Posts

Showing posts from February, 2023

অতৃপ্ত প্রেম

অতৃপ্ত প্রেম  দেবপ্রসাদ জানা খুব একা হ'লে কেউ যেন গভীর গোপনে,  ভিতরে ভিতরে সুপ্ত কথা বলে, রাত ভোর জাগায়- এক অনধিগত নিঃশব্দ কড়া নাড়ে মনের দরজায়। বুকের রূদ্ধতায় শুয়োপোকা থেকে- জন্ম নেয় নীল প্রজাপতি। সন্তর্পণে খোলে বোধের পোশাক,  প্রলোভিত করে নিয়ে যায়, জীবনের কার্ণিশে,  ধীরে হিমস্বরে অনন্ত খাদ পেরিয়ে, মৃত নক্ষত্রের গান শোনায়। মনের ভেতরে বাঁচার অদম্য ইচ্ছা,  মৃত্যুকে আড়াল করে, সেদিন চিলেকোঠার ঘরে, স্বপ্ন এসে দানা বাঁধে মনের গভীরে। সেই বয়ঃসন্ধিকালে, অতৃপ্ত ভালোবাসা, গৃহ শিক্ষিকার মন জুড়ে নয়, দেহ জুড়ে- খোঁজে নীল জ্যোৎস্না,  খুব একা হলে, এক সমুদ্র-জীবনে - কোনো এক চকিত পায়ের শব্দ পাঁজরে বেজে ওঠে, বিপন্ন বিস্ময়ে, আবার অনন্তে মিলিয়ে যায় । খুব নাড়া খেয়ে ভিতরে ভিতরে জেগে উঠি,  এক অসীম নিঃশব্দ- ক্ষয়ের কথা ভেবে। ঘুন-পোকা স্তব্ধতায় খোঁদল করে, শক্ত মনটার। এমন-ই হয়, ভিতরে-ভিতরে।

মরা নদী মরা স্রোত

মরা নদীর মরা স্রোতে দেবপ্রসাদ জানা তোমাকে চেয়েছে সবাই,  এ পৃথিবীর অন্ধকার দিন গুলিকে তুমি তোমার  আলোক ছোঁয়ায়,  প্রজন্মের পর প্রজন্ম, আলোকিত করেছ। ভালোবেসেছো। তোমার উষ্ণতার আদরে মৃন্ময় উঠান  জেগে উঠেছে বরাবর। ধান গাছের শিষে এনেছো হলুদ ফসল। তবে আজ কেন এই প্রখরতা। আজ বুঝি পৃথিবীর শেষতম দিন। হ্যাঁ অন্যায় তো হয়েছে, তোমার দেওয়া সবুজ  পৃথিবীর বুক হতে নির্মূল করেছি। প্রকৃতির এই মহাপ্রলয়ের সন্ধিক্ষণে দুই হাত ভরা স্বপ্ন নিয়ে সকালে তোমার সেই সোনার ছটায় স্নান করেছি। ছড়িয়ে দিয়েছি স্বপ্নময় দুইচোখের মায়া,  হাতে হাত রেখে দাঁড়িয়েছি স্তব্ধতায়,  তবুও সবার অলক্ষ্যে প্রখর উত্তাপের মিছিল বলে গেল বারান্দায় বসে,  আত্মার পাখি, তার-ঠোঁটে লেগে আছে মৃত্যু। এতদিন পৃথিবী, বিগলিত সত্তার তাপে, আগুন হয়ে আছে, নীল ঘুম স্তব্ধ,  নির্বাক দাঁড়িয়ে আছে ইট পাথরের জঙ্গল, পাহাড়। মরা নদী, মরা স্রোত,  নক্ষত্র জেগে উঠে, নক্ষত্রের ভিতরে  সব বিপন্নতার ভিতরে,  সাদা নৌকা ভেসে যায়, মরা নদীর মরা স্রোতে। জোছনা ভরা নদী পার হবে দীর্ঘ শোষণের দিনে,  জীবনের গোপনতম পাপ পোড...

উষ্ণতা

উষ্ণতা  দেবপ্রসাদ জানা তুমি বলেছিলে আকাশ ছুঁয়ে দেখো  আমার উষ্ণতা পাবে। আমি আকাশ ছুঁতে পারিনি- আমি নক্ষত্র ছুঁয়েছি অনেকবার, বোধের জ্যোৎস্না মেখে পাথর ছুঁয়ে দেখেছি। প্রশ্ন করেছি  কোথায় আকাশ এ যে মহাশূন্য। তুমি নীবর নিশ্চল, কিন্তু কি খেলা খেলেছ আমার সঙ্গে, মহাশূন্যে মহানক্ষত্রের খেলা- যাতে হাত দিয়েছি পুড়ে গেছি বার বার। ভাঙচুর চলেছে ভিতরে ভিতরে,  ভারসাম্যহীন খেলা প্রেমে অপ্রেমে  পাথর হয়ে থাকা, নক্ষত্র গুলো অনবরত জ্বলছে। এই পার্থিব তামাসাটুকু বুঝে নিতে জীবন গেলো মৃত্যু স্রোতে বেঁকে,  কালের বল্মীকে কুরে খেলো মন,  কত অন্তরঙ্গ কথা হলো নক্ষত্রের সাথে। কত তারা খসে গেল, অজান্তে আচম্বিতে  আমাকে নিঃশব্দে ফেরালো আকাশ,  অচেনা কঠিন স্বরে ডেকে ওঠা পাখির কণ্ঠে,  তোমার আত্মরব আসে শূন্য দেশ থেকে আমি দিকভ্রান্ত পাখি,  সাগরের জলে, ডুবে যাওয়া চাঁদের তরঙ্গ দেখি। চির অস্তমিত সূর্যে দেশে কামনার আঁধার — আর কী আশ্চর্য জানো, সেই বোধহীনতার মরারোদ মৃত্যু-ঠোঁটে উড়ে যায় সেই আকাশেই, অনন্তের দিকে... যে আকাশ ছুঁতে পারলে- তোমার উষ্ণতা পাবো, তুমি বলেছিলে। তোমাকে ছুঁত...

কর্ণ-কুন্তী-সংবাদ

কর্ণ-কুন্তী-সংবাদ দেবপ্রসাদ কর্ণ-কুন্তী-সংবাদ দেবপ্রসাদ কুন্তী - কেন করো প্রত্যাখান, জ্যেষ্ঠ পুত্র মোর             এই সন্ধ্যাকালে পুণ্য জাহ্নবীর তীরে            ছাড়িয়া সকল লাজ, পাণ্ডব জননী,            এসেছে তোমার দ্বারে, ভিক্ষা পাত্র হাতে।           রাধা গর্ভজাত নও তুমি , মহাবীর ,           কুমারী কালের ভুল , হে জ্যেষ্ঠ পাণ্ডব।           হে কর্ণ কনিষ্ঠ ভ্রাতা, তব অপেক্ষায়-            যুদ্ধের পরিণতির কথা তুমি জানো।           রাজ্য পাবে, পাবে মহাবীর পাঁচ ভ্রাতা।           তব ছত্র ছায়া তলে, সুরক্ষিত হবে।          স্নেহসিক্ত ছায়া তলে,মাতৃস্নেহে রাখি            হে সূর্য তনয়, কথা দাও মোরে তুমি-           এই জাহ্নবীর তীরে, কুরুক্ষেত্র রণে,      ...