আমি চৌঁত্রিশ
আমি চৌঁত্রিশ
দেবপ্রসাদ জানা
তোমরা কি জানো?
সতের বছর আমি ঘুমিয়েছিলাম।
হ্যাঁ ঠিক তাই,কোন ভাববাচ্যে নয়।
একেবারে সত্যি। একদম সত্যি।
আমি একান্ন পেরিয়েছি?হিসাব করে দেখো।
প্রতিদিন আট ঘন্টা ঘুমিয়েছি।
একান্ন থেকে সতের বাদ দাও।
এখন আমি মাত্র চৌঁত্রিশ।
চুলে পাক ধরেছে, মুখে পড়েছে ভাঁজ।
শরীরের চামড়া কুঁচকে গেছে।
চোখের নিচে কালি।
চোখের তারায় অন্ধকার আসছে।
চশমার ডান্ডিটা কানে ব্যথা দেয় প্রত্যহ।
তবু আমার মনে প্রেম জাগে,
পকেট থেকে বেরিয়ে আসে প্রেমপত্র।
নীল খামে গন্ধ মেশা মুখ বন্ধ খাম।
পাঠযোগ্য স্মৃতিচিহ্ন হয়তো নেই,
তবু প্রেম আসে মনে, কবিতায়।
শুকনো গোলাপ পাওয়া যায় কবিতার খাতায়।
গোলাপের মৃতদেহে তার গায়ের সুবাস পাই।
স্মৃতিরা লুকিয়ে পড়ে, কোনো এক কোষে।
কিছু মনে পড়ে কিছু হারিয়ে যায় নিজেই।
স্মৃতিরা বড় উচ্ছৃঙ্খল।
আকাঙ্খার বাড়া ভাতে ছাই দিয়ে একদিন -
বুকের ভেতরে জন্ম দিয়েছে প্রেমের নদী।
ভালোবাসার সন্ধিতে প্রেম অপুষ্টিকর।
আমার চৌঁত্রিশে।
তার চোখের আগুনে পুড়ে -
মিশে যাই আঁধার আকাশের তারার মাঝে।
আগুনের ওপরে হাঁটি প্রতিদিন,
তবু প্রেম এসে ধরে, আকুতি মিনতি করে।
ভালোবাসতে চায় লাল গোলাপ হাতে।
ব্যাধের মতো শিকারী ঘোরে,
ফেসবুকের পাতায় রূপসীদের ভিড়ে -
নিজেকে সামাল দেওয়া দায়।
আধুনিক ক্যামেরার কেরামতিতে,
পঞ্চাশের বুড়িও ছুড়ি।
প্রেমের সোহাগ পেতে চায়।
আমি যে চৌঁত্রিশ।
হিসাব করে দেখো, একান্ন থেকে সতের -
বাদ দাও এখুনি।
Comments
Post a Comment