঞ্চন। ভীষ্মের বীরত্বে তাই, জনগণ খুসী। বিপদ হইল এক, সত্য হলো ফাঁস। অম্বা কহে শাল্বরাজে আমি ভালোবাসি। স্বয়ম্বরে মালা দিব, ছিল অভিলাষ। চলে গেল অম্বা সেই শাল্বরাজ ঘরে। বিচিত্রবীর্য্যের গলে,তারা মালা দিলো। দুই রানি দৈবযোগে পুত্র লাভ করে। ধৃতরাষ্ট্র অন্ধ তাই,পাণ্ডু রাজা হলো। দাসীপুত্র বিদুরের জন্ম হলে পরে। জ্ঞানে গুণে দাসীপুত্র ঘর আলো করে।

মহাভারতম আদিপর্ব-১৩

 আদিপর্ব-১৩ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হইতে যেই জন পারে। ভীষ্ম নামে খ্যাতি তার হইবে তখন। দেবদেবী স্বর্গ হতে পুষ্প বৃষ্টি করে। ধন্য ধন্য করে দেয়,অমূল্য আসন। সন্তুষ্ট হলেন পিতা কহেন তাহারে। হে নিষ্পাপ পুত্র মোর আশির্বাদ করি। ইচ্ছামৃত হবে তব, এই চরাচরে। যতদিন খুশি দেখো,এই বিশ্ব ঘুরি। সত্যবতী শান্তনুর দুই পুত্র হয়। কনিষ্ঠ বিচিত্রবীর্য্য জ্যেষ্ঠ চিত্রাঙ্গদ। হাসিতে খুসিতে বড়,হয় পুত্র দ্বয়। শান্তনুর মৃত্য হলে,রাজা চিত্রাঙ্গদ। গন্ধর্বরাজের সহিত ঘোর যুদ্ধ করে। চিত্রাঙ্গদ মারা যায় অল্পদিন পরে।

মহাভারতম আদিপর্ব-১২

 আদিপর্ব-১২ সহে না পিতার কষ্ট দেবব্রত ভাবে। দাসরাজার তনয়া প্রত্যাখ্যান করে? সাহস তার মন্দ না এক্ষণেই যাবে। পিতাপুত্রী দুইজনে আনবে সে ধরে। কহে রাজা,বীরপুত্র,শর্ত কহে তারা সত্যবতীর সন্তান,রাজপাট পাবে। উত্তরাধিকারী হবে, সেই সন্তানেরা। তব রাজ্য তাহাদের সব দিতে হবে। পিতার আক্ষেপ তার মনে লাগে ভারি প্রতিজ্ঞা করিল হেথা, বীর দেবব্রত। সব ত্যাগ করে যাবে,এই রাজ্য ছাড়ি। উত্তর পুরুষ তার, হবে না বিব্রত। বিবাহ করিবে না সে,প্রতিজ্ঞায় বদ্ধ। রাজার সুরক্ষা পরে,থাকিবে আবদ্ধ।

মহাভারতম আদিপর্ব-১১

 আদিপর্ব-১১ দিনেদিনে শান্তনুর বাড়ে মনে কষ্ট। দেহমন দুই যেন নিজ হাতে নেই। চোখের নিচে কলঙ্ক দেখা যায় স্পষ্ট। দূর্বল শরীরে আর কোন জোর নেই। এইভাবে দিন যায় দেবব্রত দেখে। জিগ্যেস করিবে কিছু ভাবে দেবব্রত। সাহস হয়নি তার পিতার সম্মুখে। সব যেন হঠাৎ ই করেছে বিব্রত। সাহস সঞ্চার করে তারে জিজ্ঞাসিলে। কহ পিতা কোন রোগে আক্রান্ত শরীর। কবিরাজ বৈদ্য ডাকি,অনুমতি দিলে। কহে রাজা পুত্র তুমি, হোয়ো না অধীর। রোগ নয় ভালোবাসা নাম সত্যবতী। দাসরাজার দুহিতা,দেয়নি সম্মতি।

মহাভারতম আদিপর্ব-১০

 আদিপর্ব-১০ দাসরাজের সমীপে কহিল শান্তনু বিবাহ করিব  তব পালিতা কন্যারে অনুমতি করিলেই বাজাইব বেণু। কহ রাজা কি করিলে মোরে দেবে তারে। হাসিয়া কহিল নৃপ,আনন্দের কথা রাজরানী হবে জানি সত্যবতী মোর। প্রথম সন্তান হবে এ দেশের মাথা। কি পাইবে সত্যবতী কত পাবে জোর? কথা দাও সত্যবতী, তার পুত্রকন্যা। ভবিষ্যতে রাজা হবে, সহজে সরলে। ঝগড়া বিবাদ বিনা থাকে মোর কন্যা। তাহার প্রতি অন্যায় করিব না বলে। প্রত্যাখ্যান পেয়ে রাজা বিসন্ন বদনে ফিরে গেল মনকষ্টে ক্ষোভ লয়ে মনে।

মহাভারতম আদিপর্ব-৯

 আদিপর্ব-৯ যুবরাজ দেবব্রত  অষ্টাদশ বর্ষী। মহীধর শৃঙ্গধর  বহ্নি শিখা ঊর্মি। শাস্ত্রজ্ঞ বেদজ্ঞ যুদ্ধে শাস্ত্রে পারদর্শী। আজানু লম্বিত বাহু,প্রাংশু ও সংযমী। সদা শান্তি দেশভর আনন্দে শান্তনু। আকাশে বাতাসে ধ্বনি,জয় জয়কার। এত শান্তি,এত সুখ হেরিল শান্তনু। হৃদয়ের সব ব্যথা মুছে গেল তার। একদিন মহারাজ  নদীধারে হেরি, সুগন্ধি ফুলের গন্ধে আকুল ক্ষিতীশ। নদীধারে তরী পরে পরমা সুন্দরী। কে তুমি সুন্দরী?আমি হস্তিনা নরেশ। দাসরাজ কন্যা আমি, সত্যবতী আর- পিতার আদেশ করি,যাত্রী পারাপার।

মহাভারতম আদিপর্ব-৮

 আদিপর্ব-৮ এক্ষণে এই শিশুর পালনের তরে সঙ্গে লয়ে যাব আমি কিছুটা সময়। সময় ফেরত দেবো এই পরিবারে। যাও তব রাজকার্য বেশ পড়ে রয়। মনকষ্টে শান্তনুর আঁখি ছলছল। বহুকষ্টে মনটারে মুষ্টি গত করে। সামান্য আলোক মনে তাই মনবল- পুত্র পাবে প্রত্যাশায় বুক বেঁধে ঘোরে। একদিন গঙ্গাতীরে দেখিল শান্তনু- গঙ্গার জল শুকিয়ে গেছে একেবারে। ভূলোকের সব জল শুষে নিল ভানু? কেমনে এমন হলো এই চরাচরে? অতি সুন্দর বালক শরক্ষেপ করে। গঙ্গার জলের স্রোত অনায়াসে ধরে।

মহাভারতম আদিপর্ব-৭

 আদিপর্ব-৭ পাপিষ্ঠা তোমার ভয় নেই কি পাপের, সাতটা দুধের শিশু জলে দিলে ফেলে? বলো না নিজের শিশু কি অভিশাপের? এ যে হৃদয়ের ফুল, অকালে ঝরালে? হাসিয়া কহিল গঙ্গা রুষ্ট হও কেন? তোমারে বলেছি পূর্বে,এমন বাসনা। দেবকার্য্য সাধনের তরে এই জেনো। জহ্নুকন্যা গঙ্গা আমি,দিয়েছি বেদনা। বশিষ্ঠের অভিশাপে আট অষ্টবসু মানব জন্ম নিতেই,দিয়েছিল বিধি। সাত বসু চলে গেছে বাকি অষ্টবসু দ্যো নামক বসুদেব বেশি অপরাধী। দ্যো রবে অনেকদিন মানবের রূপে দেবব্রত নাম লয়ে,এই মর্ত দ্বীপে।

মহাভারতম আদিপর্ব-৬

 আদিপর্ব-৬ আমি আপনার রানী,হব এক শর্তে। যাহা করি,প্রতিবাদ করিবে না মোটে। প্রতিবাদ করিলেই  থাকিব না মর্তে। সেই শর্ত মেনে নিলে রানী হব বটে। সৌন্দর্য্যে আকুল রাজা,শর্ত লয় মেনে। রাজধানী আলো করে,বিবাহে উল্লাস। সুখশান্তি সবদিকে, দেখে জনে জনে। সন্তান সম্ভবা হলে, আনন্দে উচ্ছ্বাস। প্রসবের পরে গঙ্গা,দুধের শিশুরে- গঙ্গার পবিত্র জলে,বিসর্জন দিলে- শান্তনুর বুক ফাটে,কহিল আহা রে। প্রতিবাদ করে নাই,চোখ ভরে জলে। এক এক করে সাত,পুত্র গেল জলে। অষ্টম পুত্রের বেলা গঙ্গা গেল চলে।

মহাভারতম আদিপর্ব-৫

 আদিপর্ব-৫ শান্তনুর রূপ গুণে জুড়াইল চোখ রাজ্যভার তারে দিয়ে বানপ্রস্তে যায়। মহারাজা প্রতীপের জয় জয় হোক। কুরুবংশের গৌরব দিকে দিকে ধায়। মৃগয়া করিতে গিয়ে দেখিল শান্তনু একাকিনী বিচরণ,করে গঙ্গা তীরে মনে মনে কহে রাজা কি রূপ হেরিনু। পরমা সুন্দরী কন্যা,ভীষণা গঙ্গারে। রূপের পসরা দেখে কহিল শান্তনু। বিবাহ করিতে চাই,চপলা চঞ্চলা। অনুমতি দাও গঙ্গে,প্রিয়তমা জানু। বিবাহে সম্মতি দিতে,চায়নি অবলা। অবলা নয় সে কন্যা,অতীব কঠোর। শর্ত দিয়ে বেঁধেছিল,তাহার অধর।

মহাভারতম আদিপর্ব-৪

 আদিপর্ব-৪ সূর্যবংশে মহাভিষ নামে ছিল রাজা। বিধাতার অভিশাপে মর্তে আসে ফিরে। মহারাজা প্রতীপের পুত্র রূপে সাজা। শান্তনুর জন্ম হয়, এই চরাচরে। একদিন গঙ্গাতীরে প্রতীপের কোলে বসিলেন হেসে হেসে মাতা গঙ্গাদেবী কহিলেন হে রাজন মালা দেবো গলে আপন করিয়া লহ আমি যে জাহ্নবী। কুলশ্রেষ্ঠ মহামতি কুরুবংশ কয়। কহিলেন মাতাগঙ্গা বসিয়াছ যেথা ডান উরু পুত্রকন্যা পুত্রবধু পায়। কহ কন্যা কিরকমে কব প্রেম গাথা। পুত্রবধু রূপে এসো লব স্নেহভরে। পুত্রলাভে তপস্যায়, চলিল উত্তরে।

চোখের কালি

চোখের কালি দেবপ্রসাদ জানা ২৫.৬.২০২২ তোমার চোখে আগুন দেখেছি তোমার চোখে ফাগুন দেখেছি। আজ দেখেছি চোখের কোণে কালি। তোমার চোখের তারায় অহংকার। কী করে বোঝাবো তোমাকে।  ভালোবাসার লাল গোলাপটা আজ কালো- মনের গভীরে যা ফোটে নিয়মিত - তোমারই চোখের কোণে, অতি সন্তর্পণে। নিশীথনী তোয়ধর নাচে তব চোখে। আকাঙ্ক্ষার  মহীধ্র শিখরে ভাসে - জমাট বাঁধা পয়োমুক, তোমার ঘণ কালো কেশরাশি, কতবার চোখ রেখে কেটে গেছে নিঝুম সময়।  অথচ হৃদয় ছুঁয়ে দ্যাখো - বারবার তোমার ভেতরে বেজেছি আমি। বাঁশির মতো নীরব অভিমানে।  আক্ষেপ,তোমারই মতো কেউ বোঝেনি  অভিযোগ করিনি আমি, কারোর কাছে, বলিনি যন্ত্রণার কথা। শুধু ভালোবেসে গেছি স্নিগ্ধ অন্ধকারে। নিজেকে ছুঁয়ে দেখেছি  উষ্ণতাহীন। তোমার চোখের কোণে কালি দেখেছি গোপন অনুভবে।  হে প্রেম! হে নিঃশব্দ ভালোবাসা- তুমি কথা দিতে পারোনি,ব্যথা দিয়েছ বারবার। হে আশ্চর্য প্রেরণা আমার-বয়ে চলো- রক্তনালি বেয়ে উদগ্রীব আত্মসমর্পণে। 

মহাভারতম আদিপর্ব-২

 আদিপর্ব-২ ব্রহ্মার আদেশ মেনে গাহিলেন গান। শ্লোকের অর্থ গণেশ বুঝিলে লেখেন। কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন তবে অবসর পান। পরের শ্লোক বলেন,গণেশ লেখেন। একলক্ষ শ্লোক লেখা করিলেন শেষ। আদিপর্ব দিয়ে শুরু আঠারোটি পর্ব। স্বর্গারোহণ পর্বের গুরুত্ব বিশেষ। নরক দর্শন করে পেয়েছিল স্বর্গ। ধর্মের লড়াই হবে,আদি থেকে অন্ত। ভায়ের রক্তে রক্তিম,হবে কুরুক্ষেত্র। কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন মুনি কহেন বৃত্তান্ত। প্রথমে পড়েন তাহা ব্যাসদেব পুত্র। মহাভারতের কথা অমৃত সমান। দেবপ্রসাদ লেখেন মহা পূণ্য গান। চলবে......

মহাভারতম আদিপর্ব-৩

 আদিপর্ব-৩ রাজা দুষ্মন্তের পুত্র রাজেন্দ্র ভরত। বহু রাজ্য জয় করে হন চক্রবর্তী। হস্তিনানগর গড়ে পোরে মনোরথ। তাঁরই বংশের রাজা নাম তার হস্তী। আলোচ্য সেই বংশের যত পাত্রমিত্র হস্তীর পরে  নরেশ হয়েছিল কুরু। কুরু তপস্যা করেন স্থান কুরুক্ষেত্র। সেইস্থানে একদিন যুদ্ধ হবে শুরু।  সপ্তম পুরুষ যিনি নৃপতি প্রতীপ। ধার্মিক স্বজ্জন নৃপ,সূর্যবংশ জাত ক্ষিতিপতি মহীপাল রাজা প্রজাধিপ। একদিন গঙ্গাতীরে ধ্যানে উপনীত। পরমা সুন্দরী কন্যা গঙ্গা রূপবতী। আলোক রঞ্জিত করে অন্ধকার রাতি।

মহাভারতম আদিপর্ব-১

 মহাভারতম  দেবপ্রসাদ জানা  আদিপর্ব-১ নৈমিষারণ্যে শৌনক,করে মহাযজ্ঞ। বারোটা বছর ব্যাপি চলে উৎসব। সেইক্ষণে সেইখানে এলেন মনোজ্ঞ। লোমহর্ষণের পুত্র সৌতি অনুভব। দেশান্তর হতে আসে যজ্ঞ সভাস্থলে। দৈবজ্ঞ বেদাজ্ঞ ঋষি কহিলেন তিনি। দেখিনু জনমেজয় ,সর্পযজ্ঞে স্থলে। শুনেছি দ্বৈপায়নের মহাকাব্য খানি। আদেশ করেন যদি বলি এই ঘরে। শুনাইব মহাকাব্য,মহান ভারতে। 'মহাভারত' নামেই,খ্যাতি চরাচরে। কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন ব্যাস কহিছে নিভৃতে। মনেমনে শ্লোক লিখে কহিছেন তিনি। গজানন একমনে চালান লেখনী।

দুর্বাসার কাণ্ড

 দুর্বাসার কাণ্ড দেবপ্রসাদ জানা ১৫.৬.২০২২ ১ মুদ্গল ঋষির কথা, বলে বেদব্যাস। বনবাসী পাণ্ডবেরা, উপদেশ শোনে। ধৈর্য্য রক্ষার বানীই, কহে বেদব্যাস। জ্যেষ্ঠ পাণ্ডবের মন, রয় সেই পানে। উঞ্ছবৃত্তি করে শিল, মহর্ষি মুদ্গল। শস্যদানা জমি হতে, করিয়া সংগ্রহ। পাকা গম পাকা ধান, জমিতে অচল। কুড়াইয়া দিন তার,  হয় অতিবাহ। শিলোঞ্ছবৃত্তি করেন, তবু খ্যাতি তার। একদ্রোণ শস্য তিনি, করেন সংগ্রহ। পনের দিনের পর, করেন আহার। তার থেকে কিছু শস্য, বিলোন প্রত্যহ। অতিথি সৎকার করে, পৌর্ণমাস যাগ। কৃচ্ছতার মুল লক্ষ্য, রাগ রোষ ত্যাগ। ২ দেবদেবী গণ এলে,প্রসাদ পেতেন। দেশব্যাপী খ্যাতি পেল,মহর্ষি মুদ্গল। দেবরাজ ইন্দ্র এসে অতিথি হতেন। চারিদিকে থেকে এল অতিথির দল। আশ্চর্য ক্ষমতা এক পেলেন মুদ্গল। যতই আসুক অতিথি,ফুরোয় না অন্ন। শতাধিক অতিথিতে, করেনি দূর্বল। তিতিক্ষা ও ঈর্ষামুক্ত জীবনের জন্য। দুর্বাসা ঋষির কানে এলো যেই দিন। ঈর্ষান্বিত হলো তিনি,সেই কথা শুনে। তার থেকে নামি হবে? বড়ই কঠিন।  পাগলের মত হয়ে গেল সেইক্ষণে। হুঙ্কার দিয়ে ডাকেন,হে মুদ্গল ঋষি। অশিষ্ট দুর্বাসা ডাকে,দেখো দ্বারে আসি। ৩ মুণ্ডিত মস্তক আর, কটূ কথা মুখে। তীক্ষ্ণ ...

ভাঁজে ভাঁজে

 ভাঁজে ভাঁজে দেবপ্রসাদ জানা বিসন্নতার পাথর নিয়ে নবজন্ম সুখস্মৃতি ঘোরে ফেরে দৃরত্ব মেলায়। বুকের রূদ্ধতা ভেঙ্গে মিলেছিল কর্ম ভেতরে ভেতরে বোধ বিসন্ন ডানায়। ভিজে কাপড়ের মত নিঙড়েছি মন, রোজই শুকোতে দিই,ঝকঝকে রোদে তবু কষ্টেরা চুঁইয়ে পড়ে কিছুক্ষণ - ফোঁটাফোঁটা জমা হয় অমূল্য সম্পদে। বাসি কাপড়ের মত রোজ সকালের- ছেড়ে দেওয়া কাপড়,সোনা রোদ খোঁজে। সাবুর মাড় দেওয়া নীল উজ্জলের - টানটান ইস্ত্রি করা,প্রতি ভাঁজে ভাঁজে। কনকনে শীতকালে কুয়াশায় ভিজে। বেচারা মনটা বুঝি কষ্ট পায় লাজে।

চরিত্র হনন

চরিত্র হনন দেবপ্রসাদ জানা ১১.০৬.২০২২ ভেতরে ভেতরে জেগে উঠি নাড়া খেয়ে, কে যে বন্ধু?কে যে শত্রু বুঝতে পারছি? না বুঝতে পারছি না, বিপন্ন বিস্ময়ে। ঘুন পোকার কামড়ে,খোঁকলাই হচ্ছি। কলঙ্কের কালি কেন,শূন্যের চরিত্রে ? সূর্যাস্তের পরে রাতে, বিক্ষত পাঁজরে। অলক্ষ্যে ঘাতক পাখি,অচলা নক্ষত্রে - আঘাত হানিছে কেন,রাতের আঁধারে? কে তুমি গোপনে করো,চরিত্র হনন। কলঙ্ক বন্ধু কলঙ্ক, তুমি যে দিয়েছ- তুমি তো সজাগ চিত্তে,করেছ ধর্ষণ। কেনইবা শেষরাতে ,আঘাত হানিছ। জনেজনে ক্ষণেক্ষণে,করিছে বিচার। খেরোর খাতায় মরে,লেখনী আমার।

অপেক্ষায়

 অপেক্ষায়  দেবপ্রসাদ জানা তুমি অপেক্ষায় থেকো মা  যে শ্মশানের পথ ধরে তুমি, চলে গেছ একদিন - পুরাতন শরীর খুলে নতুন শরীর পোরে নিতে, সাদা কালো মেঘের  মতো, উড়ে উড়ে আকাশের পথে, আমি অপেক্ষায় আছি মা  সেই স্নিগ্ধ পাখিটার মতো, আশ্বিনের কাশবন পেরিয়ে, আবেগে। পূর্ণিমার রাতে,জোছনা মেখে, সাদা ঘোড়ায় চড়া পরীর হাত ধরে, চলে যাবো একদিন এ দেহ ছেড়ে। তোমার আহ্বান পেয়েছি আমি, পলাশবনে লাল ফুল নিয়ে হাতে,  শরৎ উৎসবের আলো চোখে ভরে, অফুরান প্রেম সঙ্গীত মনে বন্দী করে  স্নিগ্ধ ধানের শিষ সবুজের পথ দিয়ে চলে যাবো আমি তোমার কাছে। তুমি অপেক্ষায় থেকো ইছামতী নদীর ধারে, প্রশান্ত বাতাস খেতে খেতে, সাত সমুদ্রের জলে, নীল কুয়াশায় ঢাকা  ভোরের আলোয় ভালোবেসে। গাঙের চিলের ঠোঁটে বন্দী হয়ে, না পাওয়া ভালোবাসা,আর বুকে রাখা বেদনার নির্যাস, সব রেখে চলে যাবো আনন্দে। তোমার কাছে, তুমি অপেক্ষায় থেকো মা।

গন্ধ পাচ্ছো?

 গন্ধ পাচ্ছো?  গন্ধ পাচ্ছো?  কাঠ ফাটা রোদ্দুরে,দরিদ্র কৃষক? বাঁচার চৈতন্যে প্রতিধ্বনিময় রৌদ্রাক্ত মাঠে। হয়তো হিংসার আগুনে কোনো প্রতিবেশী, নয়তো স্বামী পরিত্যক্তা ননদ- বিষাদের গ্লানি মেখে, স্বপ্নের উদ্দাম রোদ্দুরে পুড়ছে।  পুড়ছে আমার কলম,তোমার কলমে আঁচে। গন্ধ পাচ্ছো? আমি গন্ধ পাচ্ছি - মনে হয় মাংস পোড়া গন্ধ, নয়তো চামড়া পোড়া, ধানের ক্ষেতে,ফাঁকা মাঠে কোথাও - ধর্ষণের পরে অবলা নারীর দেহ জ্বলছে। হয়তো তার গন্ধ। শ্মশানে কাঠের আগুনে,ইলেকট্রিক চুল্লিতে। কিছুতো একটাতো জ্বলছেই  আমি গন্ধ পাচ্ছি, কারো হৃদয় জ্বলছে বেদনার আগুনে, কেউ হয়তো কলঙ্কের আগুনে জ্বলছে। কোনো বধু শ্বশুর বাড়িতে পণের আগুনে- রান্নাঘরে কেরোসিন ঢেলে জ্বলছে। কারো মন জ্বলছে কামনার আগুনে, বিছানায় দম্পতি সন্ধেহের আগুন পুড়ছে। কেউ হয়তো পরকীয়ার আগুনে জ্বলছে। আমি গন্ধ পাচ্ছি।  কেউ চিতায় তুলে দিয়েছে সদ্যজাত সদ্য মৃতশিশু,  নয়তো কন্যা ভ্রূণ জন্মের আগে- ক্ষুধায় পুড়ছে নাড়ি, ভালোবাসায় পুড়ছে যুবক পুড়ছে কামনার শরীর, কিছুতো একটা জ্বলছেই আগুনের হল্কা এসে লাগছে গায়ে।

পিপাসা

 পিপাসা  দেবপ্রসাদ জানা প্রথম প্রেম হোক বা প্রথম চুম্বন  হৃদয় গভীরে ভাসে উন্মত্ত আবেশ। অলক্ত আরক্ত প্রভা স্নেহ-আলিঙ্গন প্রথম চুম্বন স্মৃতি হর্ষ পরিবেশ।    মানব জীবনে যাহা শান্তি-প্রস্রবণ। কত প্রেম কত আশা,স্নেহ ভালবাসা,   বিরাজে তাহায় নেশা,অপার্থিব ধন। মোহিনী পুলক জাগে, মনের পিপাসা।    যত সুখ আলিঙ্গনে যত আকুলতা- যত হাসি,তত ব্যথা কটাক্ষের জোরে। ব্যাকুল প্রাণের কথা প্রেম বিহ্বলতা। প্রীতি সম্ভাষণে মুক্তি রাতজাগা ভোরে। সে চুম্বন,আলিঙ্গন, প্রেম-সম্ভাষণ,   উন্মত্ততা, মাদকতা ভরা অনুক্ষণ,  

কি আছে?

 কি আছে দেবপসাদ জানা একদিন ঝরে যাব,পালকের মত। উড়ে যাব নিশ্চয়ই হালকা বাতাসে। ফুটপাতে পড়ে রব বুকে নিয়ে ক্ষত। অকারণ প্রত্যাখ্যাত হইব প্রশ্বাসে। অনায়াসে পদতলে মাড়িয়েছে সবে শুভ্রঅঙ্গ জুড়ে ধুলো,আপন বিশ্বাসে- ঢেকে দিয়ে শুদ্ধ মন কলঙ্কে জড়াবে। প্রয়োজন হীনতায়,ভুগি দীর্ঘশ্বাসে। অনুষ্ণো বেদনা জমে তবু পড়ে থাকি অনির্বাণ অনুগ্রহে হৃদ জ্বলে যায়  পিপাসা আকৃষ্ট করা বারি ধরে রাখি। ভয় হয় কোনদিন মন কিছু চায়। অতৃপ্ত পিপাসু মন ডাক পাড়ে তারে। পড়ে থাকা পালকের কি আছে অন্তরে?

পরাজয়

 পরাজয় দেবপ্রসাদ জানা পরাস্ত হয়েছি আমি, মরণের কাছে। সব আশা আকাঙ্খায়,উষ্ণ বারি ঢেলে, জীবনের মনগড়া,যত প্রেম আছে, স্বপ্নের বৃষ্টিরা এসে,ধুয়ে নিয়ে গেলে।  জল জমে,কাদামাটি খানাখন্দে স্থিত। আকাশ বিস্ময়ে বলে আরো বৃষ্টি চাই? কাদামাখা জীবনের কলঙ্কেরা ধৃত। চারিদিকে শুধু মেঘ আলো কিছু নাই। একদিন দেখি তারে,অমল প্রতূষে। ঘুম ভেঙ্গে জানালায়,মুখের উপর । স্বাদ হল,মুছে ফেলি,দোষী যত দোষে। তৃপ্তির আহার্য খাদ্য,মনের ভিতর।   ইতিহাস হয়ে যায়,ব্যথা জেগে ওঠে।   নীল পাথরের তেজ, বিচ্ছুরিত বটে।   

কৃষ্ণ কর্ণ কথা

 কৃষ্ণকর্ণকথা  দেবপ্রসাদ জানা ১ কহ কৃষ্ণ বাসুদেব, মোর কোন দোষে? মাতা মোরে ফেলেদিলে জনমের কালে  সদ্যজাত, এক শিশু নদীজলে ভাসে। হতভাগ্য অবোধের, জন্ম পাণ্ডু কুলে। রানি কুন্তী মোর মাতা সূর্যের ঔরসে। কুমারী বয়সে মাতা, সেকি মোর দোষ। সুতপুত্র বলে কেন, লোক এবে হাসে। কি দিলে বিধাতা মোরে এত কেন রোষ। মহাগুরু দ্রোণাচার্যে অহঙ্কার ঢের। শিক্ষা দিতে গররাজি হয় সেইক্ষনে। যত শিক্ষা গুরুদেব পরশুরামের। অভিশাপ হেনে কহে,লুপ্ত প্রয়োজনে। হায় কৃষ্ণ কিযে করি সম্মুখে অর্জুন। ভ্রাতা সে কনিষ্ঠ জানি করি কি বলুন। ২ কহে কৃষ্ণ ওহে কর্ণ কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে। ধর্মের স্থাপন হবে, ধর্ম যুদ্ধ করে। অভিমান আছে জানি পাণ্ডব বিরুদ্ধে। কটু কথা বলে তুমি দোষ দেবে কারে? রাজপুত্র হয়ে জন্ম অন্ধ কারাগারে। লালন পালন করে, গোয়ালিনী মাতা রাক্ষস খোক্ষস কত, প্রাণ নিতে পারে আপন মামাই শত্রু, লিখিল বিধাতা। বলো কর্ণ,কার কাছে,করব নালিশ? আপনার বলে কেউ ছিল নাযে সেথা। নিজের সামর্থ্য বলে,জীবনের বিষ। হজম করিতে হলো, হৃদয়ের ব্যথা। কুন্তী কিবা পাণ্ডবের দোষ কারো নয়। সকলি অদৃষ্ট কর্ণ, জয় পরাজয়। ৩ যুদ্ধক্ষেত্রে রথচাকা ভূমিতে বসিল। অর্জুন গান্ডিব ...

আয়রে জামাই

 আয়রে জামাই দেবপ্রসাদ জানা আয়রে জামাই দিল খোলা। লকডাউনের মনচলা। আম কাঁঠালে ডুববি আয়। শ্বশুর বাড়ি,কোন সে গাঁয়। মাছ মাংস ছোলার ডাল। পেট পুরে খাবি কাল। শালাশালি, ঘরবালি। শ্বশুর বাবার ব্যাগ খালি। হাতে নিয়ে ফর্দ নামা। কিনতে হবে প্যান্ট জামা। ধুতি পোরে স্কুটি করে। মাছ মাংস ঝোলা ভরে। সাত সকালে সুজি লুচি। সঙ্গে দেবে বোঁদে কুচি। আড়াই প্যাঁচ, রসে ডোবা। গরম গরম আনবে বাবা। শাশুড়ি মাথার ঘোমটা ধরে। নাইটি ওপর শাড়ি পোরে। ভীষণ গরম,ভীষণ গরম। শাশুমাতার আসবে শরম। শ্বশুর বাড়ির জামাই আদর। বিছানায় পড়বে নতুন চাদর। পাশ বালিশে হেলান দিয়ে। পাশে একটি শালি নিয়ে- গল্প গুজব হবে বেশ। রাজনীতি আর পরিবেশ। সিনেমা হলে নতুন বই। KGF বা পুষ্পা সই।  কোনো শালির বিয়ের কথা উঠবে সেদিন মিঠা মিঠা। ছাড়ানো লিচু হাতে নিয়ে। আসবে মা ঘোমটা দিয়ে। মিষ্টি খেয়ে মুখ নষ্ট। ঝাল খাবে,বলবে স্পষ্ট। দু-দুটো বছর পরে। নতুন জামাই আসল ঘরে। গলা কাঁঠাল ভুল করে। এনেছে জামাই গোটা ধরে। বলবে শ্বশুর,বলতে আমায়। কাঁঠাল পেকে আছে মাচায়। চায়ের পরে চা হবে। পেট ফেঁপে বেলুন কবে। পত্যাঞ্জলির হজম ওলা। টক ঢেকুরে জ্বলবে গলা। ঠান্ডা জলে জলজিরা। আছে সাথে পুদিনহারা...

বোমারু

 বোমারু দেবপ্রসাদ জানা হঠাৎ যদি আমি না থাকি?  আর তুমি যদি আমাকে ভুলতে না পারো, যদি এই স্বল্পদীর্ঘ জীবনের, আজ শেষ দিন হয়। নীরবে,নিভৃতে,নিঃশব্দে,একান্তে - নশ্বরতার ভিতরে-নশ্বর হয়ে যাই আমি,  তখন অশ্রু জমা হবে তোমার হৃদয়ে। আমার বরফে ঢাকা শরীরটা- যখন চিতার আগুনে জ্বলবে চোখের সামনে, তোমার হৃদয়কে দগ্ধ করবে? ভিতরে ভিতরে টের পাবে মৃদু দহন? মনে পড়বে? তোমার ভালোবাসার কৃষ্ণ চুড়ায় যারা বাসা বেঁধেছিল- তারা সব পরিযায়ী পাখি।  ক্ষনিকের জন্য আসে, আবার চলেও যায়। আজ কেন কাঁদবে তুমি অন্তরে? বোবা কান্নায় ভেঙে পড়বে নীরবে- চুরমার করবে তোমার স্বপ্ন গুলো। আমার জীবনের সিংহভাগই ছিল তোমার জন্য, আদৌ কি বুঝেছিলে তুমি? কতটা ভালোবাসা ছিল এই হৃদয়ে। তোমার ভালোবাসায় উন্মাদ আমি, বলছিলে পাগল নাকি? আমাদের ঐ ভালোবাসার জবা গাছটায় একটা লাল ফুল ফুটেছে,  যে গাছটা জঞ্জাল বলে কেটে ফেলে দিয়েছ তুমি, আমি সেটা আবার বসিয়েছি - আমার ছোট্ট বাগানে,হৃদয়ে বাগিচায়। আমি যে গ্রহচ্যুত প্রাণী,  বোমারু আঘাতে আমি বিচ্ছিন্ন বিবর্ণ। তবু আমি ভালোবাসি এখনো।

কেন অপেক্ষায় থাকি

 কেন অপেক্ষায় থাকি দেবপ্রসাদ জানা ৩.৬.২০২২ কেন অপেক্ষায় থাকি প্রতিবার?  দেখছ না হলুদ ঘাসের ওপর পড়ে আছে সদ্য মৃত গোলাপের ফুল।  পতঙ্গেরা ঘিরে ধরেছে। প্রতিরাতের শেষে, মৃত্যু আসে - পাপড়ি ঝরে যায়। শুকিয়ে যায়। পড়ে থাকে অনাদরে, সব গোলাপের ঠাঁই, ফুলদানিতে, বইয়ের পাতায়,কবিতার খাতায় হয় না। আদরে আনা প্রেমের প্রতীক,  অনাদরে পড়ে থাকে টেবিলের নিচে। হলুদ ঘাসের ওপর। লাল গোলাপের মৃত্যু !  সোনালী সুতোয় বাঁধা তার দেহ,  রাঙতা কাগজে কাঁটা গুলো ঢাকা, চিরবন্ধন ছিন্ন করে কাল রাতেই,  খোলা পাপড়ি,হাওয়া ঘোরে দূরে-দূরে, ফুলকে সমীহ করে,সূর্যাস্তও থমকে থাকে, আমার বাগানে এক অগ্নিময় - ফুল ফুটে আছে আজ,  তুলে নিয়ে সৌন্দর্য প্রতিষ্ঠা করি, ফুলের পবিত্রতা দিয়ে, তারে আপন করি, তার সৌরভে মন ভরি আনন্দে,  সব কুসুমের জীবন-চরিত তুচ্ছ।  তবু  প্রতীক্ষায় থাকি প্রতিদিন। আরো একটি নতুন গোলাপের, তার মৃত্যুর অপেক্ষায়।

ঝড়

 ঝড় দেবপ্রসাদ জানা কেউ কি শুনেছ,কারা করে কলরব?  সার্থক নীরবতায়, নাকি অভিমানে। কেবলই গর্জে সেথা হিংস্র পশু সব,  বৃক্ষচ্যুত পুষ্পপত্র,মৃত্তিকার টানে। বৃক্ষের পল্লব খসে,পড়ে যায় সেথা। বরষার বারি সনে,মিশে যায় ভূমে। ভয়েতে সুন্দরী পুষ্প,বলে নারে কথা। অধর পাপড়ি স্পর্শে,অনুভবে চুমে। নীরবে কাঁদিছে পক্ষী,চাতকের বারি। ঘোর সঙ্কটে পৃথিবী,ভয়ঙ্কর বানী। আকাশের পথে ক্রমে,কালো মেঘ ঘেরি। কাননে অমনি ওঠে, বজ্রপাত ধ্বনি। সহসা উঠিল ঝড়, ত্রাহী বনস্থলী। মহাগদাপ্রভা হাঁকে,চকিতে বিজলী।

চন্দ্রকলা

চন্দ্রকলা দেবপ্রসাদ জানা উচ্ছাসে উন্মাদনায়,উষ্ণ রিপুগুলি। তমিস্রা রজনী মাঝে,ব্যাপিল ধরণী,  শীতল জোছনা আঁকে,জোনাক রঙ্গলি। একাকিনী আত্মমগ্ন,বসিলা রমণী। আঁধার আকাশে জ্বলে,তারা মিটিমিটি। চাঁদ গেছে কৃষ্ণপক্ষে,অচেনা প্রদেশে। অন্ধকারে গিরিরাজ,ধুসর  করোটি। দুর্গম কান্তার কাঁদে,অন্ধকারে এসে। আমাকে আবৃত করো,শুদ্ধ স্পর্শ দিয়ে। অলৌকিক চন্দ্রপ্রভা, রূপালী প্রশান্ত । চাঁদ এলো ত্বরাকরি,আমন্ত্রণ পেয়ে। রাতের আঁধার লাজে,দেখে চন্দ্রকান্ত। আহা মরি চন্দ্রকলা,পৃথিবীর দেহে। জোছনার প্রেম জাগে,ধরিত্রীর মোহে।