Posts

Showing posts from April, 2021

জীবনচক্র

     জীবনচক্র দেবপ্রসাদ জানা    ০২.৪.২০২১ যখন কষ্টের কাক ভাঙ্গা কার্নিসে- এসে ডাক পাড়ে সকালে- সকাল সকাল বেদনার পাহাড়  যেন বুকের ওপর এসে বসে। নিয়তিরা আঘাত করে,ঠিক সুখের  আলো জ্বললে,মিষ্টি সময়ে।  অসময়ে ঝরা পাতা,তাতেও আগুন লেগে দাবানলে পুড়ে যায়, সুখী সবুজ গাছ- আর রঙবেরঙের সুগন্ধি ফুল। আমরা প্রতিরোধ করি, চেষ্টা করি, দুঃখ গুলোকে বাইরের, ছ্যাতলা ধরা ভাঙা প্রাচীরের ওধারে রাখতে। না তা হয়নি কখনো- বড় জেদী এই দুঃসময়ের কষ্টের কাক গুলো,কার্নিসে সে বসবেই। জীবন মানে,কঠিন সংগ্রাম,সকলে জানি। সুখদুখের বেহিসেবী লড়াই,আমরা তাও জানি। আমরা সকলে খেলি তা নিয়ে প্রতিদিন। তবুও দোষারোপ করি, ভগবানকে।

অনন্য প্রেম

 ।।অনন্য প্রেম।। দেবপ্রসাদ জানা   ৩.০৪.২০২১ সবাই থাকে তোমার কাছে - শুধু আমিই পারি না। সবাই দেখে তোমাকে - শুধু আমিই দেখতে পাই না। সূর্য দেখে চোখ খুলে, বাতাস দেখে স্পর্শ করে, শাড়ি গহনা জামাকাপড় থাকে জড়িয়ে ধরে। শুধু আমিই ধরতে পারি না। আমি কেঁপে উঠি,আধো জাগরণে, আমি টের পাই,বধির নির্জনতায়- অন্তহীন ধোঁয়ার বৃত্ত রচনা করে তার ভিতরে তোমাকে দেখি। আমি কেঁপে উঠি বারবার,তোমার উহ্য ইশারায়। সবাই পায় তোমার ভালোবাসা, আমার শুধুই আশা।  তোমার নিঃশব্দ হাত কবে ধরা দেবে? আমি অভিষিক্ত হতে চাই,তোমার চেতনায়। আঙুলে আঙুল দিয়ে,গ্রন্থিতে গ্রন্থিতে। আমি শুধু ছবি দেখি,আমি শুধু মনে করি- আমি শুধুই অশ্রু ফেলি। কেন? তোমার গায়ের গন্ধ চাই, তোমার প্রেমের ছন্দ চাই, আমি তোমার আদর চাই, আমার সঙ্গেই তোমার দূরত্ব বেশি, তোমাকে সবাই ভালোবাসে, তাই তারা কাছে আসে। আমি যে কেন,পাই না প্রিয়া  তোমার হাতের মিষ্টি ছোঁয়া। কেন গো?কেন প্রিয়া? কেন আমি অনন্ত ঘুমে একা?

তোমায় দেখে

 ।।তোমায় দেখে।। দেবপ্রসাদ জানা     ৭.৪.২০২১ তেমন করে আর কবিতা আসে না, তুমি যে আর তেমন করে হাসো না। কে যেন সেদিন বললে,তুমি শুকতারা হয়েছ। সূর্য নাকি তোমাকে আদর করে,আলো দেয়? তুমি মুক্তি চেয়ে ছিলে - তাবলে লুকিয়ে চলে যাবে - স্বাধীনতা। মুক্তি। কিসের মুক্তি? আকাশও বন্দী, মহাশুন্যে- মহানীলের জেলখানায়। রোদ্দুর ও বন্দী মেঘের আড়ালে। সূর্যের শিকলে বাঁধা। আকাশ লড়াই জানে না, প্রতিবাদ জানে না, বিদ্রোহ বোঝে না- মেঘের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব ভালো। পৃথিবীর হাতে হাত মিলিয়ে - মাঝে মাঝে উড়ে যায় দিগন্তে,মহাশুণ্যে রাগের বসে নীল হয়ে আছে,সর্বক্ষন। আরো রোদ্দুরে ঝলসে যায়, তবে মিঠে রোদ ভারি দুষ্টু, হাসতে হাসতে কেমন যেন পুড়িয়ে মারতে চায়। তুমি তার মিষ্টি কথায় ভুলে,নিজেকে মুক্তি দিলে? তোমার মুক্তি কোথায় তুমি জানো? তুমি বললে বটে,তোমার মন ভালো নেই, আমি শুধু কবিতা নিয়ে থাকি,  তোমাকে ভুলে গেছি,  না গো তা নয়,তুমি তো আমার নিজের- কবিতা গুলো সব,মন ছুঁয়ে,হারিয়ে যায়। তাদের শব্দ গুলো ধরে রাখতে গিয়ে মনটা আড়ালে চলে যায়,তোমাকে দেখেই তো-  আমার কবিতা লেখা,তুমি না হলে, কেমনে লিখব কবিতা?

অক্ষর কথা বলে

  ।।অক্ষর কথা বলে।।   দেবপ্রসাদ জানা       ৮.৪.২০২১ আমার ভবিষ্যৎ,ভবিষ্যতের ভবিষ্যৎ ছোট্ট শিশিতে ভরে রাখা অমৃতের বিন্দু। পৌঁছে দিয়ো কবি সবার কাছে। শিশির সিক্ত ফুলের রেনু-জীবন ডাকে আঁধারে। ঘুম ঘোর চাঁদ ডাকে প্রেমের পাখিটাকে, সব যুদ্ধ একদিন থেমে যাবে পলকেই- ইতিহাস কথা কবে ছাপা অক্ষরে, টপটপ করে পড়বে কবিতার রস। খেজুরের রসের মতো,ফাঁসি দেওয়া - কলসীর উদরে। জন্ম নেবে নব ভবিষ্যৎ। শব্দ জব্দ হবে,প্রতিটি ফোঁটায়  একটা একটা কবিতার জন্ম হবে, কবির হাত ধরে,কলমের জঠর থেকে। আক্রোশ ভরা কবিতা একদিন, বন্দী হবে কারাগারে-সভ্যতার জেলখানায়। যুবক উপন্যাস,ষোড়শী কবিতা - পরকীয়ায় লিপ্ত হবে,ভবিষ্যতের গর্ভকোষে, বিপ্লব আসবে সাদা খাতার বক্ষে,মহাসমারহে। হ্যাঁ,ভরিয়ে তুলবে চৈত্রের এই খরা দুপুর।

গুপ্তহত্যা

 ।।গুপ্তহত্যা।। দেবপ্রসাদ জানা কখনো কখনো কবিতারা - চলে আসে ঘটনার রূপ ধরে। কুয়াশাচ্ছন্ন পাহাড়ি উপত্যকায়- জোছনার গুপ্তহত্যা।  ঘনধুম্র কুয়াশা চুপিচুপি ঢেকে দিয়েছে চাঁদ,আঁধার আড়ালে। অবগুণ্ঠন ভাঙিছে, রাতের অধর। ভয়াবহতার মাঝে,বিনোদনী চাঁদ- মুখ ঢেকে শুণ্য রাস্তা ধরে অপলক ছুটে চলে একা জোছনার ঘরে। নিশাচরেরা তখন শিকারের খোঁজে  এদিক ওদিক ঘোরে,সন্তর্পণে বিহানে- মায়াজাল বাঁধে,এক পৃথিবীপৃষ্ঠ কুয়াশা। জোছনার -হাত ধরে টেনে নেয়, অন্ধকারাবৃত গুহায়। নুপুরের মতো বাজছে শিশির পড়ার শব্দ, দিগন্তরেখায় ফুঠেছে,শীতের শিউলি, কুয়াশার ঘরে আজ,উৎসব। কুণ্ডলী পাকিয়ে উঠছে,আকাঙ্ক্ষার ধোঁয়া। জোছনার ওড়নায় লাল রক্তের দাগ, ক্ষতবীক্ষত তার বক্ষবস্ত্র। মুক্তোর মতো শুভ্রদন্ত বিকশিত করে,কুয়াশা- জোছনার শেষ নিঃশ্বাসের অপেক্ষায়- কবিতা এসেছিল সেই সেদিন।

জীবনবোধ

 ।।জীবনবোধ।। দেবপ্রসাদ জানা     ৯.৪.২০২১ সূর্যগঙ্গার ঘাটে,চাঁদের আলোয় ঢাকা- তোমার সাজানো দেহটায় উজ্জ্বল জোছনা। মধ্যরাত প্রশ্ন করে,জীবনবোধের ধারাপাত। আমি জানি তোমার নিথর দেহের ধ্বনিতত্ব। প্রশ্নগুলো অচেনা নয়,তবু উত্তরে বাধা।  নিছক শব্দগুলোর অর্থ,নিঃশব্দে আঘাত হানে। তবু মনের আলোকে যখন অন্তর্মুখী চাঁদ খুঁজতে খুঁজতে তোমাকে পেয়েছিলাম-এই সূর্যগঙ্গার ঘাটে। তখন পৃথিবী কানে কানে চুপিসারে বলেছিল, নিজেকে আবৃত করো, শুদ্ধ হাতে স্পর্শ করো জীবন। সে স্পর্শে মিশেছিল চাওয়ার ধরন। কিছুটা চাওয়ার গভীরে,ছিল সেই অলৌকিক চাঁদ। মধ্যরাতে পোড়া দগ্ধ ধ্বস্ত ঘরের আঙিনায় - শুকনো করবী গাছটায় আজ জীবনবোধ।

সুন্দরের নেশা

 ।।সুন্দরের নেশা।।   দেবপ্রসাদ জানা বাতায়নে বিষাদিনী,অমৃত বর্ষণে অবোধ্য পতঙ্গ সম,পুষ্প পদ তলে অকারণে দিশেহারা,অমিয় বচনে। আকাঙ্ক্ষিত প্রেমহীন,বৃন্তচ্যুত হলে। কামার্ত নিঃশ্বাসে ফুল,উন্মাদ উন্মুখ  মধু লাগি পতঙ্গের,কুঁড়ি ফুল খোঁজা প্রণত রোদ্দুরে ফুলে,হাসিহাসি মুখ। ফুলের সৌন্দর্য দেখে,মেরুদন্ড সোজা। ফুলের মুকুল খুঁজে,পতঙ্গ বিলাপ সদাই পরাগ মেখে,ফুলে যাতায়াত ফুল বলে পতঙ্গের গায়ে কেন তাপ মধু লোভে পতঙ্গের,নিদ্রাহীন রাত। পতঙ্গের এত নেশা জাগিল কেমনে? সুন্দরের নেশা লেগে,গেছে তার মনে

অজানা কেউ

 ।।অজানা কেউ।।  দেবপ্রসাদ জানা চাঁদতারা হাতে করে সহসা একদিন - এসেছিল সে আমার আঙিনায়। ছিন্নতার ব্যথা বয়ে নিয়ে আমার  আঁধার ঘরে, ভাঙ্গা প্রদীপের আলো- ফেলে দিয়ে সে,রেখেছিল চাঁদতারা, আমার জানালায়। ক্ষুরধার সাঁকো পেরিয়ে  মিলনের সন্ধিপত্র রেখেছিল - আমারই ভরসায়। প্রহরেরা হাত ধরে প্রতিবার নিয়ে গেছে, লিখে গেছে স্বর্ণ ইতিহাস, পরমানুর কণায় কণায়। অসমাপ্ত কবিতার খাতাখানি, যে দখিন হাওয়ায় -উড়েছে কখন, বুঝিনিতো আমি? মুহূর্তরা নির্বিকারে উড়েছে বাতাসের সাথে। বেলাশেষে, জীবনের গ্রন্থিতে থেকেছি আমি, প্রহরের লিখে যাওয়া বিপন্ন ইতিহাসের - উন্মাদ কাহিনী এত নির্মম? কুৎসিত কলঙ্কের কালি দিয়ে  জীবনের কিছুটা লেখা,প্রহরের কলম লিখে রেখেছে আমারই সম্মতিতে। আমি আজো বুঝিনি কেউ,আড়ালে বসে,  আমাকে জীবন দিয়ে ভালোবাসে- কি রহস্যময় এ জীবনের না দেখা,না জানা, নিঃশ্বাস,যা নীরবে বেরিয়ে আসে, হৃদয়ের গ্রন্থিবেয়ে দীর্ঘশ্বাস হয়ে- এ বড় কঠিন অসুখ।

নেশা

 ।।নেশা।। দেবপ্রসাদ জানা অদ্ভূত একটা নেশা লেগেছে মনে খেলার নেশা। রেসের মাঠে - দুরন্ত ঘোড়ার খুরে গোঁজা ছুরি। দেরি নেই,দেরি নেই,খেলা হবে শুরু। বহু ঘোড়া ছুটছে, খুরের শব্দে - আকাশ বাতাস কাঁপছে, জীবনের রেসকোর্স পেরিয়ে - গদির লড়াইয়ে,কেউ আগে,কেউ পিছে। অর্থ আর গদির নেশায় চলেছে ছুটে, হয়ে উন্মুখ। বিশ্রাম নেই নিশিদিন,  হারিয়ে ফেলেছে দিক বেদিক,  দিগন্ত প্রান্তর ছুঁয়ে ছুঁয়ে স্বপ্ন সঞ্চয়। পরমার্থের সন্ধানে- এ কোন পথের পথিক, সকলে ভোগ বাসনায় লিপ্ত  মধুর অমৃত রসের- সকলে লোভ হিংসা পাপাচারে- ইতিহাস হবে। এই অমৃত মধুর সুখে কি জগৎ ভরে উঠবে?

ভবিতব্য

       ভবিতব্য দেবপ্রসাদ জানা মন বেঁচে থাকবে,তোমার মনের সঙ্গে। আমি তো ইতিহাস হতে চাই ভালোবেসে। আমি যে তোমাকে পেতে চাই গভীর রাতে। আমি যে চোখে আগুন জ্বালি জোছনা রাতে। বাতাসের সঙ্গে ভেসে বেড়াই তোমাকে নিয়ে। কপালে আঁকা মানচিত্র মেটাবে কে? তুমি চলে গেলে জীবন চলে যাবে অভিমানে। যতই কাঁটা থাকুক গোলাপ গাছে - ফুল ও হয়,তাতেও মিষ্টি গন্ধ মেলে।

তোমার জন্য

 ।।তোমার জন্য।।  দেবপ্রসাদ জানা কলমের প্রেমে,সাহিত্যের টানে    শব্দের গভীর ভালবাসায়, শব্দহীন দ্যোতনায়, প্রকৃতির সবুজ চাদরে, মেঘের আড়ালে থেকে- এতদিন শুধু তোমাকে আদরে গড়েছি ।  কবিতার সাথে গড়ের মাঠে,  ভিক্টোরিয়ার চাতালে, ঘরের চিলে কোঠায়, মোবাইল ফোনের পর্দায়,  পরকীয়া করেছি,ভালোবেসেছি,   মহাকাব্যের পাতায় পাতায়,  অবৈধ সম্পর্কের-গল্প শুনেছি,  শব্দ চয়ন করেছি, ভালোবাসার- শুধু তোমার জন্য।  চাঁদ সদাগরের কাহিনী পড়েছি, ঢেউ এর দোলায় দোলায় – মেঘের ছায়ায়।  পানকৌড়ির ঘরে বসে-  মাছ ধরার কৌশল শিখেছি, পুষ্করিণীর অলিন্দে,   তোমাকে ধরবো বলে।  কচুরিপানায় ঢাকা কালো জলে, সারা শরীর জুড়ে পাঁকের গন্ধ মেখে- শোল, মাগুর, শিঙি, মাছ ধরা তাও শিখেছি।   পিঁপড়ের কাছে শৃঙ্খলার জ্ঞান নিয়েছি – তোমাকে পাবো বলে,শুধু তোমার জন্য।

মায়াবী আলো

 ।।মায়াবী আলো।।   দেবপ্রসাদ জানা     ১১.৪.২০২১ মনের আগুনটাকে উস্কে দিলে কিনা? ঠোঁটে তোমার গোলাপী রঙের প্রলেপ- চোখের পাতায় আঁকা,নীল আলপনা, মুগ্ধকরা ওষ্ঠদ্বয়ে,অচেনা আক্ষেপ। প্রতিধ্বনি হল বুঝি,দেহের ভিতরে- আত্মার হৃদয়ে জাগে,শব্দ উন্মাদনা সৌন্দর্য প্রতিষ্ঠা করি,অন্তরঙ্গ স্বরে নশ্বর করেছে তার,প্রসারিত ডানা। শূন্য তুমি,ছায়াহীন,কায়া শব্দহীন, কত প্রজন্ম এমন,থাকি প্রতীক্ষায়  মহাপ্রলয়ের দিনে,অবয়ব হীন। অম্বেষণে আত্মমগ্ন,মূক পিপাসায়। কামনার ঝরা বীক্ষণে,বসন্ত উন্মেষ  নৈবেদ্য সামান্যতম,আশার আবেশ।

ব্যথা

          ব্যথা  দেবপ্রসাদ জানা    ১২.৪.২০২১ ব্যথা গুলো সব চাগাড় দেয় মাঝবয়সে এসে। না না না আমি সে ব্যথার কথা বলছি না। ছোটবেলায় চোটের ব্যথা, আম পাড়তে,পড়ে যাওয়ার ব্যথা, লুকিয়ে টিভি দেখতে গিয়ে পা কাটার ব্যথা, দৌড়োতে গিয়ে পড়ে যাওয়ার ব্যথা, মায়ের হাতে মার খাওয়ার ব্যথা? ওসব কিছু না। বলছি মনে,ব্যথা লাগার কথা। শৈশবে,বকুলের মালা গলে, প্রথম দেখা চিত্রাঙ্গদা,প্রাণের শিক্ষিকা। নক্ষত্রের চাঁদ যেমন,তেমন যেন আমি, তার প্রেমে পাগল।  তখন বুঝিনি,এখন বুঝি,ভালোবেসেছিলাম। নীল নীল খামে,গভীর প্রেম ষোড়শীর। শিউলি শরৎকালে,  নকসী কাঁথায় করা বিরহ যাপন। পুজোর প্যান্ডলে গায়ে গা লেগে যাওয়ার  মধুর আবেশ - প্রথম বসন্তে লাগা প্রেমিকার রঙ। কলেজ পাড়ায় লাগা অল্প বদনাম। ঝালমুড়ি আর ফুচকা,  মুখে এক ডাবে দুটি স্ট, সব যেন স্বপ্ন- সিনেমার হলে বসে পায়ে পা ঘষা, হাতে হাত রেখে উষ্ণতার দেওয়া নেওয়া। কতকাব্য কতগাথা নতুন নবীন খামে-  গন্ধ ভরে দেওয়া রঙিন চিঠিটা। পাগলামী তায়, তবু মন আবেগ ছুঁতে চায়। আশায় আশায় থাকা,বেদনার মাস। প্রথম দেওয়া হাতে হাত,বকুল তলায় বসে লাল পলাশের সুবাস ...

জীবনের ছন্দে

 ।।জীবনের ছন্দে।।   দেবপ্রসাদ জানা      ১৩.৪.২০২১ এক পশলা বৃষ্টি চাই জীবনে চৈত্রের মরসুম,রৌদ্রের দাবদাহ- মেঘলা আকাশের কাছে,নতজানু হয়েছি আজ। সোঁদা গন্ধ ভেসে আসবে-পৃথিবীর বুক ফুঁড়ে। চোখ বন্ধ করে মিষ্টি গন্ধ নেবো এক নিঃশ্বাসে.. চৈত্রের দুপুরে চাই আরো এক পশলা বৃষ্টি, পদ্মদীঘির কালো জলে, পদ্মপাতার বুকে মুক্তো গড়াগড়ি।  শ্যাওলা ধরা পুকুরঘাটে কলমীলতার শেকল। শুকনো তাল গাছে পড়বে বাজ। চকমকি আগুনে-  পুড়ে ছাই হবে একা তমাল তরু। গোলার ধানের বুঝি অকারণ শাস্তি। আরো একবার মধ্যবেলায় এক পশলা বৃষ্টি। ভোরের কাক আসবে, মেঘ কেটে গেলে। কা কা রবে দুপুরে,ভোরের হাঁক পাড়বে। কোকিল ভয়ে ডাক পেড়ে,রাত শেষ কবে। আরো এক পশলা বৃষ্টি, চাই সন্ধ্যাবেলায়। পারাবতী প্রেমিকার অভিমান ভারি।  ক্ষোভে তার নয়নদুটি রক্তবর্ণ আজ।   হ্যাঁ আরো এক পশলা বৃষ্টি চাই, জীবনের ছন্দে,

ভাবনায়

      ভাবনায়  দেবপ্রসাদ জানা    ১৪.৪.২০২১ প্রতিদিন একই জিনিস কার ভালো লাগে? একবার প্রজাপতি হতে চাই- ফুলে ফুলে,ঘুরে ঘুরে,মধু খাওয়ার মজাটা উপভোগ করতে চাই। ফুলের আদরে ঘুমিয়ে পড়তে চাই, ফুলের চাদর -গায়ে দিয়ে। দেহের ভেলায় দুলতে দুলতে - মুখের স্বাদ বদলে ফেলব। সভ্যতা বভ্যতা জলাঞ্জলী দিয়ে বহতা নদীর মতো বয়ে চলে যেতে চাই এবার। একই জিনিস রোজ কার আর ভালো লাগে? একবার চড়াই পাখি হবো।  অট্টালিকায় অট্টহাসি দিয়ে,বাবুই পাখিকে বলব। "ওরে বাবুই আমার কত্ত বড় ঘর দেখ" চড়াই লজ্জায় মুখ লুকিয়ে কাঁদবে। খড়কুটোর ঘরে আর কতদিন চলবে? ভাবছি সূর্যকে কাছে ডেকে নেবো - বলব-এত মাথা উঁচু করে আছো কেন? কিসের এত দম্ভ? সূর্য লজ্জায় মুখ লুকিয়ে বলবে "আমার যে প্রচুর রাগ"  তবে তুমি যখন আছো,আমার কি আর এত সাহস? তোমার ওপরে যাই? ভীষণ লজ্জা পেলেও আমি বুক ফুলিয়ে বলব - তবে-এ। ফুটপাতের ধারে ঐ উলঙ্গ ছেলেটার মতো  একাকিত্বের সুরে যদি কাঁদতে পারতাম-কখনো, ওর মতো করে,দুয়ারে দুয়ারে হাত পেতে বলতাম- সারাদিন কিছু খাইনি মা- একটু খেতে দেবে? দুর দুর করে তাড়িয়ে দিত তারা, নয়তো রাতের বাসি খাবার ভাঙ্গা থালাটার ওপর- ...

নজর

        নজর দেবপ্রসাদ জানা    ১৯.৪.২০২১ একটা চাঁদ,তিথির গহ্বরে ঘুমায়। মৃন্ময় বিশ্ব বিক্ষত,কালের কল্লোলে। ভেঙেদি জীবনবোধ,পূর্ণ  স্তব্ধতায়। জেগে থাকে সূর্য একা,বুকের অনলে। গীতি-কাব্যে কণ্ঠস্বর,কীটদ্রষ্ট হবে। স্বদেশীরা মশগুল,কাগজের ফুলে। হে কবি ঘুমালে নাকি,ফুলের সৌরভে। উঠে দেখো সূর্য একা,রাতের কবলে। নীলাকাশে ধ্রুবতারা,দিকভ্রষ্ট হয়, কুয়াশা পীড়িত করে,সুকঠিন কাব্য। প্রাণঘাতী সংলাপের,কঠিন সময়, পুষ্পকাব্য ফোটাফুল,উপেক্ষার দ্রব্য। কামনার অন্ধকারে,নিজের কবর। চার শতক পরেও,বিকৃত নজর।

বৃদ্ধবৃক্ষ

      বৃদ্ধবৃক্ষ দেবপ্রসাদ জানা   ২০.৪.২০২১ আমার মনে তোমার,প্রেমের আগুন না জানি পোড়াবে কত,হৃদয় গভীরে সুখের পরশ পাবে,সুঠাম তরুণ। আমি শুষ্কবৃদ্ধ তরু,প্রস্থান অচিরে। আবেগের ছাদ,ভেঙ্গে পড়বে সেদিন। যেদিন সম্মুখে এসে,দাঁড়াবে শরমে। সাদা মেঘের গালিচা পাতবো সেদিন যেদিন আমার যাত্রা,পরম অন্তিমে। দেখা হবে একদিন, পড়ন্ত দুপুরে, পশ্চিম মেঘের কোনে,রক্তিম বিলাপে। সেই বসন্তের শেষে,আঁধার তিমিরে  রক্ত গোলাপের বনে,মধুর আলাপে। বৃদ্ধবৃক্ষ আমি,তবু বলি,ভালোবাসি দেহ মোর আস্তাকুঁড়,মন রবি শশী।

অবসরে

      অবসরে  দেবপ্রসাদ জানা   ১৮.৪.২০২১ বলিনি কাউকে আমি,আমার অজান্তে স্বপ্নের ঘোরে,আমার শরীরে পোকারা অবসরে বাসা করে নীরবে নিভৃতে, দেহের মধ্যে লুকানো,আঁধার গুহায়। আকাশে উত্তাপ তাই আকন্ঠ উষ্ণতা  পান করে,পিপাসার্ত পোকা।আত্মক্ষতে নগ্নতার ছায়াচিত্র,মনের উচ্ছাসে, ধীর পায়ে হেঁটে এসে একদিন,দেহে অযাচিত ভাবে বাসা বাঁধে বিস্মরণে। শুকনো বালির মতো মুঠোর ভিতর হতে অবাধে বেরিয়ে আসে চিরকাল। নির্জন দুপুরে স্বস্তি নেই,শরীরের। হৃদয়ের পাতা মুড়ে,পঙ্কিল পাপের, আঁকা-বাঁকা প্রশ্নচিহ্ন মননের ভ্রমে, কি চায় পোকারা? এই ন্যাঁড়া গাছটাতে, দু'চোখ ঝাপসা হয়ে আসে,ভেসে ওঠে আকাঙ্ক্ষিত বাসনার নারীচিত্র মনে। নেশার বিষন্নতায় ছুঁয়ে থাকি তারে। খিদে বাড়ে শরীরের,নব কোষে কোষে, অনুভূতি অসহায়,নিরুপায়,আজ- ভালোবাসা লালসায় করে হাহাকার। প্রেমের নদী,মনের দহনে শুকায়। শেষ বসন্তে পলাশ গাছে ফোটে ফুল শাখায় শাখায়,লাল লাল ফুল ভোরে। এবার বৃষ্টি আসুক,রাত শেষ হলে। তোড়পাড় করা পোকা,শরমে লুকিয়ে  যাক,বর্ষা কেটে গেলে,স্বেচ্ছা অবসরে।

প্রথম বৈশাখ

   প্রথম বৈশাখ দেবপ্রসাদ জানা   ২১.৪.২০২১ বসন্ত মার্জিত নেশা,কুঞ্জবন জুড়ে,  গাঢ় সবুজের বনে, ময়ূরী চঞ্চল। কুহুতান কোকিলের,রাতজাগা ভোরে, নয়নে কাজল দিয়ে হরিনী প্রাঞ্জল। রবি ঠাকুরের গানে,মাতয়ারা দিন। দোরে দোরে আলপনা রঙিন বৈশাখে কুলোয় আঁকা বৈশাখ,অকারন ক্ষীন। নয়া প্রভাতী হাওয়া,গায়ে নিয়ো মেখে। খোয়াই নদীর গান,ভেসে ভেসে আসে  পাহাড়ি ঝর্ণার তালে,নাচে শালবন। কাঞ্চনের দরাদরি, বৈশাখের মাসে, নতুন বছর আসে,নবীন বরণ। কৃষ্ণচূড়া পুষ্পদলে,রঙ মাখামাখি, ভোরের সকাল কয়,নববর্ষ নাকি?

আত্মক্ষতে

     আত্মক্ষতে দেবপ্রসাদ জানা    ২২.৪.২০২১ জ্বলন্ত দীপের নিচে,অশুভ কালিমা। সন্ধের শঙ্খটা আজ,বাজেনি এখনো। দক্ষিনা মন্দিরে একা,বিষন্ন প্রতিমা। মৃন্ময় দেবীর দেহে,জীবন  লুকানো। আকন্ঠ গরল পানে, বিপন্ন ধরণী। পিপাসার্ত ধরিত্রীর,বিপুল বিস্ময়। বোমারু আঘাত হানে,মৃতদেহ খানি। আত্মার নিগূঢ় ডাকে,গোপন প্রনয়। বুকের ভেতরে স্রোত,শুকনো বালির। মহামারি মরীচিকা, গভীরে প্রোথিত। চোখের আগুনে দগ্ধ,প্রেমিক শরীর। পর্দার আড়ালে চলে, বোধের প্রমত্ত। শুকনো বালির ঝড়,কুণ্ডলী পাকায়। শুঁকছে মাঠের ধুলো,আকাশের গায়।  

কন্যা সন্তান

   কন্যা সন্থান দেবপ্রসাদ জানা আমার জন্মের আগে, আমার মরণ। মাতৃগর্ভে,কন্যা ভ্রূণ,পৃথিবীর বোঝা। বিশ্বের কোন প্রানীর,এই আচরণ? পুরুষ প্রধান দেশে,কন্যারাই বোঝা। পিতামাতা,প্রিয়জন,সব কয় পিছে- ছেলে হলে,ভালো হতো,এমন কপাল। সকল পিতামাতার,ইচ্ছে মনে আছে, মেয়ে হলে লক্ষ্মী এলো,বলে চিরকাল। শশুর শাশুড়ি বলে,বৌমা ভারি মিষ্টি, পুত্রসন্তান প্রসবে,মান রাখে ওরে। আঁতুর ঘরের পাশে ,আদরের বৃষ্টি। প্রদীপ জ্বালবে নাতি,স্বর্গের দুয়ারে। এমন কেউ বলেনি,কেউ নেই শাক্ষী নাতনি হয়েছে ঘরে,এ আমার লক্ষ্মী।

গ্রীষ্মচৈত্র দিনে

  গ্রীষ্মচৈত্র দিনে  দেবপ্রসাদ জানা  ২৩.৪.২০২১ জীবন স্রোতের এই,ঘনঘটা মাঝে,  মেঘের ছায়ারা ঘোরে,যেন আনমনা, ছায়াহীন দাবদাহ,তৃষিতের সাজে,  সবুজে ছায়ার টান,খোঁজে শামিয়ানা। গ্রীষ্মচৈত্র দিনে ডাকে,নিশি কালবেলা,  মরীচিকা ঝড়ে ভাসে,প্রান্তের প্রহরী, ধুসর মাঠের মাঝে,মায়াবিনী খেলা,  ফুটিফাটা ফাঁকামাঠে,ওড়ে মাধুকরী। নগ্ন হাহাকারে ভুমি,করিছে রোদন রাগে ক্রোধে অগ্নিসম,কাঁপে সূর্য যদি। তুচ্ছতার দৃষ্টিপাতে,অগ্নি তপোবন। ঘনমেঘ কালোমেঘে,জীবনের নদী। মরানদী চড়ানদী, অপেক্ষায় রয়। নিবিড় মেঘের কোলে,ঘুম স্বপ্নময়।।

স্তব্ধতার ডাকে

  স্তব্ধতার ডাকে দেবপ্রসাদ জানা   ২৫.৪.২০২১ কালরাতে পূর্ণিমার অলৌকিক চাঁদ কোন কথা বলেছিল,আঙিনায় ঝুঁকে শুকনো করবী গাছ,জীবনের খোঁজে - দোরেদোরে খুঁজে ফেরে,বোধের পোষাক। বাঘবন্দী খেলা খেলে,দেখো চারপাশে। গৃহস্থের ঘর থেকে পচা মৃতদেহে  শুধু শবগন্ধ জাগে,রৌপ ধুম্রজালে। কোন অশুভক্ষণে যে জন্মেছ পৃথিবী- আদিম নেশা লেগেছে,তব পরিবারে। মৃতদেহে হাহাকার,জলন্ত শ্মশানে। তিরিতিরি ভেসে যায়,ধোঁয়ার কুণ্ডলী - স্তব্ধ নক্ষত্রের দিকে,একা করিডোর জুড়ে,পাহারায় থাকে, মৃত শবগন্ধ। বিষবৃক্ষের সন্ধানে,ছদ্মবেশী পোকা কৌটিল্য কৌশল বাঁধে,মেঘের আড়ালে। ভোগের অশেষ মোহে,নরম শরীরে- ঋতুচক্র চক্রাকারে,এসে চলে যায় পিছু ধাওয়া আলেয়া,কুণ্ডলী পাকিয়ে। জেনো শেষ পরিণতি না জাগে সুমতি, দলবদ্ধ পিপীলিকা,সারিবদ্ধ হয়ে, নির্বাক নিস্পন্দ রবে,ফের বারমাস। প্রাণদায়ী জীবসুধা আনন্দবর্ধন কার কান্না,অভিশাপে,মৃতের লহর। শুনছ কি বসুন্ধরা,স্তব্ধতার ডাক।                                   

বিশ্বাস

       বিশ্বাস দেবপ্রসাদ জানা    ২৬.৪.২০২১ আরো একবার নীল খামটা খুলেছি তোমার ভালোবাসার শব্দ ভরা খাম। তুমি বিশ্বাস করতে পারোনি দেখছি, সব শব্দে যেন,ক্রোধ মাখানো পেলাম। সমুদ্রের মধ্যস্থলে জন্মে উদ্দীপনা  যেন সুনামী প্রবাহ,হৃদয়ে প্লাবন। স্মৃতিময়তায় জমা কালের যাতনা। বুকের পাঁজরে চলে,ঝোড়ো আক্রমন। অলক্ষে জমেছে মনে ক্ষতের পাহাড়ে। হৃদয়ের ডান পাশে  প্রতিবিম্ব খানি- পলকে ভেঙেছে প্রিয়া, পত্রের প্রহারে। এখনো তুমি বিশ্বাস,করতে পারোনি। মেঘের আড়ালে অশ্রু,চোখে যে পড়ে নি তাইতো,আজো বিশ্বাস করতে পারোনি।   

মরণের বাস

   মরণের বাস দেবপ্রসাদ জানা মেঘের আড়ালে ঢাকা,আত্মার পাখিটা অগাধ-মরন খোঁজে, কার ইশারায়? এলো মেলো হয়ে যায়,বধির স্বপ্নেরা। কুয়াশা চাদরে মোড়া,প্রকৃতির মাঝে। কেঁপে উঠি,বারেবার,আত্মার ক্রন্দনে ক্ষুধার্ত পাখিটা আজো,বসেছে চৌকাঠে। অপেক্ষায় আছে বুঝি,শিকারের লোভে। অদ্ভুত অজানা ভয়, পৃথিবীর কাঁধে- চাপিয়ে দিয়েছে তারা,বৃথা অবহেলে। জীবনের দীর্ঘতম,পথ এই ভাবে- স্বপ্নময় হেঁটে যাবে অনন্তের দিকে। অনুভূতির তুচ্ছতা,গাহি অন্তর্জালে, রাতের রুদ্ধতা ভেঙে,স্ফুলিঙ্গ ছড়ায়। প্রহরে প্রহর গুনে,প্রচ্ছন্ন আড়ালে- উন্মেষ ধুসর হবে খেলা শেষ হলে। মিলিয়ে গিয়েছে কোনো অজানা শরীরে- তম্বীক্রৌর্য কীটটার হেন পরিহাস। তুচ্ছতার অগ্নি জ্বেলে,পোড়াই ভেতরে। দেহ লোলুপ পোকাটা,বোধের আর্তিতে বোধহীন শবদেহে, মরণের বাস। এ কোন কীট জন্মিল,গোপন ক্ষয়ের- নির্বিকারে হানা দেয়,গোটা পৃথিবীতে।

কঠিন সময়

    কঠিন সময় দেবপ্রসাদ জানা    ২৭.৪.২০২১ প্রতিরাতে শূকরের,ডাকে আর্তনাদ। প্রেতনির ফিসফিস শব্দ কানে ভাসে, জীবন সিঞ্চিত ব্যথা, হৃদয়ের খাদ- করুণার হাসি দিয়ে,মিলেছে বাতাসে। গভীর আবেগ ভরি,পঞ্চরস থেকে। শৃগালের হাহাকার,বারবার শুনি। পাহাড়ের গায়ে বসে,হুক্কাহুয়া ডাকে। মাঝরাতে মৃতদেহ, এক দুই গুনি। ইহলোক পরলোক,মহাকাশ চারী। পৃথিবীর দ্বারে বসে,যমের দূতেরা। বিনাশে আহুতি হোক,শ্রীকৃষ্ণ মুরারী প্রতিশোধে ক্ষিপ্ত কেন,তোমার ভক্তেরা? দুর্ভেদ্য প্রাচীর ভাঙে,পৃথিবী তনয়। শোষণের রাত বাড়ে, কঠিন সময়।

ভবিতব্য

       ভবিতব্য দেবপ্রসাদ জানা মন বেঁচে থাকবে,তোমার মনের সঙ্গে। আমি তো ইতিহাস হতে চাই ভালোবেসে। আমি যে তোমাকে পেতে চাই গভীর রাতে। আমি যে চোখে আগুন জ্বালি জোছনা রাতে।বাতাসের সঙ্গে ভেসে বেড়াই তোমাকে নিয়ে। কপালে আঁকা মানচিত্র মেটাবে কে? তুমি চলে গেলে জীবন চলে যাবে অভিমানে। যতই কাঁটা থাকুক গোলাপ গাছে - ফুল ও হয়,তাতেও মিষ্টি গন্ধ মেলে।

অদ্ভুতদর্শন

 ।।অদ্ভুতদর্শন।। দেবপ্রসাদ জানা  ২৭.৩.২০২১ খাটের পাওয়ার কাছে, একটা পেতলের কলসে- ভাবনা গুলোকে জমিয়ে রেখেছি। আমার মৃত্যুর পরে,তোমরা ভেবো একবার কাজ কিছু করে উঠতে পারিনি এখনো, ভালো করে ভেবে দেখে, নেবে ভাবনা গুলোর ভবিষ্যত আছে কিনা? যদি না থাকে - তালা বিহীন ঘরটার মধ্যে রেখে দিয়ো- পঁচে যাওয়া পযর্ন্ত। নইলে প্রতিটি ভাবনা বিলিয়ে দেবে- দান বীর হরিশচন্দ্রের মতো। ঠিক যেভাবে,ভেবেছি আমি, প্রতিদিন। সেইভাবেই ভাবতে পারো, যদি দেখো একবার। খাটের নীচে শুয়ে আছে,আমার ভবিষ্যত। তাদের জাগিয়ে তুলো,আমার মৃত্যুর পরে, আমার শব যাত্রাপথে, তাকে সঙ্গে নিয়ো। আমার সঙ্গে সহমরণে যাবে সে - এই কথাই ছিল বরাবর। টেবিলের ওপর কিছু বোতল রয়েছে, হ্যাঁ বোতল, সুরাহীন বোতল,ওই ওরাই আমার ভবিষ্যতের প্রায় সম্পূর্ণটা গিলেছে, কালো রাতে। কিছু ভবিষ্যত ওই পাশের বাড়ির বৌদি নিয়েছে অকারণ ভালোবাসা দেখিয়ে- তার ছেলের পড়ার খরচ,শাড়ি গহনা। শান্তির মৌচাকে মধু জমেছে কিছু - সে মধুও তারিয়ে তারিয়ে খেয়েছে, বিবাহিত প্রেমিকা। বাকি ঘরে সাজিয়ে রাখা ফুলদানিটা, যদিও ফুলের বাহার দিয়ে সাজাইনি কখনো- বিয়েতে পাওয়া অমূল্য উপহার ওটা, ওটারই ধুলো ঝাড়া হয়নি বহুবছর। আ...

ঈশ্বর ও মানব

 ।।ঈশ্বর ও মানব।। ।।দেবপ্রসাদ জানা।।      ৩০.৩.২০২১ কেমন আছো?সকলে বলবে না আর - কেউ কেউ ইতিহাস খুলেই বসবে এদিক ওদিক দেখে বলবে তখন- রাত হতেই,দেহের বাসনা বাড়বে- দিনের আলোয় চোখ সভ্যভব্য থাকে। সমাজের সঙ্গে তার পরিচয় নেই। ইতিহাস হয়ে গেছে শৈশব,দেহের। শরীরে ভোগ বাসনা বাড়ছে-বাড়ছে  লোভ। ঐ গনিকালয়ে,দরজা আগলে দাঁড়িয়ে থাকা মহিলা বাড়ছে-ক্রমশ। মনুষ্যরূপী ঈশ্বর যে বলেছিলেন- ভোগবাসনা ক্রোধ ও,লোভ ত্যাগ করো? দিনের শেষে অঙ্কটা এক থেকে গেছে। এই জড়দেহে নাকি ভগবান আছে? কোথা?এখনো দেখিনি,তার মায়াকায়া। খবর নিয়ে দেখোতো,কোন দেহে আছে সেই ভগবান,নাকি ভয়ে লুকিয়েছে। বছরে প্রতিটা মাসে,আতঙ্কেরা ডাকে কখনো অন্ধকারের ছায়া হয়ে আসে, কখনো স্বজন বন্ধু,হাত ধরে টানে- প্রত্যক্ষভাবে পরোক্ষে এই আমরাই সাধারণ মানুষেরা,খেতে না পাওয়া- ঝুপড়ির ঘরে থাকা,ফুটপাতে আর- লাইনের ধারে থাকা নিকৃষ্ট জীবন। কেন জন্মালাম এই ধরণীতে,কেন? কেন পাঠাল এখানে,মৃতদেহ করে। কোন রাজকার্য আছে,এ জড়দেহের স্রষ্টার কাছে একটা প্রশ্ন ছিল আজ, প্রতিশ্রুতি দিলে বলি,উত্তর দিতেই হবে,তোমাকে এবার,তুমি যদি থাকো মানব দেহে তাহলে,অসুর ও তুমি- আর ঈশ্বর ও তুম...

অশ্রুর আলপনা

 ।।অশ্রুর আলপনা।।   দেবপ্রসাদ জানা    ৩১.৩.২০২১ আমি আমৃত্য বাঁচব,তোমার আঘাতে, আমার নয়ন জলে,আলপনা দেবো- তোমার হেঁটে যাওয়া, অমুসৃণ পথে। এভাবে পথের কাঁটা,বুকে তুলে নেবো। অনুভূতিরা আহত,হৃদয়ে আমার। ছবির তলে,প্রত্যহ ফেলি অশ্রুজল তুমি নেই,ভাবতেও পারি নাযে আর, জীবন সম্মতি দিলে,গড়ি মনবল। অশ্রুজলে আলপনা,যায় নি শুকিয়ে, হৃদয় পুড়েছে তবু,থাকে অবিচল। অনুভবের আয়না,গিয়েছে হারিয়ে, একফালি জীবন যে,বড়ই চঞ্চল। অকালে ঝরে যাওয়া,ফুলের মতন কত মুল্য আছে ওরে,এটুকু জীবন।

এখনো মানুষ

 ।।এখনো মানুষ।। দেবপ্রসাদ জানা  এখনো মানুষ আক্রান্ত  এখনো মানুষ বিভ্রান্ত। এখনো এরা মিথ্যা বলে তবুও দেখো সঙ্গে চলে। আগুন এরা ভালোবাসে এখনো এরা তাদের পাশে। টাকা টাকা শুধু টাকা ধর্ষিত হয়ে ফিরেছে একা। গুলি গালা চলছে পথে গ্রামখানি নেতার হাতে। কেউ বলে নিষিদ্ধ পার্টি  বোমা হাতে, তবুও খাঁটি। নেতার পিছে চারটে গাড়ি লোক ঢুকছে বাড়ি বাড়ি। লোক তাড়িয়ে কারখানা বোমা বন্ধুক হচ্ছে আনা। লড়াই হবে নিশিরাতে রক্ত পড়বে বাড়া ভাতে। পদ্মা বিবির মুখ ভারি এক চড়ে প্রাণ ছাড়ি। বিনা দোষে কয়েদখানা এই গ্রামে ঢুকতে মানা রাস্তা কেটে দিচ্ছে হানা ঢাকা মুখ,যায় না চেনা। কেউ বলে হাম বড়ো কেউ বলে মাও ছাড়ো। শহর থেকে আসে লোক রাতের বেলা জ্বলে চোখ। লাসের ওপর আন্দোলন ভুমি রক্ষায় সরব হন। বিরোধীতায় মৃত্যুবরণ ধরতে হবে তার চরণ। নইলে গ্রাম ছাড়তে হবে মানবে যারা তারাই রবে। মরবে অমিত মরবে শিখা এসব নাকি চোখে দেখা। মুখ খোলেনি নন্দী কাকা সব মরেছে এখন একা। এখনো তারা তাদের ঘরে ভয়ে ভয়ে ছাণ্ডা ধরে। বদলে গেছে তাদের নেতা লাল হলুদে গোটায় হাতা আগের দলে প্রচুর চোর এই দল আনবে ভোর। কি হলো কেন হলো? কোনটা যে ছিল ভালো? টিভির পর্দায় পোড়া লা...

প্রেমের দেবী

 ।।প্রেমের দেবী।। দেবপ্রসাদ জানা   ০১.০৪.২০২১ ঘুমালে ফুল? ঘুমাও। ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন আসুক। স্বপ্নরা সব জেগে থাকুক। তোমার মধ্যে আগুন জ্বলুক। সেই আগুনে আমি পুড়ে মরতে চাই। ক্ষত বিক্ষত হোক আমার হৃদয়। রক্তাক্ত হোক ভোরের সূর্য। আমার প্রেম,তোমার হৃদয়ে জ্বালুক প্রদীপ। ঘন্টার ধ্বনি হোক প্রেমের মন্দিরে। সুগন্ধি ফুলের সাজে তুমি - নানা অলঙ্কারে সু সজ্জিত দেবী- আমার মন্ত্রে মগ্ধ হও তুমি। সেই মন্দিরে দেবী হবে তুমি।

জীবন চক্র

     জীবনচক্র দেবপ্রসাদ জানা    ০২.৪.২০২১ যখন কষ্টের কাক ভাঙ্গা কার্নিসে- এসে ডাক পাড়ে সকালে- সকাল সকাল বেদনার পাহাড়  যেন বুকের ওপর এসে বসে। নিয়তিরা আঘাত করে,ঠিক সুখের  আলো জ্বললে,মিষ্টি সময়ে।  অসময়ে ঝরা পাতা,তাতেও আগুন লেগে দাবানলে পুড়ে যায়, সুখী সবুজ গাছ- আর রঙবেরঙের সুগন্ধি ফুল। আমরা প্রতিরোধ করি, চেষ্টা করি, দুঃখ গুলোকে বাইরের, ছ্যাতলা ধরা ভাঙা প্রাচীরের ওধারে রাখতে। না তা হয়নি কখনো- বড় জেদী এই দুঃসময়ের কষ্টের কাক গুলো,কার্নিসে সে বসবেই। জীবন মানে,কঠিন সংগ্রাম,সকলে জানি। সুখদুখের বেহিসেবী লড়াই,আমরা তাও জানি। আমরা সকলে খেলি তা নিয়ে প্রতিদিন। তবুও দোষারোপ করি, ভগবানকে।

নেশা

 ।।নেশা।। দেবপ্রসাদ জানা অদ্ভূত একটা নেশা লেগেছে মনে খেলার নেশা। রেসের মাঠে - দুরন্ত ঘোড়ার খুরে গোঁজা ছুরি। দেরি নেই,দেরি নেই,খেলা হবে শুরু। বহু ঘোড়া ছুটছে, খুরের শব্দে - আকাশ বাতাস কাঁপছে, জীবনের রেসকোর্স পেরিয়ে - গদির লড়াই এ,কেউ আগে,কেউ পিছে। অর্থ আর গদির নেশায় চলেছে ছুটে, হয়ে উন্মুখ। বিশ্রাম নেই নিশিদিন,  হারিয়ে ফেলেছে দিক বেদিক,  দিগন্ত প্রান্তর ছুঁয়ে ছুঁয়ে স্বপ্ন সঞ্চয়। পরমার্থের সন্ধানে- এ কোন পথের পথিক, সকল ভোগ বাসনায় লিপ্ত  মধুর অমৃত রসের- সকল লোভ হিংসা পাপাচারে- ইতিহাস হবে। এই অমৃত মধুর সুখে,কি জগৎ ভরে উঠবে?

অক্ষর কথা বলে

  ।।অক্ষর কথা বলে।।   দেবপ্রসাদ জানা  ভবিষ্যৎ,ভবিষ্যতের ভবিষ্যৎ ছোট্ট শিশি ভরে রাখা অমৃতের মতো। পৌঁছে দিয়ো কবি সবার কাছে। শিশির সিক্ত ফুলের রেনু-জীবন ডাকে আঁধারে। ঘুম ঘোর চাঁদ ডাকে প্রেমের পাখিটাকে, সব যুদ্ধ একদিন থেমে যাবে পলকেই- ইতিহাস কথা কবে ছাপা অক্ষরে, টপটপ করে পড়বে কবিতার রস। খেজুরের রসের মতো,ফাঁসি দেওয়া - কলসীর উদরে। জন্ম নেবে ভবিষ্যৎ। শব্দ জব্দ হবে,প্রতিটি ফোঁটায়  একটা একটা কবিতা জন্ম নেবে, কবির হাত ধরে, কলমের জঠর থেকে। আক্রোশ ভরা কবিতা একদিন, বন্দী হবে কারাগারে-সভ্যতার জেলখানায়। যুবক উপন্যাস,ষোড়শী কবিতা - পরকীয়ায় লিপ্ত হবে ভবিষ্যতের ঝোপে, বিপ্লব আসবে সাদা খাতার বক্ষে, হ্যাঁ ভরিয়ে তুলবে চৈত্রের খরা দুপুর।

অনন্য প্রেম

 ।।অনন্য প্রেম।। দেবপ্রসাদ জানা   ৩.০৪.২০২১ সবাই থাকে তোমার কাছে - শুধু আমিই পারি না। সবাই দেখে তোমাকে - শুধু আমিই দেখতে পাই না। সূর্য দেখে চোখ খুলে, বাতাস দেখে স্পর্শ করে, শাড়ি গহনা জামাকাপড় থাকে জড়িয়ে ধরে। শুধু আমিই ধরতে পারি না। আমি কেঁপে উঠি,আধো জাগরণে, আমি টের পাই,বধির নির্জনতায়- অন্তহীন ধোঁয়ার বৃত্ত রচনা করে তার ভিতরে তোমাকে দেখি। আমি কেঁপে উঠি বারবার,তোমার উহ্য ইশারায়। সবাই পায় তোমার ভালোবাসা, আমার শুধুই আশা।  তোমার নিঃশব্দ হাত কবে ধরা দেবে? আমি অভিষিক্ত হতে চাই,তোমার চেতনায়। আঙুলে আঙুল দিয়ে,গ্রন্থিতে গ্রন্থিতে। আমি শুধু ছবি দেখি,আমি শুধু মনে করি- আমি শুধুই অশ্রু ফেলি। কেন? তোমার গায়ের গন্ধ চাই, তোমার প্রেমের ছন্দ চাই, আমি তোমার আদর চাই, আমার সঙ্গেই তোমার দূরত্ব বেশি, তোমাকে সবাই ভালোবাসে, তাই তারা কাছে আসে। আমি যে কেন,পাই না প্রিয়া  তোমার হাতের মিষ্টি ছোঁয়া। কেন গো?কেন প্রিয়া? কেন আমি অনন্ত ঘুমে একা?