নদী

 নদী

দেবপ্রসাদ জানা



প্রলয়ঙ্করী ভীষণা ভৈরবী সুন্দরী।

প্রগলভা প্রবলা পদ্মা ভাগীরথী।

পদ্মাগঙ্গা তরঙ্গিনী তৃস্তা ও কাবেরী।

সাগরের প্রিয়তমা,অয়ি চিরসাথী।

  

দিগন্ত বিস্তৃত তব কল্লোলিনী হাসি।

তরঙ্গিয়া উদ্বেলিয়া দৃপ্ত অব্যাহত।  

দুর্নমিত,রুদ্রবেশি সীমাহীন নিশি।

হে গম্ভীর দামোদর নিত্য অসংযত।


অবহেলে অবজ্ঞায় ভাঙো নদীতীর।  

উর্বর করিছ মহি, গ্রাসিয়া নগর।

অন্তহীন মূর্ছনায় আন্দোলিত শির।

ঝঙ্কারিয়া রুদ্রবীণা,ভাঙিয়াছ ঘর।


প্রসন্ন কখনো তুমি, একান্ত নিষ্ঠুর।

দুর্বোধ, দুর্গম হায়,  দুর্জ্ঞেয় সুদূর।


 ২


তুমি উচ্ছৃঙ্খল অতি, দুরন্ত দুর্বার।

সগর রাজার ভস্ম করিলে পরশ।

স্বর্গ হতে অবতরি,এলে এলোকেশে,  

শিবজটা ফুঁড়ে এলে,হইতে অলস।


কিরাত-পুলিন্দ-পুণ্ড্র অনাচারী দেশে।

বৃথা বাজাইল শঙ্খ, শঙ্খ লয়ে আদি।

বিস্ময়ে বিহ্বল-চিত্তে ভগীরথ আসে।

আর্যের নৈবেদ্য,বলি হে বিদ্রোহী নদী।


অনার্যের ঘরে আছ,আছ কত সাজে।

কত যুগ বহে চলো কত পথ ধেয়ে।

ব্যাপৃত সহস্র ভুজ,প্রলয়ের কাজে।

দম্ভ যবে মূর্তি ধরে, অভ্রভেদী হয়ে।


সিন্ধুসঙ্গী, মহাকাল হে সাম্যবাদিনী।

বহে চলো কীর্তিনাশা,কল্লোলনাদিনী।



ধনী দরিদ্রে হে নদী একাসন করে।

তব তীরে, বসায়েছ সম সমতায়।

সতত সতর্ক তারা নিশ্চিত কুটিরে।

জড়তার বারতা,না জানে মমতায়।


ভাঙ্গনের মুখে বসি,প্লাবনের তানে,   

অয়ি স্বাতন্ত্রের ধারা,পদ্মা গঙ্গা ধারা।  

অয়ি বিপ্লাবনী তৃস্তা, ছমাছম গানে।

নিরাপদে বহিতেছে, তবু ছন্নছাড়া।


নীরবে নিঃশব্দে চলো,সে অনন্তকাল।

দুঃখকষ্ট অনায়াসে ধুয়ে যায় ধীরে।

পথে কত নগরের দেখেছ আকাল।

নুড়ি পাথরের সনে, মিশেছ সাগরে।


পদ্মাগঙ্গা ভাগীরথী আরো কত নাম।

কাবেরী বিপাশা সহ, করিগো প্রণাম।


Comments

Popular posts from this blog

দুঃখটাকে এবার

মহাঋষি শুক্রাচার্য্য

গিরিশ চন্দ্র ঘোষ