Posts

Showing posts from December, 2024

মাইকেল মধুসুদন

আঠারশ চব্বিশের পঁচিশে  ১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির যশোহর জেলার (অধুনা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলায়) সাগরদাঁড়ি  গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবারে  জন্মগ্রহণ করেন, মধু মাইকেল। রাজনারায়ণ দত্ত তাঁর স্ত্রী প্রথমবারে  জাহ্নবী দেবীর  একমাত্র সন্তান। রাজনারায়ণ কলকাতার সদর দেওয়ানি আদালতের এক খ্যাতনামা আইনজীবী ছিলেন। তেরো বছর বয়স থেকেই মধুসূদন কলকাতায় বাস করতে থাকেন। খিদিরপুর অঞ্চলে সার্কুলার গার্ডেনরিচ রোডে (বর্তমানে কার্ল মার্ক্স সরণি) তিনি একটি বিশাল অট্টালিকা নির্মাণ করেছিলেন। শিক্ষাজীবন সম্পাদনা মা জাহ্নবী দেবীর কাছে মধুসূদনের প্রাথমিক শিক্ষার সূত্রপাত হয়। জাহ্নবী দেবীই তাঁকে রামায়ণ, মহাভারত, হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি ইত্যাদির সঙ্গে পরিচিত করে তুলেছিলেন। সাগরদাঁড়িতেই মধুসূদনের ছেলেবেলা কেটেছিল। সাগরদাঁড়ির পাশের গ্রামের শেখপুরা মসজিদের বিদ্বান ইমাম মুফতি লুৎফুল হকের কাছে মধুসূদন বাল্যকালে বাংলা, ফারসি ও আরবি শিক্ষা করেন। তেরো বছর বয়সে মধুসূদন কলকাতায় আসেন। স্থানীয় একটি স্কুলে কিছুদিন পড়ার পর তিনি হিন্দু কল...

নারী পুরুষ

পুরুষের শারীরিক চাহিদা পূরণ  হলে তার মানসিক শান্তি চলে আসে।  তবে নারীদের ক্ষেত্রে বিষয়টা ভিন্ন। একজন নারী মানসিক শান্তি পেলে তবেই শারীরিক চাহিদা দেখায়।নারী এবং পুরুষের চাহিদার মধ্যে পার্থক্য আছে। পুরুষের সমস্ত ডিপ্রেশন এবং ক্লান্তি দূর হয় সঙ্গীর সাথে Physical Attachment এ থাকলে। আপনি যখন আপনার পুরুষ সঙ্গীকে খুশি করতে চাইবেন, তবে অবশ্যই তার সাথে শারীরিক Attachment হতে হবে এমনকি তা পুরোপুরি মন থেকেই। পুরুষের তুলনায় নারীদের এই একটা কারণেই সবচেয়ে বেশি মুড সুইং হয়। নারী এবং পুরুষ দুই ভিন্ন মেরুর জিনিস। এখানে বুঝতে হবে, আপনার সঙ্গী ঠিক কিসে নিজেকে Satisfy মনে করে। সঙ্গীর চাহিদা অনুযায়ী যদি তা পূরণ করতে পারেন, তবেই আপনি একজন ভালো সঙ্গী। এখানে কেউ কারো চাহিদা এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।  তবে নারীরা Physical Attachment এর চাইতে Mentally Attachment এ বেশি গুরুত্ব দেয়। আপনার নারী সঙ্গীর যদি মন ভালো থাকে, তবেই কেবল সে শারীরিক Attachment এ আগ্রহ দেখাবে। তবে মানসিক অবস্থা যদি ভালো না থাকে, তবে সে কোনোকিছুর প্রতিই আগ্রহ দেখাবে না। নারীরা সবসময় তার মনকে গুরুত্ব দেয়। মন যদি সায় না দেয়, ত...

চর্তুদশপদী

চতুর্দশপদী দেবপ্রসাদ ১ সে এক ঝড়ো বছর, বাতাস ছুটল নিষ্ক্রান্ত হলো অরণি পুঞ্জ পুঞ্জ মেঘ।  কালোমেঘ ভেঙে ভেঙে, উঠানে পড়ল। বৃষ্টি, শিলা বৃষ্টি আর বাতাসের বেগ। বজ্রনির্ঘোষ আঘাতে ক্ষতগুলো সব, অগ্নিময় হয়ে, বজ্র হিংসায় উন্মত্ত। বিদ্যুতের ঝলকানি, সেকি কলরব। নির্মম উত্তাপ জানি, গ্রীষ্মের প্রদত্ত। জ্বলতে লাগল অগ্নি, বুকের উপর  চাপিল পাষাণভার। আগুন আগার। আলোকিত ক'রে তোলে, এই চরাচর। নক্ষত্রহীন রাত্রির নিস্তব্ধ আঁধার। বিপর্যস্ত নদনদী পথ ঘাট সব। অস্পষ্ট উদ্বেগে সব করে কলরব।  ২ সন্তাপে হাঁপাতে লাগে, ভীষণ অসুখ। রক্তাক্ত হাজার পশু, হারাইল প্রাণ। কাঁটার মুকুট পরে, ফিরাইল মুখ। কতদিন আর তবে, রবে যশবান। একি অন্ধকার এলো, আগুনের মতো। মশালের মতো জ্বলে, জোছানার রাতে। আগুনের আঁচড় যে, লাগে অবিরত।  আত্মোৎসর্গের পথ, জীবন প্রভাতে। ঘৃণার শৃঙ্খলে বাঁধা, লজ্জার ভঙিমা। বৃষ্টির কান্নায় ভরা, কালো পাঁকে ডোবা।  অসহ্য তাদের কাছে, জীবন মহিমা।  যন্ত্রণা তাদের করে, খোঁড়া অন্ধ বোবা। অবিশ্বাস্য হিম শূন্য ঘোর অন্ধকার। হঠাৎ বসন্ত এলে, কি দেখবে আর। ৩ পচা হেমন্তের মাঝখানে, সুন্দর বসন্ত। ম্রিয়মান দুর্গে সাজ...

সেইদিন রাতে

বড় সাহেব যখন আমার ব্লাউজের বোতাম খুলছিলেন, তার চোখে আমি লোভাতুর চকচকে দৃষ্টিতে সে আমার শরীর দেখছে। হয়তো আমার চোখে তাচ্ছিল্যের কোন ভাব ছিল,সম্ভবত ঠোঁটের কোনাটাও হাল্কা বেঁকে গিয়েছিল। কারণ সে হঠাত আমার দিকে তাকিয়ে চমকে উঠলো। আমি তাড়াতাড়ি ভয়ে কুঁকড়ে ওঠার ভান করে বুকের ওপর হাত গুটিয়ে আনলাম। সে কি বুঝলো কি জানি। এবার লোভাতুর চোখের সাথে যুক্ত হলো অশ্লীল হাসি। আমি ভয়ের ভান করে জিজ্ঞাসা করলাম,আমার সাথে কি করবেন বড় সাহেব? সে জিভ দিয়ে নিজের ঠোঁট চেটে বললো, ও তুম আভি দেখোগে। যদিও আমি তাকিয়েই ছিলাম,কিন্তু আসলে আমি কিছুই দেখিনি। তাকে কোন বাধাও দেইনি। শুধু কিছুক্ষণ পর পর ব্যথায় শরীরটা কুঁকড়ে যাচ্ছিল,কিন্তু তাও চোখে জল আসতে দেইনি। শুধু শরীরটাই দূষিত হচ্ছিল,কিন্তু মন ঠিকই জানতো,এই ঘরের ঠিক পেছনে এই মুহুর্তে সোহাগ লুকিয়ে আছে। এভাবে কতক্ষন কাটলো জানিনা। কতবার যে আমাকে দুষিত করলো তাও বলতে পারবো না। বড় সাহেব আমার চুলের মুঠি ধরে মেঝেতে আছড়ে ফেলার পর আমার ঘোর ভাঙে। সে শোয়ার কাপড় পড়ে ঘুমাতে গেল। রাতের খাবারের পর সে এক বোতল মদ খেয়েছে,এখন বেঘোরে ঘুমাবে।আমাকে দিয়ে তার আপাতত প্রয়োজন শেষ,তাই আমি কি করবো এটা নিয়ে ...

শান্তি দূত শ্রীকৃষ্ণ

পাঁচ গ্রাম দাও ওহে ভ্রাতা দুর্যোধন। শান্তি বার্তা আনি কহে দেবকী নন্দন। পাঁচ ভ্রাতা পাঁচ গ্রামে রবে ভালো মনে। না কহিবে রাজ্য দাও, না যাইবে বনে। শকুনির যাদু পাশা, হয়েছে প্রচুর। ভাই ভাই বিনা দোষে হলো বহু দূর। দোষ কার নাহি জানি, প্রিয় দুর্যোধন। বারো বর্ষ ঘুরে ঘুরে, আর নাহি মন। ইন্দ্রপ্রস্থ গড়ে তারা, যা করিল নাম। তাও যদি নাহি দেবে, দিও পাঁচ গ্রাম। পিতামহ ভীষ্ম আছে, আছে মহারাজ। মহাবীর কর্ণ আছে, 

বাইশের কবিতা মেলা

বাইশের কবিতা মেলা দেবপ্রসাদ জানা আলস্য ত্যজিয়া সব কৃষ্ণপদ হলে প্রবেশি দেখিবে সব আহা কৌতূহলে। দেব পুরন্দর যেন, দেব দেবালয়ে। রবি, বায়ু, হরি, হর, সব ইন্দ্রালয়ে। কবির বাহন লয়ে, ভারি মনোরম। দেখিবে ভাসিছে সেথা, পালক কলম। কত কথা কত লেখা, পড়িবে আসিয়া। শব্দের জোয়ারে সব, যাইবে ভাসিয়া। দেহের প্রকৃতি প্রেম, কালের আকার,  নিয়ম-শৃঙ্খলা ঘিরে, কবে বার বার। সৌমেন দাদার যেন, নাহি যায় মান। আমাদের আপনার, মেলা অনুষ্ঠান। বাইশের সকালেই কবিতার মেলা। কবিতায় কবিতায় কলমের খেলা।

সুন্দর

সুন্দর  দেবপ্রসাদ জানা কিভাবে ভাঙাব ঘুম সুন্দরের? সবই কি সুন্দর থাকে চিরদিন  মান-যশ, কৃতকাজ, রূপ-মোহ,  অহঙ্কার আর জীবন? সত্তার বিপরীত মুখী স্রোত  অবরুদ্ধ অহংকার তৃষ্ণার্ত শিকড়ে পথ প্রান্তের প্রহরী বট, ছায়াহীন,  নগ্ন কাঠ হয়ে আছে। ছাতার মতো পাতা গুলি ঝরে যেতে যেতে মাটিতে বিলীন। শান্ত উদাসীন নদী তার শান্ত ধ্বনি  তোমার ভালোবাসার নীল খামে ভরা সাদা কাগজ।  শূন্য করতলে নগ্ন হাহাকার।  এই আদিগন্ত সবুজ মাঠ,   ইচ্ছের দুরন্ত টগবগে ঘোড়া ছোটে- মৃত্যুর ফেনা মুখে নিয়ে জীবনের বিষাদময় পথে। চিরচেনা পাখি মেঘের ভিতর থেকে, মেঘের ভিতরে উড়তে উড়তে আকাশেই মরে যায়।  অন্তর্গত শূন্যতায় নিঃশব্দে হারায়। তবু সুন্দর এই পৃথিবীর পথ তার ছায়াঘন উষ্ণতায় আমরা সুন্দর।

পুরীতে হনুমান বন্দী

সমুদ্র মন্থনে ওঠে, দেব স্নেহধন্যা। সৌভাগ্যের দেবী লক্ষ্মী সাগরের কন্যা। নারায়ণ বিয়ে করে, রাখিলেন ঘরে।

এখন শীতে

এখন শীতে দেবপ্রসাদ জানা এখন শীতে খেজুর রসের হাঁড়ি নেই কুয়াশা ভোরে স্বরচিত নির্জনতায় চুমুক দেওয়া ঠাণ্ডা রস নেই। খড়ের জ্বালে চৌকো টিনের পাতলা কড়ায়- ফুটতে থাকা রসের মধুর গন্ধ নেই সময়ের স্রোতে হারিয়ে গেছে, গ্রামের সেই সরল সহজ দৃশ্য গুলি। মেঠো রাস্তার ধারে সারি সারি বাঁকাচোরা, জমিতে হেলে পড়া ওই বিদ্ঘুটে চেহারায় হাজার কাঁটা ধরে থাকে যে গাছ গুলো, তাদের শরীর ফেটে বেরিয়ে আসা মিষ্টি রস, আজ আর নেই। যে উচ্ছাসে উষ্ণ রিপু গুলো শীতল তরলে আত্মমগ্ন হতো ভোরের বাতাস, হারিয়ে গেছে, বিপন্ন বিস্ময়ে। সেই আদিগন্ত সবুজমাঠ, ধু ধু ধুসর দিগন্ত, অন্তর্গত শূন্যতায় নিঃশব্দে হারায়। পৃথিবী সুন্দর হচ্ছে সেই মধুর স্বাদের, পথপ্রান্তের প্রহরী খেজুর গাছের বলি দিয়ে প্রতিদিন।

সাগর দর্শন

তিনি লালপেড়ে ধুতি পরেন, জামা পরেন, জুতো পরেন। তক্তার ওপর বিছানায় শোন, আবার মশারিও খাটান"। বিদ্যাসাগর অবাক! "এ কেমন পরমহংস তোমাদের? কোনো ভড়ং টড়ং নেই বলছো?" শ্রীম বললেন, "না। রানী রাসমণির কালীবাড়িতে পুজো করেন, আর সারাক্ষণ ঈশ্বরচিন্তা করেন।"   বিদ্যাসাগর হেসে ফেললেন, "আচ্ছা আচ্ছা। তাঁকে নিয়ে আসবে একদিন। এত করে যখন বলছেন।" ঠাকুর সাগর দর্শন করতে চেয়েছিলেন। এক্ষণে সাগরও ঠাকুর দর্শন করতে চান। শ্রীমর সংবাদে খুশি হলেন ঠাকুর। শ্রীম বললেন "কবে যাবেন? আজ, কালের মধ্যেই?" ঠাকুর যেন ধ্যানমগ্ন কন্ঠে বললেন, "যে কোনো দিন কি আর সাগর দর্শন হয় গো? সাগর দর্শন করতে যাব এই শনিবার। ঠিক বিকাল চারটেয়। ওদিন শ্রাবণের কৃষ্ণাষষ্ঠী। বড় ভালো দিন। ১৮৮২ সালের একটা দিন। বিদ্যাসাগরের বয়স বাষট্টি ছুঁইছুঁই। রামকৃষ্ণ ছেচল্লিশে দৌড়াচ্ছে। সাগর তখন বাদুড় বাগানে থাকেন। ঠিক চারটে বাজতে মিনিট দুয়েক বাকি, একটি ঘোড়ার গাড়ি এসে দাঁড়ালো বিদ্যাসাগরের বাড়ির নিকটে। গাড়ি থেকে নামলেন ভবনাথ, মহেন্দ্রনাথ (শ্রীম), হাজরা ও ঠাকুর রামকৃষ্ণ স্বয়ং। বাড়ির ভিতর ঢুকতেই ঠাকুরের চোখ জুড়িয়ে গেল। কি সুন্দর...

আর্তনাদ

আর্তনাদ দেবপ্রসাদ জানা কোথা হে প্রাণের পতি, রহিলে কোথায়?  কি হবে আমার গতি, কে করে রক্ষণ?  কি হেতু বিপক্ষ-পুরে, রাখিলে আমায়? কেন না দেখো মুকুরে, দাসীর বদন। আমার কি দোষ নাথ, কোন অপরাধে।  আমা পরে এ উৎপাত, করিছ এখন। কেন কহিলাম আমি, আপনার বোধে। দর্পণে আমায় রায়, ভাবিলে দুর্জন। বিবাহের পূর্বে ছিল, মনের ভিতর। যারে দেখি মন ছিল, উতলা তখন। ধৰ্ম ভয়হীন আমি, পাপিষ্ঠ ইতর।  তোমারে বিশ্বাস করি, কয়েছি এখন? ভালো করিবারে করি, শিষ্ট আলাপন। কেন করো অত্যাচার, ওহে প্রাণধন।

আর্তনাদ

আর্তনাদ কোথায় হে প্রাণোনাথ, কোথায় এখন?  কি হবে আমার গতি, কে করিবে রক্ষা। কি জন্য বিপক্ষ-দলে, করিলে গমন?  কে মোরে পাহারা দেবে, কে দেবে সুরক্ষা। কেন যে দেখালে মোরে, দাসীর বদন?  তোমার কি দোষ নাথ, ছিল না মনন।  আমা হতে এ উৎপাত, হইল ঘটন ॥  কেন কহিলাম হায়! এমন বচন?  দর্পণে আমায় রায়, দেখুক দুর্জন ॥  ধৰ্ম ভয়হীন হেন, পাপিষ্ঠ যবন।  তাহারে বিশ্বাস কেন, করিলে রাজন? ভাল গেলে করিবারে, শিষ্ট আলাপন। বদ্ধ হলে কারাগারে, ওহে প্রাণধন ॥

প্রহর

প্রহর দেবপ্রসাদ ছাপ্পান্ন !  না তেমন কিছূ নয়,  আমার বয়স। এবার প্রহর গোনার সময়। জীবনটাই তো, উত্তাল প্রহরসমুদ্র।  কখনো দোলা দিচ্ছে,  কখনো অকূলে ভাসিয়ে বান ডাকছে, আবার ভাটার টানে স্রোত সরে গেলে- সামনে ধূ ধূ চর।  আবার উজানভাটায় নৌকার গুন টানিয়ে নিয়েছে। আমি আশ্চর্য হয়ে দেখি,  নৌকায় নির্জনে যে লোকটি বসে আছে,  ফিনফিনে ধুতি পাঞ্জাবি পোরে সেই মানুষটি,  নৌকার মোটা কাছির কাঁধে নুয়ে পড়া মানুষটি,  সেই আমি!  শরীরের বয়স যার তিন কুড়ি হতে চলল। প্রচুর গাছপালা নিয়ে ছিমছাম বাড়ি,  নামটার মধ্যেও নতুনত্ব-গোলকধাম।  লেখক কবি সাহিত্যিক সৌমেন চৌধুরীর বাড়ি।  কাছাকাছি থাকি তাই ছুটিছাটায়-  একবার দেখা করার চেষ্টা থাকে।  সেবারে গিয়ে দেখলাম,  একজন সন্ন্যাসী এসেছেন ওদের বাসায়।  সৌম্য, গৌরবর্ণ চেহারা, স্মিত হেসে কথা বলেন। সেই সন্ন্যাসীর সাথে, আমার তেমন কোনো,  অন্তরঙ্গ বহিরঙ্গ কথা হল না। ঘনিষ্ঠতা হল না,  অথচ তিনি আমার জীবনের যাবতীয় প্রহরগুলো, দাড়িপাল্লায় মেপে দিলেন। কপালের ভাঁজে ভাঁজে লেখা ছিল কিনা জানি না, তবে ঘরে পড়ন্ত বিকেলে-...

ভালো থাকো মনে রাখো কেউ আছে অপেক্ষায়। বৃথা সময় সব নষ্ট করো বহু ধনের আশায়। কথা বলো না যত  ভালোবাসো তত মনে হয় আসি আরো ভালোবাসি। অপেক্ষায় থেকে থেকে চোখ হলো ক্লান্ত,  পথভ্রষ্ট পথিক সেও পথচলায় শ্রান্ত। তবু একবার দেখা যদি পাই দিনে ভালো লাগেনা আর তুমি বিনে। ব্যস্ত আছো বুঝি তবুও তোমায় খুঁজি দেখছি এবার মন ভরে বুকের ওপর মাথা রেখে আদর বহু করছি আমি তোমায় দেখে দেখে। এই তুমি  সেই তুমি যাকে ভাবি বরাবর। সেই তুমি দিলে ধরা বহু বহু  বছর পর। তোমার এই মিষ্টি ছবি অস্থির হচ্ছে তোমার কবি।