যখন একা থাকি

যখন একা থাকি
দেবপ্রসাদ জানা

যখন একা থাকি ভয় পাই
ভয় পাই তোমাকে।
যদি আবার তেমন হয়।
যদি তোমার জীবনে আবার কেউ আসে
ভালোবাসে, আমার থেকে বেশি।
অন্ধকার রাতের মতো শরীর ভাঙছে দ্রুত,
তফাৎ শুধু একটাই...
রাত ভাঙলে ভোর আসে
শরীর ভাঙলে মৃত্যু আসে।
যখন একা থাকি ভয় পাই-
ছুটে আসে, চেপে ধরে যৌবনে না পাওয়া
ভালোবাসা গুলো,
রাত ভাঙে, ভেঙে যাওয়া প্রেমের মতো।  
হৃদয় ভাঙা কান্না যত, চেপে ধরে বুকে।
শরীর ভাঙার আগে যেদিন মন ভাঙে,
সম্পূর্ণ মৃত হৃদয়ের আত্মা গুলো চেপে ধরে।
একটা দড়ি ঝুলে ছিল পড়ে কড়ি কাঠ থেকে।
ঝুলে থাকা ঘুরন্ত পাখা হাসে,
বলে এসো ঘুরতে থাকো, মেঘরঙা অন্ধকারে, 
দাঁড়িয়ে থাকো দরজার ওপারে।
আমি ভয় পাই, 
যখন একা থাকি, ঘরে।
না হার মানবো না ভেবেই স্বপ্ন দেখা শুরু করেছি।
আজও তার দেখা পাইনি, কখনো।
ভালোবেসেছিলাম বয়ঃসন্ধির প্রাক্কালে 
কোনো এক প্রখর রৌদ্র দুপুরে,
মাঠের এক কোনে থাকা কৃষ্ণচূড়ার নিচে।
পৃথিবী থেমে গিয়েছিল, মৃত্যু আসেনি
জোরে জোরে ঘোরেনি পৃথিবী,
আমিও থমকে দাঁড়িয়ে ছিলাম, 
মৃত প্রেমের আত্মারা ডাকে,
যখন একা থাকি ঘরে।
শরীরটা ভেঙে যাচ্ছে যেমন, 
শরীরের নিচের দিকটা অবশ হতে থাকে,
সারা শরীরে রোগ নামক ভুত গুলো,
চেপে ধরতে চায়, কুরে কুরে খায়,
ওষুধের শিশি হতে বেরিয়ে আসে বিষ.
কণ্ঠ বেয়ে নেমে যায় পাকস্থলী বরাবর,
প্রবল প্রলয়ে উথাল পাথাল করে অন্তরে.
তেমন করে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসে ভয়।
মৃত্যুর ভয়, 
কি জানি, অতৃপ্ত মৃত প্রেমের আত্মারা
জড়িয়ে ধরতে চায় কেন?
যখন একা থাকি-
জ্বেলে রাখি প্রতি ঘরের আলো,
সেই আলো গুলো হঠাৎই যেন,
মৃত্যুদৃত হয়ে, আলোর ভিতরে আলো হয়ে,
অন্ধ করে দেয়, জীবনের পাপ।
পৃথিবীর যত পাপ গুলো কলঙ্ক হয়ে, 
ধবধবে সাদা জামায় কালো অন্ধকারে ছেয়ে যায়।
সুস্পষ্ট বাদামি রঙ করা অধরের ছাপ,
হারিয়ে যায় গাঢ় অন্ধকারে।
সে-ই বাসন্তী ভোরের মতো 
ঠোঁটের ভিতর ঠোঁটের নিরঙ্কুশ নিরবচ্ছিন্ন ডুব-
দেওয়া স্বপ্নের মৃত্যু নামে বাস্তবে;
ততদিনে আরও কয়েকটা মৃত জৈবিক ভুত
আকস্মিকভাবে ভয় নিয়ে আসে ঘরের দরজায়।
যখন একা থাকি, একেবারে নির্জনে।

Comments

Popular posts from this blog

দুঃখটাকে এবার

মহাঋষি শুক্রাচার্য্য

গিরিশ চন্দ্র ঘোষ