Posts

Showing posts from November, 2024

কলমের আর্তনাদ

"কলমের আর্তনাদ" আমি দেখছিলাম,  কি জানি কারা যেন গলির ওপাশে দাঁড়িয়ে চিৎকার করছিল, বিচার চাই, বেশ লাগছিল, আমি তৃষ্ণার্ত আমার শরীরে একফোঁটা রক্ত নেই, রক্তের অভাবে আমি কিছু বলতে পারছি না। ছুটতে পারছি না, আমাকে একবার পেট ভরে খেতে দিলে চার হাজার কিলোমিটার দৌড়াতে পারি। কিন্তু এই ফোন ল্যাপটপ কমপিউটারের যুগে আমাকে না খাইয়ে মারার চেষ্টা চলছে। যদিও মরিনি এখনো, আমি বেঁচে আছি, ছাত্রছাত্রীদের হাতে হাতে, ওরা পদ্য গদ্য লেখে না যদিও অঙ্ক করে, প্রশ্নের উত্তর করে, পরীক্ষা দেয়। শোনো সভ্য মানব, এ পৃথিবীতে আমিই সৃজিত হয়েছি সর্বপ্রথম।  লিখেছি অনন্তকাল পর্যন্ত, সকলের ভাগ্যলিপি, রামায়ন, মহাভারত যত মহাকাব্য সব আমার এই মুখ দিয়ে, কয়েক লক্ষ মাইল ছুটেছি, আজ এই বৃদ্ধ বয়সে আমাকে অথর্ব করে রেখেছে।  আমাকে দিয়েই রচিত হয়েছে পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে অদ্যাবধি ইতিহাসের সকল অধ্যায়। পৃথিবীতে জন্মেছে যত মহা মনীষী ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের ঝর্ণাধারা, আমিই দিয়েছি তাঁদের সকল জ্ঞানের দিশা। তাঁদের অনেকে হয়ত আজ নেই, কিন্তু তাঁরা অমর হয়ে আছেন সকল মানুষের বুকে এবং থাকবেন চির স্মরণীয় হয়ে চিরদিন সবার মাঝে। নিশ্চয় তাঁদের এ আকাশচুম্ব...

স্বপ্নের রঙিন পাখি

স্বপ্নের রঙিন পাখি দেবপ্রসাদ জানা স্বপ্নের রঙিন পাখি ওড়িল আকাশে। সবুজ পাতায় লাগে দুঃস্বপ্নের ধুলো। কালো রাত্রি অন্ধকারে মেঘেদের ঢেউ  ছিঁড়ে ছিঁড়ে উড়ে যায়, উত্তরের দিকে। উত্তরে, আরো উত্তরে জমাট বাতাসে। রঙের প্রলেপ লাগা রঙ করা তুলো। পৃথিবীর চোখে যেন অশ্রু তোলে ঢেউ। অজানা সে মেঘ গুলো, হিম হয়ে থাকে। সূর্য উঁকি মেরে দেখে, মনে মনে হাসে। এমন সোহাগী বেলা, কতক্ষণ বলো? এখুনি আসছি আমি, বলে দিয়ো কেউ। অযথা কু-কর্ম করে, দুষিবে আমাকে। রূপালী রাতের দিব্যি, মেঘ নিজে আসে। আহা নাম কীরে তোর? জিজ্ঞাসা করলো। সুন্দর রূপের খ্যাতি, বুঝবে না কেউ। রামধনু দয়া করে, রঙ মেলে রাখে। হলুদ ঘাসের পরে মরণেরা ভাসে। স্বপ্নের শেষ নিঃশ্বাস রাজকীয় ছিলো। গৃহস্থের ঘর রাখা, মৃতদেহে ফেউ। বানপ্রস্থে যাওয়ার আমন্ত্রণ থাকে। ঋণগ্রস্ত বোকাসোকা মানুষের পাশে- নেশাখোর মাতালেরা থম্ মেরে ছিলো হুমড়ি খেয়ে চৌকাঠে পড়েছিল কেউ- টান টান পেশীগুলো, নাচাতেই থাকে। সোনালি সুতোর ফাঁসে মৃত্যু এসে বসে। ভয়ঙ্কর নিঃসঙ্গতা যেন এসে ছিলো। হা-ডু ডু খেলার ছক কেটেছিল কেউ চৌহদ্দি এঁকেছে মৃত্যু বলে দিও তাকে।

মানসিক দুঃখ

মানসিক দুঃখ দেবপ্রসাদ জানা অনঙ্গ জ্যোৎস্নায় দেখি শুদ্ধতার মুখ  মনে পড়ে মেঘে ঢাকা বর্ষার দু-চোখ।  অকালে মৃত্যুর ক্ষোভ, মানসিক দুখ। আঘাতের ক্ষত সব, দেখেনি সে-চোখ। মাটির ছোঁয়ায় দৃঢ়, সবুজ অরণ্য। মেঘের কৌতুকে হাসে সাবলীল চাঁদ। রাতভর অন্ধকারে, কুয়াশারা ধন্য। অভিশাপ ছদ্মবেশে, কহে ধন্যবাদ। স্নেহময় আঙুলের ছোঁয়া দাও বুকে। সন্তানের ক্ষত বুক, কার অপরাধে। ঘন অন্ধকারে বলো কে আছে সুখে। ভুল সঞ্চারিত হয়, প্রজন্ম-বিবাদে। কঠোর ঘৃণিত বাক্য নিজস্ব শাসনে   আঁধার বপন করে সন্তান-হৃদয়ে। ভালোবাসায় মাতাল, যাহারা এমনে কটু বাক্যে ফেরাবে না, কু-ভাষার ভয়ে। বেহেড মাতাল হয়ে বাড়ি এলে ছেলে, পিতার শূন্য হৃদয়ে, রূপালী জোছনা। অপরাধের সকল পাপ তুলে তুলে। আলমারি বন্ধ করে, নীরব বন্দনা।

গোলাপের রঙ

গোলাপের রঙ দেবপ্রসাদ জানা আরো একবার গোলাপের রঙ বদলে গেল সাদা গোলাপের রঙ- লাল হয়ে গেল তোমার রক্তে, বলেছিলাম ভালোবেসো না আঘাত আসবে, তুমি শোনোনি, মেঘের সাথে পাল্লা দিয়ে আকাশকে ভালোবাসলে, চুপিচুপি দূরে সেই দূর প্রান্তে মাঠের শেষে একসাথে এক হয়ে গেলে, ভূলে গেলে আমার কথা, সূর্যের সিঁদুরে মরণ টিপ কপালে তুললে, পূব দিকে করুণ আঁধার, আগুন আগুন চোখে, অবজ্ঞায়- আমাকে ফেলে গেলে,   রক্তের ভিতরে চেতনার নিঃশব্দ প্রয়াণ। বুঝে ছিলাম খুব দ্রুত ছেড়ে যাবে তুমি, বিপন্ন বিস্ময়ে দুঃখের নদীর মতো- দুই চোখে বান ভাসিয়ে ফিরে এলে। বলেছিলাম মেঘমালার ঘর আকাশ ভাঙবে না। মেঘ যতই কালো হোক,  আকাশ মেঘের প্রেম বন্ধন চিরকালের, শোনো না বজ্রের চীৎকার। মেঘকে ভালোবেসে অন্তর্গত শূন্যতায় নিঃশব্দে হৃদয়ালোক ছিটিয়ে গর্জন করে ওঠে বার বার। আহা রে প্রকৃতি বৃথা কেন তুমি জেগে আছো?  সংসার শিয়রে ঘোর রজনীর ছায়া। প্রসারিত হাতে বৃথা তব প্রেম আহ্বান। চেতনায় তব দেহজ সুষমা, আজ শূন্য প্রান্তরে অবরুদ্ধ অন্ধকার। সমুদ্রের জলে, আজ উথাল পাথাল, কেঁদে কেঁদে প্রকৃতি ভূবন ভরায়। যত ছিল প্রেম সব যেন গোলাপের লালিমায়।

চার্লি চ্যাপলিন

শিক্ষক ক্লাসে ঢুকে একটি ছেলেকে জিজ্ঞেস করলেনঃ   তুই বল আমাদের শরীরে ক'টা কিডনি আছে ? ছেলেটি চটজলদি উত্তর দিলঃ  চারটে কিডনি স্যার।  ছাত্রটির উত্তর শুনে ক্লাসের বাকি ছাত্ররা হো হো করে হেসে উঠলো।  শিক্ষক বললেন তোমরা হাসি থামাও।  তারপর অপর একটি ছাত্রকে বললেনঃ  এবার তুই দাঁড়া।  ছাত্রটি জিজ্ঞেস করলঃ  স্যার কটা কিডনি আছে বলব, নাকি বেত আনবো?  শিক্ষক বললেনঃ  না কটা কিডনি আছে বলতে হবে না, বেতও আনতে হবে না, তুই কিছু ঘাস নিয়ে আয়। একদম তাজা ঘাস।  ছাত্রঃ  ঘাস দিয়ে কি হবে স্যার?  শিক্ষকঃ  ক্লাসে একটা গাধা আছে তাকে খাওয়াবো।  এই কথা শুনে আগের ছাত্রটি বললঃ  যাও ঘাস নিয়ে এসো, সেই সঙ্গে এক কাপ কফি ও আনবে।  শিক্ষক রেগে, কফি আনবে কেন, কফি কে খাবে? ছাত্রটির উত্তরঃ  স্যার! কফি খাবো আমি, আর যে গাধা সে ঘাস খাবে।  শিক্ষকঃ  তাহলে গাধাকে ?  ছাত্রঃ  স্যার আপনি জিজ্ঞেস করেছিলেন আমাদের কটা কিডনি আছে ?  আমার আর আপনার মিলিয়ে তো চারটেই কিডনি আছে। তাহলে আমি নিশ্চয়ই গাধা নই। শিক্ষক রেগেঃ  তুই...

ঝরাপাতার স্বর

ঝরাপাতার স্বর দেবপ্রসাদ জানা কতদূর কোন পাখি উড়ে যাবে কে তা জানে  স্তব্ধতা কত গভীর তা নিঃস্তব্ধতা জানে, আকাঙ্ক্ষার চুড়ায় কত জীবন  সবার অলক্ষ্যে নির্মুল হয়ে যায়। তবু জেগে থাকে সমুদ্র,  বেঁচে থাকে নদী। খাঁচা বোঝে শূন্যতার ব্যথা। সময়ের খরস্রোতে হারিয়ে যায় অতীত ছিন্নতার ব্যথা বোঝে পাতা  স্বপ্নময় নীলাকাশ বোঝে প্রেমের খিদে কাঁকর বোঝে পিঠের ওপর বোঝা নিয়ে থাকা। অনন্ত আড়ালে সুখ দুঃখ মৃত্যুর সংসার  নিভৃতে নিঃশব্দে শোনা যায় পাতা ঝরার স্বর। ধ্বনিময় হাহাকারে প্রেম কাঁদে, জীবনের দীর্ঘতর পথে কতটুকু কাঁটা লাগে পায়ে সে বোঝে জানে। চলার সীমারেখা একদিন শেষ হয়,  আসে মৃত্যুর পরোয়ানা। এক মুহূর্ত ও অপেক্ষা নয়,  চলা শুরু সেইক্ষণেই,  প্রতিধ্বনি হলে বুঝি, ন্যূনতম দুরত্বেই  সে আসছে, অবাঞ্ছিত অবাঞ্ছনীয় মৃত্যু। ধুলো মাখা জীবন থমকে দাঁড়ায় মৃত্যুর  কাছে, স্তব্ধতার পাথর খায় - অসমাপ্ত জীবনের হৃৎপিণ্ড। সমস্ত অলীক স্বপ্ন কুয়াশার ভেতরে হারিয়ে যেতে থাকে ক্রমশ। সে পাখি শূন্য বাতাসে সীমানা ছাড়িয়ে  উড়ে যায় অনন্তে কোথাও পাখি তা কতটুকু জানে।

সন্তুষ্টি

সন্তুষ্টি দেবপ্রসাদ জানা 'সন্তুষ্টি' নামে একটি শব্দ আছে দুনিয়ায়.. সত্যিই আমি  উপভোগ করি—   বুদ্ধিমত্তা বিনোদন মিশেলের কারণে।   এটি থেকে আমি শিখি, ভীষণই ভালো লাগে। চিৎকার-চেঁচামেচি-হীন,  নাচানাচি-কান্নাকাটি ছোঁড়াছুড়ি  স্নিগ্ধ, সাধাসিধে ব্যক্তিত্ব। ইঞ্জিন বিকল –  সুদীর্ঘ অবিশ্রান্ত শ্বাসে জাগে ফাটা বয়লার,  অবরুদ্ধ গতিবেগ।  গলানো ইস্পাত, দৃঢ় অস্ত্র হানে বারবার।  জ্বলন্ত অগ্নির তাপ, যন্ত্র জানোয়ার  সুদুর্গম দেশে, সমতলে সমান্তরাল প্রেম,  রেলের লাইন যেন- সেতুপথ পার হয়ে, অভীষ্ট লক্ষ্যে ছুটে চলে,  উত্তরে, আরো আরো উত্তরে আহত সন্ধ্যাতারা অবশেষে মিটি মেটি হাসে  দূরের আশা জ্বলে বালবে লাল-নীল-পীত;  উজ্জ্বীবিত কামনার অগ্নিমোহ-অশান্ত ক্ষুধাতে;  লক্ষ্যভ্রষ্ট ম্লান চাঁদ,  কৃষ্ণপক্ষের রাতে জাগে নারী, আর স্বপ্নের ইঙ্গিত। আজকের পৃথিবীতে, ছুট - পেছনে পেছনে ছুটছে তো ছুটছেই—  দাঁড়িয়ে ভাবার সময় কই, প্রজন্মের পর প্রজন্ম ছুটছে ভাবার ফুরসৎ নেই।  থামছে না কেউ, সন্তুষ্টি নেই,  লোভ ফুরাচ্ছে না, সমস্যা অতোটা নেই,...

কায়াহীনের দেশে

কায়াহীনের দেশে দেবপ্রসাদ জানা তোমরা যে ফুলের শয্যায় রেখেছ, কটা গোলাপ দাওনি ওতে, গোলাপের সুবাস ভারি প্রিয়। চারদিকে ঘেরা স্বচ্ছ কাঁচের বাইরে তোমাদের কান্নার শব্দ হারিয়ে যাচ্ছে, তোমাদের মুখ গুলো অন্ধকার লাগছে মন খারাপ হলে যে নদীর ধারে গিয়ে বসতাম, সেই নদীই আজ আমাকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে অনন্তে। কাঠের আগুনে বড় চোখ জ্বালা করে, রামকৃষ্ণ মহাশশ্মান,  যাকে তোমরা রতনবাবুর ঘাট বলো, ওখানেই নিচ্ছো তো?  আমার কথা গুলো শুনতে পাচ্ছো না তোমরা। আর একটু এগিয়ে কুঠিঘাট,  ওখানে একবার নিয়ো, আমার স্বপ্নের স্থান। জীবনের অনেকটা সময় ওখানেই কাটিয়েছি। জেঠির ওপরে জোছনায় কী উচ্ছাসে - উষ্ণ রিপুগুলি শীতল জ্যোৎস্নায় ভরে যেতো। আমার বোধশূন্য শরীরটা স্পর্শ' করে দেখেছ? কত শান্ত, কিন্তু ভেতরে? নদীর- টালমাটাল নৌকা। যেখানে দুঃখের জন্ম হচ্ছে প্রতিদিন।  যেখানে আত্মমগ্ন ছায়া,  প্রাচীন নিদর্শ'ন ধ্বংসস্তূপ, ইতিহাস হচ্ছে। আজও নদীর মতো ছুটে চলেছি নদীর উপেক্ষায়, কী প্রজ্ঞায় নিয়ে যায় নদী, অচেনা প্রদেশে। সেই অস্থিরতা হীন মায়াহীন, কায়াহীনের দেশে। সমস্ত স্তব্ধতার ভিতরে শুদ্ধতার কথা ভেবেছি সমস্ত ক্ষয়ের ভিতরে আজ মৃত্যু-চন্...

বন্ধু ভুলে যাবো

বন্ধু ভুলে যাবো দেবপ্রসাদ জানা জানিস হিমাংশু, কতদিন দেখিনি তোকে। আগে তবু আসতিস্ অফিসে। তোর জাহাজ এখানে পাড়ি দিলে,  দেখা করতিস্, গল্প হতো সঞ্জীবের, সুশান্ত, তাপসের। পুরানো দিনের সব কথা, স্কুলের কথা-পড়ার কথা সবই ভুলে যাবো একদিন,  সময়ের সিঁড়ি ভাঙতে ভাঙতে সবই ভুলে যাবো। তুই তবু যোগাযোগ রেখেছিস্ বরাবর, আমি পারিনি, মুখ লুকিয়ে থেকেছি ভাই- তুইতো জানিস্ ভাই কত প্রতিকুলতায় আমি জীবনের প্রতিটা ধাপ এগিয়েছি। কাঠ ফাটা রোদ্দুরে - বাবা যখন কাজের উদ্দেশ্যে হেঁটে যেতো,  মেঘ চিরে তেড়ে আসা জ্বলন্ত সূর্যের আক্রমণে  আক্রান্ত বাবা, ছায়ার সন্ধানে ছুটেছে দৌড়েছে। আমি পারিনি তখন তাকে এক পাত্র ছায়া দিতে। উদাসীন মায়ের আঁচল খানাও ছিঁড়ে কুটিকুটি। আইবুড়ো বোন এক্কাদোক্কা খেলতে খেলতে একদিন পার হয়ে যায় বয়সের খেলা ঘর। বোনের চন্দন মাখা হাতের গন্ধ।  সমাজের চোখের আগুনে পুড়ে ছাই,  তোকে বলতে পারিনি,  হাজার স্বপ্নের ভিড়ে, হারিয়ে গেছে  বন্ধু বন্ধনের সুতোহীন টান,  সবই ভুলে গেছিলাম, সব ভুলে গেছি। বাঁচার চৈতন্যে প্রতিধ্বনিময় রৌদ্রাক্ত মাঠে শুনতে চেয়েছি ফুল ঝরার শব্দ।  পথ চলার ছন্দ ক্...

আগুনের ফুলকি

আগুনের ফুলকি দেবপ্রসাদ জানা ততক্ষণে লড়াই হয়েছে- আমি তখন একটা কাঠ পাতার ঘরে, নিজেকে লুকিয়ে রেখেছি সকালের সোনালী রশ্মির মত-  ফোঁটা ফোঁটা রক্ত চুঁইয়ে পড়ছে, বন্ধ আদালতে অপরাধীর বিচার সভা। বোমার আঘাতে ভেঙ্গে গেছে আদালতে কাঠগড়া। শহরের গেট বন্ধ হয়েছে,  দুঃখে মোমের চোখে জল,  হাহাকার করছে জনতা, রাতের কারফুর ধাক্কায় শহর নিঃস্তব্ধ। মেয়েটা এসেছিল ব্যাণ্ডেজ হাতে। এখন সেই ব্যাণ্ডেজে মোড়া দেহ- তিলোত্তমা। ফিরে আসতে মাঝরাতে, তার সাদা অ্যাপ্রনে রক্তের রক্তিম বর্ণালী চুঁইয়ে চুঁইয়ে পড়ছে  সন্ধ্যাবেলার রোদ, এক চিলতে পথ, যার পথে চোখ মেলে রয়েছে ফিরে আসেনি তিলোত্তমা- আদরের হাতটা দেয়নি বৃদ্ধা রোগীর গায়ে, বলেনি ভয় কি ঠাকুমা ঠিক হয়ে যাবে আমি তো আছি।  আক্রমণকারী রাইফেলে নয় বোমার আঘাতে ভেঙ্গে দিয়েছে সব বোমার টুকরো-শত শত রক্তের ফোঁটার মত, হাসপাতালের আনাচে কানাচে-  বিচার হইনি এখন বন্ধ আদালতের দরজা। দোষী কই? সেতো নেই প্রমানও নেই হাতে, সবাই সব জানে, কাঠ পাতার কুঁড়ে ঘরে লুকিয়ে  প্রতিবাদের ভাষা, "উই ওয়ান্ট জাষ্টিস" আতঙ্ক পা টিপে টিপে হাঁটতে থাকবে প্রতিদিন। লুকিয়ে পড়বে কোনো জঙ্গলে, ...

দশ অবতার

দশ-অবতার  শ্রীমৎস্য-অবতার কল্পের শেষ হয়েছে, নিয়ম মাফিক  সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মা ক্লান্ত, ভারি পরিশ্রান্ত  এর মধ্যে সবে নিদ্রা আবেশ হয়েছে।  যোগনিদ্রা, ঘন ঘন উন্মত্ত উন্মাদে ব্রহ্মার শরীর জুড়ে, প্রসারিত হচ্ছে নিদ্রা এখন শয়ন শুধুই বিশ্রাম - ওই ভাব ও ভাবনা দেখে বলবান্  হয়গ্রীব নামে এক রাক্ষস, ব্রহ্মার  শ্রীমুখ হতে নির্গত বেদসমূহকে  চুরি করলেন। ভগবান হরি  হয়গ্রীবের ওই দুষ্কর্মের কথা জানতে পারেন ও স্বয়ং শফরী মৎস্যের রূপ ধারণ করেন। ওই সময় শ্রীভগবান নারায়ণের ভক্ত সত্যব্রত নামে শ্রেষ্ঠ রাজা জলে বসে তপস্যা করছিলেন। একদিন তিনি কৃতমালা নদীতে জল দিয়ে যখন তর্পণ করছেন, ঠিক সে-সময় তাঁর হাতের অঞ্জলিতে থাকা জলের মধ্যে একটি শফরীকে (পুঁটি মাছ) দেখতে পেলেন। রাজা তাঁর অঞ্জলির মধ্যে থাকা জলে সেই মাছটিকে দেখে, তাকে নদীর জলেই ফেলে দিতে উদ্যত হলেন। তখন সেই শফরী পরম দয়ালু রাজাকে অত্যন্ত কাতর হয়ে বলতে থাকে হে দীনজনের প্রতি করুণাময় মহারাজ! আমি আমার হিংসাপরায়ণ আত্মীয়দের ভয়ে ভীত ও অত্যন্ত দীন। অতএব আপনি আমাকে কি-ভাবে জলে ছেড়ে দিতে উদ্যত হয়েছেন? রাজা দেখলেন, হ্যাঁ তা'তো ঠিকই, বড় বড় ...

টঠট

জোয়ারের টানে চক্রের বন্ধনে জীবনের পরিবর্তন,    বাস্তবে আবর্তনের বদ্ধতাই স্মৃতি রোমন্থন।  আমি শুনেছি সমুদ্রের গর্জনের গভীরতা,  আত্মার সাথে সাথে চুপি চুপি কয় কথা।  সমুদ্র তটে, মনের সাথে উথালি ঢেউ বিকুলিতে আছড়ে পড়ে,  নোনা জলের , স্বাদে   গোপন রহস্য জাগে অন্তরে।  এক দৃষ্টিতে  উথালি ঢেউয়ে অনুভব প্রকাশ পায়,  সমুদ্র তটে, ঐ নীল গভীর চোখের মায়ায়,  এক নিমেষে  দিল সব ভাসিয়ে ঢেউয়ের ভেলায়,  কোথায় যেন দুলছি দোদুল দোলায়।  দুদিনের তরে মায়ার বন্ধনে , মন পাগল পারা,  তার নেই ঢেউয়ের শেষ সে যে আপন কাজে আপনি হারা।  সমুদ্রের গভীরের অতলে মুক্তার খেলা রাশি রাশি, আকাশ ভরা তারাদের  মায়া ভরা হাসি।  তার ঢেউয়ের তরঙ্গে চাঁদের উল্লাসে উঁকির  ছায়ায় প্রতিবিম্ব আনে।  যতবার যায় আসি,  সমুদ্রের হাতছানি যেন বারবার আমায় আকর্ষণ করে, হৃদয়ে স্পন্দন  জাগে।। 

সর্বশক্তিমান

সর্বশক্তিমান দেবপ্রসাদ এ ভবে, কেউ রাজা নয়, কেউ নয় প্রজা। তার আশ্রয়ে থাকি মোরা, সেই এক রাজা। সে যেমন, চালায় মোদের, চলি তেমন করে। সেই, দিনের বাতি জ্বালে, সেই আঁধার ভরে। ভোরের শিশির সেই আনে, শীতল করে বায়ু। সেই, জীবন মৃত্যু সাজায়, সেই গড়ে আয়ু। অঙ্ক কষে সময় চালায়, গনিতে খুব পাকা। টিক্ টিক্ ঠিক ঠিক, ঘোরে সময় চাকা। সময় মেপে চক্র ঘোরায়, চলে চন্দ্র তারা। তার ছোঁয়াতে ফুলেরা সব, এমন রঙিন পারা। তার আদেশে সাগর নদী, উচ্ছলে পড়ে পাড়ে। কল কল কল বইছে স্রোত, নদী কেমন করে। মেঘের আনাগোনা দেখো, কেমন মন কাড়ে। পথ হারিয়ে যাক না পাখি, ঠিক ফিরে নিড়ে। তার আবেশ মূক পাখি, গাইছে দেখো গান। সব শক্তির একই আধার, সে সর্বশক্তিমান।

মায়ের ছায়া

মায়ের ছায়া দেবপ্রসাদ জানা মায়ের হাতে ক্ষুন্তি ছিল, ছিল রুটির বেলনা। লক্ষ কোটি প্রাণও ছিল, তার হাতের খেলনা। মায়ের বুকে আঁচল ছিল, আদর জড়ানো ছায়া। আমরা ক'জন দুষ্টু প্রাণ, পেয়েছি তার মায়া। মায়ের করা শাসন ছিল, ঘুম পাড়ানো গান। আমরা ক'জন, উন্নত জীব, ধরেছি তায় প্রাণ। মায়ের হাতের রান্না ছিল, অমৃত যার নাম। মায়ের খিদে পেটেই ছিল, দেয়নি কেউ দাম। পড়তে বসে মায়ের ভাষা, মিষ্টি মিষ্টি কত ছড়া। নজরুল আর রবীন্দ্রনাথ, সব ছিল তার পড়া। কত কত বায়না করে, পেয়েছি বকা ঝকা। খানিক পরে এনেছে নিজে, খেয়েছি বসে একা। আজকে মায়ের আঁচল নেই, পরেছে বিদেশ কুর্তি। মায়ের ছোঁয়ার আদর নেই, করছে ছেলে ফুর্তি। হারিয়ে গেছে মায়ের আঁচল, বট গাছের ছায়া। মানবতার দিন গেছে সব, ঘুরছে নষ্ট কায়া।

কষ্টের কাহিনী

<<< একটি ছোট কষ্টের কাহিনী আবিরের  অনেক স্বপ্ন। অনেকের সাথে বন্ধুত্ব করবে সে। এই কারণে  ফেসবুকে আইডি খুলিছে। সে স্কুল-এ খুব চুপচাপ থাকতো। স্কুলে ছিল তার অনেক বন্ধু। কিন্তু সবাই ছিল ছেলে। কোন মেয়ের সাথে তার বন্ধুত্ব হয়নি। ফেসবুক আইডি খুলেছে সে ২০০৯ সালে। তখন সে প্রতিদিন এ সাইবার ক্যাফ-এ গিয়ে ফেসবুক ব্যবহার  করতো। সে কখনো ভাবে নি যে তার আজ এই পরিস্থিতির সম্মুখিন হতে হবে। তখন তার ফেসবুক আইডি তে ও কোন মেয়ে বন্ধু ছিল না। ঈদের ছুটিতে বাড়ি যায় সে। জানতে পারে যে তার মামাতো ভাইয়ের ফেসবুক আইডি আছে। ভাইকে তার ফ্রেন্ড লিস্ট এ অ্যাড করল সে। তার ভাই তাকে পরিচয় করিয়ে দিলো তার অনেক বন্ধু-বান্ধব এর সাথে। সাথে তার জিএফ এর সাথেও। রাফা তার ভাই এর জিএফ কে ভাবি বলে ডাকতো FB তে । সামনাসামনি তাদের এখন দেখা হয় নি। রাফা অনেক দুস্টামি করতো তার ভাবির সাথে। হঠাৎ একদিন তার ভাবি তাকে বলল তোমার জিএফ নাই। সে সরাসরি উত্তর দিলো না। ওর ভাবি একজন এর প্রফাইল লিঙ্ক দিয়ে বলল তোমার মত আমার এই বান্ধবীটিও একা। রাফা তাকে ফ্রেন্ড রেকুয়েস্ট পাঠায়। মেয়েটি এক্সেপ্ট করে। তার নাম তানি। তাদের মধ্যে ...

জোছনা

জোছনা স্বর্ণহংস জাতক না গত ষোলো বছরে প্রদীপ জ্বলেনি তার ঘরে আলোর রোশনাই যখন শহর জুড়ে তার ঘরের ভাঙা জানালা গলে  এক টুকরো আলো আসেনি। একটা বাতি চাই,  যে চাঁদ আলো ঢালে, সেই চাঁদও উঠেনি আজ, তার নাকি উঠতে মানা, কটা দিন, জোছনার বয়স যে সবে ষোলো,  হৃদয় জোড়া ভালোবাসার মৌচাক। অথচ তার মনের মৌচাকে এখনো একটুও মধু আসেনি। বসেনি মৌমাছি। এখনো মনের মৌচাকে শূন্যতা। প্রেমের কামড় চায় মন। অন্ধকারে প্রেমের পোকা গুলোর উৎপাত হিমেল বাতাস আর কামনার জ্বালা। দেহের প্রতিটা কোষ প্রেমের ক্ষুধায় কাতর। মনের ফাগুন উষ্ণতা চায় পেটে হাজার ক্ষুধা, তবুও যৌবন খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে কয়েক টুকরো  ভালোবাসার পোড়া কাঠ মজুত করেছে আর এক বাণ্ডিল আগুন। এক উচ্চবংশে জন্ম তার,  জীবনটা কাটিয়ে দিলে হতদরিদ্রতার আঁধারে।  স্বপ্ন ছিল তার আকাশছোঁয়া।  বন্ধনহীন সম্পর্কের মাঝে এক ক্ষুধার বন্ধন। দেহের কোটরে কোটরে যৌবন  মনের গভীরে ভরা ভালোবাসা-  অন্ধকারে আলো ছড়িয়ে দিবে।  হাহাকার আর আকাঙ্ক্ষা -  প্রশান্তির বদলে নিয়ে আসবে অপমান— এতো বেদনার ভেতর দিয়ে হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া। রাতে ছারপোকার কামড়ের মতো যৌবন কামড়ায়, ক...