গুপিবাঘা
গুপিবাঘা
দেবপ্রসাদ জানা
আমলকির ছোট্ট গাঁয়ে
গুপি মুদির বাস।
হরিত্তকীর বাঘা গুপির
বড়ই সর্বনাশ।
গ্রাম ছেড়ে বাশঁ বাগানে
মিলল দুজন এসে।
গানবাজনা হবে না আর
বুঝল তারা শেষে।
বাড়ি গেল গ্রাম গেল
কি করবে তারা?
ঘর নাই খাবার নাই
হলো দিশাহারা।
দিনের পরে রাত হলো
ভয়ে কাঁপছে বুক।
বাঁশ বাগানে সন্ধ্যা হলো
দেখলো সুখের মুখ।
বাঁশ বাগানে গুপি বাঘা
দেখতে পেল ভুত।
সেই রাতে জমল মজা
আসলো ভুতের দূত।
ভুত রাজার জলসা হবে
নাচবে পেত্নী গাছে।
মোটা সরু লম্বা বেঁটে
হরেকরকম আছে।
লেংড়া কানা গাইবে গানা
বাঁশ বাগানে এসে।
ভুতের রাজা খুশি হয়ে
বর দিয়েছে শেষে।
গুপি বাঘার খুলল কপাল
পেলো তিনটি বর।
তিন তিনটে বর পেল তবু
পায়নি তারা ঘর।
গানের গলা খুলল গুপির
হাত খুলেছে বাঘার।
রাজকন্যা করবে বিয়ে
স্বপ্ন ছিল তার।
খাওয়াপরা যাওয়াআসা
সব হাতের মুঠোয়।
গানবাজনায় মুগ্ধ কোরে
শুণ্ডি দেশে সিঁধোয়।
শুণ্ডিরাজের যমজ ভাই
হাল্লা দেশের রাজা।
যুদ্ধ করে রাজ্য নেবে
মারবে তারা প্রজা।
শুণ্ডি দেশের রাজপ্রাসাদে
সুন্দরী রাজকন্যা।
কাটাকাটি হানাহানি
কিছুই রাজা চান না।
এক তালিতে হাল্লা দেশে
পৌঁছে তারা গেল।
হাল্লা রাজার রকম দেখে
ভারি হাসি পেল।
মন্ত্রী ছিল হাট্টাগাট্টা
সদাই খেতে চায়।
মাছ মাংস মন্ডা মিঠাই
পেটপুরে খায়।
বুদ্ধি আঁটেন ফন্দি করে
যাদুকরের সনে।
ওষুধ দিয়ে হিংসা ভরেন
হাল্লা রাজার মনে।
সাদাসিধা হাল্লারাজার
বদলে যায় ভাষা।
গুপির গানে এত যাদু
ছুটছে রাজার নেশা।
দুষ্টু বুদ্ধি ধরেছে মন্ত্রী
যুদ্ধ হবে সারা।
শুণ্ডি দেশে সৈন্য যাবে
অস্ত্রে সস্ত্রে ঘেরা।
জরাজীর্ণ সৈন্যদল
উঠল উটের পিঠে।
অনাহারে সৈন্যগুলো
টলমল হাঁটে।
গুপির গানে ছুটল নেশা
মুক্ত হাল্লা রাজা।
রাজকন্যার বিয়ে দিয়ে
মুগ্ধ যমজরাজা।
Comments
Post a Comment