Posts

Showing posts from May, 2022

আমি চৌঁত্রিশ

 আমি চৌঁত্রিশ দেবপ্রসাদ জানা তোমরা কি জানো? সতের বছর আমি ঘুমিয়েছিলাম। হ্যাঁ ঠিক তাই,কোন ভাববাচ্যে নয়। একেবারে সত্যি। একদম সত্যি। আমি একান্ন পেরিয়েছি?হিসাব করে দেখো। প্রতিদিন আট ঘন্টা ঘুমিয়েছি। একান্ন থেকে সতের বাদ দাও। এখন আমি মাত্র চৌঁত্রিশ। চুলে পাক ধরেছে, মুখে পড়েছে ভাঁজ। শরীরের চামড়া কুঁচকে গেছে। চোখের নিচে কালি। চোখের তারায় অন্ধকার আসছে। চশমার ডান্ডিটা কানে ব্যথা দেয় প্রত্যহ। তবু আমার মনে প্রেম জাগে, পকেট থেকে বেরিয়ে আসে প্রেমপত্র। নীল খামে গন্ধ মেশা মুখ বন্ধ খাম। পাঠযোগ্য স্মৃতিচিহ্ন হয়তো নেই, তবু প্রেম আসে মনে, কবিতায়। শুকনো গোলাপ পাওয়া যায় কবিতার খাতায়। গোলাপের মৃতদেহে তার গায়ের সুবাস পাই। স্মৃতিরা লুকিয়ে পড়ে, কোনো এক কোষে।  কিছু মনে পড়ে কিছু হারিয়ে যায় নিজেই। স্মৃতিরা বড় উচ্ছৃঙ্খল।  আকাঙ্খার বাড়া ভাতে ছাই দিয়ে একদিন - বুকের ভেতরে জন্ম দিয়েছে প্রেমের নদী। ভালোবাসার সন্ধিতে প্রেম অপুষ্টিকর। আমার চৌঁত্রিশে। তার চোখের আগুনে পুড়ে - মিশে যাই আঁধার আকাশের তারার মাঝে। আগুনের ওপরে হাঁটি প্রতিদিন, তবু প্রেম এসে ধরে, আকুতি মিনতি করে। ভালোবাসতে চায় লাল গোলাপ হাতে। ব্যাধের ম...

নদী

 নদী দেবপ্রসাদ জানা ১ প্রলয়ঙ্করী ভীষণা ভৈরবী সুন্দরী। প্রগলভা প্রবলা পদ্মা ভাগীরথী। পদ্মাগঙ্গা তরঙ্গিনী তৃস্তা ও কাবেরী। সাগরের প্রিয়তমা,অয়ি চিরসাথী।    দিগন্ত বিস্তৃত তব কল্লোলিনী হাসি। তরঙ্গিয়া উদ্বেলিয়া দৃপ্ত অব্যাহত।   দুর্নমিত,রুদ্রবেশি সীমাহীন নিশি। হে গম্ভীর দামোদর নিত্য অসংযত। অবহেলে অবজ্ঞায় ভাঙো নদীতীর।   উর্বর করিছ মহি, গ্রাসিয়া নগর। অন্তহীন মূর্ছনায় আন্দোলিত শির। ঝঙ্কারিয়া রুদ্রবীণা,ভাঙিয়াছ ঘর। প্রসন্ন কখনো তুমি, একান্ত নিষ্ঠুর। দুর্বোধ, দুর্গম হায়,  দুর্জ্ঞেয় সুদূর।  ২ তুমি উচ্ছৃঙ্খল অতি, দুরন্ত দুর্বার। সগর রাজার ভস্ম করিলে পরশ। স্বর্গ হতে অবতরি,এলে এলোকেশে,   শিবজটা ফুঁড়ে এলে,হইতে অলস। কিরাত-পুলিন্দ-পুণ্ড্র অনাচারী দেশে। বৃথা বাজাইল শঙ্খ, শঙ্খ লয়ে আদি। বিস্ময়ে বিহ্বল-চিত্তে ভগীরথ আসে। আর্যের নৈবেদ্য,বলি হে বিদ্রোহী নদী। অনার্যের ঘরে আছ,আছ কত সাজে। কত যুগ বহে চলো কত পথ ধেয়ে। ব্যাপৃত সহস্র ভুজ,প্রলয়ের কাজে। দম্ভ যবে মূর্তি ধরে, অভ্রভেদী হয়ে। সিন্ধুসঙ্গী, মহাকাল হে সাম্যবাদিনী। বহে চলো কীর্তিনাশা,কল্লোলনাদিনী। ৩ ধনী দরিদ্...

প্রেমপ্রতিলিপি

 প্রেমপ্রতিলিপি দেবপ্রসাদ জানা মাটির কলসে ভরি,উপার্জিত প্রেম। প্রেমের খেজুর রসে ভরা এ হৃদয়। কুবাক্য কহিবে জানি সমাজ হারেম। বিকাশে অন্তর কুঁড়ি,হইছে প্রণয়। হিরন্ময় জ্যোতি প্রাণে লেগেছে আসিয়া অলক্ষ্যে আনন্দরাগ গাহিছে হৃদয়। প্রেম তীব্র আকাঙ্ক্ষায় বহিছে ভাসিয়া। উদ্ভাসিয়া চিত্তে মোর বিত্ত মণিময়। লাবণ্য ঐশ্বর্যময়ী, আনন্দে অক্ষরে। নিত্য,নব নব রূপে আমারে ধরিছে। প্রশান্তি দিতেছে পুষ্প,সুগন্ধি আতরে। মধুক্ষরা দিনে সূর্য,নিশীথে হাসিছে। প্রহরে প্রহরে তব প্রেমলিপি আনি। হৃদয় উদ্বেল হয়- প্রতিলিপিখানি। 

শেষবেলা

 শেষবেলা দেবপ্রসাদ জানা জলন্ত সূর্যের দেশে সূর্যাস্তের কালে  গোধূলির রাঙা আলো শরমে গরমে সুন্দর দক্ষিণা বায়ু দিকপ্রান্ত-ভালে  দক্ষিণা বাতাস বয়,বিচিত্র আরামে? বায়ুর নিঃশ্বাস লাগে,কান্তার পরবে। প্রদীপ্ত প্রবাহ তার,বেলাশেষে ধায়। শান্ত মহিমায় বায়ু, পল্লবে পল্লবে। অস্তরাগে বসন্তের,সন্ধ্যাকাশ ছায়।  ওগো ক্লান্ত দিবাকর,তব অস্ত রাগে। শেষ রশ্মি বিদায়ের,ব্যথিত চুম্বন। মর্তে হেথা বনানীর,গায়ে দোলা লাগে।  সে এক বিচিত্র দৃশ্য,তরু আলিঙ্গন । ঘন মেঘে বাতাসেরা,উন্মন অধীর। উদাস সন্ধ্যায় আজ,বিজলী অস্থির।

বন্দিনীর কথা

 বন্দিনীর কথা দেবপ্রসাদ জানা একখানি ঝড় চাই, কালবৈশাখীর। আয়লা বা আমফান মহাকাল যথা। মৌনা,বাক্যহীনা মূক  স্তব্ধ বক্ষটির- বিড়ম্বিতা হেথা এক, বন্দিনীর কথা। উদাসীন সন্ধ্যা আজ অস্তাচল গামি। অন্তঃস্থিত বিষ পাপ, মৌনতার তাপ। একান্তে মিনতি করি,বৈশাখীরে আমি। শেষ হোক হিংসা ক্ষোভ,সাঙ্গ হোক পাপ। কর্ম,কোলাহল হোক অবসান তবে। জ্বালা যন্ত্রণার গৃহ,উড়ে যাক ঝড়ে। এমনি সন্ধ্যার ভীড়ে,তারা পড়ে রবে।  গোধূলি সন্ত্রাসে ঝড়ে,মুছে দিক তারে। নিঃশব্দ নীরবে তারে করি নিমন্ত্রণে। অকারণে প্রাণ সবে, দিয়ো একবার। মুক্তি লবে বন্দী আত্মা-সুন্দর স্বপনে।  প্রয়োজনে নিঃশ্বাসের শেষ প্রতিকার। এমন বৈশাখী চাই,কালো আচরণ। পুষ্পবৃক্ষ-বিকাশের,আসু প্রয়োজন।

কৌমুদী কৌতুক

 কৌমুদী কৌতুক  দেবপ্রসাদ জানা ২৫.৫.২০২২ তুমি হাতখানি ধরো,আমি স্পর্শ নেবো। উষ্ণতায় ভরে নেবো,এই সিক্ত প্রাণ। তুমি ওষ্ঠ মেলে দাও,গোলাপ ফোটাবো। লাল রঙে দুই ওষ্ঠ, আঁকিব সমান। বঙ্কিম গ্রীবায় দেখি,প্রণয় অনলে। যুগল পর্বতে আর ,অলকা অধর।  পুড়ে যাবে দেহ তার,অপরাহ্ন হলে। সুন্দর তরঙ্গে হাসে,বঙ্গোপসাগর। অতলে ডুবাবো নাও,আশ্বিনের ঝড়ে।   উথালি পাথালি মন, একেলা আলয়ে। মধু চায় প্রজাপতি, ঘোর অন্ধকারে। আহা-রে কি যাদু মন্ত্র,তোমার হৃদয়ে।   পলকহীন আঁখিতে,অবৈধ প্রণয়। কৌমুদী কৌতুকে ভাসে,কোমল হৃদয়।

শব্দরা স্বাধীন

 শব্দরা স্বাধীন  দেবপ্রসাদ জানা শব্দরা তো স্বাধীন,যেমন খুশি চলে তেমন খুশি বলে, সব ভালো। কিছু শব্দ বড় অবাধ্য,  স্বাধীনতার নামে যা খুশি করছে, বলছে। অনেক বললাম, আর কেন? এবার নাহয় একটু জিরিয়ে নে। কখনো এমন বলে যে,পঞ্চ ইন্দ্রিয় জেগে ওঠে। ওরে অবাধ্য, এত অশালীন কথা বলিস না সাহিত্যের অসম্মান হয়। শোনে কে? আসলে ভালো বলার মতো মুখ যে ওর নেই।  বললে প্রেমের কথা বলে,  ধর্ষণের কথা বলে, রাজনীতির কথা বলে,  পরকীয়ার কথা বলে। বলবে বা আর কি?  ফুল পাতা ফল,বাতায়ণ কি আর আছে? মানুষের মতো ফানুস উড়িয়ে ভুলভাল বকে। কেউ আবার আকারে গতিতে অনবদ্য। অলিন্দে বাহ্যিক সৌন্দর্য্যে খুব মলিন।  মানসিক দৃঢ়তা কলুর বলদের মতো - এদিক ওদিক ঘুরতে থাকে, সে শব্দের অর্থ বোঝাই দায়। তবু শব্দেরা স্বাধীন থাক,  মন ভরে কিছু কথা বলুক,  নির্মমতার মাঝেই ফুটুক শব্দের ফুল।

স্বপ্নের ইঙ্গিতে

 স্বপ্নের ইঙ্গিতে দেবপ্রসাদ জানা সুদীর্ঘ বিশ্রান্ত শ্বাস,ফেলি যন্ত্রণায়। অবরুদ্ধ অতিবেগ,তারপর আসে। গলানো ইস্পাত যেন,দৃঢ় মন্ত্র পায়। বারবার হানে তাই,নীরব সন্ত্রাসে। জ্বলন্ত অগ্নির তাপে,যন্ত্র জানোয়ার। দিন রাত্রি সুদুর্গম সমতল দেশে। সমান্তরাল সেপথে,হয়ে যায় পার। অভীষ্ট লক্ষ্যের দিকে দুরন্ত আশ্বাসে। আহত সন্ধ্যায় তারা দেখি উদভ্রান্ত। দূরে যেন আলো জ্বলে,লাল-নীল-পীত;  উজ্জ্বীবিত কামনার,অগ্নিমোহ শান্ত। ভোরের আলোয় বাজে, মনের সঙ্গীত।  লক্ষ্যভ্রষ্ট ম্লান চাঁদ,কৃষ্ণপক্ষ রাতে। জাগে প্রেম মোহমন,স্বপ্নের ইঙ্গিতে।। 

বুকের রুদ্ধতায়

 বুকের রুদ্ধতায় দেবপ্রসাদ জানা কেন আঘাত করো এই প্রাণে। প্রণয় সম্ভাব্য ব্যঞ্জনের থালায়-কাড়িলে মন।  অকারণে অনধিগত নিঃশব্দে,বিসন্ন আঁধার  কড়া নাড়ে বোধের দরজায়। সুখের বাধা ভেঙে ফেলে, প্রাণে আসে তন্ময় সন্ধ্যা । বারে বারে প্রাণে জাগে স্মৃতিময় মেঘ। মৃত্যুর মুখে আত্মার বিজনতা। অনেক দুঃখে নিলাম চিনে ॥ ঝড়ের রাতে বুকের রুদ্ধতায় নির্মল বাতাসে, ছেড়েছিলেম হাল তোমার হাতে। যখন আমার সব বিকিয়ে গেল,  হারিয়ে গেল চেতনা। তখন আমায় নিয়েছ কিনে ॥

ওহে পথিক

 ওহে পথিক দেবপ্রসাদ জানা একটা পথ খুঁজে দাও পথিক।  যে পথে নিরন্তর ভালোবাসা, যে পথে ছিন্নতার ব্যথা নেই। যে পথে ধুসরতা নেই, যে পথে অনায়াসে ধুলো মেখে- জীবন থমকে দাঁড়ায় না জীবনের কাছে, আমি হাসতে চাই, আমি বাঁচতে চাই। আমি নিরলস ভালোবাসায় ডুবতে চাই পথিক। আমি সে পথের খোঁজে, পথ হারিয়েছি - আমাকে পথ দেখাও। হে পথিক, সময়ের খরস্রোতে,  গতিপথ বদলে গেছে,  আকাঙ্ক্ষার চুড়া ছুঁতে ছুঁতে- জীবনের পথ হারিয়েছি পথিক।  দিগন্তহীন পথে আমি মরীচিকা দেখছি, কোথাও বিশাল সমুদ্র, কোথাও মরুভূমি। আমি দেখতে পাচ্ছি মৃত্যুর গাঢ় রক্তিম বিভা। জল দর্পণে,স্তব্ধ। বিস্তৃত মরু। আমি কন্টকাবৃত পথে ক্ষত বিক্ষত, আমাকে আত্মস্মাৎ করছে ভয়ঙ্কর পথরাক্ষসেরা। চলার প্রথমদিনেই বোধের জোছনা মেখে দাঁড়িয়ে - পথের ধারে।  দিকভ্রান্ত পাখি, অস্তমিত সূর্যের দিকে তাকিয়ে। আমি শূন্য হয়ে আছি,  নিশ্চল পৃথিবীর দিকে মুখ করে, ওহে পথিক,পথ খুঁজে দাও মোরে।

বেদনাহত

 বেদনাহত দেবপ্রসাদ জানা ঝুল বারান্দায় তারে দেখিবারে চাই। খোলাচুলে ভেজাচুলে দেখিবে দাঁড়িয়ে। হৃদয় মাঝারে,তারে দেখিবারে পাই। পথ চেয়ে থাকি সেই পথটা হারিয়ে। মোহ-মেঘ তারে কেন দেখিতে দেয় না, অন্ধ করে রাখে মোরে সারাদিন ওরে। স্বপন মাঝারে তারে দেখিতে চাই না। চিরদিন শুধু দেখে গেছি,স্বপ্নে তারে। ক্ষণিকের আলো ঢেলে,আঁখির পলকে। হারায়েছি সদা, ভয়ে মুদিয়াছি আঁখি। মেটে নাই মোর সাধ দেখেছি ক্ষনিকে। পলক পড়িতে দেখি বেঁধে দিল রাখি। হৃদয় না জুড়াইল হাসিল চকিতে। ওরে এ বেদনা আমি না পারি সহিতে।

পাথরে লিখি

 পাথরে লিখি  দেবপ্রসাদ জানা ১৪.৫.২০২২ সাদা কাগজে লিখেছি অনেক, হারিয়ে গেছে ছিঁড়ে গেছে অচিরেই। আমি আমাকে আবৃত করেছি,  সাদা কাপড়ে।  স্পর্শ করেছি পূর্ণিমার চাঁদ। কালরাতের অলৌকিক চাঁদে আমি একা। ধূসর জীবন ঘোরে গোলক ধাঁধায়। কবিতার কথা গুলো বড় এলোমেলো। সাদা পাতায় বড়ো আবছা। পোড়া ধ্বস্ত ঘরের আঙিনায় মৃত্যু ডাকে, মনের আঙিনায় শুকনো পিয়ারা গাছটায়- দাঁড়কাকের বাসা।  প্রজন্মের পর প্রজন্ম একই ইশারায় - কবিতার নতুন বসন্ত,লাল পলাশ। লিখতে পারিনি কাগজে তার নাম, তাকে নিয়ে দেখা স্বপ্নের কবিতা,  আঁকতে পারিনি তার বিসন্ন মনের ছবি। অজন্তা গূহা বক্ষে অশ্লীলতার আবক্ষ দেখেছি। চারশত বছরের,মুছে যায়নি,ধুয়ে যায়নি। কখনো নোনাধরা ঘরের দেওয়ালে, খসে পড়া বাড়ি কার্নিসে দেখেছি তার ছায়া। কবিতার, বড়ো খিদে বেড়েছে লেখার। লিখেছি কবিতা, দেখেনি কেউ,পড়েনি কেউ, শোনেনি কেউ, তবু লিখেছি। ছিঁড়ে ফেলেছি সাদা পাতায় লেখা কবিতা গুলো। এবার মৃত পাথরে লিখেছি জীবনের কবিতা। একবার দেখো,ভালোবেসো। পড়ো একবার। 

পাণ্ডুলিপি

পাণ্ডুলিপি  দেবপ্রসাদ জানা আজ শুধু শেষ টুকুই পড়ে রয়েছে, সব পোকা গুলো মেরে ফেলেছি। তোমায় কথা দেওয়া ছিল। তোমার দেখানো স্বপ্ন দেখেই- জীবনের পাণ্ডুলিপি গুলি আজ, বস্তা বন্দী করেছি। মনের বাসনা,আমার মৃত্যুর পর, চিতার ওপরে বইয়ের স্তুপ-চাপিয়ে দেবে। যারা তাচ্ছিল্য করেছিল আমি কে? মনের ভেতরে প্রতিবাদ,ঠোঁটের ওপর হাসি। অনেক দূরে থেকে ভেতরে ভেতরে বলবে ঠিক হয়নি, বই গুলো পোকা ধরা হলেও, কবিতার কথা গুলো বাস্তব। স্মৃতির সমাধি হবে কার্জন পার্কে। পথ চলতি ভালোবাসার মানুষ গুলো দাঁড়িয়ে বলবে একদিন, ইনিই সেই। শুধু তোমার জন‍্য বুকটা হু-হু করে ওঠবে তোমায় দেখে লেখা কবিতা কথা বলবে। আমার ভালোবাসা, আমার প্রেম। সব কথার শব্দে ভাসবে। মনে মনে যারা আমার কথা ভাবে, আজ বাসনায় গড়া পৃথিবী। ভালোবাসার বাদামের খোসা ফেলা গড়ের মাঠে। নন্দন চত্বরে,ময়দানে খেলা করবে। রাজপ্রাসাদ সম ভিক্টোরিয়ার অচল পরী ঘুরবে । আমি সত্যিই কেঁদে ফেলবো সেদিন।             

ইচ্চে করে

 ইচ্ছে করে দেবপ্রসাদ জানা কিং কং ঢং ঢং লং বং চং। মমতায় রং সং বড় এক ঢং। গ্যাং গ্যাং  চ্যাং চ্যাং কুমড়ো পটাস। ল্যাং লাং ঠ্যাং ধরে মারল চটাস। বাংলায় একাডেমি তোলাই ম্যম। সাহিত্যের সংগ্রামে রাস্তায় জ্যাম। বই বই  হই চই কাঁই কাঁই প্যাঁচা। মম মম হর দম এঁটো হাত আঁচা। মিথ্যে সব ব্যাকরণ  মিথ্যে বইয়ের টাঁই। এই সব লিখে যদি একাডেমিটা পাই।

স্বর্ণ হংস জাতক

 স্বর্ণহংস জাতক দেবপ্রসাদ জানা বারাণসীর একটি গ্রামে গরীব পরিবারে। অতি কষ্টে দিন কাটে অর্ধ অনাহারে। তিন কন্যা ছিল ভারি অপূর্ব সুন্দরী। রূপ যেন ফেটে পড়ে স্বর্গের অপ্সরী। দৈন্যদশায় অনাহারে রুক্ষশুষ্ক কাঠ। ফুলসম তিন কন্যার কপাল ভরাট। একদিন সন্ধ্যা বেলা হলো সর্বনাশ। অনাহার রোগে পিতার  হলো স্বর্গবাস। দিন আনা দিন খাওয়া পরিবার ছিল। অকারণেই ভগবান, তাও কেড়ে নিল। ঘরও গেল দোরও গেল  মহাজনের কোপে। বহু কষ্টে দিন কাটে কালের উত্তাপে। চারজনা ঠিক করে মরবে জলে ডুবে। সেই মতো জলাধারে যেই ডুব দেবে। পুকুরের জলে বাস করে রাজহংস। দেখে ভারি দয়া হলো জিজ্ঞাসিল বংস। কুলিন পরিবারে জন্ম তিনকন্যা কহে। পিতা মোর মহৎ পুরুষ  অসৎ সে নহে। অনায়াসে  অকালে  সব কেড়ে  নিল। ভগবান নাই সোনা মাতায় কহিল। মন দিয়ে রাজহংস সবই শুনিল। পূর্ব জন্মের কথা তার স্মরণে আসিল। সেই ছিল তিন কন্যার তখনের পিতা। দেখে বড় কষ্ট হলো হায়রে বিধাতা। এমন অবস্থা এদের সহিবে কেমনে? যাও কন্যা ফিরে যাও তোমরা চারজনে। কাল প্রভাতেই যাবো তোমাদের ঘরে। সব কষ্ট ধুয়ে যাবে নীরবে অচিরে। তিনকন্যা বোধিসত্বে প্রণাম করিল। মনোকষ্ট দূরে গেল ঘরে ফির...

পরকীয়া

 পরকীয়া  বৃষ্টি ছুটি নিয়ে বাড়ি গিয়েছে। এখানে তার মনের মানুষ, গ্রীষ্মকে রেখে গেছে। সেই এখন কাজ পত্তর করে দেয়। এ আবার দোসর বাতাসিকে এনে, পরকীয়ায় মেতেছে। বউ নেইতো ঘরে। তাই আজাদই। বৃষ্টি এলে,বাতাসি পালাবে লুকিয়ে। গ্রীষ্ম যতটা ঠাণ্ডা ছিল, ততটাই উত্তপ্ত হয়ে যাবে। স্বকীয়ার থেকে পরকীয়ায়  মনে শীতলতা আসে।

পাথরে লিখি

 পাথরে লিখি  দেবপ্রসাদ জানা ১৪.৫.২০২২ সাদা কাগজে লিখেছি অনেক, হারিয়ে গেছে ছিঁড়ে গেছে অচিরেই। আমি আমাকে আবৃত করেছি,  সাদা কাপড়ে।  স্পর্শ করেছি পূর্ণিমার চাঁদ। কালরাতের অলৌকিক চাঁদে আমি একা। ধূসর জীবন ঘোরে গোলক ধাঁধায়। কবিতার কথা গুলো বড় এলোমেলো। সাদা পাতায় বড়ো আবছা। পোড়া ধ্বস্ত ঘরের আঙিনায় মৃত্যু ডাকে, মনের আঙিনায় শুকনো পিয়ারা গাছটায়- দাঁড়কাকের বাসা।  প্রজন্মের পর প্রজন্ম একই ইশারায় - কবিতার নতুন বসন্ত,লাল পলাশ। লিখতে পারিনি কাগজে তার নাম, তাকে নিয়ে দেখা স্বপ্নের কবিতা,  আঁকতে পারিনি তার বিসন্ন মনের ছবি। অজন্তা গূহা বক্ষে অশ্লীলতার আবক্ষ দেখেছি। চারশত বছরের,মুছে যায়নি,ধুয়ে যায়নি। কখনো নোনাধরা ঘরের দেওয়ালে, খসে পড়া বাড়ি কার্নিসে দেখেছি তার ছায়া। কবিতার, বড়ো খিদে বেড়েছে লেখার। লিখেছি কবিতা, দেখেনি কেউ,পড়েনি কেউ, শোনেনি কেউ, তবু লিখেছি। ছিঁড়ে ফেলেছি সাদা পাতায় লেখা কবিতা গুলো। এবার মৃত পাথরে লিখেছি জীবনের কবিতা। একবার দেখো,ভালোবেসো। পড়ো একবার। 

পুতি মাংসজাতক

 পুতিমাংস জাতক দেবপ্রসাদ জানা হিমালয়ের পাদদেশে কোন একটি গ্রামে। ভেড়ার দলে রানি সে মেড়মাতা নামে। চকচকে ভেড়া ছাগল  দেখতে অনবদ্য। সবুজসবুজ গাছপালা সব তাদের খাদ্য। কোন একদিন সেস্থানে  বিপদ এলো তেড়ে। তাই না দেখে ভেড়ার দল গেল বাগান ছেড়ে। দুষ্টু শিয়াল,শিয়ালিনী ক্ষুণ্ণ হলো তাতে। একটাও যে পায়নি তারা এমন মিঠে রাতে। হদ্দবোকা ভেড়ার দল  ছুটল রানির কাছে। রক্ষা করুন মেড়মাতা শিরে বিপদ নাচে। বলল রানি মেড়মাতা এত কিসের ভয়? একদিন তো যাবে প্রাণ কেউতো অমর নয়। জঙ্গলে থাকি বিপদ জেনে পালাতে যদি হবে। কেমন করে কাটবে দিন কোথা কোথা যাবে? খাদ্যখাদক শৃঙ্খলে রই তারা খাবে ঠিক। ভয়ে যারা ঘর ছাড়েরে তাদের শতধিক। ভয় পাস না দেখছি আমি তাদের কাছে গিয়ে। কেমন সে মাংসাশী জীব যাবে মোদের নিয়ে। বনের রানি তোদের রানি আমি একা যাবো। বলতো এবার কোথা গেলে তাদের খুঁজে পাবো। উত্তরের ওই জঙ্গলে যাও পিপুল গাছের ফাঁকে। বড় সেই গর্তের ভিতর লুকিয়ে তারা থাকে। একা একা যাবেন কেন সকলে যাই চলো। দুষ্টু শিয়াল বড়ই চালাক ছাগল খেয়ে নিলো। সেই ভয়েতে পালাই সবে পিপুল তলা হতে। চোখ দুটো তার জ্বলে দেখি গভীর কালো রাতে। সঙ্গে করে বেরোয় দুজন শিয়ালি...

তোমার জন্মদিনে

 তোমার জন্মদিনে দেবপ্রসাদ জানা ৯.৫.২০২২ ( ২৫ শে বৈশাখ ১৪২৯) সেই নয়ের বসন্তে তোমায় দেখা, আমি তখন বসন্তে নই। তুমি তখন শান্তিনিকেতনে। কোথাও রঙতুলিতে, কোথাও পাথরে রাখা। কোথাও আঁকা শুধু রেখায়। গাছগাছালি নীলাকাশে, ফুলের সঙ্গে,গাছের তলায়। ঘোর বসন্তে- আমি তখন বসন্তে নই। আবার এসেছি আষাঢ় আকাশে, ঘণ মেঘ যেথা গান নিয়ে আসে। বৃষ্টি হেথায় সুবাস ঢালে মৃদু বাতাসে, আমি এখন পঞ্চাশে, প্রায় শেষ বসন্তে। পুরাতন সেই হৃদয় আমার পুলকে হাসে। নূতন মেঘের পানে চেয়ে আছি,  তুমি সদা চির বসন্তে। সদা হাসি মুখে,নয়া নয়া সেই গানের সুরে, বিপুল মাঠের পরে নব তৃণদলে  বাদলের ছায়ায় আমলকি বনে, ছোট নদীটার বাঁকে, বাউল বাতাসে, খঞ্জণী হাতে,  একলা চলেছ,সরু পথ ধরে, জমির আলে আলে। কথা বলে যাও গানে গানে।  মেঠো সুরে, ঘুরেঘুরে। আবার এসেছি মোর শেষ বসন্তে, কাশবনে ঘুরে ঘুরে শেষে,  কত দোলা লাগে মনের গভীরে। নয়নে এসেছে বারি, মেঘবলাকা বয়ে,  হৃদয়ে এসেছে ধেয়ে,অশ্রুবারি। একশত বাষট্টির শেষে,তোমার জন্মদিনে।

খাঁটি

 খাঁটি দেবপ্রসাদ জানা অন্ধকারে থেকো না বসে, আলোর পথে এসো। ছুটে চলো মনের পতাকা তুলে, জীবন্ত মৃতদেহ ওপর দিয়ে। গেঁথে দিও তোমার পতাকাখানি। ইতিহাসকে ডেকে নিও একবার। আর কতদিন নির্জনে নিভৃতে  গোপনে, হারিয়ে যাবে?  ময়দানবের দেশে। প্রকাশ্যে এসো আলোর পথ ধরে- আগুন ঘেঁটে ঘেঁটে,পুড়তে পুড়তে- খাঁটি সোনা হয়ে। সীতার মতো খাঁটি হয়ে। সভ্য সমাজের বুকে- জ্বেলে দাও নিয়নের আলো। ব্যর্থতা শব্দটাকে ঘর ছাড়া করো। অভিধানের পাতায় জ্বেলে দাও আগুন। এর সমার্থক শব্দ গুলোতে। কর্তব্যের অজুহাতে দিও না ব্রহ্মাস্ত্র। অজস্র কলঙ্ক মুখে মেখে যেমন চাঁদ হাসে, তেমন হাসি যেন না আসে মুখে। মিথ্যের সীমানাটাকে কাঁটাতার দিয়ে বেঁধে দাও। মধ্যযুগীয় বর্বর জাতির সামনে- নিজের মাথাটা রেখে,  পথ খুঁজে পাবে না কিছুতেই। ছিঁড়ে ফেলো বিষাক্ত শব্দ গুলোর অভিধান। সব ব্যবহারহীন শব্দ গুলোকে মুছে ফেলো। তোমার জীবন থেকে, এসো আলোর পথ ধরো। অন্ধকারে থেকো না বসে।

মহোৎক্রোশ জাতক

 মহোৎক্রোশ জাতক দেবপ্রসাদ জানা সে এক অনেক দূরে গভীর জঙ্গলে। বাস করত পশু পাখি একই অঞ্চলে। সিংহ ছিল কাছিম ছিল ছিল বাজ পাখি। ঈগল ছিল বন্ধু তাদের কহিল সে ডাকি। বনের মধ্যে,লোক এসে ধরছে নিরীহ পাখি। রোষ্ট করে তন্দুর করে খাচ্ছে তারা দেখি। রাত্রিবেলা মশাল জ্বেলে ধরবে পাখি আজ। ওদের আজ তাড়াতে হবে এসো ফেলে কাজ। বট গাছের নিচে তারা ঘাঁটি গেড়ে আছে। গাছে উঠে ধরবে পাখি বাসা যে সব গাছে। চলো সবাই চেষ্টা করি বাঁচাই শান্ত পাখি। অন্ধকারে মশালটাকে নিভিয়ে দেব দেখি। পুকুর থেকে পাখায় করে জল দিল ছুঁড়ে। মশালটা যেই নিভে গেল এলো তেড়ে ফুঁড়ে। একবার নয় দুবার নয় নিভল বারবার। তাই না দেখে ক্ষেঁপে গিয়ে বলল সরদার। থাক তবে আজকের রাত দিনের আলোয় ধরব। বড় পাখিদের না পেলেও  বাচ্চা গুলো মারব। হঠাৎ দেখে কাদা মাখা কচ্ছপ একখানি। মোটাসোটা কচ্চপখানা পাখি কেন টানি? মোটা একখান দড়ি নিয়ে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে। টানাটানি অনেক করে তুলতে গেল কাঁধে। চার চারজন চারদিকে  একাই কচ্ছপ। টেনে টেনে নিয়ে গেল হলো না মচ্ছব। সুযোগ বুঝে ঈগল গেল সিংহ রাজার খোঁজে। খেয়ে দেয়ে ঘুমের দেশে ছিল চোখটি বুজে। সব শুনে রাজামশাই এলেন পুকুর পাড়ে। সিংহ দেখে লোকজন...

শোনো

 শোনো দেবপ্রসাদ জানা তোমার মিষ্টি কথা গুলো প্রবল বাতাসে- ভাসিয়ে দাও, নইলে চিৎকার করে, মেঘের ভেতরে শব্দ গুলোকে - হারিয়ে যেতে দাও। রাত গভীর হোক। রাতের সঙ্গে জোছনা আসুক, তারার দল হাসুক আগে, তারপর নয় বোলো ভালোবাসি, একটা নতুন ডাইরি লেখো, প্রথম পাতায় একটা লাল গোলাপ ফুল রেখো, নীল খামে ভরা চিঠিতে গন্ধ ঢেলে দিও, ঠোঁটের লাল রঙে ছেপে দিও - ভালোবাসার চিহ্ন। পোষ্ট কোরো না যেন, পিয়ন বড় দুষ্টু ছেলে, নীল খাম দেখলেই হলো,  তুমি বলবে, কেন এই সব? এই ডিজিটালের যুগে- পায়রার পায়ে চিঠি দেওয়া বোকামি, মোবাইল আছে তো। একটা ম্যাসেঞ্জার ব্যস সব ঠিকঠাক। নাগো বড় খোলা দুয়ার দিয়ে বিপদ ডেকে আনা। না বাবা আর না, শেষ এসএম এস। এখনো তার কাঁচা ঘা শুকায়নি।

গুপিবাঘা

 গুপিবাঘা দেবপ্রসাদ জানা আমলকির ছোট্ট গাঁয়ে  গুপি মুদির বাস। হরিত্তকীর বাঘা গুপির   বড়ই  সর্বনাশ। গ্রাম ছেড়ে বাশঁ বাগানে  মিলল দুজন এসে। গানবাজনা হবে না আর  বুঝল তারা শেষে। বাড়ি গেল গ্রাম গেল  কি করবে তারা? ঘর নাই খাবার নাই  হলো দিশাহারা। দিনের পরে রাত হলো  ভয়ে কাঁপছে বুক। বাঁশ বাগানে সন্ধ্যা হলো  দেখলো সুখের মুখ। বাঁশ বাগানে গুপি বাঘা  দেখতে পেল ভুত। সেই রাতে জমল মজা  আসলো ভুতের দূত। ভুত রাজার জলসা হবে  নাচবে পেত্নী গাছে। মোটা সরু লম্বা বেঁটে  হরেকরকম আছে। লেংড়া কানা গাইবে গানা  বাঁশ বাগানে এসে। ভুতের রাজা খুশি হয়ে  বর দিয়েছে শেষে। গুপি বাঘার খুলল কপাল  পেলো তিনটি বর। তিন তিনটে বর পেল তবু  পায়নি তারা ঘর। গানের গলা খুলল গুপির  হাত খুলেছে বাঘার। রাজকন্যা করবে বিয়ে  স্বপ্ন ছিল তার। খাওয়াপরা যাওয়াআসা  সব হাতের মুঠোয়। গানবাজনায় মুগ্ধ কোরে  শুণ্ডি দেশে সিঁধোয়। শুণ্ডিরাজের যমজ ভাই  হাল্লা দেশের রাজা। যুদ্ধ করে রাজ্য নেবে  মারবে তারা প্রজা। শুণ্ডি দেশের রাজপ্রাসাদে ...

জাতক (গুণ জাতক)

 জাতক দেবপ্রসাদ জানা রূপকথা নয়,জ্ঞানেরকথা রূপসী রূপকথা। বারাণসীর রাজ্য সেটা সেথায় গল্পগাথা। রাজা ছিলেন ব্রহ্মদত্ত জাতকে বিশ্বাসী। পশুপাখি গাছপালা গল্পে তারাই বেশী। মানবতার গল্প কথা সহজসরল ভাষা। ছড়ায় লেখা গল্পগাথা, মিষ্টি মধু মেশা। ভারি মিষ্টি বুদ্ধি বাড়ে ছোট্ট কচিকাচার। সবুজবনের পশুপাখি এই গল্পের আধার। নতুন নতুন কথ্য গল্প নতুন রকম স্বাদ। ছড়া দিয়ে বলছে শোনো জানা দেবপ্রসাদ। ১ গুণ জাতক সিংহীর আজ ভীষণ রাগ কি জানি কি হলো? বাচ্চায় বাচ্চায় মারামারি  সিংহী রেগে গেলো। সিংহশাবক নয় তারা শিয়ালের ছানা। ভেঙচি কেটে পালিয়েছে সিংহী দিল হানা। বনের রাজার বাচ্চা তারা রাজপুত্র যেমন। তারে কিনা ভেঙচি কাটে শিয়ালছানা এমন। রেগেমেগে সিংহী রানি বললে শিয়ালটারে। ভেঙচি কেন কাটল বাচ্চা বলতে হবে তারে। মাফ করবেন মহারানী  বাচ্চায় বাচ্চায় খেলা। বোঝেনি যে বাচ্চা শিয়াল শিশু ভোলাভালা। বাচ্চাগুলো বড়ই অবুজ কানমুলে দিন ডেকে। ভালো একটা পাখি ধরেছি দেখবেন নাকি চেখে? সিংহ মশাই হরিণ মেরে দিয়েছিলেন বলে। বেশ কটা দিন আরাম করে খেয়েছি রাজার হালে। এমনতো নয় শত্রু মোরা করব মারামারি, দুই ঘরেতে আনাগোনা  বন্ধু মনে করি। শিকা...

আবেগ

 আবেগ দেবপ্রসাদ জানা না কুম্ভীরাশ্রু নয়, সৌমেনের - আমি বুঝেছি,এ জমানো ভাবাবেগ, ভালোবাসার গ্রন্থিতে এতদিন জমেছিল বেদনা। যা আজ অশ্রু হয়ে বেরিয়ে এল -সভা মাঝে। যা পাহাড়বেষ্টিত জীবনের অভ্যন্তরে- বিন্দু বিন্দু করে জমা হচ্ছিল, মনের শীতলতায় হিমশৈলে রূপান্তরিত হয়েছিল। আজ মনের উষ্ণতায় গলে গেছে। অশ্রু সজল চোখের গভীরে দেখেছি ভালোবাসা। বন্ধুর প্রতি, বন্ধুর মায়ের প্রতি। মৃত্যুর আগে পরে,অজান্তেই এই আন্তরিকতা - জন্মেছিল মনে,মনের উষ্ণতায় বাষ্পীভূত হয়ে, জমা হচ্ছিল হৃদয় ভাণ্ডে। হ্যাঁ জন্ম আর মৃত্যু দুটোই বাস্তব, যে জন্মেছে তার মৃত্যু অনিবার্য। সকলেই এই পথ ধরে,  একদিন মহাপ্রস্থান করতে হবে।  ধর্মরাজ যুধিষ্ঠির তাকেও - ওই মহাপ্রলয়ের অবসানে, প্রস্থান করতে হয়েছিল। সবই সত্য,সবই বাস্তব। তবুও মানুষ, তার প্রিয়জনের মৃত্যুকে হাসি মুখে, মেনে নিতে পারেনি। হয়তো মনের কোনো এক কোণে, জমে থাকা ভালোবাসার মৃদু বাতাস নিম্নচাপ তৈরী করছিল এতদিন। আজ ঝড় হয়ে উড়িয়ে নিল সব।

অপেক্ষা

 অপেক্ষা  দেবপ্রসাদ জানা হ্যাঁ আর একটু অপেক্ষা করো ভগবান আসছেন- কল্কি অবতারে। সকলের দুঃখ কষ্ট অভিযোগ, যদিও আময় চিনব না তাকে, পাপের ঘড়া এত ভরে ফেলেছি যে  অন্ধকার থাকতে থাকতে, উষ্ণতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে - এক আশ্চর্য হিম অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে, এ সাধের পৃথিবী। সেই মহাভারতে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের শেষে রাজা পরীক্ষিতের মৃত্যুর পর - কলি এসেছিল, নীল পালকে বসে- উড়তে উড়তে।  যেন কিশোরীর শরীরে একটু একটু করে, ফুটে ওঠা নম্র কুসুমকলির অমল আভাস। প্রতিটি দিন সোঁদামাটির নাভি জুড়ে, তার অপরূপ পালকে স্থাপত্য। সেই মিথুন মুদ্রার সোহাগী জ্যামিতি- পৃথিবী জুড়ে কুয়াশাচ্ছন্ন মোহময় তার, মায়াবী অবয়ব।  আলোর অবকাশে অবলীলায়িত অবৈধ  সম্পর্কের নানারঙের উদোম। চুপি চুপি একদিন নিশ্চয়ই সেই অনাকাঙ্ক্ষিত  অবতার অবতরণ করবেন, পোয়াতি রাতের পেট খসিয়ে, নবনির্মাণে নব উদ্যোগে নীলপালকের পিঠে চড়ে, অপেক্ষা করো সে আসছে, বিস্ফোরণের সঙ্গে, সূর্যের গায়ে আগুন লেগেছে, ডাকাতিয়া বাতাসের তরণী বেয়ে সে আসছে। ঝিঁঝি পোকারা ডাক দেয়া বন্ধ করেছে। বর্ষার ব্যাঙেরা আর ডাকে না। সাপের গায়ে খোলশ ওঠা বন্ধ, বংশ লোপ পাচ্ছে এক একটা ...

যমজরাজা

যমজরাজা দেবপ্রসাদ জানা আমলকির ছোট্ট গাঁয়ে  গুপি মুদির বাস। হরিত্তকীর বাঘা গুপির   বড়ই  সর্বনাশ। গ্রাম ছেড়ে বাশঁ বাগানে  মিলল দুজন এসে। গানবাজনা হবে না আর  বুঝল তারা শেষে। বাড়ি গেল গ্রাম গেল  কি করবে তারা? ঘর নাই খাবার নাই  হলো দিশাহারা। দিনের পরে রাত হলো  ভয়ে কাঁপছে বুক। বাঁশ বাগানে সন্ধ্যা হলো  দেখলো সুখের মুখ। বাঁশ বাগানে গুপি বাঘা  দেখতে পেল ভুত। সেই রাতে জমল মজা  আসলো ভুতের দূত। ভুত রাজার জলসা হবে  নাচবে পেত্নী গাছে। মোটা সরু লম্বা বেঁটে  হরেকরকম আছে। লেংড়া কানা গাইবে গানা  বাঁশ বাগানে এসে। ভুতের রাজা খুশি হয়ে  বর দিয়েছে শেষে। গুপি বাঘার খুলল কপাল  পেলো তিনটি বর। তিন তিনটে বর পেল তবু  পায়নি তারা ঘর। গানের গলা খুলল গুপির  হাত খুলেছে বাঘার। রাজকন্যা করবে বিয়ে  স্বপ্ন ছিল তার। খাওয়াপরা যাওয়াআসা  সব হাতের মুঠোয়। গানবাজনায় মুগ্ধ কোরে  শুণ্ডি দেশে সিঁধোয়। শুণ্ডিরাজের যমজ ভাই  হাল্লা দেশের রাজা। যুদ্ধ করে রাজ্য নেবে  মারবে তারা প্রজা। শুণ্ডি দেশের রাজপ্রাসাদে  সুন্দর...