Posts

Showing posts from July, 2021

ভয়ানক স্বপ্ন

 ভয়ানক স্বপ্ন দেবপ্রসাদ জানা ০১.৮.২০২১ খোলো বন্ধু দুয়ার খোলো একবার।  হৃদয়ের খিল খুলে উন্মত্ত বাতাসে ভরে নাও মন। মৌনতার দরজায় আঘাত করো জোরে। বৃষ্টির ফোটার মত,জানলা দিয়ে ঢুকবো  জলোচ্ছ্বাস নাও বুক ভরে। তৃষ্ণার অঞ্জলি হোক ইরাবতী। কিছুটা দূরত্বে গেলে, কিশোরী নদীর মত  কল কল করে ওঠে,যৌবন। তুমি এক তির তির  নদী, কতটুকু আর,ভালোবাসা পেয়েছো? সুদূর  স্বপ্নের শব্দনীড় হতে। দর্পণে নিজেকে দেখো বার বার। মনস্তাপ হীন, জীর্ণ নির্লিপ্ত কঙ্কাল, মাটিতে চাটাই পেতে নতুন শরীরের চাহিদায়। কতবার উল্টেপাল্টে দেখেছি - রোজকার শবব্যবচ্ছেদ। কী ভয়ঙ্কর নিঃসঙ্গ মৃত্যু - ঘাসের উপর পড়ে আছে,  চৌকাঠে দাঁড়িয়ে খুলে দাও অনায়াসে-  ও বুকের বন্ধ দুয়ার। হৃদয়ের জানালায়,মরনের সহস্রধারা। তুলেছে মন্থন-বিষ,উন্মাদ ঈর্ষা। শকুনের ডানায় উল্লাস - মৃতের আস্তানায় যে ভয়ানক স্বপ্ন।

আঁধারের মৃত্যু

 আঁধারের মৃত্যু দেবপ্রসাদ জানা ৩১.৭.২০২১ একটা আঙুলের চাপে হত্যা করি অন্ধকার। রাতে আঁধারটাকে গলা টিপে মারি। রাতের পাখিরা ভয়ে লুকিয়ে পড়ে - গাছের আড়ালে।  রূপালী জোছনার হৃদয়ে দারুণ বেদনা। খোলা জানালায় তার প্রবেশের অধিকার নেই,  স্বপ্ন হারিয়ে যায়,নিয়নের আলোয়।  পাহাড়ীয়া অরণ্যে ভীতি,ভয়ে পালিয়ে বেড়ায় - গাছের আড়ালে আড়ালে। অশরীরী আত্মা আত্মহত্যা করে,  দূরের নক্ষত্র চোখ পিটপিট করে, নিয়নের আলোয়। কারা যেন ভালোবেসে হারিয়ে যেতে চায়- মুক্ত বাতাসে আঁধারের কোলে, নিরাশায় বুকে বেঁধে রাখে,অসমাপ্ত চুম্বন। অদৃশ্য ডানায় ঝুলে থাকে,  আকাঙ্ক্ষার পালকগুলো - শুধু একটি আঙুলের চাপে, মৃত্যু হয় কত আশা আকাঙ্ক্ষার,  ভেবে দেখিনি কোনোদিন। অকাল মৃত্যুর দেশে প্রতিরাতে কত,  কত শত শিশু আঁধার,কিশোর অন্ধকার, অকালে ঝরে যায় - কী ভীষন বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে প্রতিরাতে। প্রতিদিন দিনের জন্ম হয়- ভোর হয়,প্রভাত হয়,যৌবন আসে, প্রেম আসে নজরে, মাঝবেলায় হাসে সোনার সূর্য। কনে দেখা আলোয় ওঠে কমলা রোদ। বার্ধক্যে দিনের বিদায় দিয়ে - উড়ে যায় পাখি, সূর্য ডুব দেয় ঘুমের সমুদ্রে। পাহাড়ের ঢালে নৈঃশব্দ্য নেমে যায় নিশ্...

পরকীয়া নেশা

 পরকীয়া নেশা দেবপ্রসাদ জানা ৩০.৭.২০২১ এক অনু অরণ্য উড়ে গেল, চোখের সামনে থেকে,গা ছমছম করে উঠল। চোখের ভুল! এ কোন চলমান অরণ্য? ম্যাকবেথের? ওই তো উড়ন্ত সবুজ। চড়াই পাখির মুখে ধরা এক গুচ্ছ ঘাস। জীবনের আভাস। বাসা বাঁধা শুরু। অথচ মৃত্যুর আশ্চর্য এক বিষাদ প্রদাহে সদ্যমৃতের অস্তিকলস হাতে দাঁড়িয়ে আছি, নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা উদ্দেশ্যে,  এবার আমার পালা - এই তো সেই স্থান, এখানেই আসার ছিল প্রত্যেকে। ঘুরে ঘুরে,সংসার সমুদ্রে - ফুটো একটা নৌকায় চেপে - সত্তর আশি বছর পর এলাম। খোঁজটুকু নেবে না কেউ,না পূর্বপূরুষ,না উত্তর পূরুষ। হঠাৎ নিরুদ্দেশ হয়ে গেলে, কত ভালোবাসার কলি ফোটে মনে। একবার ও ভাববে না,কাছের মানুষটা যে গুরুত্বহীন। বতর্মান ক্রমশ অতীত। কান্না ভেজা চোখ-অশান্ত করে মৃত্যুশোক। ভালো থেকো প্রিয়তমা,প্রেমিকা,গৃহিনী, পরকীয়া নেশা। আজ আমি নেই তোমার স্মৃতিতে,  তোমার ভালোবাসার মানুষ -  তলিয়ে গেল বিস্মৃতিতে।  আমার মন চঞ্চল আজও,এই শেষ গন্তব্যে। ভুলতে পারিনি প্রেম,পরকীয়া, তোমায়,  ভালো থেকো,ভালো রেখো মন। হয়তো দেখা হবে কোন একদিন  কোনো একসময়, এই এখানেই,শেষযাত্রায়। থাকবে না এইক্ষণে,...

অভিমানী বরষা

 অভিমানী বরষা দেবপ্রসাদ জানা ২৯.০৭.২০২১ আর বেশদিন নেই বর্ষা,তোমাকে যেতেই হবে। বড় কষ্ট দিয়েছ তুমি,জোর করে ঢুকে পড়েছ - আমার ঘরে,আমার শুকনো শান্তির ঘরে, চোখের জলে ভিজিয়ে দিয়েছো বিছানা। ঘরের আসবাব পত্র।  দরজা বন্ধ করলে, জানালায় দিয়ে ঢুকে যাচ্ছো। বাইরে বের হলে,জড়িয়ে ধরছো অকারণে, হালকা বাতাসে উড়িয়ে দিচ্ছো ছাতা, কেন? বেশ তো ক্রোধে অভিমানে,  আমার সংসার ছেড়ে চলে গেলে, তোমার সবুজ সবুজ সন্তানদের আমি-  দুই চোখে দেখতে পারি না, আজ কেন এলে ফিরে?  দেখো, চেয়ে দেখো একবার,ওই সন্তানেরাই  আমার ভবিষ্যৎ, আমার বৃদ্ধ বয়সের সঞ্চয়। তখন বলেছিলাম যেও না গো- ভুলতো মানুষেরই হয়- বড় বিপদে ফেলে পালিয়ে গেলে- যখন আমার ঘরে, গ্রীষ্মের প্রখর উত্তাপ - পড়িয়ে দিয়েছিল সব, আমার শান্তি,আমার বসন্ত,আমার সুখের ঘর। তখন কেন ভেবেছিলে আমি তোমার পর? বড় জানতে ইচ্ছে করে, বুঝলে?  কেমন আছো তুমি? আমায় ছেড়ে, ওই সাত সমুদ্রের ওপারে,মেরুর ওপরে- পাহাড়িয়া গাঁয়ে, চিরদিন তোমার ভালোবাসা পাবো ভেবেছিলাম। আজ অজান্তেই কত ভুল বোঝাবুঝি মনে,  তুমি চলে গেলে অনেক দুরে-  আমায় ফেলে কেন কে জানে?  মনে পড়ে ফাগুনের ...

আর কতদিন

 আর কতদিন দেবপ্রসাদ জানা ২৮.৭.২০২১ আর কতদিন বন্ধু সেজে থাকবে? এত কথা,এত দেয়ানেয়া,এত অন্তরঙ্গ খোলামেলা স্বপ্ন কিনে ফেলা,এসবই কি বন্ধু বলে? ধরো,যদি কোনো একদিন,তোমার হাতে হাত রাখি, সেইদিন খালিপায়ে হেঁটে যাই, সবুজ ঘাসের ওপর দিয়ে, দিগন্ত জোড়া মাঠে, রেললাইনের ধারে লাজুক, সাদা কাঁশফুল সেলাম ঠুকে দাঁড়িয়ে  রবে শরমে। কখনো দিগন্ত ছোঁয়া,নদীর তীর ধরে, বহুদূরে একেলা ডিঙি নাও হাত ছানি দেবে, সোনালি সূর্যের রোদমাখা আলো আড়াল হতে। তোমার পায়ে,আদরে জড়িয়ে রবে সাদা বালুকণা, রূপায় গড়া নূপুরের মতো। পায়ে পা ফেলে হাঁটবে,কিশোরী সূর্য। কচিকাচা তারারা,জোছনা রাতে মেঘের আড়াল থেকে উঁকিঝুঁকি দেবে, তোমার মেঘরং এলোচুলের খোঁপায় ফুটবে জুঁই মালতী গোলাপ। সাতরঙা রামধনু বৃহৎ পাঁচিল টেনে হাসবে। তোমার গলায় পরিয়ে দেবে সুখের মালাখানি। ভালোবাসার হাতে হাত রেখে একদিন - বন্ধু না হয়,নাই হলে সেদিন -  প্রেমের জঠরে ফুটুক না,ভালোবাসার ফুল।

জীবন সংগ্রাম

 জীবন সংগ্রাম  দেবপ্রসাদ জানা ২৭.৭.২০২১ সুখের সময় গুলো,ক্রমশ ফ্যাকাশে। সময়ের বেড়াজাল,গভীরে বিস্তৃত- জীবনের ধ্বনিময়,মৌনতা প্রকাশে  হীনমন্যতায় ডুব,দিতে হয় আস্ত। আষ্টেপিষ্টে ঘিরে ফেলে,ব্যর্থতা হতাশা স্বপ্নেরা ভ্রুকুটি করে,উদাসিনতায় - শীতের গাছের মতো, জবুথবু দশা। আশার পালক ঝরে,যায় নিরাশায়। জীবনের তরী ভাসে,সাগরের মাঝে  উৎকণ্ঠায় দিনের অবস্থান, সন্ধ্যা- হিমশৈলের রোদ্দুর ,থরথর সাঁঝে উত্তাপহীন দিনের,রোদ্দুর ও বন্ধ্যা। শান্তির অরণ্যে জ্বলে,রুক্ষ দাবানল। জ্বালিয়াছি মনদ্বীপে,গুপ্ত রোষানল।

হে নারী

 হে নারী দেবপ্রসাদ জানা ২৬.৭.২০২১ হে নারী কখনো,তুমি জাহ্নবী চামুন্ডা  তুমি ভীষনা চন্ডিকা নৃমুণ্ডমালিনী  ছিন্নমস্তা ক্ররতমা দেবী উগ্রচন্ডা  চিন্ময়ী মোহিনী দেবী,শিবের ঘরনী। তুমি অশ্বারোহী লক্ষী,গতি দূর্নিবার।   তুমি তিলোত্তমা সন্ধ্যা,নরক সঙ্গিনী  মৃদুভাষিনী রমণী,কন্ঠে চন্দ্রহার। তুমি কুন্তী,বসুন্ধরা,মৈত্রেয়ী শঙ্খিনী  হে ব্রহ্মবাদিনী পুষ্পা হে সিংহবাহিনী  দিওতম কাব্যগাথা গলে কাটা মুন্ড। হে চরাচর ধারিণী জনক নন্দিনী। সতী মন্দোদরী ভরা তব অগ্নিকুণ্ড। পায়ে আঁকা অলক্তক,অধরে রক্তিমা। ক্ষমস্য মোরে হে নারী বুঝিনি গরিমা।

শৈথিল্য জ্ঞাপন

 শৈথিল্য জ্ঞাপন দেবপ্রসাদ জানা ২৫.৭.২০২১ নিথর কাঁপন লাগে,তারায় তারায়। আত্মার অস্তিত্ব করে,সন্ধ্যায় আরতি, বহুব্রীহি সমাসের,ছন্দ কেটে যায়। লাবণ্য মল্লিকা যেন,রথের সারথী, নোনাধরা শোক যেন,নীরব কান্নায়। উল্লসিত কাঁচা প্রেমে,সোহাগী যাপন, স্মরণে মননে ভীতি,আগুন লাগায়। স্বতঃস্ফূর্ত নব স্বাদে, শৈথিল্য জ্ঞাপন। হৃদয় সমুদ্রে ওঠে, উত্তাল বাতাস। অগোছালো কোলাহলে তরঙ্গ হারায়। অবুঝ বোধন ব্যথা,মধ্যাহ্নে প্রকাশ। গভীর ঈশ্বরে মনে, বিশ্বাস জাগায়।   কারণে কারক যোগ,ধৈর্যের পতন। বিবেচনা বোধ তার,করেছে আপন। 

কলমে ইলিশ

 কলমে ইলিশ  দেবপ্রসাদ জানা ২৪.৭.২০২১ ইলিশ মাছের মাথা যোগে  কচুশাক রাঁধো। এপার বাংলা ওপার বাংলা  কলমটারে বাঁধো। লিখুন দেখি তোয়াজ করে ভাইবন্ধু কাজী। লেখা পড়ে পাই যেন পদ্মানদীর মাঝি। পদ্মানদীর অগাধ জলে আছে রূপার খনি। আনুন তুলে কলমজালে সাধের কলমরানী। ইলিশ ভাপা,দই ইলিশ নোনা ইলিশ যতো। কলম কড়ায় রান্না করো মানিকবাবুর মতো। সাধের যত বাহার আছে দুই বাংলায় পাই। এমন খাদ্য জেনো সবে ভু-ভারতে নাই। বাসি হোক, তাজা হোক এমন সাধের বাহার। নোলা থেকে জল পড়ে নাম শুনলে তাহার। রূপসী সুন্দরী যতো জানা অজানা মৎস্য। এমন সাধের তুলনা নেই মনে রেখো বৎস্য। লিখুন লিখুন স্বাদে গন্ধে ইলিশ শিরোনামে। কলম সৈনিক ধন্য কবে কবি যুক্ত নামে।

লক্ষ্যহারা

                  লক্ষ্য হারা            দেবপ্রসাদ জানা               ২৩.৭.২০২১ হারানো মনের ঢেউ, পেয়েছ নাকি কেউ?          দেখো না একটু খুঁজে। সহজ হতো তবে,       হৃদয় কথা কবে।           বলো না একটু বুঝে। অলস হয়ে শেষে,       মুখোমুখি বসে               থাকো যে অভিমানে। ঠিক সময়ের পাশে, ছায়া ফেলে আসে                 খুঁজে দেখো মনে। ভেঙে দিয়ে মন,        খুঁজে ফেরো ধন।                 টানলে সীমারেখা। টুকরো পুঁথির পাতা,প্রেমের গানে গাঁথা                ছিঁড়ে ফেললে সখা? চোখের সামনে ভাসে, ভিড় করে আসে                স্মৃতির রঙে আঁকা। এই অসাড় পৃথিবীর, তুমিও একটি বীর       ...

ঝড়ের অন্তরালে

 ঝড়ের অন্তরালে  দেবপ্রসাদ জানা ২২.৭.২০২১ মেঘের আড়ালে বসে,কুমারী ঝিলিক। গুমোট মুখে দাঁড়িয়ে,সবুজ গাছেরা। ঠোঁটের পরশে স্বপ্ন,রুপোলী অলীক। হৃদয়ের শুষ্ক মাঠে,তাকিয়ে বেচারা। শিহরণ জাগে তার,সমস্ত শরীরে, কুহকীনী নয় তিনি,রক্ত দিয়ে গড়া। বিচরণ করে হাত,নরম অধরে, কি কারণে প্রেম হবে,শিহরণ ছাড়া। তমসার চোখে যেন পড়েনি পলক। চকমকি রষ্মি চোখে,আকস্মিক পড়ে। দূর হতে ধেয়ে আসে,চমকী আলোক। নিমেষে হারায় তান,বৈশাখীর ঝড়ে। আঁধার মেঘের বুক, ফেটেই চৌচির। বাতাসে হারিয়ে গেছে,পাখিদের নীড়।  

অভিমানী

 অভিমানী  দেবপ্রসাদ জানা ২১.৭.২০২১ শ্রাবণে শ্রাবণ কাঁদে,অঝোর ধারায়। দুই আঁখি জল নিয়ে,বোধের ভিতর, ঝলমলে রোদ ছিল,গাছের মাথায় লালে লাল ছিল তার উতলা অধর। স্মিত হাসি ছিল ওই,আকাশের কোনে। নীলাভ সাগরে ছিল,সোনালী রোদ্দুর। সাদা মেঘ পাড়ি দিছে,নীলাকাশ পানে। নোঙর করেছে তটে,বুঝেছি যদ্দুর। তমসার চোখে কেন,পড়েনি পলক।  চোখের তারায় ভেসে,উঠছে গগন। সোনালী শৈশব মনে,দিয়েছে পুলক। নির্মল বাতাস যেন,পেতেছে আসন। আষাঢ়ের মন খুব,অভিমান ভরা। শ্রাবণের হাত ছেড়ে,চলে গেল ত্বরা।

আর কিছুদিন

 আর কিছুদিন দেবপ্রসাদ জানা ২০.৭.২০২১ আর কিছুদিন সবুর করো মোনালিসা  আমিও আসব তোমার কাছে। চিতার আগুনে পুড়ে, ধোঁয়ার কুণ্ডলী পাকিয়ে- বাতাসের ওপর ভর করে, তোমার কাছে চলে যাবো, এক জীবনে যা কিছু পাওয়ার ছিল,পেয়েছি। যা করার ছিল করেছি, বাবা মা,ভাই বোন সকলের দায়িত্ব পালন করেছি, তুমি তো জানো আমি,  কখনো কাউকে নিরাশ করিনি, কর্তব্য,এমন একটা বস্তু তাকে অবহেলা করার মতো সাহস আমার ছিল না। সব দায়িত্ব পালন করেছি- কিন্তু তোমার জন্য কিছু করিনি, করব করব ভেবে- এতদিনে সময় পেয়েছি মোনালিসা। তুমি চলে গেলে রাগ করে, ছবি হয়ে দেওয়ালে ঝুলে পড়লে, তোমার অভিমান, তোমার ব্যাঙ্গিক চাউনি, তোমার উত্তাপ দেখেছি, দেখেছি ভালোবাসার আকুতি, দেখেছি দেওয়ালে টাঙানো তোমার ছবিতে। তোমার চোখে জলও দেখেছি, মুচকি হাসিতে বুঝিয়ে দিয়েছো ব্যথা, বিশ্ব বিখ্যাত হয়েছো,তুমি তোমার হাসিতে। একটু সবুর করো আমি আসছি তোমার কাছে। জানো তো,দেশে ভীষন মহামারী, মৃত্যুর দূতেরা ঘুরছে দোরে দোরে, ওদেরকে বলেছি তোমার কথা, আমাদের ভালোবাসার কথা, আমার অবহেলার কথা, অভিমানে তোমার চলে যাওয়ার কথা। আর সামান্য কিছুদিন সবুর করো, আমি আসছি তোমার কাছে, ওই ছবিটার পাশে ছবি...

প্রেমের আদলে প্রেম

 প্রেমের আদলে প্রেম দেবপ্রসাদ জানা ১৯.৭.২০২১ আজ না হয়,ভোর হোক তোমায় দেখে- না হয়,তোমায় দেখার,নেশা হোক রোজ। নেশা নাকি তৃষ্ণা লাগবে মনে, পিপাসার্ত মনের বারি হও তুমি। শরীরী আভাসে বুঝিও তোমার মন। তোমার জোয়ারে ভাসাব প্রেমের তরী।  তোমার সুরেলা কন্ঠের,ভাষা হোক মোর। উচ্চারণে আমি যাবো মিশে। ফুলের মতো বিকশিত হও মনে, মনের গভীরে প্রেমের বাতাস লাগুক। ফুলের মধু, মধুকর আসুক নিতে। তোমার গানে রোজ ভোর হোক। প্রেমের আদর ছুঁয়ে যাক মনে। সুখের কলঙ্ক,গায়ে নেবো মেখে।  স্বপ্ন যেন স্বপ্ন হয়ে থাকে, অগোচরে বসে কবিতা লিখে যাবো। দিগন্ত কিনারে,সূর্যাস্ত হয় যদি, সোনালী আলোকে তোমাকে দেখতে পাবো। কনেদেখা রোদ ছুঁয়ে যাক মন। তোমার  আঁচলে মুখ নেবো ঢেকে। মৌন বাতাসে,বৃষ্টির ছোঁয়া থাক, রঙিন গোধূলি দেখব কেমন হাসে? সোনালী আবেগে অলস হতে চাই গাছের ছায়ায় প্রাণের উষ্মা নিতে তোমার কোলেই প্রাণ দিতে চাই।  

প্রেমের ইতিহাস

 প্রেমের ইতিহাস  দেবপ্রসাদ জানা ১৮.৭.২০২১ রক্তে রাঙা ইতিহাসে,প্রেমের প্রসব। ব্যথায় জন্মাল প্রেম,সঙ্গী ভালোবাসা। পরিবর্তন স্মরণে,টিকে আছে সব। বেহাল কালের গতি,ভেঙ্গে দিছে বাসা এখানেই শেষ নয়,যুগ যুগ ধরে। ব্যবহারে লুপ্ত নয়,এ প্রেমের ডোজ। সময়ের কালস্রোতে,পরকীয়া করে। সুপ্ত হোক,গুপ্ত হোক,প্রেম আসে রোজ। বসন্ত বাহার আছে,লুকিয়ে দেখার, পূর্বাহ্নে রোপণ করো,প্রেমের অঙ্কুর। মিলিয়ে হাত, মিলন হোক বারবার। অঘোষ স্বরে ঘোষণা হোক,নবাঙ্কুর। প্রগতির পালে বায়ু,ঘনিভুত হলে। সিদ্ধ স্বার্থবান ওঠে,প্রেমের আঁচলে।

পরকীয়ার মতো

 পরকীয়ার মতো দেবপ্রসাদ জানা  ১৬.৭.২০২১ নাইবা হলো প্রেম,পরকীয়ার মতো উথালপাথাল নদীর জলে মন ভারি কু বলে।  কেন এত করো ছল  প্রেম যদি নদীর জলে ভাসিয়ে দেওয়া খড়কুটো হয় ভাসতে ভাসতে অনেক দূর কলসী ভরা প্রেমের মধু হৃদয়ে দিয়ে ভরে। নাইবা হলো প্রেম পরকীয়ার মতো  ফুল পাখি উড়োজাহাজ বট গাছের ছায়া সবইতো মায়া সখী সবই মরীচিকা। আর থেকো না দূরে মাতাল বাঁশির সুরে এসো একবার দেখো খুঁজে মনের কিছু পাওয়া যায় কিনা? বাজল বাঁশি মনে নয়,রাধা হওয়ার সময় হয় জাগাও প্রেম,শরীর কয়, মনের পাখি দেবে ফাঁকি বলো কেমনে হয়? বিরহে কাঁদে হৃদয় খানা,  মন ভারি তুমি বিনা, না না ঠাট্টা নয়, সত্যি করে বলি নাইবা হল প্রেম,পরকীয়ার মতো। মনের দরজা খুলে ভালোবাসা ঢুকতে দাও। এ বয়সে কি প্রেম হয়? ভালোবাসার মতো।

অবৈধ প্রেম

 অবৈধ প্রেম দেবপ্রসাদ জানা ১৫.৭.২০২১ আলো আঁধারি ভোরের,বাগানে রমনী বিদেশিনী একা একা শিউলি কুড়ায় শরীরে তার ফুটেছে নম্র কুসুমকলির অমল আভাস,হিম গুড়ির উচ্ছাস  সোঁদামাটি নাভিকুণ্ডে অপরূপ ভাস মিথুনমুদ্রার লজ্জা,সোহাগী জ্যামিতি নীল পালকের সাজ,আশ্চর্য স্থাপত্য অন্ধকারে জেগে থাকে,শরীরী অপেরা ছেনাল বাতাস তার চোয়ানো রূপের মোহময় রস যেন চেটে খেতে চায়। আমোদিনী শিউলির বনে এক্কা দোক্কা খেলা চলে প্রতিভোরে,সোহাগে আদরে আঁধারের পেট চিরে,খসে পড়ে ভোর। দিনের আলোকে ফুল্ল কুসুমিত ফুল, ঝরে যাবে অনুসঙ্গে,এ ফুল আমার। রমণী ফুলের মতো,সোহাগে পরাগে পোয়াতি রাতের পেট খসিয়ে পলকে আরো একটা হেমন্ত চুরি করে নেয়। কিশোরী গানের কলি,কন্ঠে ধরে থাকে। মেঘের আড়ালে মেঘ,পথ হারিয়েছে। লক্ষ নক্ষত্র আকাশে লজ্জায় মেঘের অন্তরালে ভাসে। নগ্ন স্পর্শের আকাশী রুমাল ক্ষত বিক্ষত শিউলির বন। জোছনা রাতে আনাড়ি,প্রেম পরকীয়া, মৃদু বাতাস কেমন  আদর মাখায়। হাতের ওপর হাত রেখে উষ্ণ সোহাগ  প্রেম আসে প্রেম যায় নন্দনের ঝোপে। পুড়ে যায় গাছপালা বৈধতার তাপে। কত প্রাণ বলি হয়,ডাক্তারের হাতে।

নিঃসঙ্গ

 নিঃসঙ্গ দেবপ্রসাদ জানা ১৪.৭.২০২১ আকুল শিউলির গন্ধে বিভোর হলাম  ধীরে ধীরে ফুটে ওঠে ফুল,ঝরে যায়  সময়ের খসে পড়া ডালে দুটি ফুল  বাঁচার প্রত্যয়ে থাকে,মানুষের কাছে। অপেক্ষার ফুল ঝরে যাওয়ার পরে  পায় না দেবতার পা,লাগে না যে কাজে। প্রজ্ঞায় ভেসে যাওয়া, অচেনা সাগরে টালমাটাল নৌকাটা মৃত্যুকে আড়ালে  রেখেই এগিয়ে চলে,সাগরের বুকে। ঢেউ ভেঙে ভেঙে নৌকা দূরত্বে মিলায়। খুব নাড়াচাড়া খেয়ে ভেতরে ভেতরে জেগে উঠি,ভাবি এক অসীম নৈঃশ্বদ্যে গোপনে ক্ষয়ের কথা ভাবি আর ভাবি, জীবনের সফলতা এক প্রলোভন  পাঁজরের নিচে প্রাণ,তার মধ্যে মন। বিষন্নতায় ছুঁয়েছে জীবন বিন্যাশ, সফলতা খুব একা করে দেয় মন। বন্ধুহীন সঙ্গীহীন জীবনের ভার বহন করা সহজ নয় এ জীবনে।

অকস্মাৎ প্রেম

  অকস্মাৎ প্রেম  দেবপ্রসাদ জানা বুকের পাঁজরে বাজে বিষন্ন সরোদের সুর। শরীর জুড়ে অজানা কম্পন। রক্ত মাংসের শরীর খোঁজে একটু প্রেম। কেন এলে তুমি অচেনা অজানা রমনী  কে তুমি প্রেমিকার বেশে ? নিজের ভিতর ভালোই ছিলাম এতদিন  হঠাৎ কেন এলে– বাজাতে এমন করুণ -বিষাদের ধ্বনি  খুব ভালো লাগে তাই না? বেদনার সারোদ বাজাতে মনের ভিতরে। মায়ায় জড়িয়ে নিতে চাইছ কেন পলকে? অচেনা সুন্দরের পাতা ফাঁদে একলা আমি। তোমাকে সঁপে দেবো অচিরে - খালি দু'টি হাতে তোমার পরশ পেতে মন কেন চায় বার বার? প্রেম আসে,প্রেমের কালি মেখে পূর্ণিমারাতে জোছনায় স্নান করে বলে পৃথিবীর কানে- চুপিচুপি, ভালোবাসি ভালোবাসি। সমস্ত আরতি বিনির্মাণে যখন কেটেছে জীবনের ষোল আনা–তখনো প্রেম  হৃদয়ের দরজায় কড়া নাড়ে সবার অলক্ষ্যে। কেন এলে, হে প্রেমের বাদক কেন বাছাও আমাকে নিঠুর মাদলে। বসন্ত দিনে-কোথা ছিলে রমনী? আজ কেন দিলে প্রেমের মাদুলি? ত্রিতালে তিমির বেহাগে বাজাও সারোদ– করুণ সুরে - বিরহের গানে অযথা। ফিরে যাও প্রেয়সী প্রেমিকা - প্রেমের আগুনে দগ্ধ হওয়ার আগে। হৃদয়ের রক্ত দিয়ে আঁকতে দাও অনুপম তোমার ওই সুন্দর মুখ-মনের ভিতরে।

মনের গভীরে

 মনের গোপনে দেবপ্রসাদ জানা ১০.৭.২০২১ নীল প্রজাপতিটার দিন চলে গেছে  বিষন্নতায় ছুঁয়েছে,মৃত্যুর শিকড় দীন সেজে বাঁক নেয় প্রত্যাশার নদী। রয়ে যায় কত কথা মনের ভিতরে, অফুরাণ কত স্মৃতি অন্তহীন পথে, নাম ধরে ডাক দেয় পৃথিবীর মাটি, কত কথা অবিরত মনের গভীরে- গাঁথা থাকে অনিয়মে,গভীর স্বপনে। নাম হারা কত ছবি ক্যানভাসে থেকে, ম্লান হয়ে যায় কেন কালের তাণ্ডবে? ছবি, কত কথা বলে যায় জীবনের। গাঁথা হয়ে থাকে ক্ষোভ বিপন্ন বিষ্ময়ে। ঢেউ ভেঙ্গে ভেঙ্গে নদী অদম্য ইচ্ছায়। হিমস্বরে স্তব্ধতায় সূর্যাস্তের দিকে।