Posts

Showing posts from May, 2024

কবিতা

কবিতা দেবপ্রসাদ আমি অনেক লিখেছি, কবিতা লিখেছি, প্রেমের কবিতা ভালোবাসার কবিতা,  প্রেমে পড়ার কবিতা,  প্রেমে পড়ে, হৃদয় পাঁজর পুড়িয়েছি, পোড়া পাঁজরের ছাই, কবিতায় ঢেলেছি, লুকিয়ে কেঁদেছি, পাথরে মাথা ঠুকেছি, হেরে যাওয়া প্রেম, কবিতায় এনেছি। দুখের কবিতা, দুঃখ পাওয়ার কবিতা, হয়তো প্রেমই - শুষে নিয়েছে নিঃসৃত রক্তকণা, শরীর বিকীর্ণ তেজে পুড়েছে পুরাতন দুঃখ। লিখতে পারিনি, আবার দুঃখ চেয়েছি। অজানা অচেনা কাউকে ভালোবাসতে হারিয়েছি সম্মান, কিনেছি দুঃখ, কবিতা তোমার জন্য, কবিতা তুমি আমাকে ভালোবাসো নি, হাসির কবিতায় শব্দ কিনেছি, শব্দ নিয়ে খেলেছি, হাসি আসেনি, হাসতে মানা কবিতা। আনন্দের কবিতা, পৌরাণিক কবিতা, কেন লিখেছি কেউ জানে না,  আমিও জানি না।  কেউ প্রশ্ন করলে বলি, দুঃখ ভোলার জন্য। কিন্তু দুঃখ ভুলতে পারি না,  মদের মতো, দুঃখ ভোলার জন্য মদ, মদ খেলে দুঃখ বাড়ে, তাই মদ ছাড়ে না। কবিতা, কিছুতেই ছাড়ে না, দুঃখ ভুললে কবিতা আসে না।

একটা ভুল

আজ আর বিধু আসেনি, একা একাই চা করে খেতে হলো, সকাল ছটায় উঠি, সূর্য ওঠা না দেখলে দিনটা ভালো যায় না, শীতকাল, ভোরের কুয়াশা  কাটতে না কাটতে দুপুর চলে এল। আজ রবিবার তাই কোন তাড়া নেই, শ্রীমতি ঝগড়া করে বাপের বাড়িতে, একটু আধটু ঝগড়া রোজই হয়, কাল যেন একটু বেশিই হয়ে গেল। অন্যদিন ঝগড়া হলে সঙ্গে সঙ্গে মিটে যায়, খাবার কথা বলে, কাল আর বলেনি, আমিও জোর করিনি, বিধুকে বলেছিলাম, কাল আসতে হবে না, কারণ রবিবার ও একটু ছুটি পেতে চায়, বাড়িতে আমরা তিনজন, আমি শ্রীমতি আর বিধু, ও কিন্তু আমাদের বাড়ির কাজের লোক নয়, আমার মামার ছেলে, একটু বোকা সোকা, মামা গত হবার পর এখানেই থাকে, বিয়ে করেনি, যদিও. বিয়ের বয়স এখনো যায় নি। রান্নাবান্না সব পারে ওর বৌদি না থাকলে. আমার কোন অসুবিধা হয় না, বাজার করা থেকে, ভাত বেড়ে দেওয়া। কথায় কথায় একটা কথা মনে পড়ল, বিধুর মাথায় একটা টিউমার আছে, ও জানে না, মাঝে মধ্যে অজ্ঞান হয়ে যায়, এটাই ভয়ের কারন, কখন যে ক ড্যাক্টিটি এমে জটবে বলতে পারিনি যা হওয়ার ছিল হয়েছে। আপারেশন করানো ঠিক হবে, আছে, তাকে এত সইর দিন বাঁচার তাও ঠিক করতে পারেনি ডাক্তার। 1 যদি ভাবে সারাদিন কাজ করবে, তাহলে সারাদিন, যদি প...

আবার

আবার দেবপ্রসাদ আবার ধ্বংস হবে পৃথিবী,  আসবে কল্কি, অথবা কল্কি রূপে কৃষ্ণ, আরো একটা কুরুক্ষেত্র, আমরা এই মহাপ্রলয়ের শাক্ষি হবো, লক্ষ লক্ষ যে মহামারণ অস্ত্র গুলো এবার নামবে মহাযুদ্ধে। উঠবে ধুলোর ঝড়, জড়িয়ে ধরবে, গোটা পৃথিবীকে,  ঘুমিয়ে পড়বে শীতল অন্ধকারে বরফে বরফে গোটা বলয়, কেউ থাকবে না,  কয়েকশ লক্ষ বছর পরে আবার উঠবে সূর্য। বরফে ঢাকা গোটা পৃথিবী আবার স্বচ্ছ হবে। গলে যাবে বরফ, শীতলতা কেটে উষ্ণ হবে পৃথিবী। ধর্ম হবে পথ, সত্য হবে জীবন। পাপ থাকবে না,  কালের কলঙ্ক গুলো ধুয়ে মুছে যাবে। অস্ত্র গুলো চলে যাবে মাটির নিচে। আবারও হাজার বছরের মহাকাব্য লেখা হবে। আসবে মহাবিজ্ঞানী,  মহা বিশ্ব কেটে ছিঁড়ে বের করবে,  আমাদের ইতিহাস। আমাদের ভালোবাসা গুলো, অঙ্কুরিত হবে। মাটির নিচ থেকে বেরিয়ে আসবে।  আমরা বইয়ের পাতায় হবো মহানায়ক।

রেমাল

রেমাল দেবপ্রসাদ শুন্য মাঠে সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত দেখেছি,  শুন্য প্রান্তরে নয়াগিরি। গম্ভীর সৌন্দর্যে ভরা শান্ত সনাতনী গায়ত্রীর মতো নব মাধুরী। মাধবের সমাগমে অতসীর মতো হলুদবরণ পরাগ মেখেছি। প্রত্যক্ষ করেছি তৃণ নব জলধারায়  ফুলের খেয়াল দেখেছি। সমুদ্রের নীলজলে ধ্রুপদ গীতিমালা  ডিঙি নৌকার উথাল পাথাল। তরী থেকে তাকিয়েছি কত দূর দেশে;  ঘুর্ণি ঝড় অপরিচিত রেমাল।

ওরে নরাধম

ওরে নরাধম দেবপ্রসাদ এখনো তোর ঠোঁটে কুলুপ পড়েনি আর কত মিথ্যা বলবি? চুপ কররে নরাধম। তোর গলার স্বর বাজছে?  তোর চোয়াল এখনো শক্ত? এখনো তোর শিরদাঁড়া খাড়া, বাঁকে নি আর কত প্রলোভন দিবি? পথে ধারে। ঠোঁট কামড়ে রক্তারক্তি করে লাভ কি? অকারণে পথের ধারে এত সমাগম? এই মিথ্যা তামাসা গুলি বন্ধ না করলে নয়? দুই সত্তার বিপরীতমুখী স্রোত রচনা করে, অবরুদ্ধ অন্ধকার। শহরে মহল্লায় এত প্রতিরোধ, এত হানাহানি, শহরের রাস্তা বন্ধ করে, হাঁকাহাঁকি, অলিতে গলিতে মাইকের তড়পানি, কি হবে?  আতঙ্ক চাপা দিয়ে, বিচার সভা,  কে কতটা অপরাধী, ডিজিটাল লড়াইয়ের আগে, মুখোশ গুলো টেনে হিঁচড়ে খুলে দিয়ে লাভ কি? এ দেওয়ার রাজনীতি কেন? তোমার হাতের মুঠোয় ধরা, তোমার কালো ইতিহাস,  তবে কেন খুলে ধরো অন্যের ছেঁড়া পাতা গুলো? দ্যাখো কামারশালার জ্বলন্ত ফার্নেসে, আগুনের শিখা লাফ দিয়ে ওঠে,  ইস্পাতের ক্রোধে।  শিকলেরা হাত বাড়িয়ে আছে,  আলিঙ্গন পাবে বলে, বোধের ভেতরেই যে আলোছায়া অন্ধকার, শিকল পরেনি এখনো কেউ,  সত্য মরণ-ফাঁসে,  তবে কেন, জ্বলে উঠছো, আগুনের জ্বালা ঘোচাতে।

ধর্মের জন্য

ধর্মের জন্য দেবপ্রসাদ  যারা মানুষ মারার জন্য অ্যটমবোমা বানায় তারা বিশেষ বিজ্ঞানী রূপে সম্মানিত হয়। যারা সেই বোমায় পুড়িয়ে দেয় গোটা  দেশ। বীরচক্র পেয়ে তারাও গর্বিত হয় দেশে দেশে। নক্ষত্র যুদ্ধের ফর্মূলা বানিয়ে ঠাণ্ডা ঘরে বসে একবারও ভাবে না কার জন্য এই মহা যুদ্ধ। মাপ করবেন ধর্মাবতার - সারা পৃথিবীর কলম খুঁজছে শব্দ। কবিতা গল্পে উপন্যাসে ইতিহাস লিখতে চায়। না প্রতিবাদ করেনি কেউ,  রামের দেশেও নানা অস্ত্রে অগনিত নিরীহ  বানর সেনা, নিরীহ রাক্ষসের রক্ত ঝরেছে। কৃষ্ণ যখন ধর্মের বানী বোলে- কোটি কোটি মানুষের বলি চেয়েছিল, ধর্মের নামে,  কত অস্ত্র এসে জমেছিল কুরুক্ষেত্রে? কেন পারেনি অস্ত্র গুলোকে বিলুপ্ত করে দিতে? তাহলে তো যুদ্ধ হতো না, আসলে ধর্মের জন্য অস্ত্রে প্রয়োজন। পৃথিবীর ভার লঘু করতে পাপের জন্য, পাপের জন্য ভগবানের, ধর্মের জন্য যুদ্ধ, যুদ্ধের জন্য অস্ত্রের। মরণ প্রোথিত আত্মা জ্বলেছে রক্তে জ্বলেছে কর্মে, সৃজন নির্মাণে।

কে তুমি?

কে তুমি? দেবপ্রসাদ কে তুমি? বড় বড় চোখ নিয়ে,  কাজলে ঢেকে চোখের কিনারা আলোর পৃথিবীকে কালো চোখে দেখে, রাতের আঙিনায় এসেছো আমাকে নিতে কে তুমি?  এসেছ সোহাগের হাত ধরে নীরবে, কুটিল রাত্রির অন্ধকারে অমানিশায়। কি নিদারুণ এক যন্ত্রণা নিয়ে স্পর্শ করেছো, এই নিঃসঙ্গ অন্ধকার। বিশ্বাসঘাতকের স্মৃতি সৌধে,  রাত্রির প্রহরী আঁধার, দীর্ঘশ্বাস ফেলছে। কে তুমি? তুলে দিতেছ মনের পাহারা - কেন করো-আঙ্গুলের অবৈধ ইশারা   তুমি ফুলের সুরভী না কৌমার্য নেশা কে তুমি? আঁচল আলগা করো- কোমল, দৈহিক আবেদনে,  অন্ধকার করে রেখে, মৌনতার ময়ূর নাচাও অনাকাঙ্ক্ষিত আলোকে। আমি হবো না কখনো কোনদিন,  তোমার প্রেমিক,  আমি হবো প্রেমের প্রতিদ্বন্দ্বী।

সাহেব-৩ আমরা গরীব বলে

সাহেব-৩ আমরা গরীব বলে আজ সাহেবের অঙ্ক পরীক্ষা, খুব সকালে, না সকালে না ভোর রাতে উঠে চোখে মুখে জল দিয়ে অঙ্ক করতে বসেছে, মা পিঠে পিঠ দিয়ে বসেছে, দশবারোটা অঙ্ক করে সাহেব মাকে বলল- - শুয়ে পড়ো না মা, কেন শুধু শুধু জেগে আছো? এই অঙ্ক পরীক্ষাটা হয়ে গেলেই তো শেষ, তারপর তো নাইনে উঠে যাবো, সাহেবের একটাই শখ  স্বপনকুমারের বই পড়া, ডিটেকটিভ বই, গোয়েন্দা দীপক চ্যাটার্জীর গল্প গুলো সে খুব ভালোবাসে, এই পরীক্ষার সময় ও বইয়ের ভেতরে বই রেখে পড়তো, মা একদিন দেখে ফেলেছে, তারপর থেকে পড়তে বসলেই মা পাশে বসে থাকে।  - তুই পারবি তো বাবা? পড়ার থেকে গল্পের বই বেশি পড়িস। - পারবো মা, খুব ভালো পরীক্ষা হয়েছে। - কি করে বুঝলি? তুইতো প্রতিবারেই বলিস, ভালো হয়েছে, একটু বেশি পড়লে, আরো একটু ভালো করতে পারতিস তুই,। - এবার পরীক্ষা খুব ভালো হয়েছে মা। বলেই সাহেব আবার অঙ্কে মন দিলো, সব অঙ্ক আগে হয়ে গেছে, এখন শুধু প্রাকটিস করছে, ততক্ষণে মা উঠে চলে গেছে, খুব সকালবেলা থেকে মা কাজে চলে যায়, রাতের করা ভাত খেয়ে স্কুল যায় সাহেব, স্কুল থেকে ফিরে পাঁচটার সময় আবার খায়, আজ মা আলু ভাতের বদলে আলু ভাজা, আর ডাল করেছে, সাহেবের প্রিয় খাবার, খু...

কঠিন অসুখ

কঠিন অসুখ দেবপ্রসাদ জানা চিরসুখী কজন প্রেমে কে কহিবে? কুৎসিত কালো লেগে যায় মনে, ব্যথিতবেদন সেও কি বুঝিতে পারে।  কী যাতনা প্রেমে, বুঝিবে সে কিসে? কিঞ্জল চোখের গভীরে শুধু - কামনায় ভরা লালসার তৃষ্ণা  বিষের দন্ত দংশিবে তাহারে।  চাপ চাপ শুকনো রক্তের দাগ  যতদিন রবে, না হবে না হবে কভু ভালোবাসার কথা। এ যে লেলিহান আগুনের শিখা ক্রমে বেড়ে চলে দাবানলের মতো  আঁচলে আঁচলে, ঈষৎ হাসিবে, শুনিবে না কিছু ধর্মের কথা, প্রেমের আঙিনায় বসে দৈহিক সোহাগ চায় ঘৃর্ণিত সুষমা। অন্ধকার পথে, বন্ধ দরজার ঘরে  বুঝেও না বুঝিবে, যাতনা প্রেমের, বিপন্ন পৃথিবীর গ্রহচ্যুত অদ্ভুত প্রাণীর এ এক কঠিন অসুখ। 

অভিমানী

'আমার আহত অভিমানের দুঃখে, তুমি ব্যথা পেয়ে কি করবে বন্ধু?  সত্যিই আমি হয়ত অতিরিক্ত অভিমানী।  অজস্র ছোট বড় দুঃখ আছে, এই অভিমানী সত্ত্বা নিয়ে আজ পর্যন্ত  চোখে পড়ার মত কেউ আমাকে তেমন করে বলেনি, তুমি বললে, আদরে আপ্যয়নে মনের জট খুলে দিলে। অথচ বিষয়টায় - আমি খুব একটা আগ্রহপূর্ণ ভাবে যে নেবো সেটাও আমার অভিমানী মন মানতে পারেনি। আমি বিদ্রোহী, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির   কথা বলতে চাইনি,  ভালোবাসার মানবতার নানান - গতানুগতিক ধারণা মনকে শতাব্দীকাল ধরে, আচ্ছন্ন করে রেখেছে।  এই গতানুগতিক ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে যেদিন কেউ আরো 'অভিমানী' করে তোলে, অনুভবের দেওয়ালে আলতো আঁচড় দেয়, 'অতিরিক্ত ভালোবাসায় অভিমানী' মনকে  বিদ্রোহী' কবিতায় 'আমি অভিমানী চির-ক্ষুব্ধ হিয়ার কাতরতা, ব্যথা-সুনিবিড়' কবির এই উচ্চারণ আমাদের হৃৎপিণ্ডের পেরিকার্ডিয়াম কিংবা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের মেনিনজেসকে স্পর্শ পর্যন্ত করতে পারল না। তাই হয়ত আমরা আমাদের চিন্তা ও মননে অভিমানী নজরুলকে আজও খুঁজে পেলাম না।

সাহেব - ২ তুই যে বললি মারবে না।

সাহেব-২ তুই যে বললি মারবে না দেবপ্রসাদ জানা মায়ের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার ভেঙে নিয়ে পালিয়ে গেল সাহেব, ক্লাস এইটে পড়া একটা ছেলে, অভিমানে দুঃখে কষ্টে কি যে হলো, অজন্তা সার্কাস বসেছে দক্ষিনেশ্বরে, স্কুলের ব্যগে অনেক খুচরো পয়সা, দশ টাকার টিকিট কেটে সার্কাসে ঢুকে পড়লো, আর স্কুলের মুখো হয়নি সে, সঙ্গে রঞ্জিত, সার্কাস দেড়টা থেকে, বেশ কিছুক্ষণ গঙ্গার ধারে, স্নানের ঘাটে কাটিয়ে, মায়ের নাট মন্দিরে, আড়িয়াদহের মন্দিরে আরো কিছুক্ষণ, তারপর সার্কাস, চারটে বেজে গেল সার্কাস দেখতে, আজ মায়ের কাছে একটা বায়না করেছিল সাহেব,  - আমাকে একটা ভালো কেট্স কিনে দিতে হবে, - এখন পয়সা নেই বাবা, পরের বছর কিনে দেবো। - না আমার এখনি চাই, কেট্সটা ছিঁড়ে গেছে আর পরা যায় না, সকলে কত ভালো ভালো জুতো পরে আসে স্কুলে, আমি কেন কষ্ট করে এসব পরবো, কেন কিনে দেবে না, - তোর বাবার কি জমিদারি আছে? লোকের বাড়ি বাসন মেজে তোকে পড়াচ্ছি, না হলে রিক্সা টানতিস্।  অনেক কষ্ট নিয়েই হয়তো মা বলেছিল, তবুও রাগ হলো সাহেবের, তার বন্ধুরা কত ভালো ভালো জুতো পরে, ভালো জামা কাপড় পরে, বছরে একটা স্কুলের জামা একটা প্যান্টের বেশি সাহেব কোনোদিন দেখেনি, পুজো সময় সাহ...

মা

মায়ের আঁচলে রাখা সীমাহীন আদর তাঁর স্নেহে গড়ে ওঠা এই স্থুল দেহখানি তাঁর হাতের চেটোয় রাখা এক আকাশ শান্তি কোটি কোটি বছরের -

শান্তি

শান্তি  দেবপ্রসাদ জানা অগ্নিময় পৃথিবীতে হিংস্র উন্মত্ত সূর্যের ঝলকানি।  নির্মম উত্তাপে পৃথিবীর দেহ, পুড়ে ছাই। বুকের উপর পাষাণের ভার,  জনে জনে কটূক্তি, আরো ক্রুদ্ধ ধরণী। আগুনের আভায় বিপর্যস্ত নিস্তব্ধ দুপুরে- খালবিল নদীনালায় পড়ন্ত বিকেলের সূর্য পরিশ্রান্ত হয়ে ঘুমোতে গেলেও স্বস্তি নেই,  অসহনীয় উত্তাপে জ্বলছে পুড়ছে মেঘবালিকারা। একলা চাতকের উর্ধ্বপানে তাকিয়ে থাকা। মাঠের ফসলে অকাল পক্কতা, চাষীর মুখ অসভ্য ভাষায় অনবরত তিক্ত। তৃষ্ণার্ত পাখিরা, পিপাসার্ত পশুরা,  ফুটপাতের ধুলিকণা, তারাও ছাড়ছে না- গালমন্দ করছে অনবরত,  তবু ধরণী একটুও রাগ করেনি। নীল আকাশটায় অল্প মেঘের জন্ম হয়, পৃথিবীর বুকে তখন শূন্যতার মরীচিকা। ঘূর্ণি বাতাসে শিশু মেঘেরা এলো ঝড় বেশে,   ঝঞ্চা ছোটে সারা দেশে নিষ্ক্রান্ত হলো পুঞ্জ পুঞ্জ মেঘ।  ভেঙে পড়লো আকাশ, আক্রান্ত পৃথিবী  একবারও বলবে না থামো,  শিলাবর্ষণ আর বজ্রনির্ঘোষ ক্ষতগুলো, হাঁ করে খেতে এলো, ক্ষেতের ফসল গুলো, আঘাতের পর আঘাতে ক্ষতবীক্ষত ভূমি, অস্পষ্ট উদ্বেগে কটূবাক্যে পীড়িত,  তবু দেখো মাতৃসম ধরণী শান্তি দিতে-  একবার...

কে হাসে

কে হাসে দেবপ্রসাদ জানা কে হাসে অন্ধকারে? দুনিয়াগ্রাসী অন্ধকার,  পৃথিবীময় ভাঙা শব্দের স্রোত, মরুভূমির বালির সাথে সাথে,  অন্ধকার নক্ষত্রের দেশে আবছা জোছনা। নিদাঘ সন্তাপে আঁধার আকাশ।   বিশাল প্রান্তরে ধুমপায়ী ঈগল, উদ্দিপ্ত রক্তের প্রতিবাদে কবিতারা-  নক্ষত্রে নক্ষত্রে ছায়াপথ খোঁজে। রত্ন শোভিত একটা তরণী,  অনন্ত অন্ধকার সাগরে,  লম্ফের বাতি জ্বেলে হাসে আমার-ভিতরে | সুশীতল ছায়া তলে, নিদাঘ সন্তাপে,  রম্য বৃক্ষ শীতের আগুনে হাত শেকে বসন্তের চাঁদের মুখে কৌমুদী হাসি,  দুখের তিমির নাশে | চলমান বিপ্লব, হাত জোড়ো করে দাঁড়িয়ে  স্বাগতম করে।