Posts

Showing posts from September, 2021

শ্রীরাধার প্রেমে

 শ্রীরাধার প্রেমে  তোমার স্তব্ধ অন্তরে এত অভিমান  বিরহে কাঁদিছে রাধা,যমুনার তটে। মোহনের বাঁশি গাহে,সুমধুর গান। অরূপ অতল সুর,ঘোরে পথে ঘাটে। বলো কোন মধুময়,কোন শুভক্ষনে। তোমার চরণ ছুঁয়ে, যায় ধুলিকণা। শিশির স্নাত ফুল দি,তোমার চরণে। উতপ্ত মরু সূর্যের এমন বাসনা। গায়ে মাখি মধুসুধা,কপালে চন্দন। সৃজন সম্মুখ পানে,চলে শ্যাম রাই। লীলাধামে ঢেউ তুলে,হইল বোধন। সখীসনে দোলখাবে,শ্রীরাধা কানাই। স্বর্গ মর্ত্য পাতালের,সৃষ্টিকর্তা দোলে। রাধার প্রেমে কানাই,চরাচর ভোলে।

প্রেমের ছড়া

 প্রেমের ছড়া বুকের কষ্ট বুকে নিয়ে মনের আনা গোনা। মৃত্যু বড় চেনা লাগে জীবন অচেনা। জীবন মানে হাসি কান্না জীবন একটা খেলা। আজ আছি কাল নেই বয়ে যাবে বেলা। জীবন মৃত্যু একসাথে  চলে পাশাপাশি। কেউ আগে কেউ পরে নদে যাবে ভাসি। তুমি আমি কেউ নয় শুধু মরীচিকা। যেতে হবে ওই পথে এইটাই লেখা। গোকুলে গোপাল এলো  করিতে লীলা। শুভ্রদীপের বাড়িতে তাই  বসেছে মেলা। জয় গোপাল জয় গোপাল বলছে সবাই। এমন সুন্দর রূপ তাঁর  কোথা গেলে পাই। তুমি তো ছিলে আমার হয়ে। চলে গেলে কেন,বলে কয়ে। এতদিন এতমাস ফাল্গুনী,ছিল পলাশের। আজ সে দেখো বউ,সেজেছে সৌভিকের। স্মৃতিরা জেগে থাকে মনে স্বপ্নরা মরে ভোরের আলোয়। মনের মন্দিরে রেখেছি ঢেকে দেবীর কৃপা যেন না বেরোয়। বন্ধু ভালো আছো তো অনেকদিন হয়নি কথা। সুপ্রভাত আর শুভরাত্রী  এক নিয়মিত প্রথা। প্রেমের কবিতা মোরে করেছে বিবাগী। হৃদয়ে লেগেছে নেশা তাই প্রেম মাগি। সকালটা ভালো হোক প্রেমের বচনে। এসেছে শরৎ সখী এই প্রেমাঙ্গনে। স্বপ্নেরা জেগে থাকে সারারাত  স্বপ্ন দেখবে বলে। আলোআঁধারি জোছনা তারে দূরে দেয় ঠেলে। কবিতা আমার প্রেয়সী  কবিতা আমার মন। ভালোবেসে মরি যদি করো আলাপন। টুকর...

কি হবে গো

 কি হবে গো কাশফুল? দেবপ্রসাদ জানা  একটুরো সাদা মেঘ এসে বলল, শরতের কাছে- কি কারণে কাশফুল ফুটেছে পথের ধারে? ওর কি কোন কাজ আছে? এই পুজোর মাসে। মায়ের সঙ্গে ও বরাবর আমার আগে আসে। কেন? আমি যখন আঁধার কালো ঘুরি। বর্ষা দিয়ে কালো ধুয়ে ফেলার আগে- দেখি,উকি দিচ্ছে মাঠে। কেন গো? কি হবে গো কাশফুল? রেগে মেগে কাশফুল বলল,  শরৎ মেঘ তুলো মতো মুখ, ঘুরে বেড়াস,উড়ে বেড়াস, তোর কোন নেই দুখ। শরতের মোরা দুই সন্তান - এত কেন লড়াই?  আয় ভাই দুয়ে মিলে,পুজো ঢাক বাজাই।

কি হবে গো কাশফুল

কি হবে গো কাশফুল? দেবপ্রসাদ জানা ১১.৯.২০২১ কি হবে গো কাশফুল? তাও জানো না তোমরা? শরৎ নাকি মাথায় পরে ঘুরবে। পুজোর সময় তার ভারি মজা। সাদা সাদা তুলোর মতো মেঘ আর তার সঙ্গে মাঠে পাশে  কাশফুলের সারি। তাতে শরতের বয়ে গেছে ভারি। কাশফুল !  তার কোন রূপ নেই। গন্ধ নেই,রঙ নেই, তার কোনো ঢং নেই। ভারি সাদা সিধা। বোকার মতো মাথা দোলায়  বাতাসের সাথে। কাশফুল !  মায়ের পায়ে স্থান নেই। তবুও সে আসে মায়ের পায়ে পায়ে। শরতের গায়ে গায়ে। নাই বা লাগুক কাজে। তাতে কি?

সোনার সংসার

 সোনার সংসার দেবপ্রসাদ জানা শোভিত কোমল পায়ে,লাল আলপনা। সিঁদুরে রাঙানো সিতে,লাল বেনারসী। কপালে সিঁদুর রাঙা,লাগে বীরাঙ্গনা। লাল দুই ওষ্টে ঝরে,মৃনালিনী হাসি। প্রথম দর্শনে দেখি,প্রেম এলো মনে। এই মোর আকাঙ্ক্ষিত,জীবন সঙ্গিনী। দিন যায় হেসেখেলে,আপনার মনে। নিয়মিত শব্দে বাঁধা,মোর বিনোদিনী। কপালের লালটিপ,নেমে এলো চোখে। স্বপ্নের জেল খানায়,তালা দেয়া ঘরে। থমকে যায় মুহূর্ত, সময়ের ফাঁকে। কত যেন আলপিন,গাঁথা দেহ পরে। বোবা মুখে ফুটে ওঠে, হাজার শব্দেরা। বন্দী হয়ে আছে ওই, না শোনা বাক্যেরা।     

কথা বলেনি

 কথা বলেনি কথা না বলা কথারা দাঁড়িয়ে ভাবছে কে আগে বলবে তার,প্রাণের কথাটা। একটা দৃষ্টি তাকিয়ে থেকেই বলেছে। ভালোবাসার কথাটা,মনের ব্যথাটা। প্রতিজ্ঞার কথা কেউ বলেনি সোহাগে। দৃষ্টির সাথে দৃষ্টির কথা হয়েছিল। কোন হৃদয়ের কথা,বলেনি আবেগে। শুধু মনের গভীর স্বপ্ন এঁকেছিল। না,কেউ কারো সঙ্গে,ঘনিষ্ঠ হয়নি। বসেনি নন্দন লেকে,হাতে হাত দিয়ে। স্পর্শের অনুভবও, দুজনে নেয়নি। ভালোবাসা এসেছিল,শুধু দৃষ্টি দিয়ে। ভালোবাসা এসেছিল,শুধু ভরসায়। চোখের তারায়,আর লেখা কবিতায়।

যে ফুল

 যে ফুল দেবপ্রসাদ জানা ১৭.৮.২০২১ যে ফুল, গোলাপের ফুল- রোজ ফেসবুকের পাতা থেকে,  কুড়িয়ে রাখি, তোমাকে দেই , তুমি খুশী হবে বলে, কিন্তু তুমি,প্রশ্ন করলে- এত ফুল রাখব কোথায়? আমি কষ্ট পেলাম, দুঃখ পেলাম অনেক, ভালোবাসার গোলাপও - তোমার কাছে অতিরিক্ত। অনেক স্বপ্ন কুড়িয়ে ছিলাম, মনের বাগান থেকে, অনেক আশায় বুক বেঁধেছিলাম, ফুলের বদলে প্রেম পাবো বলে, ভালোবাসার কুড়িয়ে পাওয়া স্বপ্ন, তোমায় দেবো বলে, তুমি- মনের দরজায় প্রাচীর তুলে দিলে, বিনা নোটিশে,  যার গোলাপের মতো ভালো লাগার ফুল, রাখার জায়গা নেই অন্তরে, সে কোথায় রাখবে আমাকে?

বধু হে

 বধু হে তোর পিপাসায় যমুনা নদী শুকনো বালুচর। তোরে দেবো শাঁখা সিঁদুর  তুই কি আমার পর? তোর আগুনে কলঙ্ক আমার পুড়ে হলো ছাই। সুখের সাগর বহিছে বুকে ভয়ের কিছু নাই। তুই যে আমার সূর্য- শিখা আঁধার রাতের আলো। তোরে দেব ভোরের শিশির মুছিয়ে দেবো কালো। তোরে নিয়ে ঘুরবো বিদেশ সাত সাগরের পার। তোরে দেবো মিঠে রোদ দেবো ফুলের হার। ফাগুন মাসে পলাশ দেবো মিষ্টি প্রেমের ফাঁদ। জোছনা এনে ভরে দেবো ওরে আমার চাঁদ । মেঘলা আকাশ বৃষ্টিবেলা ভিজবো সারাদিন। অশ্র জলে ভিজলে পরে বুঝবে না আলাদিন।

মায়াবিনী

  মায়াবিনী দেবপ্রসাদ জানা ১৮.৮.২০২১ নিঝুম রাতের স্বপ্নে তুমি এসো স্বপ্ন লয়ে। হরিণ চোখে তাকিয়ে,থেকো মায়াবিনী তারা। ছলো ছলো চোখ করে,আর থেকো না চেয়ে। চোখের পরে রেখো না চোখ,হবে দিশাহারা। ধরতে চাইলে,দাও না ধরা,শুধু থাকো দূরে,  সূর্যাস্তের আগে পাখি,ঘরে আসলো ফিরে। ছল করে, দূর থেকে ,ডাকো ইশারায়- তার মনে মেঘলাকাশ,আবেগে দাম নেই। আসলে কাছে,পারাবতী,কোন ভরসায়? একটু হেসে কওনা কথা,নেই ভরসা নেই। বুকের মধ্যে তোমার ছবি এঁকেছি সারাদিন, কোন প্রদীপে ঘষলে পাবে,তোমায় আলাদিন।

আমার বসন্ত

 আমার বসন্ত একুশে ফাল্গুন,কবি আমার বসন্ত, আমার পৃথিবী দেখা,এদিনে প্রথম। রুক্ষ মাটির অন্তরে,শোণিত দিগন্ত, জাতীয় পাখিটা আজ তুলেছে পেখম। শাখায় শাখায় ভরা শিমুল পলাশ। কৃষ্ণচূড়ার শাখায় গোধুলির বেলা। নাড়ির টান দিয়েছে যে,ভরা কলস। রক্ত রণে,রক্তে রাঙে,বসন্তের বেলা। প্রজাপতির পাখায়,লেগেছে আগুন। ওরে লেগেছে আবির শাখায় শাখায়। কোথায়?দেখিনি তার মনের ফাগুন। যে সবার মনে লাল আবির মাখায়। লাল মায়ের জঠরে,টপকে পড়েছি। ফাগু মেখে,বনবাসে বসন্ত এনেছি।             

আশায় আশায়

 আশায় আশায় দেবপ্রসাদ জানা কোন আশারা এখনো,বেঁচে আছে বন্ধু? চাষের মাঠের আশা? নাকি ফুটপাতে? কৃষকের আশা ছিল, ফসলে ভরাতে, ফুটপাত আশা করে, অমৃতের বিন্দু। সমুদ্র মন্থন বিষ,নীলকন্ঠে ধরি। পৃথিবী সুন্দর হবে,এমন ভরসা। অমৃতের ভান্ড লয়ে,অসুরের আশা, দেবাসুর দুয়ে মিলে,করে কাড়াকাড়ি। এমন কি আশা ছিল, হইল পূরণ। গৃহবধু আশা রাখে, গৃহকর্ত্রী সেই। শাশুড়ির মন বলে,তার বাছাধন। রাজা কহে দেশ মোর,নেতা কহে তাই। যুগে যুগে আশাহত,শুধু জনগণ। অমৃতের ভান্ড হাতে, বিধাতা সদাই। কখখক,গঘঘগ,ঙচঙ,চঙচ।

মাতৃরৃপে নারী

 মাতৃরূপে নারী দেবপ্রসাদ জানা ২৪.৮.২০২১ নারী তুমি কালো হও,কলঙ্ক নিও না। নারী কালী মহাকালী,প্রেমিকা ঘরনী। পবিত্র বিশুদ্ধ  নারী, মৃন্ময়ী জননী। তোমার অন্তরে মাতা,বিনম্র চেতনা। প্রজন্ম প্রজন্ম তুমি,মায়ার বীক্ষণে, প্রবাহিত শান্তনদী নির্বাক আকাশ। মায়ার বন্ধনে থাকে,গভীর প্রয়াস। শীতল বাতাস আনে,উত্তপ্ত অঙ্গনে। পবিত্র গঙ্গার জল,ভগবত গীতা। তার চেয়ে শুদ্ধনারী,তুমি মাতৃরূপে, কুৎসিত কালো রূপ,তবুও যে মাতা। দেবদেবী পুজা করে,ধুনো আর ধুপে। সৃষ্টির প্রলয় হোক,তবু রবে মাতা। প্রতিটি যুগের নারী,থাকে মাতৃরূপে। (কখখক,গঘঘগ,ঙচঙ,চঙচ)

প্রেম

 প্রেম-৮ বড় মিষ্টি লাগছে তোমাকে। মনে হয় চেটে চেটে খাই। তোমার ঠোঁটের আড়ালে  আমি,আমাকে খুঁজে পাই। মিষ্টিমধুর আলোছায়া  লাগল তোমার গায়ে। আকাশ হতে পড়ল ফোঁটা সখী তোমার পায়ে। ওই যে বাতাস,তোমার কানে করছে মাখিমাখি। আঁচল খানি সরিয়ে রাখো একটু খানি দেখি। সাদা গোলাপে রক্ত ঢেলে দিলাম তোমার হাতে। ওষ্ঠ মধু ঢেলে দিয়ে আদর করলে তাতে। কার আদরে গোলাপ এত হয়েছে সুন্দরী। তোমার ঠোঁটের ছোঁয়া পেয়ে গোলাপ সম তোমার দেহ আদরে ভরাই। একটু খানি সবুর করো তোমাকেই আমি চাই।

অন্ধ অন্ধকারে

 অন্ধ অন্ধকারে দেবপ্রসাদ জানা ২৫.৮.২০২১ না ওঠেনি দিবাকর,আমার আকাশে। যেখানে যখন থাকি,সেথা অন্ধকার। আঁধার জীবনে মোর, করে অত্যাচার। ছু-মন্তর খেলা করে,আনন্দ উচ্ছ্বাসে। কোন এক বর্ষাদিনে,জল থৈথৈ দেশে। শীতের চাদর ঢাকা,গভীর আঁধারে। বসন্তে,পলাশ বনে,ফুলের বাহারে। মোর চোখ দিশাহারা,মেঘ সম ভাসে। যেদিন সে এসেছিল,লুকিয়ে শলাকা। দুই চোখে দিয়ে গেছে,অন্ধকার ঢেলে। এই চোখ দেখেছিল,অন্তরঙ্গ থাকা। অন্য প্রেমিকের দেহে,তার দেহ ফেলে। অনুভূতি হয়নি যে,বহুকাল একা। পোড়া চামড়ার গন্ধ,কেন নাকে দিলে?

মনের বিকার

 মনের বিকার  দেবপ্রসাদ জানা যদি কোনদিন বন্ধু,"তুমি" বলো মোরে। আদর করে ডাকবে,শুনচ্ছো শেফালী। সময়ে মুহূর্ত গুলি,কেটে যেতো খালি। ক্ষণিকের মোলায়েমী,কথা বলা সুরে। ব্যথা যদি লেগে যায়,কিছুদিন পরে। বিষাদের ছায়া মনে,ছেয়ে যায় খালি। মিছে কথা শুনে শুনে,সে চোখেরবালি। শ্রাবণের ধারা যেন,চোখে থেকে ঝরে। সীমাহীন ভালোবাসা বন্ধু তব মনে। অবসাদে ভরে যাবে,জীবন আমার। বলবে ওরে রাক্ষসী,চলে যারে বনে। তোর ছোঁয়াতে জীবন,হলো ছারখার। ব্যাঙ্গমা ব্যাঙ্গমী ঘোরে,প্রেমের সন্ধানে। ঘর ছেড়ে পরকীয়া? এসব বেকার।

সুখের বাতাস

 সুখের বাতাস এগিয়ে চলি,উজান বেয়ে,আশৈশবে। শৈশবের প্রান্তে ফিরে,পর্যাপ্ত আশায়। তাকিয়ে দেখি রয়েছি,অদ্ভুত নেশায়। হতদরিদ্র যে আমি, রয়েছি নীরবে। সব পেয়েছির মন্ত্র,লিখেছি গৌরবে। অবশেষে যাচ্ছে উবে,হারিয়েছি দিশা। উত্তাল সাগর জলে,কার নৌকা ভাসা। ঐশ্বর্য প্রাচুর্য তার, সব গেছে ডুবে। হাসি কান্নার দামামা,বাজে না অঙ্গনে। অলৌকিক স্বপ্ন যেন,গভীরে প্রোথিত। মৃত্যু ঘুমের সন্ধিতে,ছুঁয়েছে শরীর। ভিজতে থাকি রোদের তপ্ত আভরণে। তাকিয়ে দেখেছি আমি,সকলে বঞ্চিত  সুখের বাতাস হাসে,বিশ্বজয়ী বীর।                    

আদিম মানব

 আদিম মানব এমন কিছুই মিষ্টি, লাগছে না তোরে। তবু মন বলে,আয়, চেটে চেটে খাই। গৌরবর্ণ স্নিগ্ধতনু,রূপে - রোসনাই। মিষ্টি মিষ্টি গন্ধ পাই,রাতজাগা ভোরে। নিশিরাতে মনে হলো,পাশে চাই তোরে আলোছায়া শুধু মায়া,কেন ভয় পাই। আঁধার রাতের স্বপ্নে তোরে পেতে চাই। গন্ধমাখা দেহ তোর,দিবি বল কারে? আঁধার জঙ্গলে ঘোরে,আদিম মানব। জীবন্ত মানুষ সেথা,সেঁকে নিয়ে খায়। পাথরে পাথর ঘষে,জ্বালায় আগুন। নিত্যদিন মত্ত থাকে,বেখেয়ালি সব। প্রতিদিন নারীদেহ, পুরুষাঙ্গ চায়। নিশিরাতে লেনদেন,বাজারে আসুন।

অবেলায়

 একি !  তুমি এই অবেলায়! আমার মনের উঠোনে। হৃদয়ের জানালা ধরে দাঁড়িয়ে কেন? পরনের শাড়িটা তো বেশ।  বেগমপুরী না বেনারসি? বেশ মানিয়েছে তোমাকে । এত সাজুগুজু কেন?  তুমি কিন্তু- সেই খুকুটি আর নেই। অনেকদিন দেখিনি তোমাকে, তাই ভাবলাম,যাই একটা নতুন শাড়ি পরে। যদি তোমার সাহস হয়, কিছু বলার। তাই বোধ হয়,এত ভালো লাগছে তোমাকে। ভারি মিষ্টি,ভারি সুন্দর দেখাচ্ছে তোমায়।  লাজুক মুখে ফুটেছে,ভোরের রোদ। শান্ত পাখির মতো মধুর সুরে - চোখের ওপর চোখ রেখে দেখো, দেখো একবার,দেখি কেমন করে পারো, কি পারছো নাতো? পারবে না ও হৃদয়ে কোন ভালোবাসা ছিল না। থমকে যায় জীবনের স্রোত। জানালা ধরে আকাশের দিকে তাকিয়ে ,  ভাবতে থাকি, শ্রাবণধারা নেমে আসে চোখে । বুকের বাঁ পাশে যন্ত্রণা লুকিয়ে  আবার এসে বলি, ভালো আছো তুমি? অতিথি আপ্যায়নে - ভারাক্রান্ত হাসিতে নিজেকে নিয়োজিত করি।  বেলা গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে আসে  সন্ধ্যা প্রদীপ দিয়ে দেখি তোমার মুখ। তুমি প্রদীপের মতো উজ্জ্বল, তুমি ভালো থেকো পারমিতা। বৈপরীত্য উপত্যকায় জীবনের আনাগোনা, কখনও স্থায়ী কখনও অস্থায়ীরূপ। জীবনের আঙ্গিকে অবিষ্ট, মুক্ত দৃষ্টিতে...

সাদাকালো

 সাদাকালো  খাটের নিচে পুরনো রং চটা ট্রাঙ্কটা  আজ বের করলাম -  সেই বিয়ের পর বহু দিন কেটে গেছে  সময় চলে গেছে তার পথ ধরে  আজ কত নতুন জিনিস হয়েছে  জামাকাপড় টাকাপয়সা রাখার  তবু যেন ওই ট্রাংক টা  কত আপন। বিয়ের শাড়ি লাল চেলি টা  বিয়েতে পাওয়া কাঠের সিঁদুর কৌটো  আর আমার কাজল লতা  পুরনো সাদাকালো বিয়ের একটা ছবি  তখন সবে ফটো তোলার যন্ত্র টা বাজারে এসেছে  বাবা সাধ করে বিয়ের পরদিন স্টুডিওতে নিয়ে গেল, আমাদের দুজনকে  বলল একটা স্মৃতি থাক। সাদাকালো রংটা চটকে গেছে  এখন তো সেলফি হয়েছে। সাদা কালো ছবির আর চল নেই  ছবি রঙিন হয়েছে জীবনটাও রঙিন হয়েছে  কত রং ইস্টম্যান কালার  ডিজিটাল প্রিমিয়াম  এইচডি আরো কত কি, কিন্তু এই জীবনটা।

ঝুলন যাত্রা

 ঝুলন যাত্রা ( সনেট ) দেবপ্রসাদ জানা পূর্ণিমার চাঁদ চলে প্রেমের দর্শনে। বৃন্দাবনে দোলে রাধা,ফুলের দোলায়। হাতে বাঁশি রাখালেরে,যদি পাশে পায়। শ্যামল শ্যামলী বাঁধা,অলীক  বন্ধনে।। বৃন্দাবনে সুধা ঝরে,কৃষ্ণ নাম গানে। নানারঙে সুর তুলে,যায় দোলনায়। দোলদোল সোরগোল,রাধাকৃষ্ণ যায়। প্রেমলীলায় ঈশ্বর,মাতে বৃন্দাবনে। শ্রাবণে ঝুলন যাত্রা, মিলনে আবৃত। রাধাকৃষ্ণ একসাথে,বিলি করে মধু। অহিংসার পথে ওঠে,ভক্তির অমৃত। প্রেমবন্ধনে কানাই,করেছিল যাদু। অহিংসার পথে নামে,কত অনুগত। বৃন্দাবন সেজেগুজে,লাগে নববধু।

এসো হে দূর্গা

 এসো হে দূর্গা দেবপ্রসাদ জানা হে দেবী,প্রলয়ংকরী,ভীষণা ভৈরবী।   হে প্রগলভা প্রবলা, অবলা চঞ্চলা। নিবিড় আগ্রহে এসো,এসো হে জাহ্নবী। অসুরনাশিনী দূর্গা,মৃন্ময়ী নির্মলা।    দিগন্ত বিস্তৃত ডরে,তোমার কল্লোলে।  তরঙ্গিয়া, চির দৃপ্ত, চির অব্যাহত।   দুর্নমিত,অসংযত, সুরকুল দলে। নিমিষে করেছ নাশ,সবে অবগত। গহিন গম্ভীরে জাগে মহা আলোড়ন। সীমাহীন অবজ্ঞায়,ভাঙিয়া আসিছ। রুদ্রাক্ষের মালাগলে,করিতেছ রণ। ঐশ্বর্যসম্ভার- দশ, হস্তে বিতরিছ। উর্বর করিছ ভূমি,জাগিয়াছে বন। হাসিতেছে দশদিক,স্নেহে মিলাইছ।     

গান

 গান কার কাছে গিয়ে,বলব মাগো, আমি কেমন আছি। দুঃখ নিয়ে সারাজীবন, কেমন করে বাঁচি। বড় কষ্টে আছি গো মা, বড় কষ্টে আছি। সকাল বিকাল তোর দুয়ারে এত ঘুরি ফিরি  পাই না খুঁজে তোরে যে মা শুধুই ঘুরে মরি।   খিদের জ্বালায় আছি মাগো খিদের জ্বালায় আছি। তোর অছিলায় গান বেঁধেছি তোর কাছে যেই পৌঁছে গেছি আঁচল খুলে বাঁধতো দেখি - কোলের মাঝে মাথা রাখি তবেই তো মা বুঝব আমি আমি ভালো আছি।  

কু সন্তান

 কু সন্তান  মোর প্রথম কান্নার দিনে-হেসেছিল যে নারী,সে নারী মোর গর্ভধারিনী মা। সে কান্না অমৃত দান করে,বলেছিল - তাঁর মাতৃত্বের হাসি, ব্যর্থ করিস না। যখন অবহেলায়,কাঁদে তাঁর প্রাণ। বৃদ্ধাশ্রমে,বদ্ধ ঘরে,একেলা বিষাদে। দশমাস দশদিনে  জন্মিলে সন্তান- গৃহজনের সাদৃশ্য দেখিত বিবাদে। মায়ের ক্রন্দন শুনে হাসে যে সন্তান। নরকেও যে হবে না ঠাঁই অর্বাচীন। বৃদ্ধাশ্রমে পিতামাতা জীবন কাটান। ওরে মূর্খ ভেবে দেখো,সম্মুখে দূর্দিন। সামনের পথ করো সুগম সুঠাম। প্রিয়জনে ভালোবাসো,খবর আগাম।

শেষ বসন্তে

 শেষ বসন্তে কখনো কখনো কিছু কিছু পরাজয়,  জানি মেনে নিতে হয়,নিজের অজান্তে। যে লুকানো আকাঙ্ক্ষার প্রতিধ্বনি হয়। তার প্রাচীরে ফাটল, ধরে দিবসান্তে। মৃত্যুর শব্দে মেঘের সুপ্ত আর্তনাদ। বজ্রপাত ঘটে যদি তাল গাছটায়। যার খবর হয়তো,পড়ে যায় বাদ। বিকেলের রোদ জানে কোন গাছটায়। তেমনই পরাজয় থেকেছে অজানা   শেষ বসন্তের মতো শেষ জীবনেও   পলাশ শিমুল আর কৃষ্ণচূড়া কিনা, রঙ ঢালার আশায় নীল গগনেও। আনন্দ ব্যাকুল সুখে, প্রহরের গোনা,  তেমন নেশা,শেষের বসন্তে থাকে না।        

সে এক খেলা

 সে এক খেলা আমার প্রিয়ার বুকে,মশাল আগুন। তার চোখেই দেখিছি মরণ আমার। প্রেমের দেবতা দেয় কামনার ভ্রূণ। দুর্বার কামনা জাগে,হৃদর দেবার। আমার প্রেমিকা বলে সত্য তার প্রেম। অজ্ঞ আমি তার প্রেমে এত মসগুল। কৌশলময় ছলনা,সব তার  গেম। অন্তরের নির্দয়তা, করেছে ভণ্ডুল। যন্ত্রণা লাঘব করে,ক্ষমা করি তারে নীরব ধৈর্যের ফল পেয়েছিনু আমি। কলঙ্কের দাগ দিয়ে,খেলে অবিচারে। ঘৃণায় অন্তর জ্বলে,কেন তারে ক্ষমি? প্রয়োজনে প্রেম প্রেম,খেলা করে প্রিয়া। একদিন উড়ে যায় মনে ব্যথা দিয়া।

প্রেমের ছড়া

 প্রেমের ছড়া গোকুলে গোপাল এলো  করিতে লীলা। শুভ্রদীপের বাড়িতে তাই  বসেছে মেলা। জয় গোপাল জয় গোপাল বলছে সবাই। এমন সুন্দর রূপ তাঁর  কোথা গেলে পাই। তুমি তো ছিলে আমার হয়ে। চলে গেলে কেন,বলে কয়ে। এতদিন এতমাস ফাল্গুনী,ছিল পলাশের। আজ সে দেখো বউ,সেজেছে সৌভিকের। স্মৃতিরা জেগে থাকে মনে স্বপ্নরা মরে ভোরের আলোয়। মনের মন্দিরে রেখেছি ঢেকে দেবীর কৃপা যেন না বেরোয়। বন্ধু ভালো আছো তো অনেকদিন হয়নি কথা। সুপ্রভাত আর শুভরাত্রী  এক নিয়মিত প্রথা। প্রেমের কবিতা মোরে করেছে বিবাগী। হৃদয়ে লেগেছে নেশা তাই প্রেম মাগি। সকালটা ভালো হোক প্রেমের বচনে। এসেছে শরৎ সখী এই প্রেমাঙ্গনে। স্বপ্নেরা জেগে থাকে সারারাত  স্বপ্ন দেখবে বলে। আলোআঁধারি জোছনা তারে দূরে দেয় ঠেলে। কবিতা আমার প্রেয়সী  কবিতা আমার মন। ভালোবেসে মরি যদি করো আলাপন। টুকরো টুকরো কিছু কথা থেকেই যায় মনে। কি জানি কি ভেবে বসে কিছু মন্দ জনে। ভাবতে ভারি ভালো লাগে আজো বেঁচে আছি। নইলে কবে, মরে গিয়ে হতাম নোংরা মাছি। কথা তো,হয় না বেশি একান্ত গোপনে। সব ভালো,রেখেছি বেছে রেখো মনের কোনে। প্রেম প্রেম কথা হলো ছড়ায় লিখে বলা। মর্ম কেউ বুঝবে নাগো এই...

প্রতীক্ষা

 প্রতীক্ষা শুধু পাতা ঝরে পড়া,শব্দে প্রতিদিন। প্রহরগুলো স্বশব্দে,গুছিয়ে তুলছি। সেই সময় আনন্দ,হয়ে যায় লীন। নরকীয় অনুভব, আপন করছি। অতিবৃষ্টি নামে এই,চোখের কোনায়। ডুবে যাবো একদিন, মনের গভীরে।   এক আঁচলা জলের, পূর্ণ ভরসায়। পলাশ-বসন্ত রঙ, দিয়েছে অধরে। জীবনের এক প্রান্ত থেকে,অন্য প্রান্তে, নির্মম আঘাত হানে, মানসিকতায়। পাবার আনন্দ ছিল, যে বহু বসন্তে। দাঁড়িয়ে আছে সময়, যার প্রতিক্ষায়। কেটেছে মিনিট ঘন্টা যার ছন্দহীন। প্রতীক্ষা তার প্রতীক্ষা করে চিরদিন।

চিঠি

 চিঠি এখন আর আগের মত রোজ কথা হয় না। চাইলেও তা সম্ভব নয়।  যোগাযোগ এর প্রতিটা মাধ্যম তুমি বন্ধ করে দিয়েছ।  খুব করে ইচ্ছে করলেও তোমাকে ছুঁতে পারি না, সেই অধিকার তুমি অনেক আগেই কেড়ে নিয়েছ।  তোমাকে আদর করে ডাকার- অধিকার হারিয়ে ফেলেছি অনেক আগেই!  মাঝে মাঝে খুব ইচ্ছে করে বুঝলে? তোমার চোখে চোখ রেখে বলি ভালোবাসি। বিধাতা সেই ভাগ্যটাও আমার জন্য বরাদ্দ করেনি। কি করব বলো? চাইলেতো আর সব কিছু হয় না, খুব করে চাওয়া কিছুই- জীবন খাতায় লেখা থাকে না।  কেন জানি আজ‌ও আমি মনকে-  বোঝাতে ব্যর্থ হয়ে যাই। কিছুই মেনে নিতে পারি না।  একটা অজানা আক্ষেপ,  আকাঙ্ক্ষা রয়ে গেছে মনে,  তোমাকে কাছ থেকে ছুঁয়ে দেখার অনুভূতিটা? শুধু একটা কথা ভেবে কষ্ট পাই,  এ জীবনে আক্ষেপ আর আকাঙ্ক্ষা নিয়ে পৃথিবী ছাড়তে হবে আমায়! হাসছো? ভালোবাসার মানুষটার প্রতি অদ্ভুত একটা মায়া থাকে..!  কষ্ট পেলেও তাকে ভুলে থাকা যায় না..! মন ভেঙে গেলেও তাকে ঘৃণা করা যায় না..! সে কি তুমি আজ বুঝবে?

প্রম বিলি

 প্রেম বিলি দেবপ্রসাদ জানা আজ শুধু শেষ টুকু প্রেম,পড়ে আছে। সব প্রেম বিলি করে,খালি এই ঝাঁকা। যত টুকু বিলি হয়,তাও ছিল কাছে। যার শুরুটা তোমায়,দিয়েছি মনিকা। তোমার দেখানো স্বপ্ন,শুরু হয়েছিল। আমি বিছানার এক প্রান্তে সুয়ে আছি। ঘুমের দেশে সেবার,স্বপ্ন এসেছিল। স্মৃতির সমাধি বুকে রেখে,আজো বাঁচি। চলতি ভালোবাসার মানুষ গুলোকে  প্রেম বিলি করে আজ,অযথা উদ্বেগ  মনে মনে আমারই কথা ভাবে লোকে, তাই বেড়েছে মনের, অকাল আবেগ। প্রেমের সাথে হৃদয় রেখেছিনু খুলে। তোমার অবহেলায়,সব গেছি ভুলে।।

খাঁচার পাখি

 খাঁচার পাখি দেবপ্রসাদ জানা অলৌকিক ভালোবাসা,যৌবনের সাথে। প্রেমের মাতন দেখে,কপোত কপোতি। কুসুমিত গোলাপেরা, পড়ে থাকে পথে।  পরকীয়া শ্লেষ চেখে,মেঠো পরিনতি। আদুরে খাঁচার পাখি,কথার পাহাড়। মেঘের বাতিল স্বপ্ন,ঘোরে অন্ধকারে আজ পাখি হতবাক,খেয়েছে প্রহার। সুখখনির নক্সাটা,পাখির নজরে। ছুরির ফলায় হাসি,চকচকে ধার। একটানে কেটে যাবে,প্রেমিকার গলা। খবরের পাতা খুলে দেখো একবার। সুখ-ধন কোথা আছে?খোঁজো এই বেলা। বলরে খাঁচার পাখি,কত দিয়ে কেনা? ছুরির ফলায় হাসে, নীলাভ জোছনা।

প্রচন্ড

 প্রচন্ড দেবপ্রসাদ জানা অন্তহীন মূর্ছনায় আকাশ সংগীতে,-   ঝঙ্কারিয়া রুদ্রবীণা,মিলায় ভৈরবে। প্রসন্ন কখনো তুমি,নিষ্ঠুর একান্তে। দুর্বোধ, দুর্গম ভয়, দুর্জ্ঞেয় বৈভবে।    শিশুকালে উচ্ছৃঙ্খল, দুরন্ত দুর্বার। সগর রাজার ভস্ম,স্পর্শ করো হেসে। স্বর্গ হতে নেমে আসে,প্রচন্ড আবার। কিরাত-পুলিন্দ-পুণ্ড্র,অনাচারী দেশে!      বিস্ময়ে বিহ্বল-চিত্ত ভগীরথ চলে। বাজাইলে শুভ্রশঙ্খ,তুমি নিজ পথে,   আর্যের নৈবেদ্য দিবে,সে বিদেহী হলে। অনাহুত-অনার্যের আশা পুরে রথে।    ব্যাপৃত সহস্র ভুজ,প্রলয়ের কাজে!   দম্ভ যবে মূর্তি ধরি, দিনরাত বাজে।