Posts

Showing posts from January, 2022

ভালো আছো শুভ্রনীল

 ভালো আছো শুভ্রনীল দেবপ্রসাদ জানা সবার মধ্যে তোমায় দেখি,ভালো আছো শুভ্রনীল। এখনো কিছু লিখতে বাকি। এখনো কিছু শিখতে বাকি। এখনো কিছু বলতে বাকি,শুনতে পাচ্ছো শুভ্রনীল? তুমি যে এখন ওইপারে থাকো। তুমি যে এখন লুকিয়ে দেখো। তুমি কি এখনো ভালোবাসো,প্রাণের শুভ্রনীল। আদর করে তোমার ডাক। আদর ভরা তোমার হাঁক। আদর করে জড়িয়ে ধরে কে ডাকে শুভ্রনীল? আকাশের কি মা আছে? তারার মাঝে তোমায় খোঁজে? বলতো আমায়,কে সেই,মায়ের মতো শুভ্রনীল? আজ,চোখের জলে তোমায় দেখি। তুমি আছো তারার মাঝে,তাই নাকি। অনেক তারা খুঁজে দেখি,পাই না তোমায় শুভ্রনীল। আকাশ জুড়ে অনেক তারা। একটা তো তুমি অন্য কারা? হাসি দিয়ে দেখাও দেখি কোথা আছো শুভ্রনীল। কত খুঁজি এদিক ওদিক। বুক জুড়ে আছোতো ঠিক। চোখের জলে,চশমা ধুয়ে,অনেক দেখেছি শুভ্রনীল। ছেড়ে যাওয়ার শেষদিন। ভুলিনি আমি কোনোদিন। সবার মধ্যে তোমায় দেখি,ভালো আছো শুভ্রনীল।

কেউ বলে না এখন

 কেউ বলে না এখন দেবপ্রসাদ জানা পিঠে পুলি পায়েশ ছিল,তুমি ছিলে না মা। সরু চাকলি পাটিসাপ্টা মনের মতো করা। পায়েশ ছিল বাটি করে, কাঁচের বাটি ভরা। পিঠে পুলি পায়েশ ছিল,তুমি ছিলে না মা। পিঠে পুলি পায়েশ ছিল,তুমি ছিলে না মা। টেবিলের ওপর গুড় ছিল,খাঁটি নলেন গুড়। সরু চাকলির সাথে মুড়ে, খেতেম ভরপুর। পিঠে পুলি পায়েশ ছিল,তুমি ছিলে না মা। পিঠে পুলি পায়েশ ছিল,তুমি ছিলে না মা। চাল বেটে পুলি পিঠে,পোড়া পিঠের স্বাদ। তেলে ভেজে সাদা পুলি,এই বছরে বাদ। পিঠে পুলি পায়েশ ছিল,তুমি ছিলে না মা। পিঠে পুলি পায়েশ ছিল,তুমি ছিলে না মা। নারকেল কুরে নলেনগুড়ে,আধ ঘন্টা কষা। আদার রস, এলাচ্ দিয়ে,কড়ার মাঝে ঘষা। পিঠে পুলি পায়েশ ছিল,তুমি ছিলে না মা। পিঠে পুলি পায়েশ ছিল,তুমি ছিলে না মা। সকাল থেকে তোমার কথা পড়ছে মনে আজ। কোথায় সব হারিয়ে গেছে,কে করবে কাজ। পিঠে পুলি পায়েশ ছিল,তুমি ছিলে না মা। পিঠে পুলি পায়েশ ছিল,তুমি ছিলে না মা। চাল ভেজানো শিলে বাটা,কত আয়োজন। নানা রঙের নানা পিঠে, আর কি প্রয়োজন। পিঠে পুলি পায়েশ ছিল,তুমি ছিলে না মা। পিঠে পুলি পায়েশ ছিল,তুমি ছিলে না মা। লুকিয়ে চুরিয়ে কত পিঠে এমনি চলে যেত। আদর করে আবার মা যে থালা সাজিয়ে ...

শোন ঋষি

 শোন ঋষি দীঘি কাব্য শোন ঋষি,ও সাইকেলে আর চড়বো নারে। সামনে তোর সিট্ নেই। পেছনে ভারি কষ্ট। সামনে বসে দুষ্টুমিতে সময় করিস নষ্ট। শোনো ঋষি,ও সাইকেলে আর চড়বো নারে। সাইকেলটা যে খুব পুরানো । ঝনঝনে সব লড়বড়ে। সামনে বসে বুক কাঁপে কেমন যেন ধড়ফড়ে। শোনো ঋষি,ও সাইকেলে আর চড়বো নারে। সামনে বসলে,শাড়ির আঁচল। চেনের মধ্যে যায় জড়িয়ে। গোপন ঐ খবর গুলি,হঠাৎ যেন যায় হারিয়ে। শোনো ঋষি,ও সাইকেলে আর চড়বো নারে। দুই হাতে জড়িয়ে রেখে। ধীর গতিতে প্যাডেল করে। উষ্ণশ্বাস কর্ণ ছুঁয়ে শুধুই খেলা করে। শোন ঋষি,ও সাইকেলে আর চড়বো নারে। পায়ের সাথে পা লাগে। নামার পরে পা ধরে যায়। ফিসফিস,কানাঘুসো পাড়ায় পাড়ায়। শোন ঋষি,ও সাইকেলে আর চড়বো নারে। হাতের ওপর হাত দেবে। বুকের ওপর হাত যাবে। শোন ঋষি,এসব আর সহিব নারে। শোন ঋষি,ও সাইকেলে আর চড়বো নারে।

পেটের জ্বালা বড় জ্বালা

 পেটে জ্বালা বড় জ্বালা দেবপ্রসাদ জানা হারান মণ্ডলের বাড়ির বারান্দায় বিচার বসেছে,  হারানের বউ,রাত বেরাতে কোথায় যায়? কলা বাগান পেরিয়ে, শিমুলতলা দিয়ে, বাঁশ বাগানের কোলে, মজা খালের ওপর দিয়ে- মাঠ পেরিয়ে? এমন যদি হতো,রাত পোহালে যেতো, শুনতে পেতাম,দেখতে পেতাম, সন্দেহ থাকতো না তাতে। অলক্ষুণে,কলঙ্কিনী। হারানের বউ কুলটা।  হারানের বউ ডাকিনী। হারানের বউ নষ্ট।  ওকে ন্যাঙটো করে ঐ শিমুল গাছে বেঁধে দাও। চিৎকার করে ওঠে হারানের বউ। থাম না কেনে? ওনেক তো বললি বট্যা? ওনেক কুথা শুনালি বট্যা।  একে একে মরে গ্যাছে সব, মা বাবা ভাই বোন সব,একবারও জিগাইছিস? মোর পেডের ছানাটা কি খাবে বট্যা? বিচার দিছে! বলি ও বাবুরা, গাছতলায় বইসে,কুতবার কইছিস? হারানের বউটা ডাগর বটে, কপাল পাইছে হারান। তিন বছর হুয়ে গেল, তুদের প্রাণের হারান, কাজ লাই,কম্ম লাই,ঘরকে বসে তুদের মোসাহেবি করে বট্যা,কুনো দিন সুধাছিস?  বউটা কি খাইয়া ডাগরটি হইছ্যা। একে উন্যের ভাই,উঁচু লিচু ভেদ বিভাজন মুছে- কুত কথা কইস তুরা,  রাতের বেলা তুদের শরীলটাতে আগুন লাগে। রাত পোহালে,আলো আসলে লিভে যায়? এই পৃথিবী বদলে গিছ্যা,আগের মুতো আর লাই।...

হারানের মেয়ে

 হারানের মেয়ে দেবপ্রসাদ জানা হারান মণ্ডলের মেয়ে হয়েছে, সন্ধ্যার আলোয়, প্রদীপ জ্বলছে ঘরে, মন মরা হারানের মা, হারানের বাপ, আর বদন খুড়া। সন্ধ্যাবেলায় শাঁখ বাজেনি ঘরে, তুলসীতলায় প্রদীপ জ্বলেনি। মোড়ল মশাই লাঠি ঠুকতে ঠুকতে ঘরে যায়, পদি পিসির মনে শান্তি নেই, তার ঘরে শেষকালে মেয়ে হলো? এত টাকা আসবে কোত্থেক? হারানের বাপ কয়-  হারান তর বৌডারে বাপের ঘরে দিয়ায় বট্যা। বিটি হইচ্যা বিটি- হাড়িয়ার গন্ধে ম ম ম করছে উঠান, ব্যাটা হবে, মচ্ছব হবে,উঠান টোতে ম্যারাক পড়ব্যা আসর পেতে সন্ধ্যার আগে থেকে বসে আছে, মোড়ল, মহাজনের থিকা দশ হাজার ট্যাকা ধার লিচ্যা হারান, সব বৃথা গেল। কি হইচ্যা বট্যা? বিটি? বদন খুড়া চ্যাচায় চ্যাচায় জানান দিচ্যা গাঁয়ে, হারানের বাবা আর এক ঢোক হাড়িয়া খেয়ে বলে, উর‍্যা হারান, হারামির ব্যাটা শ্যাষ কালে তুর বিটি হুলো বট্যা। ক্যালা বউডারে খালের পাঁকে গেড়ে আয়। উকে ঘরে রাখিসলাই, হারানের শ্বশুর পাশেই ছিল,কথা কিছু বলেনি। সত্যিতো মেয়াডা কি করল?  শ্যাষ কালে বিটি বিয়ালো? হারানের বউকে নিয়ে কতই না কষ্ট গেছে একদিন, মেয়াডারও এমন হোলো? হারানের শ্বশুর সব কটুকথা শুনেও চুপ মেরে থাকে। অসুস্থ হারানের...

ছন্দেছড়া ছানাবড়া

 ছন্দেছড়া ছানাবড়া  অশ্রু-নদে বাঁধ ভেঙেছে, চোখ ছাপিয়ে জল আসে। পাতায় ছাওয়া কুঁড়েঘরে ভালোবাসার ফুল ভাসে। হৃদয়-ঝিনুক আলগা করে  মুক্তো খুঁজে আয় দেখি। কার হৃদয়ে শুভ্র মতি  কত খুঁজে পাস দেখি। ঝিনুক খোলা মনের কোনে  খোঁচা মারে মুক্তোকণা। কুড়িয়ে নেবে ওপার  বধূ মুক্তো বিহীন মুক্ত মনা। অশ্রু নদীর নোনাজলে  টুপটুপিয়ে পড়েছে নিড়ে। সুখ সাগর যে শুকিয়ে গেছে চোখে ভাসে বৃষ্টি কিরে? অশ্রুনদে জাহাজখানি  থামবে এসে মনবন্দরে। তোমার নামে বন্দর খুলে রাখবো আমি অন্তরে।

পঞ্চসতীর অহল্যা

 পঞ্চসতী মহাকাব্যে পঞ্চকন্যা বিশ্বাসে প্রহরী। সব পাপ দূর হবে,শুনে সেই কথা। অহল্যা দ্রৌপদী কুন্তী,তারা মন্দোদরী। রামায়নে থেকে এল,ত্রিসতীর গাথা। মন্দোদরী তারা আর অহল্যা সুন্দরী। মহাভারত হইতে,কুন্তী ও দ্রৌপদী। রূপে গুণে গৃহবধু,সতী সাদ্ধী নারী। বহু গুণে গুনী তারা,যেন স্বচ্ছ নদী। স্মরণ করিলে নিত্য,পাপ দূর হয়। হিন্দু নারী সদা করে,তাদের প্রার্থনা। হাজার কলঙ্ক নিয়ে,কলঙ্কিত নয়। পঞ্চসতী নাম মোরা,কভু ভুলিব না। রামায়ণ খ্যাত সীতা,কেন সতী নয়? কৌতূহল উদ্দীপক,হতেছে নিশ্চয়। অহল্যা ১ গৌতম মুনির পত্নী,অহল্যা শ্রীমতি। চন্দ্ররাজবংশী তিনি,চারু মনোরমা। অসাধারণ সৌন্দর্যে,খ্যাত কান্তিমতি। সুরলোক দেবলোকে,রূপসী প্রতিমা। ব্রহ্মা এক অপরূপ,গড়িলেন নারী। অহল্যার রূপ গুণ যেন পূর্ণ চন্দ্র। দিবারাত্র তার পিছে পড়লেন ভারি। তার রূপে মুগ্ধ হয়ে,দেবরাজ ইন্দ্র। অহল্যাকে দেখে ইন্দ্র,প্রেমে পড়ে পাছে। সেই কথা ব্রহ্মদেব,বুঝিতে পারিয়া। অহল্যাকে রাখিলেন,গৌতমের কাছে।  স্বসম্মানে থাকে কন্যা,আপন করিয়া। নির্দিষ্ট সময় শেষে,স্বর্গধামে এসে। অহল্যাকে ফেরালেন,তপস্বীর বেসে। ২ সুন্দরী রমনী পেয়ে,কামনার বসে। অসংযত হওনি যে, শাস্ত্রজ্ঞ গৌ...

সে সঙ্গে আছেতো

 সে সঙ্গে আছেতো  দেবপ্রসাদ জানা  আজ চললাম -না না শেষ যাত্রা নয়। কিছুদিনের জন্য,শ্রী জগন্নাথধাম। হয়তো কিছু অসমাপ্ত থেকে গেল। হয়তো কিছু কথা বাকি রয়ে গেল। তবু যেতে হবে জীবনের টানে, জীবনের খোঁজে, বালুচরে সাগর জলে। জীবনের পাণ্ডুলিপিতে কিছু কথা- কিছু অভিজ্ঞতা লিখে নেবো কটাদিনে। সাগরের কুলে বসে,একান্তে। উন্মাদ ঢেউ গুনব,জোছনায় সাগর জলে খেলা করবে জীবনের হা হুতাশেরা। মনের কলম চলবে,সাগরের জলে ভোরের সূর্য হেসে উঠবে,খেলা করবে চঞ্চল বালুচরে উচ্ছলে পড়া ঢেউয়ে- দূরে দিগন্তে মেলাবে, হারিয়ে যাওয়া জীবনের কিছু মুহূর্ত।  ফিরে আসবে একে একে,  নয়নের জলে ভরা মরানদীর স্রোতে। তখন তোমার কথা মনে পড়বে। উদাসীনতায়,মেঘের আড়ালে, তোমার মুখ ভাসবে। তুমি নির্বিকার স্থির। বিষন্নতায় ভরবে আমার মন। সাগরের ঢেউ পা ছুঁয়ে গেলে, বোধের আর্তিতে শিহরণ জাগবে। তুমি হয়তো ভাবছো,মহাস্তব্ধতায়। গভীরে, গোপনে,নীরবতায়। সন্ধ্যায় সাগর তীরে অলৌকিক চাঁদ- জোছনা ঢেলে বলবে- এসেছ তুমি? একা একা। আমি বলব একা কই? সে সঙ্গে আছে তো,মনের গভীরে।

ট্রেন

 ট্রেন দেবপ্রসাদ জানা রাতভর ট্রেন ছুটে চলেছে বিরামহীন। জগন্নাথ দেবের উদ্দেশ্য -  শহর,গ্রাম, নগর হারিয়ে যাচ্ছে নিমিষে। বাতাসের সাথে পাল্লা দিয়ে, বাতাসের বুক চিরে, ষ্টেশন গুলোকে ভেঙচি কেটে- ধুলো উড়িয়ে- ষ্টেশন মাস্টারকে সাবধান করে দিয়ে। সবুজ হলুদ সিগন্যাল পেরিয়ে-ছুটে চলে। ছোটো ছোটো ষ্টেশনগুলো অপেক্ষায় থাকে, নারে থামব না এখানে,  তুই বড় ছোটো। দম্ভপূর্ণ বক্তব্যে হুইসেল দিয়ে- ঝিক্ ঝিক্ ঝিক্ ঝিক্। ঘুমের নেশা লাগে। সাড়ে নটা বাজে। ট্রেনের কামরায় ক্ষিদের জ্বালা। যেন অনন্তকাল খেতে পায়নি কেউ, সব ক্ষিদে ট্রেনে।  কেউ কেউ আপারবাথে। ঘড় ঘড় ঘড় ঘড় নাক ডাকার শব্দেভয়ে। রাতের বেলা খুঁজি নতুন দিক, নতুন সিট,লাফ দিয়ে  হোঁচট খেয়ে বলি,ঠিক আছি। রাত দুটো বাজে এখন- চা এএএএএএ  গম্ভীর গলায় হাঁক দিল চা ওয়ালা। ঘুম ছুটে গেল, একটা ডিম ওলা - চাই ডিম, সেদ্ধডিম।  ফেরিওয়ালা বাড়ছে, এক একজনের  ঘুমও ভাঙছে। জয় জগন্নাথ অঅঅঅ

কতদিন পরে?

 কতদিন পরে? সাগরে পৌঁছতে পৌঁছতে  কত নদী পথ হারিয়ে পৃথিবীর বুকে মরে যায়। সবার অলক্ষ্যে - তবু সাগরের সাথে, মিলিত হওয়ার আকাঙ্ক্ষা- সকলের। আমার মতো ক্ষুদ্রকায় একটা প্রাণী, একদিন শূণ্য হয়ে যায় অর্থের সমুদ্রে - পৌঁছতে পৌঁছতে। ধুলোর সাগরে মিশে যায়, ফুটপাতে বাসা বেঁধে ধুলোয় স্নান করতে করতে একদিন ধুলো হয়ে যায়। জীবনের দীর্ঘতম সুখহীন পথ অতিক্রম করবে কতদিন পরে?

পপকর্ন

 পপকর্ন  দেবপ্রসাদ জানা শব্দ করো না সামনে ডলফিন- চিৎকার করো না মাছেরা ভয় পাবে। তাকিয়ে থাকো ডলফিন দেখতে পাবে।   আহাঃ শব্দ করো না পালিয়ে যাবে ডলফিন। ওরা বড় শান্ত। ওরা উদ্ভ্রান্ত। এত নৌকা এত ভীড়। চিৎকার করো না ওরা তোমাকে দেখতে আসবে। তোমরা যে অদ্ভুত জীব। ওই যে দেখছ পরিযায়ী পাখি। ওদের পপকর্ন দাও, ওরা আসবে। তোমাদের দেখবে আর ওড়ে যাবে। ওরা যে বড় গরীব। যাযাবর। ঘুরে ঘুরে খাবারের খোঁজে দেশ বিদেশ ঘোরে। ওদের ঘর নেই  সোনা রুপা সম্পদ কিছু নেই  তবুও ওরা বাঁচে। ঘুরে ঘুরে বাঁচে। ওরা গলায় মালা পরে না। ওরা বলে না,  সারা জীবন ভাত কাপড়ের দায়িত্ব নিলাম তবুও ওদের বাচ্ছা হয়। রাস্তায় জন্মায় রাস্তায় মরে যায়। ছোটন তুমিও দেখো, ঘুমিয়ে পড়ো না। ওদের বাচ্ছারা সময়ে খায় না। ওদের বাচ্ছা সময়ে ঘুমায় না। তবুও ওরা বাঁচে।  তোমার দেওয়া পপকর্ন ওরা খায়। জলের ওপর বসে আবার উড়ে যায়।

ব্যবধান বাড়ছে

 ব্যবধান বাড়ছে নীল জলের তরঙ্গ,আকাশ মেলায়। বালিতে চলার ফাঁকে,হোঁচটে হারাই। টানতে টানতে কুড়ি, পড়ন্ত বেলায়। স্পষ্ট করেই বলোতো,আর কিছু চাই? মিঠে কিছু ভালোবাসা,রাতের বিছানা। ফুল দিয়ে গড়া কুঠি, দূর্গের সমান। খেয়ালে অধিক তৃপ্ত,অতৃপ্ত বাসনা। চিন্তার কিনারা নেই,গুপ্ত ব্যবধান।  শত্রু আক্রমণ হলে,তবেতো লড়াই। দূর্গের ভেতরে আছে,শত্রু এক বসে। ভেতর থেকেই শব্দ,চুপ থাকা চাই। লাভের হিসেব কষে,চুপিচুপি হাসে। মরে পাপে,পূণ্য যদি,কেমনে বাঁচাই। শিরোনামে প্রাণপণ,বাঁচার বড়াই।

অঙ্কশেষে

 অঙ্কশেষে দেবপ্রসাদ জানা কানের কাছে সাগর,নিঃশ্বাস ফেলছে। দূরে স্তব্ধ কোলাহল,ক্রমে শোরগোল। ব্যথারা সাগর কুলে,বালিতে খেলছে। প্রতিটি বালির কণা,বলে হরিবোল। ক্রমে খেলা বন্ধ করে,ব্যথারা বলছে। রাজারানী সিংহাসনে,বয়ে গেছে বেলা? মুক্ত হতে হবে আজ, হৃদয় কাঁদছে। কাঠের আগুনে ঘন্টা খানিকের খেলা। হ্যাঁ বৎস স্বর্গদ্বারে,বসে আছি কিনা? এখান থেকেই সোজা,জগন্নাথ দ্বার। আর কতদিন পরে,আসব জানি না। পাপের পরিমানটা,বেড়েছে আবার। অঙ্কতো সিঁড়ি ভাঙার,অঙ্ক মেলাবার। চরমে উঠেছে ক্ষুধা,উত্তরে যাবার।  

জীবন চলে

 জীবন চলে যার কাছে বহুবার,হই ঋণে ঋণী। করে চলি সদা তার,মরণ কামনা। কেন যে এমন হয়,কখনো বুঝিনি। জীবনের প্রবণতা, খারাপ ভাবনা। পিঁপড়ের মতো দেখি, মন্থর ছলনা। মেঘের কলস ভর্তি , ঢালবে না জল। তার আশাতে কি আর বুক বাঁধব না। শুষ্ক জমি উর্বর না, হয় নাতো ফল। নির্বোধ বালক ভাবে,বিশ্বাসে আশ্বাস। যে গাছের ডালে ফুল,সেই ডাল ভাঙ্গে। তাতেই দোলনা বেঁধে, ঝোলার প্রয়াস। অদ্ভূত জীবন চলে, নিয়তির সঙ্গে। নিজেই নিজেকে চিনি,আঁধার অন্তরে। মহাপ্রলয়ের দিন, কাটে অনাচারে।

আড়ালে

 আড়ালে  দেবপ্রসাদ জানা ও সকাল,আলো এলো,তোমার প্রেমিকা। অদ্ভূত প্রেম কাহিনী, জানি নাতো কেউ। লুকিয়ে প্রেম,করেছে ঐ মেঘবালিকা। চোখের আড়ালে রাখি,সাগরের ঢেউ। পালিয়ে বেড়ায় প্রিয়া,অন্তরালে রয়। কোনোভাবেই পাবে না,তবু ভালোবাসে। পাওয়ার আশায় সে,আশাবাদী হয়। আঁধার তারে ছোঁবে না,রবে পাশে পাশে। ছোঁবে না তারে এমন,করেনি তো পণ। দেখবে বুঝবে তবে না ভালোবাসবে? না পাওয়ার বেদনা, আছে সারাক্ষণ। যে পাখি পোষ মানে না,খাঁচায় রাখবে? আলো আঁধারের প্রেম,যে বিশ্ববন্দিত। কঠিন হলেও থাকে, সদা  ঘনীভূত।

তুমি

 তুমি দেবপ্রসাদ জানা তোমার চোখের আগুনে, তোমার ভালোবাসার ফাগুনে, ফুল ঝরার শব্দ শুনতে পাই। তোমার সাথে পথ চলার আনন্দ, তোমার শরীরে জড়িয়ে থাকা মোহ, ভালোবাসার সন্ধিতে,একদিন - করতলে চাঁদ রেখে নিবিড় ঘুম দেবো। তোমার সঙ্গে যদি দেখা না হত, আমি ব্যথা অনুভব করতাম না। তোমার মধুর ভালবাসা - তোমার নির্মল প্রেম। তোমাকে পেয়ে হারানোর ব্যথায়, আমি হতাশায় হারাতাম না। যদি তোমার সঙ্গে সম্পর্ক না করতাম, জানতাম না, আনন্দ কি? জানতাম না,উষ্ণ উপহারে ভরা ছন্দময় পদ কি? তোমার চোখের আগুনে পোড়া, দিনরাত্রি  মৃত্যুর নিঃশব্দ আগমন ও আজ মধুর লাগে।

লাব্বো আগে

 লাব্বো আগে দীঘি কাব্য খড়গপুর এসে গেছে ওঠে পড়ো সব। গোছ করে লও জিনিস পত্তর। আর আধা ঘন্টা। পাঁশকুড়ায় লেবে যাবো, মোটে দেরী লেই। দরজা গোড়ায় দাড়িয়ে যাবো, মাল গুলা সব লাবাতে হবে। আমাদের লাবতে হবে,দুটা দুটা ব্যাগ লিয়া। মোট্টে মুই ঘুমাতে পারিনি,নাক ডাকার যা জোর। ঝুলি দিসলি চিকচিকা সেগুলা লিয়ে লিস্। লাবতে লাবতে দেখে লুবো,সব লাবলো কিনা। আরে মুইতো লাব্বো আগে, মোর মাক্স কাই? ওপরো চিটটায় দ্যাখো।  বুস এখনো দেরী আছে।

জীবন-মৃত্যু

 জীবন-মৃত্যু মৃত্যুহীন জীবনের মুল্য কতখানি? মৃত্যু বড় না জীবন,প্রাণের অন্তরে। গোপনে অনেক কষ্ট,হৃদয়ে সজনী - রেখেছি আপন করে,অতীব আদরে। হে ঈশ্বর প্রাণ দিলে,মৃত্য দিলে পরে। আলোর সাথে আঁধার,দিয়েছ বিরহে। সুখ দিলে,দুঃখ দেবে বলে, অগোচরে। কত ক্ষত,স্মৃতিচিহ্ন হয়ে আছে দেহে। দগদগে ক্ষতচিহ্ন,সময়ের স্রোতে। পুরানো বন্ধুর মতো,ঘন অন্ধকারে- হারিয়ে গিয়েছে সব,যত মন হতে। জীবনের অঙ্ক বড়,জটিল আহা-রে। ধন-সম্পদ বৈভব,আপনার ছিল। বিনা প্রতিবাদে সব,রেখে যেতে হল।

মৃত্যুর পরে

 মৃত্যুর পরে মাথার ওপর ওড়ে,শকুনের দল। মৃত্যুর মতো নিষ্ঠুর শব্দ,কিছু নেই। ছায়ার মতো ঘুরছে,যম অবিকল। দেহের মরণ আছে,নিজ বাটিতেই। ইহলোক ত্যাগ করে,পরলোকে যাবে। প্রতিকূল- অনুকূল,সব পরিবেশে। ভালোবাসা প্রেম যত,সব পড়ে রবে। ইতিহাস হয়ে যাবে, মরণের বিষে। পৃথিবীকে ভালোবেসে,পৃথিবীর বুকে- ছেড়ে যেতে হবে ওরে,রক্তমাংস ভবে। বুক দিয়ে দুঃখ চাপি,পাওয়ার সুখে। মিথ্যে অহংকার যত,মিছে পড়ে রবে। শ্মশানের অগ্নিকুণ্ডে,ছাই হবে কায়া। গোরস্থানে মাটি দেবে,আসমান মিঞা।

হে পথিক

 হে পথিক হে পথিক,ক্লান্ত নাকি?ক্ষনিক জিরোও এই বটবৃক্ষ তলে, শান্ত হবে মন। খুঁজে দেবে জীবনের,ঠিক ঠিকানাও। ফিরে যদি যেতে চাও,ফিরে যেও ক্ষণ। ঘরে যদি শান্তি,সুখ না দেয় তাহলে- মনে মনে প্রশ্ন করো,সেই মহাজনে, জগৎসংসারে দুঃখ,কেন নিয়ে এলে? জন্মান্তরে কর্মফল,লাগে জনে জনে। কে বলে পাপের শাস্তি,পেতে হলে তবে, ইহলোক ছেড়ে সেই, নরকের লোকে- যেতে হবে যমপুরে,পাপ দূর হবে। বলে দাও ওগো তারে,চোখে চোখ রেখে। কবে পাবো সেই রত্ন,পরশ পাথর। যার স্পর্শে সোনা হবে, জীবন বাসর।

আবার মৃত্যু

 আবার মৃত্যু  ধনুকের ছিলা টেনে,ধরে আছে বিধি। মণিকর্ণিকার ঘাটে সাজানো চিতায়- আগুন দিয়েছে যম, মৃত্যু প্রতিনিধি। জীবন আর মায়ার,সংমিশ্রন হায়। দুচোখে নীল বিষের ছোবল জ্বালায়, পাণ্ডুবর্ণ দেহটায়, রাগ মালকোষ। স্বপ্নডিঙা ভাসে,মাঝ নদীর দোলায়। ঈশানী ঝড়ের তীব্র,আঘাতে অঘোষ। সদা থাকি ভয়েভয়ে,মৃত্যু পাহারায়। কেউ জ্বেলে আছে চিতা,খুঁড়েছে কবর। যেন আগুনের শীত,লাগিয়াছে গায়। থর থর কাঁপে শুনে মরণ খবর। ফিস ফিস করে ডাকে বাতাস আবার। আলফা ডেল্টা গেল,ওমিক্রন ছাড়।

সাহিত্য সমুদ্রে

 সাহিত্য সমুদ্রে দেবপ্রসাদ জানা বহুদিন কোন চিঠি লেখনি আমাকে। কোন এস এম এস,তাও করলে না। কথায় কথায় বলো,চিঠি দেবো কাকে? তুমিতো মানুষ নও,ছন্নছাড়া কিনা। আমি মানুষের মতো,মানুষও নয়? যারা লেখে,যারা পড়ে,তারা কি মানুষ? আনমনা উদাসীন,নিরীহ অব্যয়। যাকে কবি বলো তুমি,তারা যে ফানুস। একবার অনভ্যাসে, নীরবে নিঃশব্দে। মন্থনবিষ উত্তরণ,করে দেখো প্রিয়া, চুমুকে চুমুকে পান,করিব আনন্দে। কার সাধ্য বলো সখী,টেনে ধরে কায়া। লিখতে লিখতে তাই, লেখার অন্তরে। ডুবে যাই প্রতিদিন,সাহিত্য সমুদ্রে।

অন্ধকার

 অন্ধকার  যত অন্ধকার আছে, মারণ ঘাতক। যত পাপ আছে রাখা,দিয়ে যাও মোরে। অন্ধকারে ডেকে যাক,শৃগাল পেচক। তবে আমি,আমি রব, সবার নজরে। একটা বোঝাপড়াও দরকার ছিল। আলো অন্ধকার মিলে,লুকোচুরি খেলা। যে সুখের আঙিনায়,দুঃখ ঢেলে দিল। তার কাছে বসে কেন,থাকি সারাবেলা? ধুসর চোখের দৃষ্টি,মেলে দিয়ে দেখি। ছিল যারা আপনার তারা গেছে সরে। অন্ধকারের দানব,তাড়িয়েছে নাকি। সুখের আলোয় তারা,সব ছিল ঘরে। অনেক স্মৃতি হাতড়ে,পেয়ে ছিনু পথ। শেষখেয়া পার হলে,পুরে মনোরথ।