সিগারেট

সিগারেট 
দেবপ্রসাদ

সিগারেটটা শেষ?
এই খাবার পর একটা।
চা খেলে একটাতো লাগবেই,
সকালে পটি করতে আরো একটা।
স্নানের আগে একটা লাগে,
অফিস ফেরতা বাস স্ট্যান্ড পযর্ন্ত একটা।
বেশি কিন্তু না, 
এই অফিস পথে একটা ধরাই, 
নইলে বড় একা লাগে, বোকার মতো।
কাশিটা আজকাল একটু বেড়েছে বটে,
ঠাণ্ডা গরমের সময়, এটা আমার হয়,
তার ওপর অফিসের এসি, সারাক্ষণ।
ডাক্তার পুরো মানা করেনি এখনো,
বুকের ব্যথাটা বাড়ছে আজকাল,
প্রশ্ন করো সিগারেটটা ছাড়া যায় না?
এটা এমন কি ব্যাপার, কতবার ছেড়েছি,
কিন্তু ওই একা হলেই মনে হয়, 
নাই নাই ফাঁকা ফাঁকা।
দেয়ালে যেন মাংস ঝুলছে, 
বিছানায় বসা, রক্ত ও কফ উঠছে।
রক্ত কীসের কীসের বেদনা?
বলতে পারি না, একটা একটা দিন 
সঞ্চিত আয়ুর থেকে চলে যাচ্ছে।
আয় নেই ব্যয় বাড়ছে, 
দেরাজ ভর্তি চিঠি পড়ে আছে 
চিরুনি চাবি ও আয়না-
নিজের মুখটা দেখতে পেলাম, চিনতে পারিনি।
ফুটপাতে বসা চরস খোরটার মতো,
অথচ নিজেকে দেখতে কত ভালোবাসতাম।
আঁটসাঁট চোয়ালের ওপর ফ্রেঞ্চকাট,
সেখান থেকে রক্ত চুঁইয়ে পড়েছে একটু আগে।
বিছানায় রাখা খাতার ওপরে কালির চিহ্ন লাল। কবিতাটি অসমাপ্ত।
কাকে নিয়ে লেখা বলতে পারি নি, '
ম বলে কাকে ডাকতাম মনে করেতে পারিনি।
ঘুমোচ্ছে, কবিমন ঘুমোচ্ছে, 
টের পাইনি, কেউ কেউ ফিস্ ফিস্ করে,
বাঁচবে না আর-
ঠোঁটের প্রান্তে এক ফোঁটা রক্ত,
জীবন এখন বৃত্তের মতো 
মাঝখানে গোল গর্ত।
ইতিহাস লিখে গেল সিগারেট, 
না জীবনের প্রতিটা পাতা পুড়িয়ে ছাই করে গেল।
অথচ খাতায় কালির আঁচড়টুকু লাগেনি
লেগেছে রক্তের দাগ।

Comments

Popular posts from this blog

দুঃখটাকে এবার

মহাঋষি শুক্রাচার্য্য

গিরিশ চন্দ্র ঘোষ