Posts

Showing posts from February, 2025

প্রেয়সী

বাংলার-অমৃতরাশি শব্দের ভাণ্ডার। শহীদের রক্তেরাঙা হৃদি কণ্ঠহার। মধুর মূরতি বীর, বাঙলা ভাষার। সমুখে সে মুখ-শশী জাগে অনিবার। কি জানি কি রাতভর দেখেছিনু যারে,  এ জনমে ভুলিব না, শহীদ সংগ্রাম। কাঁদিয়ে চাঁদের পানে চাই বারেবারে। তবুও ভুলিতে হবে, এই পরিনাম। কুসুম-কানন মন কেন রে বিজন বন, এমন পূর্ণিমা-নিশি যেন অন্ধকার! হে চন্দ্রমা, কার দুখে কাঁদিছ বিষণ্ণ মুখে! অয়ি দিগঙ্গনে কেন কর হাহাকার! হয় তো হলনা দেখা, এ লেখাই শেষ লেখা, অন্তিম কুসুমাঞ্জলি স্নেহ-উপহার,-ধর ধর স্নেহ-উপহার!

দুঃখটাকে এবার

দুঃখটাকে এবার অবশেষে চাকরিটা আমি পেয়ে গেছি তমা আর কোনো বাধা নেই- কালই যাবো তোমার বাড়ি বলব সবাইকে, তোমার কথা বলবো আমাদের প্রেমের কথা বলবো আমাদের ভালোবাসার কথা বলবো মাকে তোমার কথা বলেছি তমা, মা তোমাকে দেখতে চেয়েছে, তুমি রোজ বলতে বাড়ি নিয়ে চলো আজ নিয়ে যাবো, দেখবে আমরা কত গরীব, কেন তোমাকে এতদিন নিয়ে যাইনি, তোমাকে কোথায় বসাতাম? কি খেতে দিতাম? এক কাপড়ে মা তিন বছর আছে, বোনের বিয়ে হয়নি, বাবা সস্তা মদ খেয়ে পড়ে থাকে রাস্তার ধারে, তোমাকে বলিনি,  আমি রিক্সা টেনে, বাসন মেজে পড়ছি, তোমাকে বলিনি, মায়ের হাত দুটো হাজা হয়ে গেছে- লোকের বাড়ি কাজ করতে করতে, বাপের সহযোগিতা পায়নি কোনোদিন, রেললাইনের ধারে একটা কাঠপাতার ঘর চৌকির ওপর চৌকি রেখে ঘুমিয়েছি, আজ আমি চাকরিটা পেয়ে গেছি আর কোনো দুঃখ রইল না তমা, আমি তোমাকে সুখেই রাখবো- আর যেন বলো না এখন হবে না বাবা মানবে না, সরকারি চাকরি, স্কুল মাষ্টার, দোলা বৌদি, ওর স্বামীকে বলে চাকরিটা হলো, সাত লাখ লেগেছে, মাসে মাসে দিয়ে দেবো তাকে, ভারি ভালো লোক, আমাকে খুব ভালোবাসে, ভেবো না, তোমার কোনো অসুবিধা নেই, সব হয়ে যাবে, ঠিক ঠিক। সব স্বপ্ন পূরণ হবে, একটা বাড়ি করবো, ও একটা জমিও...

ব্রাহ্মন কেন ভিখারী জানেন?

ব্রাহ্মণ কেন ভিখারি? দেবপ্রসাদ একবার মহর্ষি ভৃগু বৈকুন্ঠধাম গেলেন, তখন শ্রীবিষ্ণু যোগনিদ্রায় মগ্ন ছিলেন, অনেক ডাকার পরেও যখন তিনি সাড়া দিলেন না, তখন মহর্ষি ভৃগু ভীষণ রেগে গিয়ে তার বুকে লাথি মারলেন, শ্রীবিষ্ণু জেগে উঠলেন। মহর্ষি ভৃগুর মনে অনুশোচনা হলো, তিনি বুঝতে পারলেন কি দোষ তিনি করেছেন, এদিকে লাথি মারার সময় মা লক্ষ্মী সেখানে ছিলেন, তারও খুব রাগ হলো, তিনি মহর্ষি ভৃগুকে অভিশাপ দিলেন, হে অহংকারী, ব্রাহ্মণ, শ্রীবিষ্ণুর হৃদয়ে আমি বাস করি, আর আপনি সেখানেই লাথি মারলেন? দুষ্ট ব্রাহ্মণের এতো তেজ? আপনার শক্তি তেজ অহংকার অর্থ সব থাকলেও, আপনি ভিখারিই থাকবেন। সেই থেকে পৃথিবীর সমস্ত ব্রাহ্মণ দারিদ্র্য নিয়ে জীবন অতিবাহিত করেন।

মমি ওৎজি দ্য আইসম্যান

ওৎজি, যে আইসম্যান নামেও পরিচিত, ইউরোপে আবিষ্কৃত সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য এবং সুসংরক্ষিত মমিগুলির মধ্যে একটি। ১৯৯১ সালে অস্ট্রিয়া এবং ইতালির সীমান্তে ওৎজটাল আল্পসে পাওয়া যায়, তার দেহাবশেষ ৫,০০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রায় ৩৪০০-৩১০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের। তার মৃত্যুর পর, দেহটি হিমবাহের বরফে প্রাকৃতিকভাবে মমি হয়ে যায়, যার ফলে তার শারীরিক গঠন এবং তার চারপাশের জিনিসপত্র উভয়ই সংরক্ষণ করা হয়। এই অসাধারণ সংরক্ষণ নবপ্রস্তর যুগের শেষের দিকে বা তামা যুগের একজন মানুষের জীবনের একটি অমূল্য আভাস প্রদান করেছে। ওৎজির দেহ উদ্ধারের ফলে প্রচুর জিনিসপত্র প্রকাশিত হয়েছে যা তার দৈনন্দিন জীবন এবং বেঁচে থাকার দক্ষতা প্রকাশ করে। পাওয়া জিনিসপত্রের মধ্যে ছিল চামড়া এবং পশমের পোশাক, যার মধ্যে একটি কোট, ট্রাউজার, জুতা এবং একটি ভালুকের চামড়ার টুপি। তার কাছে একটি তামার কুঠার, একটি চকমকি খঞ্জর, তীর সহ একটি ধনুক এবং একটি তূণ ছিল, যা ইঙ্গিত দেয় যে তিনি শিকার এবং প্রতিরক্ষা উভয়ের জন্যই প্রস্তুত ছিলেন। অতিরিক্ত আবিষ্কারের মধ্যে রয়েছে একটি আদিম ব্যাকপ্যাক এবং বার্চ বাকলের পাত্রে যেখানে উদ্ভিদ উপাদান এবং কাঠকয়লার চিহ্...

কল্কি

Kalki Avatar: কলিযুগে ফের জন্ম নেবেন কল্কি, কে ভগবান কল্কি? ভগবান কল্কিকে মনে করা হয় ভগবান বিষ্ণুর (Lord Vishnu) দশম ও শেষ অবতার। কল্কি পুরাণ (Kalki Puran) এবং অগ্নি পুরাণের (Agni Purana) মতো অনেক ধর্মীয় গ্রন্থ অনুসারে, কলিযুগের শেষে, ভগবান বিষ্ণুর দশম অবতার হিসেবে জন্ম নেবেন ভগবান কল্কি এবং পৃথিবীতে হওয়া সমস্ত পাপ ও পাপীদের বিনাশ করবেন তিনি। হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী, ভগবান বিষ্ণুর ১০টি অবতার রয়েছে, যার মধ্যে ৯টি অবতারের জন্ম হয়ে গেলেও এখনও জন্ম হয়নি বিষ্ণুর দশম অবতার তথা কল্কি অবতারের। অগ্নি পুরাণ অনুসারে, ভগবান কল্কি তীর ধনুক নিয়ে সাদা ঘোড়ায় চড়ে রয়েছে। তবে কল্কি পুরাণ অনুসারে, উত্তরপ্রদেশের সম্বলে একটি ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করবেন ভগবান কল্কি। তাই উত্তরপ্রদেশের সম্বলে তৈরি করা হচ্ছে কল্কি ধাম (Kalki Dham)। মহর্ষি বেদ হাজার হাজার বছর আগে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে কলিযুগে পৃথিবীতে ধীরে ধীরে নৃশংসতা ও পাপ বৃদ্ধি পাবে। একটা সময়ের পর এই যুগে বেদ অনুসরণকারী কেউ থাকবে না। চরমে পৌঁছে যাবে অধর্ম। তখন জন্ম হবে ভগবান কল্কির। ভগবান কল্কি তার গুরু ভগবান পরশুরামের নির্দেশে তপস্যা করব...

নিয়তি

।। নিয়তি।।      ১৮ দিনের যুদ্ধ শেষ, পিতামহ ভীষ্ম এখনো শরশয্যায়। কৃষ্ণ প্রতিটি মানুষের সঙ্গে দেখা করে তাদের মানসিক ও শারীরিক অবস্থার কথা জানছিলেন।   'দ্রৌপদীর'  শারীরিক ও মানসিক অবস্থা ভালো ছিল না। হস্তিনাপুরের মহারানী 'দ্রৌপদী' নিজের মহলে একাকী মনোকষ্টে ছিলেন।  ঠিক তখনই, "ভগবান শ্রীকৃষ্ণের" আগমন...*  দ্রৌপদী':- এ কি হয়ে গেল সখা? আমি এমনটা                 ভাবিনি কখনো, বলো কার কুছায়ায়                গোটা বিশ্ব অন্ধকারে ডুবে গেল আজ?                দারুণ দুর্নীত দুষ্ট দুরাত্মার লোভে                সাধের হস্তিনাপুর আজ জনশূন্য,                অধার্মিক দুরাচার বিশ্বাসঘাতক ।                 কপট লম্পট শঠ, দুষ্ট দুর্যোধন -                 ন্যায়ান্যায় বোধহীন কূর...

গিরিশ চন্দ্র ঘোষ

গিরিশচন্দ্র ঘোষঃ কবি, নাট্যকার, পরিচালক ও অভিনেতা ------------------------------------------------------ গিরিশচন্দ্র ঘোষ বাংলা মঞ্চ নাটকের সূচনালগ্নে নাট্য চর্চা ও নাট্য আন্দোলনে প্রতিনিধিস্থানীয় ও অপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্যক্তিত্ব। তিনি একাধারে কবি, নাট্যকার, পরিচালক ও অভিনেতা।  গিরিশচন্দ্র ঘোষ নিজ মেধা, মনন, নানা উদ্ভাবনী কৌশল এবং একাগ্র সাধনার মধ্য দিয়ে বাংলা মঞ্চনাটকে নবীন মাত্রা সঞ্চার করেছিলেন প্রথিতযশা ব্যক্তিত্ব গিরিশচন্দ্র ঘোষ। গিরিশচন্দ্র ঘোষের জন্ম ১৮৪৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি কলকাতার বাগবাজারে। ছেলেবেলায় বাবা-মা দুজনকেই হারালে তাঁর অভিভাবকহীন জীবনযাপন খুব একটা নিয়মতান্ত্রিক হয়নি।  ১৮৬২ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়ার পাট চুকে যায় সেখানেই। তবে সাহিত্য পাঠের আগ্রহ ছিল বরাবরই। তাই অর্থ উপার্জনের জন্য নানা পেশায় নিয়েজিত থাকলেও প্রচুর পড়াশোনা করতেন গিরিশ।  নাটকের সাথে যুক্ত হন ১৮৬৭ সালে- বাগবাজারের শখের যাত্রাদল প্রযোজিত মধুসূদন দত্তের ‘শর্মিষ্ঠা’ নাটকের গীতিকার হিসেবে গিরিশচন্দ্র ঘোষ। এরপর অভিনয় করেছেন দীনবন্ধু মিত্রের ‘সধবার একাদশী’ নাটকে ‘নিমচাঁ...

আমি মেঘ

মেঘ এই ঘনকালো রূপে যে আলোর ঝলকানি, বাতাসের সাথে প্রতি নিয়ত লড়াই,  তোমার আকাশখানা ঢেকে রাখি কিছুক্ষণ, স্বপ্ন গুলোকে এক সাথে বেঁধে, উড়ে যাই বাতাসের সাথে, দূর থেকে দূরান্তে,  সূর্যের তাপ, এলোপাথাড়ি বাতাসের- অপ্রতিরুদ্ধ লড়াই তোমরা বোঝনি, বুঝেছ স্বপ্ন, তৃষ্ণার্ত মানুষ- জতুগৃহ থেকে বেরিয়ে শান্তির পরশ। না না আমি বৃষ্টি দেবো না।  কেন বৃষ্টি দেবো?  বৃষ্টি দিলে আমার কি সুখ?  বৃষ্টি দিলে তোমাদের সুখ।  তোমাদের সুখে আমার কি প্রয়োজন! দেখো, আমার কি যন্ত্রণা নেই?  এই নিদারুণ বিদ্যুতাগ্নি, আমি অহরহ আমার হৃদয়ে ধারণ করছি।  আমার হৃদয়ে সেই সুহাসিনীর উদয় দেখিয়া তোমাদের চক্ষু আনন্দিত হয়, কিন্তু ইহার স্পর্শ মাত্রে তোমরা দগ্ধ হও। সেই অগ্নি আমি হৃদয়ে ধরি। আমি ভিন্ন কাহার সাধ্য এ আগুন হৃদয়ে ধরে? দেখ, বায়ু আমাকে সর্ব্বদা অস্থির করিতেছে। বায়ু, দিগবিদিক্ বোধ নাই, সকল দিক্ হইতে বহিতেছে। আমি যাই জলভারগুরু, তাই বায়ু আমাকে উড়াইতে পারে না। তোমরা ভয় করিও না, আমি এখনই বৃষ্টি করিতেছি পৃথিবী শস্যশালিনী হইবে। আমার পূজা দিও। আমার গর্জন অতি ভয়ানক তোমরা ভয় পাইও না। আমি যখন মন্দগম্ভীর গর...

নন্দলাল বসু

পদ্মশ্রী, পদ্মবিভূষন ও ভারতরত্ন সম্মানে সেই বিখ্যাত বাঙালি, চিত্রকর "নন্দলাল বসুর"শুভ জন্মবার্ষিকীতে আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাই। 🥀🌹🥀🏵️🥀🍁🥀🎂🥀🌻🥀🌼🥀🌷🥀 নন্দলাল বসু (৩ ফেব্রুয়ারি; ১৮৮৩-১৬ এপ্রিল; ১৯৬৬) ছিলেন একজন বাঙালি চিত্রশিল্পী। ছিলেন ভারতীয় শিল্পের অগ্রদূতদের একজন এবং প্রাসঙ্গিক আধুনিকতাবাদের একজন প্রধান ব্যক্তিত্ব। তিনি কর্মজীবনের শুরুতে পাটনা, রাজগির, বুদ্ধগয়া, বারাণসী, দিল্লী, আগ্রা, মথুরা, বৃন্দাবন, এলাহাবাদ ভ্রমণ করে উত্তর ভারতের শিল্প ঐতিহ্যের সাথে পরিচিত হন। প্রায় একই সময়ে পুরী থেকে কন্যাকুমারিকা পর্যন্ত প্রায় সমগ্র দক্ষিণ ভারত ভ্রমণ করেন এবং কোণারকের সূর্য মন্দির তাঁকে প্রভাবিত করে। ১৯২১ সালে তিনি বাঘ গুহার নষ্ট হয়ে যাওয়া চিত্রগুলি পুনরুদ্ধারের দায়িত্ব লাভ করেন। তিনি ভগিনী নিবেদিতার হিন্দু-বৌদ্ধ পুরাকাহিনী বইটির অঙ্গসজ্জা করেন এবং ঠাকুর বাড়ির চিত্রকলার তালিকা তৈরিতেও সাহায্য করেন। ১৯১৬ সালে রবীন্দ্রনাথ প্রতিষ্ঠিত বিচিত্রা সংঘে তিনি শিল্পকলার শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৩৫-৩৭ সালে পর পর তিন বছর তিনি কংগ্রসের বার্ষিক সম্মেলনে শিল্প প্রদর্শনী ব্যবস্থাপ...

বলাইচাঁদ বড়াল

আনন্দবাজারের সাংবাদিক এক সাক্ষাৎকারে তাঁকে প্রশ্ন করছিলেন - ' অনেক পুরস্কার তো পেয়েছেন, কোনটিকে জীবনের সেরা পুরস্কার বলে মনে করেন ?  তিনি কিঞ্চিৎ ভেবে বললেন --- ' সে অর্থে আমার জীবনের সেরা পুরস্কার কিন্তু অন্যরকম !! '  ---- ' একটু খুলে যদি বলেন ........! ' ----' দেখুন ....ভাগলপুর রেল স্টেশনের দিকে একপ্রকার দৌড়েই যাচ্ছি , সাথে কুলি আছে --- কলকাতা যাবার বিশেষ তাগিদে ....রেল স্টেশনে পৌঁছনোর আগেই দেখি -- ট্রেন ছেড়ে দিল --- !!!!   এবারে ট্রেন পরদিন । কি করব ভেবে পাচ্ছি না ! এদিকে না গেলেই নয় ! এই রকম অবস্থায় হাঁপাতে হাঁপাতে কোনরকমে স্টেশনের ভিতরে একটা বেঞ্চে বসে পড়লাম।ভাবছি ----  কি  করা যায় !  কিছুক্ষণ পরেই দেখি ---  যে প্লাটফর্ম থেকে ট্রেনটি ( কলকাতা যাবার ) ছেড়ে চলে গেল এইমাত্র ...       ওই প্লাটফর্মেই পিছন দিক থেকে একটা ট্রেন ব্যাক করে আসছে ! ট্রেন দাঁড়ালো ----  !! অনেকেই হৈ চৈ করছেন । এক ভদ্রলোক আমার সামনে এসে বললেন ---- " স্যার আমি আপনাকে চিনি ডাক্তার হিসেবে তো বটেই , কিন্তু তার থেকেও বেশী করে চিনি কারণ আপনার সব কটি লেখাই...

দ্রোণ আচার্য

দ্রোণাচার্য অভিশপ্ত পলাশ কলকাতার গতানুগতিক জীবনে যখন অস্থির হয়ে উঠছিলাম, তখন আমার এই ভবঘুরে মনে ইচ্ছে জাগল, দূরে কোন নির্জন স্থানে নিজেকে লুকিয়ে নেওয়ার। এক কাক-ডাকা ভোরে বেরিয়ে পরলাম ছায়াসুনিবিড় সবুজে ঘেরা অযোধ্যা পাহাড়, বাগমুন্ডী জলপ্রপাত, আর ছৌনাচে'র দেশ পুরুলিয়াতে । কলকাতা থেকে পুরুলিয়ার রেল দুরত্ব প্রায় ৩২২ কিলোমিটার । প্রায় আট ঘণ্টা ট্রেন জার্নির পরে, স্বপ্নের পুরুলিয়া স্টেশনে নামলাম। সঙ্গী ছিল আমার এক সঙ্গী। কলকাতাতে, আমাদের অফিসের পিয়ন। ছেলেটি সাঁওতাল পরিবারে জন্ম হলেও বেশ পরিপাটি। আমার সঙ্গেই থাকে, আমার রান্নাবান্না করে দেয়। ওর নাম ভুতু হলেও ভালো নাম একটা আছে।  পুরুলিয়া স্টেশন থেকে আমরা একটা ভাড়া করা গাড়ি করে রওনা হলাম অযোধ্যা পাহাড়ের দিকে। একটা অজানা উৎকন্ঠা এবং কৌতুহল যেন মনকে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। জানালা দিয়ে শাল পিয়ালের বন, সর্পিল চড়াই উৎরাই রাস্তার দুই পাশের সুউচ্চ পাহাড়ের মনমোহিনী এবং নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে দেখতে আমরা পূর্ব নির্ধারিত একটি আদিবাসী গ্রামে এসে পৌছলাম।                        ...

সুকান্ত

" ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময় পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি" এই কবিতার অংশটি কার মনে নেই? বাঙালির ঘরে ঘরে এখনো স্বগর্বে উচ্চারিত হয়, দেশ মাকে সম্মান জানানোর মত, আজ একশত বৎসর হয়ে এলো প্রায় তার জন্মের দিন থেকে, বাঙালির মনে মনে কিশোর কবি  সুকান্ত ভট্টাচার্য  (১৫ আগস্ট ১৯২৬ – ১৩ মে ১৯৪৭) ছিলেন বাংলা সাহিত্যের মার্কসবাদী ভাবধারায় বিশ্বাসী এবং প্রগতিশীল চেতনার অধিকারী তরুণ কবি। মাত্র একুশ বৎসর বয়সে প্রতিভাধর কবির দেহাবসান ঘটলেও সামান্য কয়েকবছরে অত্যাশ্চর্য কবিত্ব শক্তির পরিচয় দিয়ে অশেষ খ্যাতি অর্জন করেছেন তিনি। পিতা নিবারণ ভট্টাচার্য, মা সুনীতি দেবী। ১৯২৬ সালের ১৫ আগস্ট তিনি তার মাতামহের বাড়ি  কলকাতার   কালীঘাটের  ৪৩, মহিম হালদার স্ট্রীটের বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। এক নিম্নবিত্ত পরিবারে জন্ম। তার পৈতৃক বাড়ি  গোপালগঞ্জ  জেলার  কোটালীপাড়া উপজেলার  অন্তর্গত ঊনশিয়া গ্রামে। বেলেঘাটা দেশবন্ধু স্কুল থেকে ১৯৪৫ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে অকৃতকার্য হন। এই সময় ছাত্র আন্দোলন ও বামপন্থী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হওয়ায় তার আনুষ্ঠানিক শিক্...

ভগবৎ কথা

মহামুনি মহাজন যে পথে করে গমন সে পথ ধরে চলি, সেই মত কথা বলি মহাজ্ঞানে পূর্ণ মন, থাকে যেন আমরণ। বিষয় আশয় ফেলি, মহৎ হতে চলি। তুলসী মঞ্জুরী সহ বিল্ব পত্র দলে। করিনু পুজন আমি, হৃদ গঙ্গাজলে। পাঠক পাঠিকাগণ, মন আবরণ। খুলে এসো পড়ি সবে, নিত্য দিয়া মন।

সম্পাদকীয় মা সারদা

ভারতবর্ষ ধর্মভূমি, পুণ্যভূমি, এইদেশ ধর্মপ্রাণ। যুগ যুগ ধরে শত সহস্র মুনি-ঋষি, সাধু-সন্ন্যাসী, অবতার এবং ভাগবত মহাপুরুষগণ এই পুণ্যভূমি ভারতবর্ষে জন্মগ্রহণ করেছেন। তাঁদের কঠোর সাধনা ও তপস্যার ফলে ভারতের প্রতিটি ধূলিকণা, প্রতিটি বায়ুকণা পূত-পবিত্র হয়েছে। ভারতবর্ষ ধর্মভূমি ও পুণ্যভূমি নামে অভিহিত হয়েছে। এইদেশ ভগবানকে নিয়েই জীবন জনম কাটিয়েছে ও কাটাতে চায়। জড়বাদকেই যে দেশ চরমবাদ বলে ধরেছে এইদেশ সেই-দেশ নয়, এইদেশ চায় নীতি, ধর্ম ও আধ্যাত্মিকতা।” মহাপুরুষদের সঙ্গে তাদের সঙ্গিনী ও এই ভারতভূমিকে  ধন্য করেছেন, তাদের মধ্যে জগৎ জননী মা সারদা একজন মহীয়ষী নারী ও দেবীতুল্য।  সেই পবিত্র মনের সঙ্গ অনুভব করতে এবারের কলম সৈনিক সাহিত্য পরিবারির " ত্রৈমাসিক অঙ্গীকার " সমৃদ্ধ হয়েছে, মা সারদাদেবীর জীবনপাঠে, এই গ্রন্থপাঠে সকলেরই মনপ্রাণ শান্তি ও আনন্দলাভে পরিতৃপ্ত হবে, এ আমার বিশ্বাস। সহসম্পাদক দেবপ্রসাদ জানা কলম সৈনিক সাহিত্য পরিবার