সম্পাদকীয়

সহ সম্পাদকীয়

সভ্যতা যখন এগিয়ে চলে, তার সঙ্গে আধুনিকতা-র রং বদলাতে থাকে। কয়েক বছর আগেও যা থাকে আধুনিক, অচিরেই তা পুরনো হয়ে যায় । কিন্তু, সেই পুরনো বা অতীতের যদি গৌরবময় ভূমিকা থাকে, তখন তাকে আশ্রয় করে পরবর্তী যুগের সংস্কৃতি অনেকটাই উন্নত হতে থাকে। যখন “বর্তমান” তার মান সবদিক থেকে অনেকটাই নিম্নগামী করে ফেলে, 
তখন সেই অতীতকে ব্যবহার করে এগোনোর পথ বন্ধ হয়ে যায়।  যা ইদানিং অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে চারপাশে।
কোনও জাতি যদি সবদিক থেকে সমৃদ্ধির শীর্ষে পৌঁছয়, তার পিছনে থাকে মেধা, নিষ্ঠা, পরিশ্রম, .উদ্যোগ, ভালোবাসা ও শিক্ষার মতো শুভ চেতনার প্রকাশ। যার থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আবির্ভূত হন মহান ব্যক্তিবর্গ। 
গত ও তার আগের শতকে অনেকটা সময় জুড়ে আমরা দেখেছি এই বাংলায়। সেই কালজয়ী অধ্যায় রচিত হয়েছিল খাঁটি ভাবনা, চিন্তাশীলতা ও নিঃস্বার্থভাবে কর্মপ্রদানের মতো মানসিক প্রকাশ থেকে। এরপর থেকে যতদিন যাচ্ছে, সমাজ-রাজনীতি থেকে শুরু করে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি—সব ক্ষেত্রে নিম্ন মেধার দাপট, সত্যিকারের সৃষ্টিকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে ক্রমাগত । অথচ, আমরা আমাদের গৌরবোজ্জ্বল অতীতকে শিখণ্ডীর মতো সামনে খাড়া করে, নিজেদের জাতে তোলার চেষ্টা করে যাচ্ছি হাস্যকরভাবে। আসলে, সমাজে সত্যিকারের 'শিক্ষা'-র অভাব দিনে দিনে বাড়ছে।
বই পড়ার প্রবণতা কমছে, মনে রাখা দরকার, 'শিক্ষা'-র সঙ্গে ডিগ্রির সম্পর্ক বাধ্যতামূলক নয়। যথার্থ ‘শিক্ষা' হল আচরণ-প্রকাশের মাপকাঠি। একজন নিরক্ষর মানুষের মধ্যেও আদর্শ শিক্ষিতের বহিঃপ্রকাশ লক্ষ্য করা যায়। যার মূল উৎস শুভ চেতনা। 
চেতনার বিকাশ যদি 'শুভ'-পথ নেয়, তখন সেই চেতনাজাত কর্মপ্রকৃতির চেহারা, সমাজে সুন্দরের জন্ম দেয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আজকে যার বিপরীত ছবি আমরা দেখছি। 'আধুনিকতা' মানে বাহ্যিক বৈভবী নেশায় আক্রান্ত হয়ে বস্তুগত দুনিয়ার পিছনে ছোটা নয়। কোন কাজ কেন করছি, সেই বিষয়ে ভাবাটা অত্যন্ত জরুরি। যা আসে প্রত্যেকের চেতনাগত বিকাশ থেকে।
যদি সত্যিই আমরা আবারও আমাদের উজ্জ্বল অতীতের মতো অধ্যায় রচনা করতে চাই, তাহলে চাই নতুন চিন্তা, আর সেই চিন্তা ভাবনার মধ্যেই মাননীয় সৌমেন কুমার চৌধুরী জন্ম দিয়েছেন কলম সৈনিক সাহিত্য পরিবারের। 
জন্ম হয়েছে "শারদীয়া অঙ্গীকার" নামক বার্ষিক পত্রিকার। গতবারের থেকে এবারে আরো অনেক উন্নত ও মার্জিত। সকলে পড়বেন এই আশা রাখি।
দেবপ্রসাদ জানা
সহ সম্পাদক 
কলম সৈনিক সাহিত্য পরিবার


Comments

Popular posts from this blog

দুঃখটাকে এবার

মহাঋষি শুক্রাচার্য্য

গিরিশ চন্দ্র ঘোষ