Posts

Showing posts from December, 2021

শিব

 শিব বিশ্বের উদ্ভব যিনি,সৃষ্টি স্হিতি লয়। গৌরী গিরিরাজকন্যা, উমা তার পতি। তত্ত্বজ্ঞ,যাঁর কীর্তির,কোনো অন্ত নয়। যিনি মায়ার আশ্রয়,অন্তহীন জ্যোতি। বন্দনা করিব সেই,স্বরূপ অচিন্ত্য। বিমল বোধস্বরূপ,ভগবান শিব। হে শান্তস্বরূপ,অনাদি অনন্ত, বিশ্বসৃষ্টি তার খেলা,আমি ক্ষুদ্র জীব। জগতের পিতা তিনি,ভগবান শিব। ধ্যানমগ্ন উদাসীন,চর্মবস্ত্র ধারী। ভিক্ষা মাগি দিন চলে,এতই গরীব। সর্প চন্দ্র অলঙ্কার,কৈলাসে আচরি। জয়ধ্বনি করি তার, প্রসন্ন পূর্বক। আমি তার অনুগত,শিবের সেবক।

শকুন্তলা

 শকুন্তলা ১ বিশ্বামিত্রের তপস্যা,করিবারে ভঙ্গ। মেনকারে তার কাছে,করিল প্রেরণ। দেবরাজ ইন্দ্র ভয়ে,ছাড়িলেন সঙ্গ। অপ্সরা মেনকা তার,করিল স্মরণ। সংযম হারিয়ে ঋষি বিশ্বামিত্র জাগে। মেনকার রূপে হলো,বিচলিত মন। তার সাথে বিশ্বামিত্র,মেলে প্রেমরাগে। গান্ধর্ব বিবাহে তারা,হইল বন্ধন। বিশ্বামিত্রের ঔরসে,অপ্সরা মেনকা- গর্ভবতী হয়ে দিল,জন্ম শকুন্তলা। তপস্যার পুণ্যফল, হয়ে গেল বৃথা সেই রাগে বিশ্বামিত্র,শেষ করে খেলা। পরিত্যাগ করে তারে,চলে যান বনে। শিশুকন্যা শকুন্তলা,পড়ে থাকে বনে। ২ কম্ব ঋষি সেই কন্যা করিল উদ্ধার। পক্ষীবৃত ছিল বনে,বিশ্বামিত্র কন্যা। লালন পালন করে,কম্ব ঋষি তার। শকুন্তলা নাম দিয়ে,করিলেন ধন্যা। দিনে দিনে বড় হয়,মিষ্টি শকুন্তলা। প্রকৃতির মতো করে,সহজ সরল। সুন্দরী রূপসী কন্যা,বনে করে খেলা। সখীদের নেত্রমনি,এ দেশে বিরল। ষোড়শী শকুন্তলার,রূপের বাহার। দেখে যেন মনে হয়,স্বর্গের অপ্সরা। মেনকার গর্ভজাত,রূপ পায় মার। ফুলের মতন করে,রূপের পসরা। কম্ব ঋষির দোরে যে,রূপ রোসনাই। পশুপক্ষী সকলের, সঙ্গ তার চাই। ৩ কম্বের অরন্যে আসে,ঝড়ের বাতাস। দুরন্ত অশ্বের দৌড়,দুষ্মন্ত রাজার। সখ করে মৃগয়ায়, আসে বারমাস। ঘন অরন্যে করেন...

ধূসর পাখি

 ধূসর পাখি হৃদয় গভীরে যারে,রেখেছিলে নাগর- ভালোবেসে,রেখেছিলে বুকে প্রেয়সীর উচ্ছ্বসিত মুক্তোর হাসি নিমজ্জিত মায়াবী স্মৃতির আবেশে। নিগূঢ় অপরূপ আপ্যয়নে- হৃদয়ের উত্তাপে, আদর সম্ভাবনে,গোপনে। জীবনরসে মত্ত সেই সন্ধায়- নাগপাশে বেঁধেছিলে মনে। দিগন্ত মরীচিকায়,তারে- রাতের অন্ধকারে ঘোর নীল আলোয়, তার মুক্ত অবয়ব,যেন মনের কুটিরে তৃষ্ণাকাঙ্খিতে সিঞ্চিত করি,  সুপ্ত আবেগে পরিব্যাপ্তিত ভ্রমি  স্পর্শ রশ্মি শিহরিয়ায়- শাশ্বত ধূসর পাখিটা, দিগন্ত থেকে।

রজনীগন্ধা

 রজনীগন্ধা গাছের আড়ালে ফুল,ঘন অন্ধকারে- ফুলের গন্ধে ব্যাকুল,মরমী বাতাস। ফুটেছে অমানিশার,নিশীথ আঁধারে, রজনীগন্ধায় ভাসে,সোহাগ সুবাস। ক্লান্ত শূণ্যতার পাশে,উদাসী আকাশ। ভাঙ্গামেঘ থরেথরে,সাজানো বিছানো। মত্ত হয়ে উড়িতেছে,যেন সাদা হাঁস। স্বপ্নময় তটিনীর,জীবন গোছানো। স্বপ্নময় দু'নয়নে,কাঁদে ব্যর্থ নিশি। ঘোমটার ফাঁকে যেন,পূর্ণিমার চাঁদ। ষোড়শী রজনীগন্ধা,সাজে পূর্ণ শশী। সন্ধ্যায় সমীরে চাঁদ,করে প্রতিবাদ। একদিন সাদাফুল, চাঁদ হয়েছিল। আঁধারে প্রকৃতি তারে,ভালোবেসেছিল।

পৃথিবীর রঙ

 পৃথিবীর রঙ দেবপ্রসাদ জানা ফুটপাতের ওপর বসে- মালাইচাকির ওপর ভর দিয়ে- মানচিত্র আঁকছে ,যে লোকটা,  তাকে আমরা চিনি সকলে, সে পৃথিবীকে কেটে কেটে ভাগ করে দিচ্ছে, কালো পেন্সিলের আঁচড়ে। নানা রঙে আলাদা করছে,গোটা পৃথিবী। এ ভাগটা আমাদের,ও ভাগটা তোমাদের। সারা পৃথিবীর প্রায় সত্তরভাগ জল, নীল রঙে রাঙিয়ে দিচ্ছে স্তব্ধ গভীর - সেই মহা অনন্ত। গভীরে কেঁপে উঠি,  ক্ষুধার্ত সেই মহা অনন্তের  নিচে নেমে গিয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে, কবে এই অনন্তে ডুবে যাবে সব। শরীরে রক্ত চলার,চাকার শব্দ শুনেছি  আত্মগোপন করা বধির নির্জনতা, কারো ইশারায় পৃথিবীর রঙ বদলাবে একদিন।              ______________

প্রশ্ন

 প্রশ্ন প্রাণবন্ত এক পাথর পৃথিবী নানা রঙে রাঙিয়ে দিচ্ছে,যে চিত্রকর। তার হাতে সোনাই এর তুলি। আকাশে গাঢ় অন্ধকার নেমে আসলে। আকাশে অজস্র প্রদীপ জ্বেলে দিচ্ছে- যে মায়ের হাত। আর - তার নিচের অন্ধকারে,গহ্বর।  অজস্র নক্ষত্র টিপ টিপ করে জ্বলছে। দূর থেকে দেখা,পৃথিবীর প্রতি ঘরে  জ্বলে থাকা প্রদীপের মতো, আমি তাকিয়ে আছি সেই  দিকে। কত আলো আকাশে হেঁটে বেড়াচ্ছে। আমার চোখের তারায়,ভেসে উঠছে। গ্রহ নক্ষত্রের কত মানচিত্র মনের আয়নায়, যত দেখি ভাবনারা বিস্মিত হয় অবাক হয়ে! ভাবনারা একটা প্রশ্ন লিখে দিয়েছে মনের খাতায়- উত্তর পাচ্ছি না, এই অন্ধকার আকাশে কে দিল নীল রঙ? ঐ খোলা শূণ্যতায় কে ছুঁড়ে দিল এত বল? এই পাথর পৃথিবীর গায়ে কে দিল এঁকে? কোন চিত্রকর? এত প্রাণ কে দিল?  এত জল কে নিয়ে এল বয়ে?

দাক্ষায়নী সতী

 সতীর বিবাহ দক্ষরাজার কনিষ্ট,কন্যা দাক্ষায়নী। বিবাহ করিতে চায়,ভিক্ষু মহাদেবে। দক্ষরাজের অমতে সতী,সীমন্তিনী তপস্যায় তুষ্ট করে,আকাঙ্ক্ষিত শিবে। উদারচিত্ত ঋত্বিক,উদাসীন মনে। চাল নাই চুলা নাই,ভিখারী মহেশ। রাজার দুলালী সতী,রাখিবে কেমনে? পড়িল বিপদে ভোলা,রুক্ষ পরিবেশ। বিপদের কথা শুনে,হাসে সতীমাতা স্বামীগৃহ নিজ গৃহ, শ্মশাণে কাননে। স্বামীধর্ম সতীধর্ম,করেছে বিধাতা। এত কেন ভয় পাও,প্রিয় মনে মনে। শ্মশাণচারী মহেশ,হইল সংসারী। আকন্দের মালা গলে,চলে জটাধারী। গৃহিনী সতী ঘর নাই,বাড়ি নাই,নাই দাসদাসী শ্বশুর বাড়িতে নেই,শ্বশুর শাশুড়ি। ভুতপ্রেত,সাপব্যাঙ,সব কিছু বেশী হাসাহাসি করে সব,ঐ বাপের বাড়ি। শীত গ্রীষ্ম বর্ষাকাল,কষ্ট করে রই। খোলা আকাশের নিচে,কেমন সংসার? মন্দার পর্বতে চলো,প্রাসাদ বানাই। জানালায় বসে দেখো,প্রকৃত বাহার। শ্মশানের ছাই ছেড়ে,গরমপোষাক। শীতের কামড় থেকে,পাবে অব্যহতি গ্রীষ্মের প্রখর তাপ,দূরে চলে যাক। সুন্দর প্রাসাদ হলে,কি এমন ক্ষতি? সতীর সুবাক্যে শিব,হলো আনমনা। কেমনে সফল হবে, সতীর কামনা। শিবের ভাবনা শ্মশানচারী সন্যাসী,আমি জটাধারী। ব্যাঘ্রচর্ম পরে ঘুরি,বনের ভিতর। ধ্যানধর্ম ভূতপ্রেত, নগন্য ভিখারী। স...