Posts

Showing posts from May, 2021

আমার মোনালিসা

    আমার মোনালিসা     দেবপ্রসাদ জানা         ৩০.৫.২০২১ মোনালিসা,কেমন আছো তুমি? লিওনার্দোর হাতের যাদুতে তুমি বিখ্যাত। কখনো হেসেছ,কখনো কেঁদেছ লুকিয়ে - কখনো ব্যাঙ্গের হাসি হেসেছ আমায় নিয়ে, আমার মোনালিসা,আমার স্বপ্ন, ছবিটা তোমার দেখি,বারবার দেখি, যতবার দেখি,ততবার পাল্টে যাও তুমি। তোমাকে দেখছি বহুদিন- আমার মোনালিসা আমার প্রাণ। লিওনার্দো এঁকে দেবেন স্যর, আমার চোখের জলে- রঙ গুলে আমার মোনালিসা? তোমার রঙের পাত্রে আমার অশ্রু ঢালা আছে। লিওনার্দো তোমার মোনালিসার মতো, আমার মোনালিসা ও পাল্টে যায় ক্ষনে ক্ষনে। সেটাও কিন্তু মনে রেখো - কেমন আছো মোনালিসা? 

চারযুগ

      চারযুগ দেবপ্রসাদ জানা    ২৭.৫.২০২১ উপনিষদের কথা অমৃত সমান। মনপ্রাণধ্যান সহ শোনে পূন্যবান।। ব্রহ্মার মানস কন্যা, সরস্বতী নামে। বিদ্যাদেবী সরস্বতী,প্রকৃতির ধামে।। জীবকুল পৃথিবীতে অত্যাচার করে। বারে বারে রূপভেদে ঝড় বৃষ্টি ঝরে।। অবাক ব্রহ্মার মন,সৃষ্টি তার দেখে। এমন সুন্দরী বুঝি,দেখে নাহি চোখে।। চোখে চোখে রাখে ব্রহ্মা চর্তুদিকে মুখ। দেবীর রূপের গুনে ভরিল যে বুক।। স্বর্গমর্ত পাতালের রমনীর নেশা। কামনা বাড়িল কামে ব্রহ্মার সহসা।। রূপে মুগ্ধ সয়ম্ভুর যন্ত্রণা বাড়িল। সরস্বতী বিনা বুঝি জীবন ছাড়িল।। সঙ্গমের তরে ব্রহ্মা চারদিকে খোঁজে। আপন কন্যার দেহে,কাম ভরে লাজে।। জন্মিল অসুর দেব,জন্মিল মানুষ। ঘুমেতে মুদিল আঁখি,রহিল না হুঁস।। দেবকুল অসুরেরা পারে না মানতে। ধ্বংস হলো জীবকুল,ব্রহ্মার অজান্তে।। ঘুম থেকে উঠে ব্রহ্মা দেখেই অবাক। কোথায় সাধের জীব,দেখে হতবাক।। পূনরায় লিপ্ত হলো সঙ্গমে আবার। জীবকুল সৃষ্টি করে,নিদ্রা চারবার।। চারযুগ সৃষ্টি করে,ঘুম দিতে যান। ঘুমিয়ে আছেন পিতা,হেথা যায় প্রাণ।। ধ্বংসলীলা শেষ হলে উঠিবেন পিতা। জগৎ সৃষ্টির তরে,সরস্বতী মাতা।। ব্রহ্মার ঘুমের কাল,এক এক যুগ।...

নাটক।। দুপুরবেলাা।।

                  দুপুরবেলা                দেবপ্রসাদ জানা কুশীলব বাছান সমাদ্দার পরাণ নন্দী বিশ্বজিৎ মহান্তী [নতুন নেতার আগমনে স্থানীয় কর্মীদের অভ্যন্তরে  তার প্রভাব ] বিশ্ব- নন্দীদা, দাঁড়িয়ে কি করছ ? দাদা আসছেন।         নন্দী-(চমকিয়ে মুখ ফেরাল) হুঁ,আসছে, আসছে তো আমি কি করব? কালকের ছোকরা,চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দিত,বাপে ঘরে ঢুকতে দেয় না। পাশের বাড়ির বৌদির সাথে দুপুরে ফস্টিনস্টি করত,এখন জেলখাটার ভয়ে,পাটির ঝান্ডা ধরে ঘুরে বেড়িয়ে নেতা হয়েছে।  বিশ্ব- ওসব বলে আর কি হবে? সিন্ডিকেটের নেতা। দলের আয় বাড়াতে আসছে, আর আমাদের পিন্ডি চটকাতে।   নন্দী- (বিকৃত-স্বরে) আসছেন ত আমি করব কি? খবর নেই, এত্তালা নেই—দাদা আসছেন। দাদা বলে ত আর মাথা কেটে নিতে পারবে না! বিশ্ব- ( উত্তেজনার বসে) আরে, তুমি কি মরিয়া হয়ে গেলে নাকি? নন্দী - মরিয়া কিসের! পাঁচ বছর পেয়েছে। এর বেশীতো কিছু না! তুই জানিস বিশু, কালীবাবু ওকে দূর করে দিয়েছিল, পাটি অফিসে ঢুকতে পর্যন্ত দিত না। সমস্ত ঠিকঠাক ছিল মেম্বার ...

দৈত্যের ফাঁদে

 দৈত্যের ফাঁদে দেবপ্রসাদ জানা মৃত্যুমুখ পথযাত্রী,হে ভারত বাসি কালের কল্লোল চলে,নেশার অনলে। পুড়ে ছাই হতে হবে,ওরে পুরবাসি বিষের উচ্ছ্বাসে মন উজ্জীবিত হলে। সংগ্রামের হাতিয়ার গড়নি এখনো? দুই হাত তুলে আছো,প্রফুল্ল বদনে- ভাঙ্গাতরী ভেসে যাবে,পথ নাই কোনো প্রাণদায়ি জল জেনো,প্রাণ নিতে জানে। অতিকায় দৈত্য হাঁকে,গভীর হুঙ্কারে অদৃশ্য দৈত্যের ভয়ে,ঘরে লুকাইল কার সাধ্য দৈত্যদের গলা টিপে ধরে দৈত্যের ভয়ে মানুষ,দৌড়ে পলাইল। ঘরে মৃত্যু অনাহারে,বাইরে রাক্ষস জলে কুমির ডাঙ্গায় বাঘ,মাঝে মোষ।

ঠিকানা

        ঠিকানা  দেবপ্রসাদ জানা     ১৮.৫.২০২১ পথের সঠিক কোনো ঠিকানা পাইনি আনাচে কানাচে দেখি তারে বরাবর, কখনো অস্পষ্ট ধোঁয়া,কখনো উজ্জ্বল। ঝড়ের রাতে,আঁধারে,দাঁড়িয়ে জানালা ধরে,চৌকাঠের পাশে,বা খাটের ধারে, মাথার পেছন দিকে,অজান্তে অকালে। শীতল জোছনা ঘেরা,আলোক বলয়ে সে এসে দাঁড়িয়ে থাকে,নজর এড়িয়ে  অদৃশ্য অস্পষ্ট ছায়া,সারাদিন ঘোরে কায়াসঙ্গী হয়ে,তার আত্মমগ্ন মায়া- মহাস্তব্ধতায়,গ্রাস করে নিতে চায়- প্রহর গোনার দিনে। এসেছ ধীবর  সামনে দীর্ঘ উত্তাল,প্রহর সমুদ্র তরঙ্গোচ্ছাসে ধাবিত জীবনের দিকে, কখনো দোলা দিয়েছে,কখনো অকুলে ভাসিয়েছে দেহ,তল্তা বাঁশের ভেলায়।

গড়িলাম তাজ

 গড়িলাম তাজ দেবপ্রসাদ জানা ১৪.৫.২০২১ আমি আমার হৃদয়ে বানিয়েছি প্রিয়া প্রেমের তাজমহল,তোমার আঘাতে - হওয়া শুভ্র পাষাণে গেঁথেছি দেয়াল, প্রতিটি পাথরে লেখা,তোমারই নাম। নির্ঝর বাসন্তী  দেখো একবার এসে আমার হৃদয় কুঞ্জে,রেখেছি যতনে। ওগো পারাবতী প্রিয়া ছলনা ভুলিব কেমনে?পঁচা সুতোয় গাথা এই প্রেম পলকে হারিয়ে গেল,আঁধার গগনে - কি দহন যজ্ঞ তুমি করেছিলে মনে, শিরচ্ছেদে কষ্ট নাই,যত কষ্ট দিলে। নসাৎ করেছ তুমি জীবন আমার- কি দিয়ে গড়ব তাজ, হৃদয় গভীরে তোমার আঘাতে জমা পাথরেই গড়ি।

ঐতিহ্য

       ঐতিহ্য দেবপ্রসাদ জানা গ্রীলবন্দী জানালার গায়ে ক্ষত করে  মৃত আত্মার গভীরে নির্মান করেছি পাথর পাহাড় মন,আত্মার শরীরে। দেহের গোপনতম পাপ স্তব্ধতায়- ভরেছি শূণ্যতা,দীর্ঘ শোষনের রাতে। প্রতিদিন,প্রতিরাতে শুধু অনাচার। জীবনের শেষতম দিনেও,আত্মার কাকেরা কার্ণিশে বসে,ফরমান দেয়। উত্তর মেলে না,মূক অন্দরমহলে। পাড়হীন সিল্কশাড়ি,স্বর্ণসুতো গড়া বাহারী পোষাকে ঢাকা মখমল দেহ- মনিমুক্তা হীরাপান্না খোচিত পাদুকা মোলায়েম স্বর্ণসজ্জা একদিন যাবে ঘনকুয়াশায় ঢেকে।দিনের অন্তরে লুকানো সোনালী সূর্যে,কমলার রঙে- ভয়ঙ্কর নেশা জাগে,মাতালের মতো- অনন্ত কাল চলতে থাকে হেলেদুলে। প্রতীকি বনেদিয়ানা একদিন,গ্রাস- করে নেয়েছে দারিদ্র্য,স্বর্ণ অট্টালিকা, অত্যধিক দাম্ভিকতা বিলাসিতা আর- ভেবে রাখা অমরত্ব,দেয়ালে দেয়ালে, রাস্তার ধারে দাঁড়ানো ঐ প্রস্তরখণ্ডে। অনায়াসে ফিকে হয় ঐশ্বর্যের ভান্ড।

অবিশ্বাস্য

          অবিশ্বাস্য     দেবপ্রসাদ জানা        ১৩.৫.২০২১ যদি অনিইচ্ছাকৃত কিছু ঘটে যায়- সবার অলক্ষ্যে,নীল নিবিড় নির্জনে, ধ্বনিময় পদশব্দে গভীর আত্মায়। স্বপ্নের প্রতিটি রাতে আত্মমগ্ন মনে। বুকের ভিতর জন্ম নেওয়া নদীও স্রোতহীন শব্দে ছুঁয়ে যাবে সেইদিন। দীর্ঘ ‌শূন্যতার পৃষ্ঠে,চাপানো স্মৃতিও বিসন্নতার পাহাড়ে,চঞ্চল হরিন। সেই আত্মার অন্তরে,ক্ষিদের জ্বালায়  জ্বরাজীর্ণ না খাওয়া,প্রত্যাশার মন, নির্বাক উল্লাসে মাতে,নিষিদ্ধ খেলায়- বৃন্তচ্যুত স্মৃতিক্ষত ফুলের চরণ। যদি অবিশ্বাস্য কিছু ঘটে যায় হেথা, তমোরি তাণ্ডবলীলা,দিয়েছে বারতা।।

স্বপ্নটা

     স্বপ্নটা দেবপ্রসাদ জানা ৬.৫.২০২১ স্বপ্নটা হারিয়ে যাবে,দেখতে দেখতে  সকালবেলায় আর স্মরণ করতে- হবে না,কি দেখেছি?রাতভোর স্বপ্নে। সাবধানে অন্য কিছু,মাথায় ঢোকার আগে,ছাকনিতে ছেঁকে,ভাবনার সঙ্গে লড়াই করে খুঁজতে হবে না,স্বপ্নটা। কারণ সে আর এত সহজে আসে না। সবাই স্বপ্ন দেখেছে,সকালবেলার স্বপ্ন,কারো মনে থাকে,কারো মনে থাকে, কারোর মনে থাকে না,কিন্তু স্বপ্ন আসে ভাবনার পথ বেয়ে,রাতের আঁধারে- চুপিচুপি। সকালের স্বপ্ন বাস্তব হয় কি? কি জানি হয়তো কারো কারো বাসনায় স্বপ্নটা এসে বাস্তব রূপে পাশে থাকে।

বিনা অপরাধে

  বিনা অপরাধে দেবপ্রসাদ জানা    ৬.৫.২০২১ আকাশের শূন্যতায়,নীলের প্লাবন নিভৃতে দাঁড়িয়ে আছে অবাক নয়নে, শেষহীন অন্ধতার তরুণ তারার প্রসব,রাত্রির তীব্র ইচ্ছায় আকাশে। পাতাশূণ্য বৃক্ষ যথা,আত্মক্ষতে আমি এতটাই উদাসীন,যে গ্যালাক্সি ঘুরি। অন্তরাকাশে প্রহরী মেঘশূন্য হলে, সাদাঘোড়া ছুট দেয় বাঁক ঘুরে ঘুরে। বাক্ রূদ্ধ বাতাসের নিভৃতে সংলাপে, প্রাণের পাখিটা আজ,দেহ ছেড়ে যাবে। পুরানো খাঁচায় তার,ভালো লাগছে না। মুষ্টিবদ্ধ হাত দুটো,নয়া অঙ্গীকারে- অশনি সঙ্কেত দেখি,দুয়ারে দুয়ারে। মেঘলা আকাশ ডাকে,বিজলি চমকে, কি কথা বলার ছিলো বলা হয় নাই, যত কথা ছিল বাকি,সেরে নিতে হবে। কত কাজ হাতে ছিল,কত আরো স্বপ্ন- সব রয়ে গেল,তার মনের ভিতর। ঝাঁকে ঝাঁকে মন ফুঁড়ে,উষ্মা জড়ো হয়। দাঁড়িয়ে পড়েছে সব, মরণের ভয়ে। বুলেট বিঁধেছে বুকে,কথা ছিল বাকি, সেই,না বলা কথাটা,বলে যেতে হবে বলতেই হবে সব,আর লাজ নয়, ছন্দের পতন মনে,কারে বলি কথা জীবনের আলপথে,হেঁটে চলে যাক। গায়ের জামায় লেখা,লাল রক্ত দিয়ে- লিখেছিল একদিন,ভালোবাসা নিয়ে। অব্যক্ত প্রেমের গাথা,না বলাই থাক। কেন শুধু শেষ দিনে,প্রিয়তমা নারী অপমানে ভরেছিল,যৌবন তাহার। গোপনে যে বিঁধিয়েছে...

পতঙ্গের পায়ে

  পতঙ্গের পায়ে দেবপ্রসাদ জানা    ৮.৫.২০২১ জানলার পর্দাটাকে,ওরে সরিয়ে দে ভোরের আলো লাগুক,দেহমন জুড়ে- সব কালিমা ধুইয়ে,রোদের আনন্দে সব পাপ মুছে যাবে,সূর্যের আলোকে। পতঙ্গের পায়ে পায়ে জীবন প্রবাহ, পরাগরেনুর ছোঁয়া,দেয় ফুলে ফুলে, বিতরনে পতঙ্গের জুড়ি মেলা ভার নরম পায়ের সাথে,জীবন চলেছে- এ ফুলে ও ফুলে ঘুরে ঘুরে,জীবনের ছোঁয়া,দিয়ে যায় ছোট্ট কীটেরা,অজান্তে। ডাক হরকরা ছুটে ছুটে দিনরাত- ঘরে ঘরে চিঠি দেয়,প্রেম বেদনার। এক নক্ষত্র হাজার গ্রহে আলো জ্বালে, জীবন চলেছে,দীর্ঘ কোলাহল করে। বাঘবন্দী খেলা চলে,পৃথিবীর মাঠে, অলিন্দের নিচে,যন্ত্রে কামার হাঁপরে- ছকে ছক ফেলে,সাদা কালো করিডরে। সবাই পারবে এই খেলাটা খেলতে? সবার অলক্ষ্যে বাড়ে,পাপের পাহাড় টপকে যেতেই হবে,লোভের পাঁচিল। ঘাসের ডগায় বসে,একটা শিশির  বিন্দু,সামান্য জীবন বায়ু,সমুদ্রের  গভীরে,প্রাণের গূঢ় শর্ত পান করে- মনে রাখি নারে কেউ পতঙ্গের কথা তার পায়ে বাঁধা ছিল,জীবন আমার।

রবীন্দ্রনাথ

    রবীন্দ্রনাথ  দেবপ্রসাদ জানা     ৯.৫.২০২১ তুমি যে রবীন্দ্রনাথ,তুমি কবিগুরু তুমি কি তেমনি করে আসবে আবার? গল্প গানে উপন্যাসে,আনন্দে ভরিয়ে  দেবে প্রাণ,কবিগুরু,হে রবীন্দ্রনাথ  একশ ষাটের এই আবির্ভাবে আমি, তোমার গানেই দেবো শত শ্রদ্ধাঞ্জলি। বকুলতলার বেদী,খালি আছে আজো পলাশ ফুলের রঙ এখনো রক্তিম  বসন্ত এখনো বসে তব অপেক্ষায়। বৈশাখী বরষা মেঘ হয়ে ভাসে,বৃষ্টি নামেনি এখনো,তুমি কি তেমনি করে আসবে আবার,এই আমাদের মাঝে। হে মহান,হে ঠাকুর হে রবীন্দ্রনাথ। আঁকাবাঁকা ছোটনদী সেথায় এখনো  তিরিতিরি হাঁটুজলে পার হয় গাড়ি। পাগলা বাউল এসে ঐ দাঁড়িয়ে আছে বসন্তের গায়ে ঘেষে,হলুদ রঙের শাড়ি পোরে রাধাচুড়া,ময়না দীঘির  ঘাটে,ময়নাদীঘির কালো জলে পদ্ম ফোটেনি,তোমার জন্য দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে  নইয়ে পড়েছে,কবি আর কেন দেরি? চলে এসো,গানে নিয়ে,বিশাল একটা মন নিয়ে,গল্প গানে উপন্যাসে এই পৃথিবী ভরিয়ে তোলো,কবি তুমি কষ্ট পাওনি,নোবেল খানা চুরি গেছে তাও? আছড়ে পড়ছে হেথা ঝড়ের বাতাস।  ঝাওয়ের বনে টানা,শো শো আওয়াজ উদাসী বাউল গান ধরেছে দোতারা হাতে,প্রকৃতি নিষ্ঠুর হয়েছে এবার অভিমানী জননীর আবেগ...

অপেক্ষা

      অপেক্ষা দেবপ্রসাদ জানা     ১০.৫.২০২১ একটা চিঠি এসেছে,ডাক বাক্সে পড়ে আছে,বহুদিন,খুলে দেখা হয় নি তা। হয়তো ভুলে,নয়তো ইচ্ছে করে সেটা খুলে দেখিনি আজও,কার অপেক্ষায়। সময়টা আতঙ্কের,ভয়ে ভয়ে আছি, সামনে অপ্রতিরূদ্ধ,অতি মহামারী, যদি চিঠি খুলে দেখি,আপনজনের- হঠাৎ মৃত্যুর ডাক,যদি দেখি তাতে কিছুশব্দ,রিক্তপ্রাণে আবার দিয়েছে আঘাত,সদ্যই মাকে হারিয়েছি আমি। ভয় হয় আবারও কোনো প্রিয়জন- চিঠির কালো অক্ষরে লীন হয়ে গেছে, পড়ে থাকে চিঠি,ওই ডাকবাক্সে আজো। কখনো কখনো উঁকি দিয়ে দেখি আছে কিনা। মৃত্যুর নির্মোক ফুঁড়ে যদি আসে আলোর বার্তা চিঠিতে,যদি কোনদিন নানা রঙের পৃথিবী,ঝকমকে তার আলোর ছটায় ভরে,বিষের বাতাস। অনন্ত জলরাশির,গভীর হিল্লোলে হতাশাক্লীষ্ট যুবক,সমুদ্রের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে আবেগে,তবু চিঠি পড়ে থাকে,রুগ্ন ডাক বাক্সে,সারাদিন রাত।

স্বপ্নভঙ্গ

       স্বপ্নভঙ্গ দেবপ্রসাদ জানা    ১১.৫.২০২১ আবার স্বপ্ন ভঙ্গের ব্যথা গুলো চেপে  ধরেছে বুকের বাম পাশে,হৃদয়ের ভেতর,যেখানে রক্ত চলাচল করে। অলিন্দের চারপাশে কালো অন্ধকার, চরিত্রের নষ্ট কোষ, উদ্দীপিত হলো সামান্য কারণে,নেশা চেপে গেল নষ্ট ইন্দ্রিয় গুলোতে,ক্রোধ বস করে নিল যত রক্ত কনিকারে, সক্রিয়তা বেড়ে গেল হঠাৎ,মনের এক কোনে যেটা বহুদিন,হৃদয়ের কঠিন পাথরে চাপা দিয়ে রাখাছিল,তা আজ উন্মুক্ত। শুধু অশান্তি বাড়ছে,অশালীন দ্বন্দ্ব  অকারণে ভিড় করে আসছে কন্ঠের পথ ধরে,অগনিত নিরাশার স্বপ্ন।

ওরাই সৈনিক

   ওরাই সেনিক দেবপ্রসাদ জানা     ৪.৫.২০২১ তোরা কারা?ভাই সব,অবাধ্য বর্বর অনিয়ম অনাচারে,ভরে দিলি দেশ তোরা কারা?দিনরাত রসদের ভাণ্ডে জীবন খুঁজে যাচ্ছিস,দয়া মায়াহীন কার্যকলাপের মধ্যে,নিজের পাপের ঘড়া ভরছিস,ওরে কে তোরা পাষণ্ড? কোদাল কাস্তের আর হাতুড়ির প্রাণ  ঘামের গন্ধ যাদের,ঘুমের আধার কঠোর শ্রমে গড়েছে খাপরার চাল ঠাসাঠাসি ঘেষাঘেষি,আমুদে মানুষ  তাদের ঘরের চালে জ্বালিস আগুন। ছেলেবুড়ো কচিকাচা,বেঁচে মরে থাকে। বাঁধানো চাতালে শোয়া,গরীব পথিক বস্ত্রহীন,অন্নহীন কাটায় জীবন- তাদের ময়লা দেহে,ঢেলে দিস জল, শীতের গভীর রাতে,ওরে তোরা কারা? মানুষ নাকি দানব?খোঁজ নিয়ে দেখ দেখি অর্বাচীন,কার বীজে জন্ম তোর? সোনাদানা ধনরত্ন সব আছে তোর, গরীব চাষার প্রতি এত অনাচার? তাদের কষ্টান্ন কেড়ে, দিস গালাগাল? দেশের গৌরব তারা,তাদের সম্মানে দুইবিঘা জমিটাও,নিয়েছিস কেড়ে, তোর সখের বাগান হবে একটানা দৈর্ঘ্যে প্রস্থে হবে সেটা,সমান সমান। লাঙলের ফলাচেরা,ধরিত্রীর বুক, ফেটে যে সোনার ধান,তোদের থালায় শ্বেতশুভ্র অন্নভোগে,জীবনের হাসি- একদিন চলে গেলে,কেমনে তা পাবি? ইমারতের বড়াই করিস,কেনরে- আহাম্মক,ইটে-ইট জুড়ে দিয়ে,গ...

কালিমা

      কালিমা দেবপ্রসাদ জানা    ৩.৫.২০২১ একদিন আকাশের গায় কালো মেঘ ঘন হবে,ঝড়বৃষ্টি হবে,চিলেকোঠা- অন্ধকার ছাদঘরে,শুধু তুমি আমি। ছাদের মেলানো জামা কাপড় তুলতে গিয়ে বেশ ভিজে,অল্প শীতে থরথর কাঁপুনিতে তুমি,আমি উষ্ণতার হাত তোমার শরীরে দিয়ে,বলব "বেলাদি- ভালো লাগছে তোমার"? অসমবয়সী এই কিশোরবেলায়,এই ছাদঘরে- অন্ধকার এত ভালো লাগবে বুঝিনি। জীবনে এমন এক,উতরোল বেলা আসবে,যা সব কিছু ছাপিয়ে,জীবন ভাসবে স্বপ্নের সেই,অচিন সাগরে। তোমার বৃষ্টিতে ভেজা,অগোছাল শাড়ি আমার হাতের তাপে, উষ্ণতায় ভরা ঘনঘন নিঃশ্বাসের,ছন্দে পূর্ণ হবে। তোমার উষ্ণ ঠোঁটের নিচে মিলনের মৃদুহাসি,প্রতিবাদ হীন চল্লিশের কালিমার কথা,তুমি মনে রাখবে না। আমার ষোলোর ব্যর্থ,কাহিনী আমাকে ডাকবে পরম দুখে,বহু গল্পে তুমি নায়িকা হয়ে পরবে বোধের পোষাক।