কর্ণ ও অর্জুন

কর্ণ ও অর্জুন
দেবপ্রসাদ

মহাভারতের দুই যোদ্ধা ছিলেন কর্ণ ও অর্জুন। যাদের বীরত্ব কথা সকলেরই জানা আছে। কিন্তু আপনারা কি জানেন? এই দুই যোদ্ধা কে ছিলেন? রামায়নের সুগ্রীব ও বালীর কথাও আমরা সবাই জানি, কিষিন্ধ্যার দুই বানররাজ। সুগ্রীব ছিলেন সূর্যদেবের পুত্র আর  বালী ছিলেন দেবরাজ ইন্দ্রের পুত্র। সুগ্রীব আর বালী দুইজন ভাই ছিলেন।
বালী ঋক্ষরজার মৃত্যুর পর কিষিন্ধ্যার রাজা হন এবং তিনি খুব শক্তিশালী ছিলেন। আর এই বালিকে তার ভাই সুগ্রীব ছল করে বালীকে বধ করেছিল। যার ফলে বালী মৃত্যু ঘটেছিল। কিন্তু সুগ্রীব এই ছল করার জন্যেই অভিশাপগ্রস্ত হন ।যার ফলে রামায়ণ যুগ শেষ হওয়ার পর ও মহাভারত যুগ শুরুর আগে সুগ্রীব দম্ভোদভব নামের একটি রাক্ষস হয়ে জন্ম নিতে হয়েছিল।
এই দম্ভোদভব সূর্যের পরম ভক্ত ছিলেন । আর সেই দম্ভোদভব সূর্যের তপস্যা করে ১০০ টি কবজ লাভ করেছিলেন। যার ফলে ওই ১০০ টি কবজ ধ্বংস না করে তাকে বধ করা যাবে না।
ওই কবজ গুলিকে একবারে ১ টির বেশি ধ্বংস করা যাবে না এবং ওই ধ্বংস করার জন্যে এক হাজার বছর ধরে তপস্যা করেছে এমন একটি ব্যক্তি করতে পারবে। এছাড়াও একটি কবজ ধ্বংস করার পর ওই ব্যাক্তির মৃত্যু ঘটবে। এই কারণে দম্ভোদভব ভয়ংকর হয়ে উঠেছিল। একদিন নর ও নারায়ণ তাকে বধ করার জন্য  তার সাথে যুদ্ধ করে। একজন যখন দম্ভোদভবের সাথে যুদ্ধ করে তখন আরেকজন তপস্যা করেন এভাবে এক হাজার বছর ধরে যুদ্ধ করে, দম্ভোদভবের একটি কবজ ধ্বংস করে। যার ফলে নর ও নারায়নের মধ্যে যে যুদ্ধ করে তার মৃত্যু ঘটে। এবং আরেকজন তার তপস্যা দিয়ে অন্যজনকে বাঁচিয়ে তোলে। এভাবেই একে একে দম্ভোদভবের  নিরানব্বইটি কবজ ধ্বংস করে ফেলে। যখন দম্ভোদভবের একটি কবজ বেঁচে গিয়েছিল।  তখন তিনি ভয় পেয়ে পালিয়ে যান এবং সূর্যের কাছে গিয়ে লুকিয়ে পড়েন। তখন সূর্য তার পরম ভক্তের কথা রাখতে গিয়ে দম্ভোদভবকে কুমারী কুন্তীর  গর্ভে পাঠান। তখন কর্ণ রূপে জন্ম গ্রহন করে দম্ভোদভব। আর তেমনি নরও কুন্তীর গর্ভে অর্জুন রূপে জন্মগ্রহন করে। আর নারায়ণ ও জন্ম নেন,
স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ হয়ে। আর এইভাবে তাদের যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে মহাভারতের কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে ।
তাই একই মায়ের পেটে জন্ম হলেও তাদের একে অপরের শত্রু হিসাবে দেখা যায়।

Comments

Popular posts from this blog

দুঃখটাকে এবার

মহাঋষি শুক্রাচার্য্য

গিরিশ চন্দ্র ঘোষ