মা
মা
দেবপ্রসাদ জানা
সন্ধ্যা নামলো ধীরে।
অন্ধকার গ্রাস করছে গোটা পৃথিবীকে।
আর সময় নেই, নদীর কাছে,
স্পর্শ করলাম হাতে, হিমশীতল
বুকের কাছে হাত দুটো জড়ো করা।
ফুরিয়ে যাওয়া আলোর দিকে চেয়ে,
এক পলকে।
সামনে যেন স্রোতস্বিনী তটিনী,
যেন কিশোরীর চঞ্চলতা।
স্টিলের থালায় একমুঠো ভাত।
একটু ডাল মেখে -
আলু সেদ্ধভাত মুখে তুলে দিতে চাই।
আদরে কোল ঘেসে আসে মা,
যেন ছোট্ট শিশুটি মায়ের আদর পেতে চাইছে।
পিছনে ঘনিয়ে আসা অন্ধকার,
দিন যাপনের ক্লান্তি তার সর্বাঙ্গে।
ওই বুঝি নদী ডাক দিয়ে বলে,
এসো হাত ধরো,
ওই অমানিশার অন্ধকারে, হারিয়ে যাই।
ক্ষেত পেরিয়ে, গ্রামের পথ ছাড়িয়ে,
নীলাআকাশ আর জল
যেখানে গলাগলি করে, সেই মোহনায়।
নীলঅন্ধকার ডাকে, ঘুমের দেশে।
সময় হলো শান্তির দেশে যাবার।
ঐ দেখো আকাশ আর মাটি
কালো চাদরে জড়িয়ে নিয়েছে শরীর,
সময় হলো নিজেকে আড়াল করার।
ছুটে চলা জীবনের স্রোত, স্তব্ধ মোহানায়।
আলো এসে যদি হাত ধরে স্বর্গরোহণের তরে।
মহাপ্রস্থানের পথে নিয়ে যায়-
আকাশের ঐ স্থির নক্ষত্রের আলো
এসে তাঁর হাত স্পর্শ করলো,
আলো আর আঁধারের সঙ্গমে-
দূরে বহুদূরে যেতে দেখেছি মায়ের-
দেহহীন আত্মা প্রদীপের শিখায় ভর করে,
ক্রমে ক্রমাগত দূরে, মিশে যাচ্ছে-
সদ্যস্নাত ভোরের কমলা রঙের রোদ্দুরে।
আলো আঁধারি পথে তাঁর দিকে চেয়ে রই,
ওই ফেব্রুয়ারির পয়লা রাতে,
সেদ্ধভাত মাখা হাতে।
তির তির করে কেঁপে ওঠে-
বুকের খাঁচায় থাকা অবুজ পাখিটা।
মা........।
Comments
Post a Comment