চর্তুদশপদী
চতুর্দশপদী
দেবপ্রসাদ
১
সে এক ঝড়ো বছর, বাতাস ছুটল
নিষ্ক্রান্ত হলো অরণি পুঞ্জ পুঞ্জ মেঘ।
কালোমেঘ ভেঙে ভেঙে, উঠানে পড়ল।
বৃষ্টি, শিলা বৃষ্টি আর বাতাসের বেগ।
বজ্রনির্ঘোষ আঘাতে ক্ষতগুলো সব,
অগ্নিময় হয়ে, বজ্র হিংসায় উন্মত্ত।
বিদ্যুতের ঝলকানি, সেকি কলরব।
নির্মম উত্তাপ জানি, গ্রীষ্মের প্রদত্ত।
জ্বলতে লাগল অগ্নি, বুকের উপর
চাপিল পাষাণভার। আগুন আগার।
আলোকিত ক'রে তোলে, এই চরাচর।
নক্ষত্রহীন রাত্রির নিস্তব্ধ আঁধার।
বিপর্যস্ত নদনদী পথ ঘাট সব।
অস্পষ্ট উদ্বেগে সব করে কলরব।
২
সন্তাপে হাঁপাতে লাগে, ভীষণ অসুখ।
রক্তাক্ত হাজার পশু, হারাইল প্রাণ।
কাঁটার মুকুট পরে, ফিরাইল মুখ।
কতদিন আর তবে, রবে যশবান।
একি অন্ধকার এলো, আগুনের মতো।
মশালের মতো জ্বলে, জোছানার রাতে।
আগুনের আঁচড় যে, লাগে অবিরত।
আত্মোৎসর্গের পথ, জীবন প্রভাতে।
ঘৃণার শৃঙ্খলে বাঁধা, লজ্জার ভঙিমা।
বৃষ্টির কান্নায় ভরা, কালো পাঁকে ডোবা।
অসহ্য তাদের কাছে, জীবন মহিমা।
যন্ত্রণা তাদের করে, খোঁড়া অন্ধ বোবা।
অবিশ্বাস্য হিম শূন্য ঘোর অন্ধকার।
হঠাৎ বসন্ত এলে, কি দেখবে আর।
৩
পচা হেমন্তের মাঝখানে, সুন্দর বসন্ত।
ম্রিয়মান দুর্গে সাজে, স্বর্গের বাহার।
এ সেই লাল বসন্ত, আকাল পযর্ন্ত।
সেই রক্তিম প্রত্যুষে, বিষন্ন বিকার।
ঝকমকে লাল সূর্য, রশ্মির সৌরভে।
পুঞ্জ মেঘ, ছিঁড়ে গেল কুয়াশার ঘরে।
শবাচ্ছাদনে পৃথিবী, আপন গৌরবে।
সমুদ্রগহ্বরে বাতি, দীপ্তির আকরে।
প্রকৃতির বেদীমূলে অজানা সে রাত।
দ্বীপ্তির উৎসর্গ-শিখা, রাত ভোর খেলা।
আলোকের দিকে ছোটে, নতুন প্রভাত।
উদ্দীপ্ত রক্তের তরে, বয়ে যায় বেলা।
বিস্মৃত কবরগুলো, গৌরব-মুকুটে।
রাতের সূর্য হাসে, ভারি বিদঘুটে।
৪
নিদ্রার পরেই আসে মহা জাগরণ,
বাস্তব করুণ স্বপ্নে, তাদের দাপট।
মদিরতা স্বর্গসুখে মধু আস্বাদন।
রাত্রির কাছে দিনের, অলক্ষ্যে কপট।
সময় যখন আসে, চিতার আগুনে।
জ্বলছে স্ফুলিঙ্গ তার জীবন নিঃশ্বাসে।
পদদলিত মুক্তির শব আবরণে।
ফুল বিনষ্ট হয়েছে, অযাচিত ধ্বংসে।
আলোর পৃথিবী আজ, ত্রাসে উল্লসিত।
মায়ের জঠরে সেই, অপরাধী বীজ।
দৃষ্টির আড়ালে বাড়ে, সে অপরিমিত।
ক্রোধে মায়ের জঠরে, বাড়ে রক্তবীজ।
এক জীবনে আবার জন্মাবে শৈশব।
আবার বিলীন হবে, পড়ে রবে শব।
৫
অন্ধকারের শক্তিরা গুড়ি মেরে ছিল,
ধূলোর উপর বুকে হেঁটে চলা প্রাণী।
ফোঁসফোঁস করছিল, ওঁত পেতে ছিল।
ছোবলের ফণা তুলে, ছিল অভিমানী।
বীরদের পিঠে চড়ে, শুধু একদিন।
জনগণের শত্রুরা নোংরা মুখ দিয়ে।
পান করে নিল উষ্ণ নির্মল সুদিন।
ভীষণ অসহযোগী বন্ধুদের লয়ে।
কঠিন পথশ্রমের অবসন্ন যাত্রী।
তন্দ্রাতুর নিরস্ত্রের সীমাহীন পথে।
অতর্কিতেই আক্রান্ত জোছনার রাত্রি।
আলোর দিন অদৃশ্য হলো সাথে সাথে।
সীমাহীন অভিশপ্ত কালো দিন সব।
মুক্তির আলোয় আজ, ওঠে কলরব।
৬
অন্ধকার সর্পদষ্টি ঘৃন্য হত্যাকাণ্ড,
সাম্প্রদায়িক হিংসায়, কুৎসার উদ্বেগে।
উৎসবে মেতেছে দিন, উন্নয়ন পণ্ড।
উন্মত্ত হৃদয়হীনতায়, বল্গাহীন বেগে।
প্রতিহিংসার উৎকোচে অসংখ্য অসাধু।
বিশ্বাসঘাতী যোদ্ধার, আক্রমণে হত।
মদের বাষ্পের মধ্যে, প্রাণ দেয় বধু।
অজ্ঞাত শিকার রক্তে, ওরাই রঞ্জিত।
এক মুঠো ফেনাভাত, ভদ্কার বোতলে।
নেশায় দৌড়চ্ছে সব ইতরের দল।
পকেটে বাজছে সদা, ঠন ঠন বলে।
বিশ্বাসঘাতকতার টাকায় উচ্ছল।
বৃষ্টির কান্নায় ভরা, কালো পাঁক ডোবা।
অগনিত মানুষেরা, হয়ে গেছে বোবা।
৭
তবে কি রাত্রির সঙ্গে দিনের প্রণয়।
নাকি পরাজয় হলো, অন্দর মহলে।
জীবনকে পর্যুদস্ত ক'রে, আপনার জয়।
জয়গানের সময় এখনো না হলে।
তখন ভস্মের মধ্যে অগ্নি ধিকিধিকি।
জ্বলবে স্ফুলিঙ্গ, তার জীবন নিঃশ্বাসে।
তাকে আবার জাগাবে, জীবনে যা শিখি।
বিছিন্ন পদদলিত মুক্তির বিশ্বাসে।
ফুল বিনষ্ট হয়েছে, ধ্বংস হয়েছে রে।
আলোর পৃথিবী করে সন্ত্রাসে উল্লাস
ফুল ও ফলের স্থান মাটির ভিতরে।
মায়ের জঠরে বীজ করিছে সন্ত্রাস।
দৃষ্টির আড়ালে কারা গভীর রহস্যে।
নিজেকে জীইয়ে রাখে, চিতা ছাই ভষ্মে।
৮
মাটির উত্তাপ তাকে উৎখাত করবে,
বারম্বার মৃত্যুবার্তা আসবে অঙ্গনে।
নতুন এক জীবনে আবার জন্মাবে।
হয়নি সকাল হবে, সবার গোপনে।
কুয়াশা গগনে সূর্য্য অস্তমিত আজ।
পৃথিবীর প্রান্তে প্রান্তে বিচ্ছুরিবে আলো
রূপালী জোছনা নীলে, মন অধিরাজ!
নাশি' অন্ধকার, হবে চমক জোরালো।
জাগ্রত করেছে কত কোটি নর-নারী,
শ্রমিক-কৃষক-সঙ্ঘ, উঠিয়াছে জাগি।
অন্ন বস্ত্র দিয়া, মোছে নয়নের বারি!
ঘুচাইয়া রোষ ক্রোধ, হও অনুরাগী।
আত্মার সম্মান রেখে জগৎ কল্যাণ!
ক্ষোভে একান্ত অধীর, বিচূর্ণিত মান।
৯
আভিজাত্য-গর্ব্বোন্নত, উচ্চবংশ শির
বুভুক্ষিত বিদলিত বিশ্ব-মানবের।
কাস্তের উজ্জ্বল ধারে, উল্লসিত বীর।
দস্যুর দীক্ষায় ঋদ্ধ, আদিম রক্তের।
প্রচণ্ড প্রসব ব্যথা, দিয়েছিলে যাকে।
প্রসূতির যন্ত্রণায় যুগান্তের মোড়ে।
উত্তপ্ত হাতের চাপ, দিয়েছি তোমাকে।
মানবের মৃতদেহ, তুলছে ভাগাড়ে।
প্রাণের আশা ভরাতে ভাণ্ডারের ক্ষুধা।
তফাত অনেক আছে হিংস্র দস্যু হাসে।
শপথ নিয়েছে পথে, পড়ুয়ার মেধা।
সংহত শক্তির চূড়া, মেঘ পরে ভাসে।
বিপ্লবের বজ্র দীপ্তি, পাক দেশ ভর।
উত্তাল সমুদ্রে এসে পড়ে আছে নর।
১০
অজ্ঞতায় বেঁচে আছে আদিম হিংস্রতা।
নিরুদ্বিগ্ন ঝাঁপ দিয়ে, ভাসিয়ে শরীর।
নির্জন দ্বীপের ধ্যানে, কাটায় অজ্ঞতা।
ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়া অজ্ঞতার ভিড়।
এক অখণ্ড শরীর নিয়ে ছিনিমিনি।
লক্ষ লক্ষ নর-নারী, ভারি কুয়াশায়।
উৎকর্ষসাধনের পথে, করে বেচিকিনি।
নবাগত বাসনার, নিষিদ্ধ পেশায়।
বর্ষ শুভ্র ফুলরাশি, যৌবনে ভাসিয়া।
কাল-চক্র ঘর্ঘরিয়া ঘুরিতেছে কাজে।
ক্ষণিক অনুকম্পায় অম্লান হাসিয়া।
তবু কেন অনাদর, মানব-সমাজে।
কুকুরের মত কেন কেড়ে কেড়ে খায়।
অপরের গ্রাস, দেখে তার পিছে ধায়।
১১
সর্ব্বনাশা নেশা লাগে, রাতের গভীরে।
ক্ষুধার্ত্ত হায়না সম, হামলায় দেহে।
প্রেমের শাসন নেই, আকাঙ্ক্ষার ভিড়ে।
অনুক্ষণ শরীরের, যৌন কথা কহে।
জীবন্মত জাতি-চিত্তে জ্বালি হুতাশন।
ঘোরকালো রাত্রি ডাকে গভীর অরণ্যে।
চিরদিন রবে দেহে, বসন্ত যৌবন।
ফুলে ফুলে মধু খায়, যৌনতার জন্যে।
অকিঞ্চন প্রেম ভাষা উষ্ণতার খনি।
আগুন লেগেছে যেন সারা পৃথিবীতে।
নারী মাংস কাঁচা খায়, রবীন্দ্র সরণী।
জ্বালিয়ে পুড়িয়ে খায়, দেখি প্রতি রাতে।
প্রভাতের লাল সূর্য, ফের বুঝি হাসে।
দিনের আলোয় ফের প্রেম ফিরে আসে।
১২
মূখোমূখি প্রতিবাদ নগরে হাজার।
মুক্তির সীমান্ত ঘিরে বিস্তীর্ণ প্রান্তরে।
বিদ্যুৎ-ইশারা চোখে, হাজার হাজার।
ক্রমশ সংক্ষিপ্ত হয়ে, আসে কন্ঠদ্বারে।
বিশ্বব্যাপী প্রতীক্ষিত হাজার বছর।
বিপর্যস্ত গণতন্ত্র, কণ্ঠরুদ্ধ তার।
বুকে আর্তনাদ আসে শত্রুর ওপর।
জয়ের সংবাদ দিলে কিবা হবে আর।
সযত্ন মুখোশধারী বন্ধ আস্ফালন।
কাঁপিছে হৃৎযন্ত্র তার, ভয় আচরণে।
বিপ্লব হয়েছে শুরু, চিহ্নিত মরণ।
পদানত জনতার ব্যগ্র গাত্রোত্থানে।
বিস্ফোরণ অতর্কিতে চলে আক্রমণ।
অগ্ন্যুৎপাত হানে দেশে, দেখি আলোড়ন।
১৩
পদে পদে পদধ্বনি আজো শোনা যায়।
হাজার কণ্ঠের শব্দ, ঘোর বিপ্লবের।
পৃথিবীর ঘরে ঘরে, মরণ বিদায়।
উর্বর জঠরে ওঠে, বেগ সংগ্রামের।
আশ্চর্য উদ্দাম দেখি, প্রত্যেক আকাশে
সূর্যদীপ্তি লালরক্ত তরঙ্গে তরঙ্গে।
ভেসে আসে মুক্তি যুদ্ধ, দেশের বাতাসে।
অন্ধকার বুভুক্ষায়, ভাসে সঙ্গে সঙ্গে।
পথে পথে মৃতদেহ অনৈক্যের ক্ষত।
চোরাবালি, পরম্পর অযথা সন্দেহ।
দরজায় চিহ্নিত নিত্য শত্রুর উদ্ধত।
পদাঘাত, অত্যাচারে, আতঙ্ক প্রত্যহ।
অদৃষ্ট ভৎসনা হত-ক্লান্ত কাটে দিন,
বিমর্ষ রাত শৃঙ্খলে, কাটে আশাহীন।
১৪
শ্বাস হীন ক্রমাগত ক্ষীণ-হীনমন্য।
সেখানেও আয়োজন সম্পূর্ণ নিঃশব্দে।
আশায় আশায় বাঁচে, সবুজ অরণ্য।
দাবানলে পুড়ে যায়, প্রতি অব্দে অব্দে।
অজানা অচেনা রাত, চাঁদ- অপেক্ষায়।
সাগরের জলে স্রোত, ঘাত প্রতিঘাতে।
ইশারায় কহে যায়, তরী পাহারায়।
কী নিদারুণ যন্ত্রণা, দেয় স্রোতে স্রোতে।
কোন বিপ্লবের রক্ত, যুদ্ধের নিশান।
স্মৃতিসৌধে রাত্রি রবে, রাত পাহারায়।
প্রহরীরা দেখছ না, দিয়ে গেল প্রাণ।
ওরা যে ছিনিয়ে নিয়ে গেল পরিখায়।
বিপ্লবের সাথী, আজ ওপার বাংলার।
সেই স্মৃতিসৌধ যেন, রুদ্ধ কারাগার।
১৫
কুটিল রাত্রির ঘর, হিম অন্ধকারে।
কালনাগিনীর ভারি, উদ্ধত নিঃশ্বাস।
স্পর্শ করছে আমারে কেন প্রতিবারে।
বরফের ছুরি তারে, আবার-বিশ্বাস।
সঙ্গীহারা রক্ষীহারা করে অস্বীকার
যুগচেতনার সেই পরম পাওয়া।
মাটি যার স্পর্শে হয় জ্যোতির্ময়াকার।
চেতনা ফুল ফোটায় শীতল হাওয়া।
রক্তস্নাত অঙ্গীকার চিরসঙ্গী তার।
কার কার ঘরে লাগে, অসভ্য আগুন।
নিঃসঙ্গ ফুলের বৃন্তে, শুধু অন্ধকার।
ফুলের শরশয্যায়, বসন্ত ফাগুন।
কারান্ধকার জীবনে বসন্তের ফুল?
ঘুমিয়েছিলাম ঘরে, এই ছিল ভুল।
১৬
তোমাদের স্বপ্নপুরী, তোমাদের নেশা।
সৌধের মণিকোঠায়, পরিতৃপ্ত ঘুম!
ফুলের পাপড়ি গুলো, মহর্ষি দূর্বাশা।
কথায় কথায় তার, অভিশাপে ধুম।
কালসাপের ছোবল লাগে প্রতিদিন।
পাপড়িগুলো কেন যে এমন বিষাক্ত।
ফুলগুলো সব কাঁটা, সুগন্ধ বিহীন।
শুধু ছিঁড়ে যায় মন, ঝরে পড়ে রক্ত।
স্বপ্নপরীর কথায় ঘুম ভাঙে কার?
এ কি অন্ধকার দেখি পাতালপুরীতে।
নিঃসঙ্গতা নিঃস্তব্ধতা একেলা-আমার
দেহ সাজে ওই ঘেরা কাঁচের গাড়িতে।
ফুলের গন্ধ মেশানো সস্তায় আতর।
ওধারে কাদের ঘরে কান্না দিনভর।
১৭
কালো কালো মুখ সব আছে কালঘুমে
ইস্পাতের বর্ম ঢাকা কোমল উত্তাপে।
বিশ্বস্ত হাত দু'খানা সেইক্ষণে চুমে।
পরম স্নেহে নিষ্ঠায় ভীষণ প্রতাপে।
গুলি বেঁধা বুকে তবু পাঁজরখানাকে
চেপে ধরে একবার বলে ছিল হায়।
বিশ্বাসঘাতক যারা, ফের ধরে তাকে।
অনায়াসে গলা টিপে মেরেছিল তায়।
ফুলের শয্যায় রেখে ধুপধুনো দিয়ে।
শতাব্দীর অন্ধকার যুক্ত কারাগারে।
ঘুমিয়েছিলাম আমি, মনে স্বপ্ন নিয়ে।
সৌধের মণিকোঠায়, ধুলো মাখা ঘরে।
কী প্রশান্ত, পরিতৃপ্ত, ছিল সেই ঘুম
ফুলগুলো কাঁটা হয়ে দিয়ে গেল চুম।
১৮
পাপড়িগুলোই সব এমন বিষাক্ত।
আমার সর্বাঙ্গে ঘেরা মালায় মালায়।
কালসাপের ছোবলে, যেমন রক্তাক্ত।
তেমনই জ্বালাধরে, ফুলের মেলায়।
আবার ঘুম ভাঙবে, কোন নিরালায়।
এই অন্ধকারে এই পাতালপুরীতে।
নিঃসঙ্গ আমার দেহ ঘেরা পাহারায়।
কাঁচের ঢাকনাগুলো বলো খুলে নিতে।
বড় গুমোট লাগছে, কাঁচের ভিতরে।
আমি তো ঘুমোতে চাই কোমল উত্তাপে।
আমার একান্ত রিক্ত, শান্ত পরিসরে।
পরম স্নেহে নিষ্ঠায়, দেহের উত্তাপে।
বুকের পাঁজরখানা বিশ্বাসঘাতক।
ভারসাম্যহীন খেলা খেলে প্রতারক।
১৯
স্বপ্নজালে অকারণ আশার আলেয়া।
নিরাশার কালো রঙ, অমূল্য রতন।
স্বপ্ন বলে বরাবর, পৃথিবী ঘুরিয়া।
নতুন চোখের দৃষ্টি, করিও যতন।
লড়াই করো আবার, জেতার বিশ্বাসে।
চল্লিশ কোটি শুক্রানু, একা তুমি বীর।
ডিম্বানুকে ভেদ করো, আপন প্রয়াসে।
আত্মবিশ্বাসের বীজ, করেছিলে তীর।
আজ কেন অকারণে, হয়েছ অধীর।
জীবনের পথে বাধা, আসবে অনেক।
জীবনের জয়গানে, তুমি একা বীর।
জীবন সমুদ্রে একা, আনন্দ সাবেক।
দুঃখ, শোকে মূহ্যমান, অবসাদ কেন?
নিরাশায় কেন ম্লান, দেখি যেন তৃণ।
২০
নতুন করে আবার বাঁচো পৃথিবীতে।
নতুন সম্ভাবনায় তুমি নও একা।
পরিবর্তন উন্মুখ, মানবের হিতে।
জীবনে আমাকে করো, আপনার সখা।
আচ্ছন্ন কেন যে তুমি ভারি দুশ্চিন্তায়?
মনকে উৎফুল্লে ভরে, এসো মহাবীর।
আপন খেয়ালে গড়ো, সুখ সুচিন্তায়।
আমি আছি দিনরাত, পাহারায় নীড়।
এসো বাঁচি দুজনায়, আকাশের নীচে।
মানবের মাঝে চলে, মানবের সাথে।
অন্ধকার দূর করে, যারা সদা বাঁচে।
তাহাদের আঙিনায়, তাহাদের পথে।
ভোরের সূর্য ওঠার, থাকি অপেক্ষায়।
মিশে যাই নানা রঙে, নানা বেদনায়।
Comments
Post a Comment