মনসামঙ্গল-১৪-২৩
মনসামঙ্গল-১৪ বস্ত্রহীন চাঁদবেনে, বসে আছে জলে। মড়ার কাপড় ভেসে, আসিল কিনারে। পরমা সুন্দরী রূপে, মা মনসা এলে। আরো পাঁচ কুলবধূ, সঙ্গ দিলো তারে। জরৎকারু পত্নী দেবী, জয় বিষহরী। পাঁচ বধু সদাগরে, দেখে মৃদু হাসে। জল আনিবারে যায়, কুম্ভ কক্ষে করি। যেই স্থানে চাঁদবেনে, বস্ত্রহীন বসে। কুলবধূ দেখিলে যে, ভারি লজ্জাকর। বস্ত্রহীন চাঁদবেনে, জলেতে লুকায়। সব কুলবধূ বলে, ক্ষ্যাপা দিগম্বর। বিবস্ত্রে রয়েছ কেন, ওহে ভেজা গায়। শ্মশানের বস্ত্র নিয়ে, চাঁদ গিয়ে পরে। ভিক্ষা মেগে খায় চাঁদ, নগরে নগরে। মনসামঙ্গল-১৫ বাম হস্তে ঝোলা তার, ছেঁড়া কাঁথা গায়। কালিদহে সদাগর, ভিক্ষা মেগে ফেরে। প্রসাদ কহিছে শোনো, মনসার হায়। ঝোলা হাতে চাঁদবেনে, তবেই না ঘোরে। ভিক্ষা মাগে ঘরে ঘরে, ভিক্ষা নাহি পায়। ক্ষ্যাপা দেখে শিশুগণ, ঘোরে পিছে পিছে। চাঁদ বলে পুরবাসি, এ কেমন দায়? কেন মোরে মারো বলে, চোখে অশ্রু মোছে। নাম মোর চাঁদবেনে, আমি সদাগর। সপ্ত ডিঙা ডুবে গেছে, কালিদহ জলে। নিঃস্ব আমি বস্ত্রহীন, ঘুরি ঘর ঘর। দুইবেলা অনাহারে, পেট মোর জ্বলে। সবলোক হাসে শুনে, কহিল তাহারে। অঙ্গ হৃষ্টপুষ্ট তবু, অভাব আহারে...