Posts

Showing posts from November, 2020

সনেট ।। ধ্রুবতারা।।-১৪২

   ।। ধ্রুবতারা।। দেবপ্রসাদ জানা   ২৬.১১.২০২০ জানি লোকটা পাগল,তা বলে বেচারা  আকাশের ধ্রুবতারা,চেনে না তা নয়। তার ঘরে উঁকি দিচ্ছে,তোমার স্মৃতিরা, আকাশের দিকে চেয়ে,কত কথা কয়। একদিন হাতে হাত,ফুলের বন্ধনে বাধা বিপদ পেরিয়ে,টোপর মাথায় লাল চেলি গায়ে দিয়ে হোমের আগুনে সাত পাকে বেঁধে তবে,এনেছিল গাঁয়। একফালি চাঁদ যেন,ঘর আলো করে ছিল কয় মাস,কিযে হলো?সায়োনারা। আঁধার ঘরের,এক কোনে,তার তরে, সেযে জ্বেলে গেল বাতি,হয়ে শুকতারা। স্মৃতিরা আজও উঁকি দেয়, তার ঘরে পাগল লোকটা তাই, ধ্রুবতারা ধরে।

সনেট।।ফেসবুকে।।-১৪১

   ।।ফেসবুকে।।  দেবপ্রসাদ জানা   ২৪.১১.২০২০ কেন বৃথা লড়াইয়ে,নামো ফেসবুক? তোমার আদরে সব,হয় আটখানা। একা ঘরে বৌদিদের,অতি বড় দুখ। সংসারেতে দ্বন্দ্ব হয়,তবুও মানে না। ফেসবুকের অসুখে,ভুগছে সংসার ইনবক্সে প্রেমালাপ, হয় রাতারাতি। আকাঙ্খায় পারদানি,ওঠে বারবার। সংসারে অশান্তি করে,বেচারা দম্পতি। কতদেশ ঘুরে আসে,ফেসবুক পাতা, অনলাইন বন্ধুত্বে, বন্দী সারাক্ষন। একা ঘরের বৌদিরা,ভুলে যায় ব্যথা। হৃদয়ে জন্মায় ফুল,ভরে ওঠে মন। ওরে বধু শোনো সবে,হও রাজহংস। জল শুধু পড়ে রবে,দুধ হবে ধংস।

সনেট ।।সূর্য সাগরে।।-১৪০

 ।।সূর্য সাগরে।। দেবপ্রসাদ জানা  ২৫.১১.২০২০ সমুদ্রের পেট চিরে,সূর্য জন্ম নেয়- নীলাকাশে মহানন্দে,পথ চেয়ে থাকে। সাগরের ঢেউ তারে, কত দোলা দেয়, বেড়ে ওঠে শিশু সূর্য,আকাশের বুকে। শিশু সূর্য গায়ে দিয়ে,সোনার রোদ্দুর বিপুল উল্লাসে খেলে,সাগরের সাথে তুষারে ঢাকা পাহাড়,দেখিল যদ্দূর কেন সূর্য হামি দেয়,সাগরের মাথে। মনের গভীরে তাই,অভিমান তার নবজাতকের হাসি,একা সাগরের? বরফ চাদরে মোড়া,বলিছে পাহাড়  কুয়াশাই বন্ধু হোক,বহু বছরের। মনে মনে জানে সূর্য ,খুব বেশি হলে। কেটে যাবে অভিমান,কুয়াসা না হলে।

সনেট ।।চেতনার শব্দ।।-১৩৯

 ।।চেতনার শব্দ।। দেবপ্রসাদ জানা তোমার চোখের তারা,কি যেন বলছে ডেকে,শুনতে পাও কি তুমি চিত্রলেখা। অনলে আগুন দিতে, হৃদয় কাঁদিছে  তোমারই আঙিনায়,পোড়ে পত্রলেখা। একা একা করিডোরে দীর্ঘ অপেক্ষায়  কেন যে দাঁড়িয়ে ছিলে,এখনো বুঝিনি। আমার লেখা কবিতা,তোমারে শোধায় তুমি কি ভালোবেসেছ?বুঝতে পারিনি। তোমার উষ্ণ ঠোঁটের নিচে ক্ষত,তাই অজানতে যদি ঘটে,গুপ্ত পরকীয়া অন্ধতায় লাগে যদি, কলঙ্কের ছাই। বিষাদে কাঁদছে বুঝি, ঐ বিসন্ন হিয়া। কবিতার অহঙ্কার,লিখে ফেলি গদ্যে। সব পাপ ধুয়ে ফেলি,চেতনার শব্দে।

সনেট ।।উজ্জ্বল সৌমিত্র।।-১৩৮

 ।।উজ্জ্বল সৌমিত্র।।   দেবপ্রসাদ জানা      ২৩.১১.২০২০ ঘুমালে সূর্য ঘুমাও, উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক। নীলের স্বপ্ন,চোখের তারায় তারায়- অধরে অবাক হাসি, উন্মুখ মষ্তিষ্ক। সুকন্ঠ রচনা তব, দেহ সুষমায়। দিগন্ত বিস্তৃত যশ,সমুদ্র গভীরে   ভেজা মনে কত শত,প্রাণঢালা গান। তোমার জীবন ছিল,সততাকে ঘিরে। নিজেই নিজেকে খুঁজে,ভরেছিলে প্রাণ। তোমার কবিতা লেখা,বোধের আভাস রঙিন গোলাপে ভরা, মিঠে প্রেমপত্র। চোখের গহ্বরে আঁকা,জোড়া ক্যানভাস। রুপালি জোছনা তুমি,উজ্জ্বল সৌমিত্র । পূর্ণ হলো দেহলীলা,বন্ধ হলো খাতা। ছিন্নতার ব্যথা জানে,ঝরে পড়া পাতা।

সনেট ।।নট নাট্যাচার্য।।-১৩৭

 ।।নট নাট্যাচার্য।। দেবপ্রসাদ জানা   ২৩.১১.২০২০ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়,আমাদের সূর্য, সূর্য গেছে পৃথিবীর,অন্যপারে চলে দিগন্তরেখার বাইরে,নট নাট্যাচার্য। সব কাজ,করে গেলে,সব রঙ ঢেলে। নদী বয়ে যেতে যেতে বালুচরে এনে হারিয়েছে চুপিচুপি,বালির আড়ালে। সত্যজিতের অমল,চারুলতা আনে। অপুর সংসারে তুমি,কত মান পেলে। অন্ধকারে ডুবে গেল,নাটকের পাড়া শুন্য হলো টালিগঞ্জ,নক্ষত্র বিহীন চলে গেলে অকস্মাৎ,এত কিসে তাড়া? সমস্ত উজাড় করে,চলিলে সেদিন। কেমনে হারাল সেই,অমূল্য জীবন। কেড়ে তাকে নিতে পারে্?বিদেহী মরণ।।

সনেট ।।কৃষ্ণ প্রেম।।-১৩৬

 ।।কৃষ্ণ প্রেম।। দেবপ্রসাদ জানা  ২২.১১.২০২০ কানাই তোর বাঁশির সুরে রাধা কাঁদে কদম গাছের তলে। হারিয়ে কলস, হা কৃষ্ণ, হা কৃষ্ণ, নীল যমুনার বাঁধে, কেমনে সে ফেরে ঘরে,কাটিল দিবস। ভেসেছে কলস,নীল যমুনার বুকে - দুষ্টু কানাই বাজাল বাঁশি আচম্বিতে, রাধা তাই খোঁজ করে ভোরবেলা তাকে। যমুনা নদীর তীরে,কদম তলাতে। জ্বালায় কৃষ্ণ,সকাল বিকাল,হেথায়  কৃষ্ণ প্রেমে রাধারানী,পাগল হয়েছে সকাল হতে শ্যামের,বাঁশি বেজে যায়। উথালি পাথালি মনে,শরম গিয়েছে।  বিশুদ্ধ প্রেমের ছোঁয়া,লেগে গেছে হায়, রাধা রাধা করে কৃষ্ণ,যমুনাতে যায়।

সনেট ।।যদি শিব হতাম।।-১৩৫

 ।।যদি শিব হতাম।।  দেবপ্রসাদ জানা    ২১.১১.২০২০ একটা চাঁদ থাকত,কপালে আমার। প্রাণ ভরে জোছনায় স্নান করাতাম। শরীর জুড়ে শুধুই,আলোর বাহার। দিনের আলোতে নয়,নাই ডাকতাম। একটা গঙ্গার স্রোত,জটা দিয়ে বেয়ে পড়তো শিবের মতো,শুদ্ধ হতে তুমি। কালি সব ধুয়ে যেতো,গঙ্গাস্নানে গিয়ে। পাপ তাপ ধুয়ে গিয়ে,সতী হতে তুমি। শরীরময়,সুগন্ধি ফুলের বাগানে- মৌমাছির ভিড় হবে,মধু খাবে এসে। তোমার দেহের মোহ,সৌন্দর্যের বানে করবে বস ভোমরা,ভারি অনায়াসে  আসল প্রেমিকা পাবে,প্রেমিক হৃদয়। গুন গুন গান গাবে,প্রেমিকা সদয়।

সনেট ।।শেষবারে একবার।।-১৩৪

 ।।শেষবারে একবার।।    দেবপ্রসাদ জানা      ২০.১১.২০২০ নারে,পারবো না তোকে,ভুলতে কখনো বক্ষের অতলে আছে,ভীষণ বেদনা। মন চায় ধরে রাখি,জীবন এখনো, পড়ে আছি লয়ে তোর,শেষ ছবিখানা। তোর প্রতি ভালোবাসা,কমিয়েছে আয়ু  নানা রঙ নানা কথা মনে পড়ে যায়। কখন আসবি ওরে , ধরে প্রান বায়ু। কলঙ্ক যা ছিল তোর,ধুয়ে দেবো আয়। কার ভয়ে অপেক্ষায়,দুয়ারের ধারে  চাঁদের কলঙ্ক নিয়ে,চাঁদ আছে বেশ। তোর ভালোবাসা তুই,দিস নারে তারে, শেষবারে একবার,প্রেমের আবেশ। শেষ প্রদীপের শিখা জ্বলে আছে তাই, প্রাণবায়ু বেরতে যে,আর দেরি নাই।

সনেট।।মনোফুল।।-১৩৩

 ।।মনোফুল।। দেবপ্রসাদ জানা  ১৯.১১.২০২০ তোমাকে দেখেছি সেই,কুয়াশায় মোড়া এক ভোরের সকালে,শিউলির তলে। ঐ ফুলের সাঁজি হাতে,টপকিয়ে বেড়া এসেছ বাগানে মোর,হাতের নাগালে। যেন স্বর্গের রমনী,এসেছে বাতাসে- ভেসে,যেখানে মিলেছে,হৃদয়ে হৃদয়। পৃথিবীর সব সাদা মেঘেরা আকাশে- ভিড় করে আছে ওই,পাকিয়ে বলয়। শিউলির মতো মন, ঘ্রাণে মুখরিত। পূবের দিগন্তে হাসে,প্রেমোহারী সূর্য। শিউলির হাসি ছিল,বেশ পুলকিত। কেড়ে নেবে সব হাসি,অহঙ্কারী সূর্য। পড়ে থাকে মনোফুল,ঘাসের উপরে। তুলে নিয়ে এসো প্রিয়া,সাঁঝির ভিতরে।

সনেট ।।প্রেম সঙ্গমে।।-১৩২

 ।।প্রেম সঙ্গমে।। দেবপ্রসাদ জানা    ১৮.১১.২০২০ তোমার ছবিতে আমি,ওঁত পেতে থাকি  কোথায় লুকিয়ে আছে?গোপন পিপাসা। অধরে অধর দিতে,ডাকে শুখ পাখি দেহের কাননে ঝরে,অমৃত সহসা। অমৃত অধরে তব,পান করি সুখে অলি সম দেহ মোর,মত্ত হলো রসে। জাগরিত দেহ মোর,চোখে চোখ রেখে প্রেয়সী রজনী সখী,জোছনায় হাসে। প্রস্তর স্তম্ভের নিচে,প্রেম কাঁদে পড়ি মরা নদী বান ডাকে,সাগর সঙ্গমে উঠেছে অমৃত কুম্ভ,টানাটানি করি। আহা রে প্রেমের ব্যথা,পড়িল শরমে। প্রেমের জোয়ারে ভাসে,হৃদয় আমার। এত প্রেম কোথা ছিল?ছবিতে তোমার।

সনেট ।।এ এক নাট্যমঞ্চ।।-১৩১

 ।।এ এক নাট্যমঞ্চ।।   দেবপ্রসাদ জানা      ১৭.১১.২০২০ যখন ভাবনা গুলো কুপথ ধরেছে বুকের বাঁ পাশে সেই,থিয়েটার হলে প্রতিদিন সততার নাটক করছে। বাসনার দূতক্রীড়া,নাটকের দলে। জীবন্ত ক্ষতের দাগে অবিকল সত্য, যাতনায় বেজে ওঠে গিটারের সুর  দেহের পসরা ঢেলে, দিনরাত নৃত্য। অসুখের তানপুরা বাজে ভরপুর। মিথ্যে ভালোবাসাটাকে সত্যের আল্পনা  দিয়ে সাজিয়ে,দেহের বাগিচা সেচন। মনের রুক্ষ ভূমিতে, ফলন মন্দ না। অন্ধকার নাট্যমঞ্চে,অচিরেই পচন। কপট প্রেমের মায়া, দেখে যায় শুধু। অম্লান অচেনা হাসি,খেয়ে যায় মধু।     

সনেট ।।পারবে কি তবে?।।-১৩০

 ।।পারবে কি তবে?।।    দেবপ্রসাদ জানা আজ নতুন করেই তোমার মনের গভীরে ঢুকতে চাই,গোপা,চিত্রলেখা। আগমনী সুর, মনে বাজছে,গানের। তোমার হৃদয়ে লাল গোলাপ যে আঁকা। বেহাগ সুরে বাজবে কেনরে সোহাগী আজ আমার তোকেই পাওয়ার পালা ওরে গোপারানী আমি জানি তোর লাগি কতপথ কতকথা, ঠিক মধ্যবেলা। আলাদা কোন গুরুত্ব,আজ আমি নই। তোমার কবিতা মোরে দিয়েছে সম্মান। তোমার ভাষায় মোরে,শুধু খুঁজে পাই। তোমাকে নিয়েই মোর,এই প্রেমগান।   অনুভব করি আমি,তুমি সব দেবে সব আগে ভেবে দেখো, পারবে কি তবে?

সনেট ।।এসো নররূপে।।-১২৯

 ।।এসো নররূপে।।   দেবপ্রসাদ জানা    ১২.১১.২০২০ তুমি অন্তর্যামী,তুমি অসীম বিধাতা আমি দেখেনি,তোমার রূপ রস গন্ধ। তবুও বিরাজমান,তুমি বিশ্ব পিতা। সর্বত্র ছড়িয়ে আছে তোমার সুগন্ধ। তোমার ছায়ায় শান্তি,তাও আমি জানি তোমার সান্নিধ্যে মুক্তি,তুমি মহাকাল। তোমার অস্তিত্ব শুধু মন্দিরে? কি জানি? তুমি জলেস্থলে আছো,শুনি চিরকাল। তবে কেন হিংসা রোষ,জগতের বুকে। তোমার সৃষ্টিকে করো নাশ দয়াময়। নানা রঙে নানা সাজে দেখি কত লোকে, তোমার দেওয়া শক্তি, করে অপব্যয়। দেখা দাও,কথা দাও,এমন সঙ্কটে। নররূপে দেখে যাও,ভালো নেই মোটে।

সনেট ।।সেই অন্ধকারে।।-১২৮

 ।।সেই অন্ধকারে।।   দেবপ্রসাদ জানা      ৮.১১.২০২০ সবাই যখন আলো নিয়ে খেলা করে, নিয়নের আলো বুকে করে পথ চলে, জোছনায় পাশাপাশি,আমি অন্ধকারে  খুঁজি তারে,গঙ্গা পাড়ে,বট বৃক্ষ তলে। প্রবল ঘৃণায় কাঁপে,আকাশের চাঁদ। আমাকে দেহের মধ্যে,আষ্টেপৃষ্ঠে ধরে খেয়েছো অমৃত সুধা,ভেঙ্গে ছিল বাঁধ, আমার ষোড়শী দেহে,রসাল অধরে। বুঝিনি সেদিন আমি,তোমার নজরে, আমার সদ্য যৌবন। বিশ্বাসে ঐ হাতে রেখেছি আমার হাত,অন্ধ কারাগারে, যেখানে করুণা নেই,দয়া নেই রাতে। নষ্ট দেহটার জন্য, ঘোর অন্ধকার । নষ্ট করল যে,তারে আলোর বাহার।

সনেট ।।পরিচয়।।-১২৭

 ।।পরিচয়।। দেবপ্রসাদ জানা ১০.১১.২০২০ আমি তোমার অপেক্ষা করেও দেখেছি। বহুদিন বাসস্ট্যান্ডে,লেকের ধারেও। আমি ফোনে বারবার,কলও করেছি। ম্যাসেঞ্জারও করেছি,দেখনি সেটাও। তোমার ভাবনা,তার মধ্যেও ঢুকেছি, শরীরে ঢুকে দেখেছি,তোমার হৃদয়, বিস্তৃত প্রান্তরে একা,বিষন্ন দেখেছি। দীর্ঘশ্বাস ফেলে,হাল ছেড়েছি নিলয়। সঙ্গমের শেষে,সেই তোমার আমার, শেষ দেখা হয়েছিল, নীল বিছানায়। বলতে,প্রেম যৌনতা নয়, অঙ্গীকার,  আমিও,দিন গুনছি,আছি অপেক্ষায়। তোমার সন্তান দেহে,জায়গা করছে। সে ও তার পরিচয়,ভেতরে খুঁজছে।

সনেট।।মহামায়া জায়া।।-১২৬

 ।।মহামায়া জায়া।।   দেবপ্রসাদ জানা     ০৬.১১.২০২০ হে প্রভু কেমন লীলা,সব শক্তি তারে? বুদ্ধি পেতে সরস্বতী,টাকা পেতে লক্ষ্মী। বউয়ের সাথে দ্বন্দ্ব, থাকি অনাহারে। শক্তি চাই,দূর্গা কালি,যেন তারা যক্ষী। সব শক্তি,নারীশক্তি,বাবা তোমরা কি? তুমি আছো হিমালয়ে,নারায়ন একা। বাঘ্রচর্মে লজ্জা ঢাকো,শাস্তি পাও নাকি? সাপ আছে পাহারায়,কই যাবে কাকা? লম্ফঝম্ফ,নামযশ,কিছু নয় কাজে। চক্রবক্র ছেড়ে বিষ্ণু,বাঁশরিয়া মস্ত। ত্রিশুলটা দান করে, ঢুগঢুগি বাজে। বুদ্ধি শক্তি ধন দিলে,নিজে শুন্য হস্ত। ভয়ে ভয়ে ঘরে থাকি,সব শক্তি তার। ভগবান হেরে গেছে,আমি কোন ছার।

সনেট ।।বিশ্বাস।।-১২৫

    ।।বিশ্বাস।। দেবপ্রসাদ জানা   ৭.১১.২০২০ ভাবছি মন্দির করে,তাতে তোর ছবি বসিয়ে পুজো করব,হেমন্তের মাসে, হালকা শীতের ছোঁয়া,মুসম্বিনী রবি। শিশিরে ভেজা সকাল,নির্মল বাতাসে। তার মন বিশ্বাসের হাত ভালোবাসে। বাসুক না,ভালোই,কি আর এসে যাবে? যে হাতে কালিমা নেই,সে হাত কোথায়? সকালের মতো স্বচ্ছ হাত তুমি পাবে? তার হাতের আদর মাখানো বিশ্বাস, মোর বুকের উপরে,নীড় গড়ে তোলে। ভালোবাসার অঙ্গনে, ভরসার প্রশ্বাস। রুপালী জোছনা ভরা আকাশের কোলে। আমি খুব সহজেই,তার উষ্ণ স্পর্শে, নীলকন্ঠ হয়ে যাই, অনন্য আদর্শে।

সনেট।। যদি পারো।।-১২৪

 ।। যদি পারো।। দেবপ্রসাদ জানা    ৯.১১.২০২০ শুকিয়ে যাওয়া ধান ক্ষেত ধরে,খালি - পায়ে,যদি পারো তুমি,হেমন্তে, হালকা- হিমেল আঁধারে এসো,নিয়ে পুষ্প ডালি, এসো নীল আকাশের শেষে,শুধু একা। যদি পারো কাশবনে এসো একবার। ঝরে পড়ে থাকা সাদা শুষ্ক কাশফুল তোমার পায়ের উষ্ণ ছোঁয়ায় আবার  জেগে উঠবে আনন্দে,সেই কাশফুল। গোলাপ শিউলি ফুলে আবৃত আমার  সদ্য মৃত দেহ খানা,আছে অপেক্ষায়। কোকিলের কুহুতানে,রাতের আঁধার- কেটে,জীবন আসবে ভোরের আভায়। জীবন কান্ডারী এসো,লাল শাড়ি গায়।  যদি পারো এসো বধূ,ঘোমটা মাথায়।    

সনেট ।। ময়লা।।-১২৩

 ।। ময়লা।। দেবপ্রসাদ জানা   ৫.১১.২০২০ দুখের পাহাড়ে জন্ম নিয়েছে আগাছা। দুখের থেকেও তারা,আরো ভয়ঙ্কর  যেটুকু সুখের নদী,তাতে পরগাছা- দুখের পাহাড়ে কষ্ট, দুখের উপর। একটা ইদুঁর চাই, দুখের পাহাড়ে সে শুধু দুখের মাটি,কেটে ফেলে দেবে একজোড়া হলে ভালো,সংখ্যায় তো বাড়ে এক দুই তিন করে, বংশ বৃদ্ধি হবে। ইদুঁর পারে দুখের পাহাড় কাটতে। সাহসী ইদুঁর, মনে বসবাস তার। লুকিয়ে থাকে মনণে। নিষ্ঠুর আঘাতে অলস মনের শক্তি,জাগিবে আবার। দুখের পাহাড় খানা,ময়লার টিলা। জমেছে ময়লা মনে,ফেলো এই বেলা।

সনেট।।জীবনের ধারাপাত।।-১২২

 ।।জীবনের ধারাপাত।।    দেবপ্রসাদ জানা      ০৩.১১.২০২০ হাসিকান্না সুখদুখ,জীবন সংগ্রাম। সময়ের তালে তালে,চলে একসাথে। মৃত্যুহীন জীবনের,নাই কোনো দাম। জন্মমৃত্যু দুজনায়,থাকে এক রথে। বাকি সব অভিনয়,জীবনের মঞ্চে  সার্থক অভিনয়েই, সগর্বে প্রস্থান। শেষ সংলাপ যাহার,জাঁক রঙ্গমঞ্চে, সময়ের স্রোতে তার,যশ ভাসমান। জীবন অতীত হবে,কর্ম ভবিষ্যৎ  লোক মুখে নাম রবে,মরণের পর। বর্তমান নষ্ট হয়, হোক ভগীরথ, গঙ্গা তোরে নিয়ে যাবে,বছর বছর। জীবন নদীর ভাঁটা,অল্পক্ষন থাকে। অভিজ্ঞতা উপলব্ধি,তর তাজা রাখে।

সনেট ।।মহালক্ষ্মী।।-১২১

 ।।মহালক্ষ্মী।। দেবপ্রসাদ জানা ০১.১১.২০২০ এসো মাগো মহালক্ষ্মী,পৃথিবীতে এসো আকাশের বুকে দেখো,জোছনার খেলা। পূর্ণিমার চাঁদ ডাকে,তার পাশে বসো। জোছনার আলো জ্বেলে,দেখো এই বেলা। নমঃলক্ষ্মী,নমঃলক্ষ্মী,কোজাগরী রাত। এত আলো জোছনার,তবুও আঁধার। কিছু ঘরে ভরা আলো,কিছু ঘরে রাত। প্রদীপের বুক পুড়ে,যায় প্রতিবার। চারদিক দেখে এসো,সব অনাহারে না খাওয়া যত মুখ,খিদের জ্বালায়, তোমার কৃপার লাগি,উপবাস করে। জোছনা উপুড় করো,রাতের বেলায়। সবশেষে এসো তুমি,আমাদের ঘরে। কষ্টে যদি চোখে জল,ঝরঝর ঝরে।

সনেট ।। মা লক্ষ্মী ।।-১২০

 ।। মা লক্ষ্মী ।। দেব প্রসাদ জানা ৩১.১০.২০২০ দক্ষিণহস্তধারিনী পাশ,অক্ষমালা বামহস্তে নীলপদ্ম অঙ্কুশধারিণী, পদ্মাসনে উপবিষ্টা, শ্রীরূপ,নিরালা ত্রিলোকমাতা,সুন্দরী,হৃদয়হারিণী। সর্বালঙ্কারভূষিতা, ব্যগ্রহস্তে মাতা, সুবর্ণপদ্মধারিণী,বামে কুম্ভ ধরো । বরদাত্রীদেবীলক্ষ্মী,হে ত্রিলোক মাতা ধনদাত্রী মধ্যনেত্র জাগরিত করো। দিকে দিকে অনাহার,খাদ্যের অভাব,  জগন্মাতা দেবী, করো রাগ পরিহার। মুক্ত করো, অন্ন ভরো,কেন মৌনভাব? খোলো গো নয়ন তব,দেখো একবার । নিশীথে বরদা লক্ষ্মী,দেবী কোজাগরী। ধন রত্নে পূর্ণ করো, শুন্য এ গাগরী ।

সনেট ।।অদ্ভুত পূরাণ।।-১১৯

 ।।অদ্ভুত পূরাণ।। দেবপ্রসাদ জানা এ এক অন্য জীবন,পাতাশূন্য বৃক্ষ, আত্মক্ষতে চিরস্থির,ভরানো শূন্যতা। মুখোশে ঢেকেছি মুখ,অন্তরালে যক্ষ, মিথ্যে নয়,ভয়ঙ্কর সত্যি,গুপ্তকথা। আমারই লক্ষ্যভেদে সবার মরণ। এসে গেছি ধর্মরাজ্য স্থাপন করতে। পৃথিবীর নাট্যমঞ্চে,আমি দুর্যোধন। আমি শকুনির পাশা,যুদ্ধের চক্রান্তে। আমি কৃষ্ণ অস্ত্র ধরি,এই মহাযুদ্ধে রথের সারথী হয়ে,কতদিন রই? রক্তস্রোতে নদী হোক,এই ধর্মযুদ্ধে বিধাতা পুরুষ আমি,আর কত সই? নর নই,দেব আমি,দেবতার দান মহাপ্রাণ মহাকাব্য অদ্ভুত পূরাণ।।

সনেট ।।শ্যামাপোকা।।-১১৮

 ।।শ্যামাপোকা।। দেবপ্রসাদ জানা   ১১.১১.২০২০ শ্যামাপোকা গুলো রোজ,আলো চায় আলোর ভিতরে আছে, মরণের ফাঁদ। প্রতিদিন আলো তারে,কাছে যেন পায়, জোছনা কহিল শ্যামা,তোর প্রেম চাঁদ। শুনিল না শ্যামাপোকা,এত ভালো লাগা। বুদ্ধু শ্যামার,আলোর নেশা, কবে যাবে? পোকার জন্য আলোর,এই রাত জাগা। প্রেমের আগুনে পোকা,পুড়ে ছাই হবে। আমার ভালো থাকার গল্প বলি যাকে। কখনো আঁধার পথে,রেখে হাতে হাত। মনের আগুন শুধু, মরীচিকা ডাকে। আলোর ভেতরে থাকে,মরণের রাত। নষ্ট প্রেমে শ্যামাপোকা,করে আত্মদান, প্রেমের আগুন তারে, দিলো বলিদান।

সনেট ।।চমক।।-১১৭

 ।।চমক।। দেবপ্রসাদ জানা ৪.১১.২০২০ চমকে দিয়েছি আজ তোকে,তাই নারে? তোর মনে এত প্রেম,আমায় দিলি না? এতো কিসে ভয় তোর? শুধু পালাস রে। তোর চোখে কার ছবি?কেন বলিস না? কাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে,অন্ধরাতে একা। চমকে উঠিস কেন?প্রিয়া অকারণে। যার ছবি তোর চোখে,সেও বড় বোকা। এলোমেলো প্রেমে তোর,খুশী শতজনে। কিরে চমকে দিয়েছি কিনা বল তুই? তোর ভাষাতে বলিস,বুঝে নেব আমি। কার ছোঁয়া পেলে খুশী,হোস বল তুই? বল না আমায়,ওরে সহ্য করি আমি। প্রেম জোয়ারে ভাসলি যদি,পরবাসে । অদেখা প্রেমের মনে,ভালোবাসা আসে।

সনেট ।।প্রেমে পরাধীন।।-১১৬

 ।।প্রেমে পরাধীন।।   দেবপ্রসাদ জানা     ০২.১১.২০২০ ভেবেছ কি,লালশাড়ি আর লাল টিপে, আমার মনের মধু, নিয়ে নেবে তুমি? নিয়নের নীল আলো,আর গন্ধ ধুপে, আপন করে নেবে কি,রুক্ষ ওষ্ঠ চুমি! ওই আঁচলে লুকানো,অমূল্যরতন। লোভী নয়ন টানছে,সেইদিক পানে ফুলের গন্ধে মাতাল,করলে চরণ। কত কথা চুপিচুপি,বলে সাধারণে। তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে এল,দেখে মধ্য দেশ বাতাস যেন করছে খেলা,অকারণে। স্পর্শ তোমায় চমকে দিল? বেশ বেশ। বুকের আঁচল দিচ্ছো,ফেলে আনমনে। আদরে আদর দিলে,ধরে সারাদিন। উষ্ণ ভালোবাসা পেতে,হই পরাধীন।  

সনেট ।।সপ্তম আশ্চর্য।।-১১৫

 ।।সপ্তম আশ্চর্য।।  দেবপ্রসাদ জানা   ২৩.১০.২০২০ এ এক মহাসপ্তমী, সপ্তম আশ্চর্যে পুজো আছে প্যান্ডেলও আছে চারদিকে দেখতে পাবে না কেউ, ফল কৃতকার্যে সাতশ বছরে সাত ঘটনার ফাঁকে। আলোয় আলোয় ভরা,দেখি চারদিক লোকে লোকারন্য সব,দোকানে দোকানে চোখের তারায় অশ্রু,কেন বলে দিক মায়ের ঘরেতে ঢোকা বারন কে মানে? পুজো এসেছে আনন্দ,সাজের বাহারে  আনন্দ উল্লাস ডাকে,মায়ের কাছেই নতুন পোষাকে নানা নব অলংকারে গয়না দিয়ে সাজাবে,থাকবে পাশেই। হায়রে বিধাতা কিযে,অভিশাপ লাগে মায়ের আরাধনায়,নো এন্ট্রিও লাগে।

সনেট ।।মানুষ।।-১১৪

   ।।মানুষ।। দেবপ্রসাদ জানা ৩০.১০.২০২০ আমাকে মানুষ হতে দাও বসুন্ধরা। কেন ভরে দিচ্ছো মনে,কুসংস্কার সব। আলখাল্লা,নামাবলি যত পরম্পরা- তোমরা-সবাই খুলে নাও,তোলো রব। মোরে অমানুষ করে কিযে পাও তুমি। কোরান,পুরাণ,গীতা,বাইবেল,বেদ ধর্মের এত যে ভাগ,কেন রাখে ভূমি ? বুঝিনি আজও আমি,এ প্রকারভেদ। মানবিকতা পালন ,জীবনের ধর্ম। জীবনের সত্যি মানে,বুঝতে চাইছি। আমার ফাঁকা মন্দিরে,মানুষের কর্ম তাই যে অবিনশ্বর,বুঝতে পারছি। মন্দির আমার ধর্ম,মসজিদ কর্ম। আল্লাহ হৃদস্পন্দন,ভগবান বর্ম।

সনেট ।।কই এলে নাতো আর।।-১১৩

 ।।কই এলে নাতো আর।।       দেবপ্রসাদ জানা         ২২.১০.২০২০ "আবার আসিব ফিরে"এলে নাতো কবি? এই বাংলায় নবান্নে। না এলে না তুমি? ধানসিড়িটির তীরে,এঁকে দিতে ছবি রূপসী বাংলার। কাঁদে তব বঙ্গভূমি। এসো শালিকের বেশে,কিংবা শঙ্খচিল নয়তো মানুষ হয়ে, ঐ কাকের মত- কুয়াশার বুকে ভেসে,পার হয়ে ঝিল। কাঠাঁল গাছের তলে পথিকের মত। হলে নাতো হাঁস,নদী সাগর পাহাড়  কই কিশোরীর পায়ে ঘুঙুরের ধ্বনি হতে খুঁজেতো পাইনি,কোনদিন আর। এই পৃথিবীতে শুধু হাহাকার শুনি। ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হয়েছে এবার। পৃথিবীতে ঘনিয়েছে অদ্ভুত আঁধার।

সনেট ।।না প্রতিবাদ নয়।।-১১২

 ।।না প্রতিবাদ নয়।।   দেবপ্রসাদ জানা     ২৫.১০.২০২০ কত দূর আর যাবে,বিদ্রোহের ঝড়? প্রতিবাদের কন্ঠে কি,ছিল বীজ মন্ত্র? স্তব্ধতার পাথর যে,সর্বদা অনড়। প্রস্তর খন্ড শোনেনা,বিদ্রোহের মন্ত্র। রেশনে চাল ডালের তঞ্চকতা ভারি বিনামূল্যে বিতরণ,হয়েছে সদাই - বিনা প্রতিবাদে পাই,তাই ব্যাগে ভরি। এত হেরাফেরি কার?কিছু দেখি নাই। বস্তা বস্তা চাল ডাল গোপনে ফিনিস ডিজিটালের নামেই,কত কার্ড বন্ধ। সব গ্রাহকের পন্য,কোথায় জানিস? আগে পিছে সব কিছু সম্পূর্ণ প্রবন্ধ। যে গলিতে প্রতিবাদ,জন্ম নেয় আগে সেই গলিতেই তার,মৃত্যু আগে ভাগে।।

সনেট ।।কবিতার জন্ম।।-১১১

 ।।কবিতার জন্ম।।  দেবপ্রসাদ জানা ২৪.১০.২০২০ কবিতা যখন প্রেমে পড়ল সেবার তখন আমার হাতে,রক্ত মাখা ছুরি। কাটাকুটি করে জন্ম হয় কবিতার? লাবণ্যহীন কঠিন,অদ্ভুত বিচ্ছিরি। হাসপাতালে মায়ের পেট কেটে বাচ্ছা  সময়ের আগে মুক্ত। স্বরচিত কাব্য। আধুনিকতার ভীড়ে পরকীয়া কেচ্ছা, নাভিশ্বাস উঠে আসে,এমনই সভ্য। এ কবিতায় প্রেমের পোকা কুরে খায় দেহ, উষ্ণ চুম্বনের আগেই পাপেরা ঘোরাঘুরি করে কিনা? শুন্য স্তব্ধতায় আপাদমস্তক ঘিরে থাকবে পোকারা। প্রেমের কবিতা জন্ম স্বাভাবিক হবে তবে বিগলিত প্রেম চিরকাল রবে।

সনেট ।।ভেদাভেদ।।-১১০

  ।।ভেদাভেদ।। দেবপ্রসাদ জানা  ২১.১০.২০২০ যেই দেশের মানুষ, আটশ টাকার খাবার কিনে,একশ টাকার ভক্ষন করে,বাকি আস্তাকুঁড়ে ফেলে দেয় তার বেঁচে যাওয়া খাবার। সে রাজ নন্দন। সেই দেশে একদল লোক ফুটপাতে- থাকে খাবারের খোঁজে।খাদ্যের অভাবে। আস্তাকুঁড়ের খাবার,পড়ে যেন হাতে। একদল ফেলে দেবে,একদল খাবে। যেই দেশে কোটিপতি দেবতার বাস, যে দেশে ধনকুবের মানুষ দেবতা। গুরুদেবের আশ্রমে,মনিমুক্তা চাষ। বলতে পারেন কারা,এর হর্তাকর্তা? কি বলতে পারবেন?কেন ভেদাভেদ? কারোর সোনার থালা,কারো থালা ছেদ।

সনেট ।।অভিযোগ।।-১০৯

 ।।অভিযোগ।। দেবপ্রসাদ জানা ২০.১০.২০২০ তোমার আঁচল ধরে আছি মা,বোঝনি। এখনো ভয়ের স্বপ্নে, মা বলেই ডাকি- তুমি ছেড়েছ মা,আমি তোমাকে ছাড়িনি বিয়ে দিলে ছেলে পর,তাই চুপ থাকি। অথচ দেখো জামাই,কত,কত ভালো। বিয়ের পরে মেয়েই বেশি আপন যে, অন্যের ছেলে আপন,ভরে রাখে আলো। কি জানি হয়তো তাই,আমিও তাই যে। এক বাড়িতে থাকলে দোষ ত্রুটি সব, ভালোমন্দ থাকে কিছু,মেয়ে হলে মাফ। ছেলে হলে,বউয়ের পাল্লা ভারি সব কেন যে মা কিছুতেই,সইছো না চাপ। জীবনের সবকিছু অসমাপ্ত রেখে। তুলাদন্ডে মাপ করি,কে এগিয়ে থাকে।

সনেট ।।যারা বিবাহিত।।-১০৮

 ।।যারা বিবাহিত।।   দেবপ্রসাদ জানা     ১৯.১০.২০২০ অগত্যা হাঁটতে থাকি,তার হাত ধরে। জোছনায়,আলোছায়া পথে কুয়াশায়, যাকে আমি স্বপ্নে দেখি,রাতে দ্বিপ্রহরে রাতের গড়নে দিন,কেন যে হারায়? এক হাঁটু রক্ত,তার ওপর দিয়েই এক জঙ্গল মৃতেরা,হাহাকার করে তবু হাঁটতেই হবে,সে আছে কাছেই ওরা মরুক বাঁচুক,তার হাত ধরে। প্রতিবাদ হীন আমি,ঝামেলা বিহীন- জীবনের পথ ধরে,চলার কসম- খেয়েছি সেদিন,আর নয় কোনদিন, যার বিপদ তারই, শুধু পরিশ্রম। বিবাহিত জীবনের এটাই তো মজা ওরা বুঝুক ওদের,তুমি এসো সোজা।

সনেট ।।সাতনরী হার।।-১০৭

 ।।সাতনরী হার।। দেবপ্রসাদ জানা    ১৮.১০.২০২০ আজ একটু দেরিই হলো অগ্নিশিখা তুমি হয়তো বলবে যে,কোথায় ছিলে? কোথায় দিচ্ছিলে আড্ডা?পাইনি তো দেখা। নাকি আর কোনো বন্ধু,তার সঙ্গে ছিলে। সে এক অদ্ভুতকাণ্ড,গাড়িটা নিয়েই চাকার মধ্যে জড়িয়ে গেছিল সোনার- হার। সাতনরী হার, সেটার জন্যই  দেরি হলো আজ,ভারি অদ্ভুত ব্যপার। ওমা তাই নাকি?কই সেই হার দেখি। কত ভরি হবে বলে,মনে হয় সেটা সাত আট ভরি হবে নিশ্চয়ই,দেখি। দেখলে তো ভুলে গেলে,মিথ্যে কথা এটা। নাগো সোনা বন্ধু নয়,আড্ডাও দিইনি। অফিসে ভারি কাজের চাপ বেরোইনি।

সনেট।। ছদ্মবেশে।।-১০৬

 ।।ছদ্মবেশে।। দেবপ্রসাদ জানা  ১৭.১০.২০২০ ছদ্মবেশে একদিন, তোমার বাড়িতে- যাবো।"বলব গোপিনী,বাড়ি আছো আজ?" তুমি নাকাল হবেই,বলবে ভয়েতে- কেরে বাবা চোর নাকি?সবে হলো সাঁজ। হয়তো জড়িয়ে ধরে,কই ভালোবাসি। নয়তো,দরজা বন্ধ করে ধমকাই। যা আছে সবই দাও,মোরে হাসি হাসি। কি চাই বুঝেছ কিনা?সব কিন্তু চাই। এ বাড়িতে কেউ নাই,তুমি আমি একা ভালোবাসার এমন সুযোগ,কোথায়? আদর করে খাবার যদি থাকে রাখা ভালোবেসে খেতে দেবে,গোপিনী হেথায়। তারপর ছদ্মবেশ খুলে দেবো হেথা। রাগ করে তুমি আর,বলবে না কথা।

সনেট।।শরৎ ডাকে।।-১০৫

 ।।শরৎ ডাকে।। দেবপ্রসাদ জানা  ১৬.১০.২০২০ তোমার হাসির রঙ,শ্বেত দুগ্ধ জাত। তোমার হাসিতে স্নিগ্ধ,ভোরের সঙ্গীত  চোখে তোমার সবুজ অবুজ প্রভাত। শিউলি বনে,তোমার রূপের ললিত। নীল গোলাপ পাপড়ি, তোমার অধর- মিষ্টি মিষ্টি হাসি হাসে। সাদা কাশ ফুল প্রতিষ্ঠা করেছ তুমি দেহের উপর। তারার গহনা গায়,কর্ণে মেঘ দুল। বাতাস প্রেমের গন্ধ ছড়ায়। নীলাভ আকাশ,নীল হারিয়ে,গেল বনবাস। সোনালী ধান হারিয়ে সোনা,অরুণাভ। তোমার গায়ে শারদ প্রভাতী বাতাস । এখন কেন শরৎ? মধুর আহ্বানে - শরৎ আমায় ডেকো,দূর্গা বিসর্জনে। 

সনেট।। মন পাথারে।।-১০৪

 ।।মন পাথারে।। দেবপ্রসাদ জানা   ১৫.১০.২০২০ জলে নয় তো আগুনে,বিপন্ন লগনে শরতে নয় ফাগুনে,ডুব না দিলেও- ডুবিয়ে মারবে ওরা, ঐ আপনজনে- অতল সাগরে মন,ডুব না দিলেও। আমি তেমন ডুবুরি নই,তাও ভালো। তোমার মনের বিলে,ঝাঁপ দিয়ে আজ হাবুডুবু খেয়ে মন,সাঁতার শিখলো। গভীরে মনের থই,পেয়ে গেছি আজ। তোমার মনের নীল সমুদ্রে ডুবুরি ক্ষনকাল,সে সাগরে ডুবে মরি আমি। যা কিছু আমার তাই এনেছি সবরী কত আর পরীক্ষায়,তুল্য নেবে তুমি। মাঝ পাথারে তলিয়ে,যাওয়ার পরে নুড়ি পাথর কুড়িয়ে,নিয়ে আসি ঘরে।

সনেট।।নীরব ব্যথায়।।-১০৩

 ।। নীরব ব্যথায় ।। দেবপ্রসাদ জানা   ১৪.১০.২০২০ যেখানে হারিয়ে যায় মনের তরঙ্গ সেই কদম তলায়,আজ কৃষ্ণ নেই। বাঁশিও বাজে না সেথা,ওঠে না প্রসঙ্গ- তাদের। তবুও ছিল তারা এখানেই। ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে তাহাদের মুখ প্রেমই হারিয়ে যাচ্ছে,এসেছে শরীর ভালোবাসা আর প্রেম,বিপরীত সুখ। যার কাছে প্রেম দেহ,সে প্রেমে অস্থির। স্মৃতিগুলো মনে পড়ে,খোলা বারান্দায় জীবন গোধূলি বেলা,তবু নষ্টামিতে- হারানো যৌবন খোঁজে,নষ্ট নিরালায়। ভিক্টোরিয়ার চত্তরে,পূর্ণিমার রাতে। স্নেহ-সুধা ভরা চেনা গাছের তলায় ঝরে পড়ে প্রেম মধু, নীরব ব্যথায় ।