কলমের আর্তনাদ
শোনো সভ্য মানব, এ পৃথিবীতে আমিই সৃজিত হয়েছি সর্বপ্রথম। লিখেছি অনন্তকাল পর্যন্ত, সকলের ভাগ্যলিপি, রামায়ন, মহাভারত যত মহাকাব্য সব আমার এই মুখ দিয়ে, কয়েক লক্ষ মাইল ছুটেছি, আজ এই বৃদ্ধ বয়সে আমাকে অথর্ব করে রেখেছে।
আমাকে দিয়েই রচিত হয়েছে পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে অদ্যাবধি ইতিহাসের সকল অধ্যায়। পৃথিবীতে জন্মেছে যত মহা মনীষী ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের ঝর্ণাধারা, আমিই দিয়েছি তাঁদের সকল জ্ঞানের দিশা। তাঁদের অনেকে হয়ত আজ নেই, কিন্তু তাঁরা অমর হয়ে আছেন সকল মানুষের বুকে এবং থাকবেন চির স্মরণীয় হয়ে চিরদিন সবার মাঝে। নিশ্চয় তাঁদের এ আকাশচুম্বি সফলতা আমারই দৌলতে।
বন্ধু! তুমিও ভালোবাসো আমাকে। গ্রহণ করো তোমার অন্তরঙ্গ হিসেবে। ব্যবহার করতে শেখো আমাকে। লেখতে থাকো প্রতিদিন যা কিছু শেখো পিতা-মাতা ও গুণীজনদের কাছে, কোন বইয়ের পাতায় বা শিক্ষকের মুখে। যা কিছু দেখো আশ পাশের পরিবেশ বা শিক্ষা সফরে। লিখে দাও যা তোমার হৃদয়ে জাগে অভিজ্ঞতার আলোকে,পারবে কি বন্ধু! আমাকে তোমার অন্তরঙ্গ বানাতে ? বিশ্বস্ত বন্ধু ভেবে আজীবন কাছে রাখতে ? আমি তোমার অতি আপন ও নিকটতম। আমাকে ভালোবাসো, কাছে রাখো। প্রতিদিন তোমার হাতের সোহাগ মাখা কোমল ছোঁয়া আমাকে দাও। তোমাকে সৌভাগ্যের স্বর্ণশিখরে পৌঁছানোর দায়িত্ব আমার।
বন্ধু! তুমি যখন আমাকে ব্যবহার করো এবং কাছে রাখো। আমার খুব ভালো লাগে।
কিন্তু কালি ফুরিয়ে গেলে যখন আমাকে ছুঁড়ে ফেলো ডাস্টবিনে, নর্দমায় বা রাস্তার পাশে তখন আমার বর্ণনাতীত কষ্ট হয়। দুঃখ হয় মনে, খুব কান্না পায়। গুমরে কাঁদতে থাকি। কিন্তু বুকের দুঃখ ও কান্না বুকেই চেপে রাখি। শোনাতে পারি না তোমাকে । আমার বিশ্বাস! তুমি যদি আমার হৃদয় ফাটানো চিৎকার শুনতে, শুনতে আমার আর্তনাদ। হ্যাঁ আর্তনাদ "কলমের আর্তনাদ" কবি সৌমেন কুমার চৌধুরী ( নীল উল্কা) মনোকলেমের প্রতিটি আঁচড়ে প্রতিটি শব্দের মধ্যে পাওয়া যায় প্রতিবাদের আর্তনাদ। আমি আশা করবো তার এই সৃষ্টি সমাজের প্রতিটি কলমের আঁচড়ে জ্বেলে দেবে আগুন।
Comments
Post a Comment