শৈশবের একাল সেকাল
শৈশবের একাল সেকাল
দেবপ্রসাদ জানা
শৈশবের একাল সেকাল লিখতে গিয়ে প্রথমেই মনে পড়ে আমাদের সব থেকে প্রিয় টিভিও মোবাইলের কথা। আমরা যারা ৮০ এর দিকে জন্মেছি এবং যারা গ্রামে বড় হয়েছি তারা গ্রামের গাছপালায় সমৃদ্ধ সুন্দর দৃশ্য দেখেছি আবার শহরের সবচেয়ে অত্যাধুনিক দৃশ্যও দেখেছি। এখন তোমরা ঘরে বসে স্মার্ট টেলিভিশন, স্মার্ট ফোনে শত শত চ্যানেল ঘুরিয়ে মুহূর্তেই দেশ বিদেশের খবর পাচ্ছ। অথচ তখনকার সময়ে শুধু রেডিও, যদিও সাদাকালো টিভিও ছিল একটু ধনী পরিবারে। বাড়ির চালে বা লম্বা বাঁশের ওপরে লাগান থাকত এন্টেনা সেটা ঘুরিয়ে চ্যানেল ধরা হত। সে হাস্যকর মুহূর্ত ছিল, প্রতি রবিবার দুপুরে বাংলা ছবি, আলিফ লায়লা কিংবা বড় কোন অনুষ্ঠান থাকলে সেই সাদাকালো টিভি বাড়ির উঠানে বসানো হত। আর ঐ বাড়ির উঠানে পড়শির নারী পুরুষ সকলে উঠানে বসে টিভি দেখত। মাঝে মাঝে টিভির ছবি হারিয়ে গেলে আবার সেই এন্টেনা ঘুরিয়ে ছবি আনার চেষ্টা করা হতো। সাদাকালো টিভির মধ্যে তখন শুয়োপোকার মতো কি সব ঘুরতো।
তোমরা যে এখন কোথাও গেলে হরদম সেলফি তুলে ফেসবুকে আপলোড করো, বিয়েতে ভিডিও করো আরও কত কি। তখনকার সময়ে কি হত জানো? বড় বড় বিয়ের অনুষ্ঠান হলে তাতে বড়জোর “কোডাক” এর ফিল্ম সিস্টেম ক্যামেরা আনা হত। আর তাকে ঘিরে কত উত্তেজনা। ক্যামেরা থেকে ফিল্ম খোলার সময় অনেক বাড়তি সতর্কতা ছিল। কারণ রোদের তাপ লাগলেই ফিল্ম জ্বলে যেত। কারো কাছে ক্যামেরা থাকা মানে বিশাল ব্যাপার।
আজ প্রত্যেকের হাতে হাতে সেলফোন। কিন্তু ২০০০ এর আগে সেলফোন কি জিনিস আমরা তা দেখিনি বললেই চলে। বাড়িতে ফোন থাকতো না বললেই চলে। বাজারে ফ্যাক্স এর দোকানে থাকতো ফোন। তাও স্মার্টফোন না। বড় সাইজের ফোন গুলো। তখন এতটা স্ট্রং নেটওয়ার্ক ছিল না। হ্যালো হ্যালো করতে হতো। এমনকি ইনকামিং ফোন এলেও পে করতে হত।
আজ কারো কাছে রেডিওর কদর নেই। তখনকার সময় এরকম এফএম ছিল না। শুধু ছিল আকাশবাণী । বাড়িতে দুপুরে রকমারি গানের অনুষ্ঠান সবাই একসাথে শুনতো। মা, জেঠী কাকি খাওয়া দাওয়ার পর বাড়ির সকলে উঠানে রোদ পোহাতে পোহাতে রেডিও শুনত। যদিও শীতকালে।
আজ প্রত্যেকের হাতে হাতে সেলফোন। কিন্তু ২০০০ এর আগে সেলফোন কি জিনিস আমরা তা দেখিনি বললেই চলে। বাড়িতে ফোন থাকতো না বললেই চলে। বাজারে ফ্যাক্স এর দোকানে থাকতো ফোন। তাও স্মার্টফোন না। বড় সাইজের ফোন গুলো। তখন এতটা স্ট্রং নেটওয়ার্ক ছিল না। হ্যালো হ্যালো করতে হতো। এমনকি ইনকামিং ফোন এলেও পে করতে হত।
আজ কারো কাছে রেডিওর কদর নেই। তখনকার সময় এরকম এফএম ছিল না। শুধু ছিল আকাশবাণী । বাড়িতে দুপুরে রকমারি গানের অনুষ্ঠান সবাই একসাথে শুনতো। মা, জেঠী কাকি খাওয়া দাওয়ার পর বাড়ির সকলে উঠানে রোদ পোহাতে পোহাতে রেডিও শুনত। যদিও শীতকালে।
জানো, তখনকার সময় সকালে ঘুম থেকে উঠে বাড়ির মাষ্টারের কাছে পড়তে যেতাম। তারপর স্কুলে, বন্ধুরা মিলে ঝিলের মধ্যে ফুটে থাকা শালুক তুলতাম। বৃষ্টিতে ভিজে ফুটবল খেলেছি।
বিকালে হাডুডু হাডুডু গাদি খেলতাম। তোমরা গাদি জানোতো? পুকুরের ধারে বসে টালির টুকরো দিয়ে ব্যঙাচি খেলতে জলের মধ্যে ছুড়ে মারতাম আর টালির টুকরো টা লাফিয়ে লাফিয়ে পুকুরের ওপারে চলে যেতো। গরমকালে সবাই একসাথে পুকুরে ঝাঁপিয়ে পড়তাম। পুকুরে ডুব দিয়ে মাটি তুলতাম। পুকুরের উপরে আম গাছের উপরে উঠে লাফিয়ে পড়তাম, আবার উঠতাম আবার লাফ দিতাম। সে এক অন্য অনুভূতি।
আজ যেমন প্রত্যেক বাড়িতে ইলেকট্রিক বাতি আছে। কিন্তু গ্রামের দিকে ইলেকট্রিক তখনও যায়নি। রাতে ঝি ঝি পোকার ডাক শুনে ভয়ে গা গরম হয়ে যেত। আমাদের কে ভূতের গল্প শুনিয়ে আমাদের ঘুম পাড়াতেন ঠাকুমা । জীবনের সেরা কিছু সময় ছিল সেগুলো। সন্ধ্যা হলেই হারিকেন জ্বালিয়ে ভাই বোন সকলে সেটা ঘিরে পড়তে বসতাম। প্রতিদিনের রুটিনবাঁধা নিয়ম ছিল হারিকেনের চিমনি(গ্লাস) পরিষ্কার করতে হতো। মাঝেমধ্যে চিমনি ভেঙ্গে ফেলতাম, তখন খুব মুখ শুনতাম মায়ের কাছে। কাগজ দিয়ে ভাঙ্গা অংশ ঢেকে দিয়ে পড়তে বসতাম।
অথচ তোমরা আজ যারা স্কুল,গেমস, পিসি নিয়ে পড়ে থাকো, তোমরা তোমাদের পরবর্তী জেনারেশনের কাছে কি নিয়ে গল্প করবে, বল তো? অন্তত গল্প করার জন্য হলেও তোমাদের গ্রামে যাওয়া দরকার। সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য লুকিয়ে আছে অদূরের ঐ গ্রামে।
আমরা যা মজা করেছি, শৈশবকাল পার করেছি যা এখন শুধু কল্পনাই মাত্র। শৈশবের সেই রঙিন দিনগুলির কথা মনে পড়লে আজো মনের মধ্যে অজানা এক শিহরণ জাগে। কোথায় হারিয়ে গেল সেই দিনগুলো! কালেরগর্ভে হারিয়ে গেলেও স্মৃতিময় দিনগুলোর কথা কখনই ভুলবো না।
অথচ তোমরা আজ যারা স্কুল,গেমস, পিসি নিয়ে পড়ে থাকো, তোমরা তোমাদের পরবর্তী জেনারেশনের কাছে কি নিয়ে গল্প করবে, বল তো? অন্তত গল্প করার জন্য হলেও তোমাদের গ্রামে যাওয়া দরকার। সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য লুকিয়ে আছে অদূরের ঐ গ্রামে।
আমরা যা মজা করেছি, শৈশবকাল পার করেছি যা এখন শুধু কল্পনাই মাত্র। শৈশবের সেই রঙিন দিনগুলির কথা মনে পড়লে আজো মনের মধ্যে অজানা এক শিহরণ জাগে। কোথায় হারিয়ে গেল সেই দিনগুলো! কালেরগর্ভে হারিয়ে গেলেও স্মৃতিময় দিনগুলোর কথা কখনই ভুলবো না।
Comments
Post a Comment